পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাব ও পশ্চিম 8S এখন জিজ্ঞাস্য যে, এই এশিয়াটিক মনোভাব ইউরোপীয় মনের অন্তরে কোন ছিদ্র দিয়ে কি সত্রে প্রবেশ করছে। শনিমণ্ডগলবারের মড়া দোসর খোঁজে। গতযন্ধের পর জমানি যখন আবিস্কার করলে তার সাবাথান্ধ সভ্যতা মিয়মাণ হয়েছে, তখন সে বাদ-বাকি ইউরোপীয়দের ধবংসপথের যাত্রী করবার জন্য আগ্ৰহান্বিত হয়ে পড়ল। জমানি কামানের গোলা দিয়ে যখন ইউরোপকে মারতে পারলে না, তখন সে সাহিত্যিক পয়জন-গ্যাস দিয়ে ইউরোপীয়দের মোহাচ্ছন্ন করবার চেস্টা শার করলে। আর আমাদের মন ও চরিত্র দাবলি করবার তারা অব্যৰ্থ উপায় ঠাউরেছে, এশিয়ার ধর্মমত ইউরোপীয় সাহিতে্যু প্রচার করা। তারা সকলে আমাদের বোঝাচ্ছে যে, মন্তির মানে নিবাণ, আর নিবাণপ্রাপিতই ইউরোপীয়দের আদশ হওয়া উচিত। শাপেঙল্যর, কাইজর লিঙ প্ৰভাতি এ যাগের জমান দার্শনিকেরা মাসির মতে প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ। আর রুশ সাহিত্যেরও প্রধান কথা হচ্ছে যে, ইউরোপ এতদিন ধরে যে সভ্যতাব সাধনা করে এসেছে, তার ষোলো-কড়াই কানা। ধম রীতিনীতি প্রভাতিকে জলাঞ্জলি দিলেই মানষ দেবতা হয়ে উঠবে, এই হচ্ছে রশ সাহিত্যের বাণী। আর রাশিয়ানরা যে এশিয়াটিক, তা সকলেই জানে। এ ছাড়া ফ্রান্সের বহলোক আজ লাও-ৎসে ও বন্ধের ভক্ত হয়ে উঠেছে। এখন এর উত্তরে ঝাল কি বলেন শোনা যাক। তিনি বলেন যে, মাসির রচনাচাতুষ এতই অপােব এবং তাঁর চিন্তা এতই সশঙ্খিলিত যে, তাঁর লেখা প্রথমেই মনকে অভিভূত করে, এবং তখন মনে হয় যে, তাঁর সকল কথাই তো সত্য। লেখক হিসাবে মাসির শক্তির মহলে আছে তাঁর ধমনীতি প্রভািত জিনিসে অটল বিশ্ববাস। তাঁর মনে কোনোরাপ সন্দেহ নেই। যার মনে কোনোরাপ দিবধা নেই, সে ব্যক্তির অদম্য শক্তির পরিচয় কম জগতেও যেমন পাওয়া যায় মনোজগতেও তেমনি। কিন্তু আমাদের মন যখন নানা বিষয়ে সন্দেহদোলায় দোলায়মান, তখন মাসির কথার মোহ কেটে গেলেই আমাদের মনে নানারপ প্রশন ওঠে। তিনি আমার মনে যে-সকল জিজ্ঞাসার সন্টি করেছেন, একে একে সেগলি প্ৰকাশ করছি। ইউরোপের বতর্তমান মনোভাব দেখে মাসি যে ভয় পেয়েছেন, সে ভয় অকারণ নয়। বতমান ইউরোপের লোকের প্রকৃতি যে মনীষ্যত্বহীন হয়ে পড়ছে, এ বিষয়ে আমরা সকলে একমত। এমন-কি, ইউরোপের যে-দলের লোক সাব-চাইতে জ্ঞানান্ধ, অর্থাৎ পলিটিশিয়ানরা, গতযদ্ধের ধাক্কা খেয়ে তাঁরাও চোখ মেলে দেখছেন যে, যাকে তাঁরা ইউরোপীয় সভ্যতা বলেন তার অন্তরে ঘােণ ধরেছে। কিন্তু আমাদের এই অধোগতির জন্য এশিয়া কি হিসেবে দায়ী তা ঠিক বোঝা গেল না। এশিয়ার কথা মনে করতে মাসির মন কি জন্য আতঙ্কে ভরে ওঠে ? তিনি কি ভয় পান---এশিয়া আমাদের বাহবিলে পঙ্গ করবে, না, মন্ত্রবলে নিজীবি করবে ? Rq