পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V9 SV প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ দটি অংশ। কিন্তু খােব উবাির, পশ্চিমে মালাবার ও পাবে করমন্ডল উপকােল। মালাবার নারিকেল গাছের দেশ, আর করমন্ডল তাল গাছের। তা ছাড়া এই দেশে শস্যও প্রচুর জন্মায়। তবও দক্ষিণাপথ নিজের দেশেরই খোরাক জাগিয়ে উঠতে পারে না; দেশে-বিদেশে অন্ন বিতরণ করা তো তার পক্ষে অসম্পভব। কিন্তু এই দক্ষিণাপথের আর-একটি সম্পদ আছে। আগ্নেয়গিরির পাথর-ভাঙা মাটিকে ব্ল্যাক কটন সিয়েল বলা হয়, কারণ ও-মাটির রঙ কালো ও তাতে কাপাস জন্মায়। এ দেশে এত কাপাস জন্মায় যে দক্ষিণাপথ শব্ধ সমগ্র ভারতবর্ষকে নয়, দেশ-বিদেশকে তুলো জোগায়। বাংলা যেমন ধানের দেশ, পাঞ্জাব যেমন গমের দেশ, দক্ষিণাপথ তেমনি ম্যাখ্যাত তুলোর দেশ। এ দেশ শােধ কাপাসের দেশ নয়, শিমলেরও দেশ। অস্তি গোদাবরীতীরে বিশাল শালমলীতর- এ কথাটা শােধ গলেপার কথা নয়। দক্ষিণাপথের তুল্য বিশাল শালমলীতর পথিবীর অন্য দেশে বিরল। এই থেকে দেখতে পােচ্ছ যে ভারতবর্ষ, কি অন্ন কি বস্ত্র, কিছরই জন্য অপর কোনো দেশের মােখাপেক্ষী নয়। আজকাল কেউ কেউ বাংলাদেশে কাপাসের চাষ করতে চান। এ চেন্টা দক্ষিণাপথে ধানের চাষ চালাবার অন্যরােপ। এ ইচ্ছা অবশ্য অতি সদিচ্ছা, কিন্তু এ ইচ্ছা জিয়োগ্রাফির বিরদ্ধে বিদ্রোহ। সমগ্র ভারতবর্ষকে ঢেলে সাজাবার মহৎ বাধা হচ্ছে ভারতবর্ষের প্রকৃতি। ভারতবষের ঐক্য ভারতবর্ষের জিয়োগ্রাফির পরিচয় দিতে হলে বোধ হয় এক বৎসর কাল লাগে। আমি আমার বরাদ্দ এক ঘণ্টার ভিতর সে দেশের আকৃতি ও প্রকৃতির মোটামটি পরিচয় দিতে চেন্টা করেছি। তাতে তোমাদের তরণ জ্ঞানপিপাসা কতদার মিটেছে বলতে পারি নে। যদি না মিটে থাকে তো আমার বক্তব্য এই যে-যত্নে কৃতে যদি ন সিন্ধ্যাতি কোহিত্র দোষঃ। এখন এই কথাটি তোমাদের বলতে চাই যে, এই সমগ্ৰ দেশটি একদেশ। পথিবীতে আর যে-সব দেশ একদেশ বলে গণ্য, সে-সব ছোটো ছোটো দেশ। এক মহাচীন ব্যতীত অপর কোথাও এত বড়ো দেশ একদেশ বলে গণ্য হয় নি। প্রথমত, এদেশের চতুঃসীমা এ দেশকে যেমন পরিচ্ছিন্ন করেছে, অন্য কোনো দেশকে তেমন করে নি। চীনদেশে এর তুল্য স্বাভাবিক সীমানা নেই, তাই চীনেরা তাদের দেশ প্রাচীর দিয়ে ঘিরতে চেন্টা করেছিল, পাশাপাশি অন্যান্য দেশ থেকে সত্বদেশকে পথক করবার জন্য। এ চেন্টা অবশ্য ব্যৰ্থ হয়েছে। হিমালয়ই হচ্ছে ভারতবর্ষের জিয়োগ্রাফির সবচেয়ে বড়ো জিনিস। পথিবীর আর-কোনো দেশের অত বড়ো প্রাচীর নেই। তার পর ঐ হিমালয়ই সত্যসত্য ভারতবর্ষের ভাগ্যবিধাতা ও জলবায়ার নিয়ন্তা। হিমালয়ের জলই হচ্ছে উত্তরাপথের প্রাণ। আর হিমালয়ই সমগ্র ভারতবর্ষের বায়ার চলাচল নিয়ন্ত্রিত করে। এর ফলে প্রায় সমগ্ৰ ভারতবর্ষ এমন উবাির, এমন মানষের বাসোপযোগী দেশ হয়েছে। তার পর ভারতবর্ষের অন্তরে কোনো সমদ্র কিংবা হ্রদ নেই, আর তার