পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবষের জয়োগ্রাফ ON KAO অাঁকা হয়েছে। এই রেখাঙ্কিত জায়গাতেই সয্যের কিরণ পথিবীর উপর ঠিক খাড়া হয়ে পড়ে, অপর সব সস্থানে তের চা ভাবে। এই ট্রপিক অব ক্যানসারের উত্তরদেশ শীতের দেশ, আর ট্রপিক অব ক্যাপ্রিকনের দক্ষিণদেশও শীতের দেশ। আর এই রেখাদ্ধবয়ের মধ্যের দেশ সব দারণ গরম দেশ। ভারতবর্ষের উত্তরাপথ, প্রায় সমস্তটাই ট্রপিক অব ক্যানসারের উত্তরে, ও দক্ষিণাপথ আগাগোড়া তার দক্ষিণে। ফলে দক্ষিণাপথে শীতঋতু বলে কোনো ঋতু নেই। জনৈক ইংরেজ বলেছেন যে, rf-perfor 8Cs Nine months hot and three months hotter i <son isoলিঙের মাখ থেকে বেরোলেও মিথ্যে নয়। উত্তরাপথে কিন্তু শীতগ্রীষ্মম দই বেশি। দক্ষিণাপথে গ্রীষ্মমকালে গরম যে উত্তরাপথের মতো অসহ্য হয় না, তার কারণ দক্ষিণাপথ উত্তরাপথের চাইতে প্রথমত উচু, দ্বিতীয়ত তার তিন দিক সমদ্রে ঘেরা। f তার পর ভারতবর্ষের এ দাই ভূভাগের মাটিও এক জাতের নয়, এবং তাদের গণাগােণও পথিক। মানষের পথিবীর সঙ্গে কারবার প্রধানত মাটি নিয়ে। গাছপালা তৃণ শস্য সব মাটিতেই জন্মায়। এবং অনেক পন্ডিতের মতে সব জীবজন্তুর ন্যায় মানষের আদিমাতা হচ্ছে ভূমি। এ মতে যাঁরা বিশ্ববাস করেন, তাঁরা কোন জমিতে কে জন্মেছে তার থেকেই মানষের শ্রেষ্ঠত্ব ও নিকৃষ্ণাটত্ব নির্ণয় করেন। এ সত্ত্বেও আমাদের জানা উচিত যে, মাটি হচ্ছে পথিবীর চামড়া মাত্র। ও চামড়ার নীচে পাথর আছে, যে পাথর থেকে কিছই জন্মায় না।- জীবজন্তুও নয়, গাছপালাও নয়। মা-বসন্ধরা আসলে পাষাণী । এই মাটিও পাথরের বিকার মাত্র। অর্থাৎ পাথরকে ভেঙে মাটি তৈরি করতে হয়। পাথরকে চণ করা হচ্ছে জল আর বাতাসের কাজ। নদনদী পাহাড় থেকে বেরোয়, পাহাড় ভেঙে। আর তারা যে চণপাষাণ বয়ে নিয়ে আসে, তাই দিয়ে যে মাটি গড়ে, সেই মাটিকে আমরা পলিমাটি বলি। সেই মাটিই প্রধানত গাছপালার জন্মভূমি। আর সমগ্র উত্তরাপথ প্রায় এই মাটিতেই তৈরি। আমরা ভারতবর্ষকে উপদ্বীপ, পেনিনসলা বলি; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ভারতবর্ষের ত্রিকোণ দক্ষিণাংশই একটি উপদ্বীপ। এ অংশ অতি পরাকালে একটি স্বীপ মাত্র ছিল। হিমালয় ও বিন্ধ্যাপবতের মধ্যের দেশ তখন জলমগন ছিল। তার পর সেই জলমগন দেশ যখন হিমালয়ের নদনদীর কৃপায় উত্তরাপথ হয়ে উঠল, তখন তার দক্ষিণ দাবীপ উত্তরাপথের সঙ্গে যন্ত হয়ে ভারতবর্ষ নামক মহাদেশ সন্টি করল। দক্ষিণাপথ উত্তরাপথের চাইতে ঢের প্রাচীন দেশ। তোমরা যখন জিয়োলজি পড়বে, তখন এ দেশের বয়সের গাছপাথরের অথবা গাছপাথরের বয়সের হিসেব পাবে। দক্ষিণাপথের বেশির ভাগ মাটি নদনদীর দান নয়। আপোনয়গিরি হতে যে গলা পাথরের (লাভা) উদগম হয়েছে, তাই চণ্য হয়ে হয়েছে দক্ষিণাপথের মাটি। উত্তরাপথ বরণদেবতার সন্টি, দক্ষিণাপথ অপ্ৰিনদেবতার। এ দই মাটি এক জাতেরও নয়, এ দায়ের ধমও এক নয়।