পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

OJO প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ লোকেরই জানা আছে। আমাদের জাতীয়-সমরণশক্তি এতই কম যে, যে জিনিস ইংরেজের আমলে জন্মগ্রহণ করেছে তাকে আমরা মান্ধাতার আমলের বলে মেনে নিই। অতএব এ স্থলে যতদর সম্পভব সংক্ষেপে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ইতিহাসটা বৰ্ণনা করা আবশ্যক মনে করি। অন্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বাংলাদেশে ঘোর অরাজকতা ঘটেছিল। সেই অরাজকতার ফলে ইংরেজ এ দেশের রাজা হয়ে বসলেন, এবং সেই অরাজকতার হাত থেকে দেশকে উদ্ধার করবার উদ্দেশ্যে ইংরেজরাজ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সন্টি করলেন। এ আইন হচ্ছে আসলে একটি emergency legislation, যেমন গতকল্যের ঘী অ্যাক্ট এবং আগামীকল্যের রেন্ট অ্যাক্ট; এরকম আইন অবশ্য মেয়াদিই (temporary) হয়ে থাকে; কিন্তু জমিদারের কপালজোরে এ বন্দোবুস্ত চিরস্থায়ী হয়ে গেল। এরপ হবার কারণ কতকটা দেশের অবস্থার গণ, আর কতকটা ইংরেজের. বদ্ধির দোষ। দেশ যে কতদর অরাজক হয়ে উঠেছিল, তার সাক্ষী স্বয়ং ভারতচন্দ্ৰ। মোগলেমারহাট্টায় মিলে বাংলার অবস্থা যে কি করে তুলেছিল, তার বণনা অন্নদামঙ্গলের গ্রন্থসমুচনাতেই পাবে। সে বণনার কতক অংশ এখানে উদধিত করে দিচ্ছি সজা খাঁ নবাবসত সরফরাজ খাঁ। দেয়ান আলমচন্দ্র রায় রায়ারয়িা ৷ ছিল আলিবন্দি খাঁ নবাব পাটনায়। আসিয়া করিয়া যাদ্ধ বধিলেক তায় ৷ তদবধি আলিবদি হইলা নবাব। মহাবিদজওগ দিলা পাতশা খেতাব ৷ কটকে হইল আলিবন্দির অ্যামল । ভাইপো সৌলদজঙ্গে দিলেন দখল ৷ ভাইপো সৌলদজণ্ডেগা খালাস করিয়া। উড়িষ্যা করিলা ছার লাটিয়া পড়িয়া ৷ এই তো গেল মোগলের ব্যবহার। তার পর শোনো মারহাটার কীতি স্বপন দেখি বগি রাজা হইল ক্ৰোধিত। পাঠাইল রঘরাজ ভাস্কর পন্ডিত৷ বগি মহারাষ্ট্র আর সৌরাষ্ট্র প্রভাতি। আইল বিস্তর সৈন্য বিকৃতি আকৃতি৷ লাঠি বাঙগালার লোকে করিল কাণ্ডগাল। গঙ্গা পার হৈল বান্ধি নৌকার জাঙ্গাল ৷ কাটিল বিস্তর লোক গ্রাম গ্রাম পড়ি। লাঠিয়া লইল ধন ঝিউড়ী বহড়ী ৷ পলাইয়া কোঠে গিয়া নবাব রহিল। কি কহিব বাঙ্গালার যে দশা হইল৷ নবাব বাগরি ভয়ে কোঠ পালিয়ে রইলেন বটে, কিন্তু বেচারা বাঙালির উপর অত্যাচার তাঁর বাড়ল বৈ কমল না। আবার ভারতচন্দ্রের কথা শোনো