পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জয়দেব Sr. উপর পরপর সম্পণেরপে নিভাির করে। ভাব মন্দ হইলে কবিতার ভাষা কখনোই সন্দের হইতে পারে না, এবং ভাষা কদৰ্য হইলে ভাবও সম্পণেরপে কবিত্বপণ হইতে পারে না। কবিতার ভাষা ভাবের দেহসম্বরপ, কিছতেই তাহা ভাব হইতে পথিক করিতে পারা যায় না। একটি ভাব দইপ্রকার ভাষায় ব্যক্ত হইলে অর্থ সম্পবন্ধে অনেকটা বিভিন্ন হইয়া যায়। নিবিড় অন্ধকারকে কালিদাস বলিতেছেন। ‘সচিভেদ্যস্তমস’, জয়দেব বলিতেছেন ‘অনলপতিমির’। এ দায়ের মধ্যে কতটা প্ৰভেদ আপনারাই বঝিতে পারিতেছেন। যে অন্তনিহিত শক্তি দ্বারা কবিতায় ভাব ও ভাষার সম্পপণ্য একীকরণ সম্পন্ন হয় তাহাই কবিতার আত্মা। এই আত্মা আমাদের আত্মার ন্যায় রহস্যজড়িত। যেমন বৈজ্ঞানিকগণ মানবদেহ খণ্ডডখন্ড করিয়াও তাহার ভিতরকার আত্মাকে খাজিয়া পান। না, সেইরাপ সমালোচকেরাও একখানি কাব্যের বিভিন্ন উপাদানসকল পরস্পর হইতে বিশিলান্ট করলেও তাহদের অন্তরস্থ আত্মাকে ধরিতে পারেন না। যাঁহারা ভাবের সহিত ভাষা যক্তি করিয়া কবিতাকে সজীব করিয়া তুলিতে পারেন তাঁহাদেরই কবিতার আত্মা আছে। কিন্তু যথাৰ্থ কবিত্বশক্তিবিবিজিত কোনো ব্যক্তি যদি বহল পরিশ্রম দ্বারা বিশেষরূপে পান্ডিত্যের পরিচায়ক ভােব -সকলকে পরিপাটি ছন্দ ও ভাষা -যক্তি করেন তাহা হইলেও তাঁহার রচনা কাব্যশ্রেণীভুক্ত নয়। সম্মিট ও নির্মাণে যে প্রভেদ, কবিতা ও তাহার অন্যাকরণে রচিত প্ৰাণশান্য ছন্দোবন্ধের সমন্টিতে সেই 99 | পবোঁ যাহা বলিলাম। তাহা সংক্ষেপে বলিতে গেলে দাঁড়ায় এই যে, যে রচনায় রসাত্মক ভাব সম্পর্ণেরপ অন্যরােপ ভাষায় প্রকাশিত তাহাকেই আমি কাব্য বলিয়া মানি। এখন দেখা যাউক কাব্য-বিষয়ে আমার মত অনসারে বিচার করিলে জয়দেবের কাব্যজগতে সােথান কোথায় । S জয়দেব অধিকাংশ কবিদিগের অপেক্ষা কাব্যের বিষয় নির্বাচনে নিজের নিকৃভন্ট রচির পরিচয় দিয়াছেন ; প্রেমের পরিবতে শঙ্গাররসকে কবিতার বর্ণিত বিষয়সবরমাপ স্থির করিয়াছেন, সেজন্য আমরা কখনো তাঁহাকে কালিদাসাদি কবিগণের সহিত সমশ্রেণীভুক্ত করিতে পারি না। আমি আপাতত জয়দেব বিষয়টি কাব্যাকারে গঠিত করিয়া কিরাপ ক্ষমতার পরিচয় দিয়াছেন, সেই সম্বন্ধে আমার যাহা বক্তব্য আছে তাহাই বলিতেছি। জয়দেবের কবিতাসকল প্রকৃতির শোভা, রাধাকৃষ্ণের রপ এবং তাঁহাদের বিরহমিলন ইত্যাদি অবস্থার বর্ণনায় পণ্য ; সতরাং তাঁহার বর্ণনাবিষয়ে কৃতকাব্যতা অনসারে তাঁহার কবিত্বশক্তির স্বরপ নির্ধারিত হইবে। কবিরা দাইরােপ প্রণালীতে বৰ্ণনা করিয়া থাকেন— প্রথম, সাপটে এবং সহজ ভাবে, দ্বিতীয়, বর্ণিত বিষয় ইঙ্গিতে বাঝাইয়া দেন। উভয় উপায়ই প্রকৃদ্টি, এবং শ্রেষ্ঠ কবিরা উভয় প্রণালী অনসারেই বৰ্ণনা করিয়া থাকেন। জয়দেব কেবলমাত্র প্রথমোক্ত প্ৰথা অবলম্বন করিয়াছেন।