পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NO প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ অতিশয় উৎকট ব্যাধিগ্রস্ত, রক্ষা পাওয়া ভার; রোগের কারণ কৃষ্ণের বিরহী। রোগ অতি কঠিন হইলেও কৃষ্ণের হুবারা অতি সহজেই তাহার প্রশমন হইতে পারে। সখী কৃষ্ণকে বলিলেন, এ রোগ ত্বদাঙ্গসঙ্গামািতমাত্রসাধ্যম। আর কৃষ্ণ ?-তিনিও কথা এবং ব্যবহারে তাঁহার মনোভাব নিঃসন্দেহরপে বক্সাইয়া দিয়াছেন। তিনি কেবলমাত্র চুম্বন আলিঙ্গন রমণ ইত্যাদির দ্বারা গোপিনীগণের প্রতি তাঁহার অন্তরের ভালোবাসা প্ৰকাশ করেন। সখীদ্বারা রাধাকে বলিয়া পাঠান যে, যাও শ্রীমতীকে গিয়া বলো ভূয়স্ত্বৎকুচকুম্ভীনভািরপরীরাশ্যভামতং বাঞ্ছতি। কৃষ্ণ রাধাের দজয় মান ভঞ্জনাথ যে-সকল চাটবচন প্রয়োগ করেন তাহাতেও ঐ একটি ভাবই ফটিয়া উঠিয়াছে। রাধাকৃষ্ণ ইত্যাদি সকলেই যে-ভাবে মত্ত সে-ভাবের নাম সংস্কৃতে ঠিক প্ৰেম নহে। জয়দেব-বর্ণিত প্রেমের উৎপত্তি দেহজ আকাংক্ষা হইতে, তাহার পরিণতি দেহের মিলনে, তাহার উদ্দেশ্য দেহের ভোগজনিত সখিলাভ ; তাঁহার নিকট বিরহের অর্থ প্রণয়ী-প্ৰণয়িনীর দেহের বিচ্ছেদজনিত শারীরিক কমন্ট। গীতগোবিন্দে আসল ধরিতে গেলে প্রেমের কথা নাই, কেবলমাত্র কামের বিষয়ই আলোচিত হইয়াছে। হািদয়ের সহিত জয়দেবের সম্পপক নাই, শরীর লইয়াই তাঁহার কারবার। যে রমণীর মনে প্রেম নাই, যাহার হদয় নাই, কেবলমাত্র দেহ আছে— কথা ; রাধিকাপ্রমািখ গোপযন্বতীদিগের এই নিলক্তিজতার পরিচয় তাঁহাদের ব্যবহারে ও কথোপকথনে যথেস্ট পরিমাণে লাভ করা যায়। রাধা কৃষ্ণের সহিত মিলিত হইলে 'পািমরশরাপরবশাকুত’ প্রিয়মখি দেখিয়া নিল তাজভাবে উচ্চহাস্য করিয়া উঠেন। এই তো গেল প্রেমের কথা, এখন শারীরিক সৌন্দয্যের কথা পাড়া যাউক । শারীরিক সৌন্দয তিনটি বিভিন্ন উপকরণে গঠিত ১ অঙ্গপ্রত্যঙ্গাদির গঠন বা আকৃতি ২ বৰ্ণ ৩। ভাব, অর্থাৎ আন্তরিক সৌন্দয্যের বাহ্যবিকাশ। জয়দেবের নায়ক-নায়িকা যখন সবাংশে আন্তরিক সৌন্দর্যবঞিত তখন অবশ্য তাহাদের শরীরে ভাবের সৌন্দয্যের দেখা পাওয়া অসম্পভব। অঙ্গপ্রত্যওগাদির গঠন এবং পরস্পরের সহিত পরস্পরের পরিমাণসামঞ্জস্য ও বর্ণ এ-সকল ইন্দ্ৰিয়গ্রাহ্য হইলেও দর্শনেন্দ্ৰিয়গ্রাহ্য বলিয়া ইহাতে কোনোরাপ ভোগের ভাব সংলিপ্যন্ত নহে। যে সৌন্দৰ্য চৈাখে দেখা যায়, তাহার কেবল মানসিক উপভোগই সম্ভব ; তাহা হইতে যে সখি লাভ করা যায় তাহা কেবলমাত্র মানসিক আনন্দ ; তাহাতে দেহের কোনোরাপ লাভলোকসান নাই। কিন্তু সপশ করিয়া যে সখ তাহা চোঁদ-আনা দৈহিক, সতরাং জয়দেবের নিকট আমরা আকৃতি ও বর্ণের সৌন্দয্য অপেক্ষা শারীরিক কোমলতা ও পশযোগ্যতা ইত্যাদির অধিক বৰ্ণনা প্রত্যাশা করিতে পারি এবং জয়দেব এ বিষয়ে আমাদিগকে নিরাশ করেন না। মািখশ্রীর প্রধান উপকরণ ভাব, গঠন ও বর্ণের সৌন্দৰ্য । তাই জয়দেব মািখশ্রীবর্ণনা দাই