পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষের জিয়োগ্রাফি (X) 16:A রস-কষ একেবারে শকিয়ে যায়। সাহারার এই নিজস্ব বাতাসের নাম ট্রেড উইনডেন্স। একবার গোলাবের দিকে তাকিয়ে দেখলেই দেখতে পাবে যে, এই ট্রেড উইনডাস চলার পথটি হচ্ছে আগাগোড়া পোড়ামাটি। সাহারা মরভূমি আরবদেশের ভিতর দিয়ে এসে প্রথমে পারস্যের দক্ষিণ ভাগকে, তার পর আরো এগিয়ে ভারতবর্ষের সিন্ধাদেশকে আক্ৰমণ করে। ফলে, আরব থেকে সিন্ধাদেশ পর্যন্ত সমস্ত ভূভাগকে মর্যােভমিতে পরিণত করেছে। এ আক্রমণে বাধা দিয়েছে রাজপতনা। রাজপতনার চিরগৌরব এই যে, এই রাজপাতানাই হিন্দপথানকে এই ক্রমবর্ধমান আফ্রিকার মরভূমির কবল থেকে রক্ষা *3 এই আরবদেশ যে ভুলক্রমে এশিয়ার ম্যাপে ঢকে গেছে, তার কারণ কেবলমাত্র প্রত্যক্ষদশী মানচিত্রকাররা লোহিত্য-সমদকে আফ্রিকা ও এশিয়ার মধ্যে পরিখা ৰলে ধরে নিয়েছিলেন। একটি তলিয়ে দেখলেই দেখা যায়, এ সমদ্রও আসলে মরভূমি। এর উপরে যেটকু জল আছে, তা ভারত-মহাসাগরের দান। ভারতবর্ষকে যদি এশিয়াখন্ডের একটি উপমহাদেশ না বলে একটি সর্বতন্ত্র মহাদেশ বলা যায়, তা হলেও কথাটা অসংগত হয় না। ভারতবর্ষ মাপে ১৫,oo,ooo বগমাইল। এক চীন ব্যতীত এত বড়ো দেশ এশিয়ায় আর কোথাও নেই। এশিয়ার রাশিয়া ম্যাপে দেখতে প্রকাশন্ড দেশ; কিন্তু এর দক্ষিণাংশে এত বড়ো বড়ো হ্রদ মরভূমি তৃণকান্তার ও পর্বত আছে যে, সে অংশটিকে একটি দেশ বলা যায় না। কারণ সে ভূভাগ মানষের বাসের অযোগ্য। আর এর উত্তরাংশের জমি সমতল হলেও আজও জমাট মাটি হয়ে ওঠে নি। এ দেশে গাছপালা অতি বিরল, যে দটি-চারটি আছে তারা সব বামন। এরকম দেশ যে কৃষিকাষের জন্য অনপযোগী, সে কথা বলাই বাহল্য। ফলে সাইবিরিয়া একরকম জনশন্য বললেই হয়। ভারতবর্ষ যে আকারে বিপাল, শােধ তাই নয়। এ দেশ এশিয়ার অপরাপর দেশ থেকে একরকম সম্পপণ্য বিভিন্ন বললেও অত্যুক্তি হয় না। এর উত্তরে হিমালয়ের গগনস্পশী প্রাচীর; আর তিন দিকে ভারত-মহাসাগরের অতলপশী পরিখা। তোমরা ভেব না যে আমি ভুল করছি। আরব-সাগর বঙ্গউপসাগর প্রভাতি নাম আমিও জানি; কিন্তু ও-সব সাগর-উপসাগর ভারত-মহাসাগরেরই অংশ মাত্র। ভারতবর্ষ তার উত্তরপশ্চিম ও উত্তরপাব কোণে শােধ অপর দেশের সঙ্গে সংলগ্ন। তার উত্তরপশ্চিমে আফগানিস্থান, এবং উত্তরপবোঁ ব্ৰহ্মদেশ। কিন্তু এ দই দিকেই আবার অতি দগম পাবতের ব্যবধান আছে। যে পর্বতশ্রেণী আফগানিস্থান ও বেলাচিস্থানকে হিন্দ স্থান থেকে পথক করে রেখেছে, সে পর্বতশ্রেণীর অবশ্য দটি দায়োর আছে-খাইবার পাস ও বোলান পাসা-যার ভিতর দিয়ে এ দই দেশে মানষে যাতায়াত করতে পারে। কিন্তু ব্ৰহ্মদেশে যাবার পথ আজও বঙ্গোপসাগরের জলপথ। দেখতে পােচ্ছ স্বয়ং প্রকৃতিই ভারতবৰ্ষকে একটি সর্বতন্ত্র মহাদেশ করে গড়েছেন। এখােন দেখা যাক, এই সমগ্ৰ দেশটার আকার কিরকম। আমাদের পবিপরীষেরা