পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ আমাদের অশিক্ষিত হাতে পড়ে প্রায়ই তার অর্থবিকৃতি ঘটে। সংস্কৃত সাহিত্যে BBDDBBSBDBB DDD BBBDBB BBD DBD D S BDDD BBDDS DDD হোন, আমাদের পবিপরীষরা প্রত্যেক কথাটি ওজন করে ব্যবহার করতেন। শব্দের কোনোরাপ অসংগত প্রয়োগ সেকালে আমাজনীয় দোষ বলে গণ্য হত। কিন্তু একালে আমরা কথার সংখ্যা নিয়েই ব্যস্ত, তার ওজনের ধার বড়ো-একটা ধারি নে। নিজের ভাষাই যখন আমরা সক্ষম অৰ্থ বিচার করে ব্যবহার করি নে, তখন সবলপপরিচিত এবং অনায়ত্ত সংস্কৃত শব্দের অর্থ বিচার করে ব্যবহার করতে গেলে সে ব্যবহার যে বন্ধ হবার উপক্রম হয়, তা আমি জানি। তবও একেবারে বেপরোয়াভাবে সংস্কৃত শব্দের অতিরিক্ত-ব্যবহারের আমি পক্ষপাতী নই। তাতে মনোভাবও সপন্ট করে ব্যন্ত করা যায় না, এবং ভাষাও ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপে দেখানো যেতে পারে, এই “সমালোচনা’-কথাটা আমরা যে অর্থে ব্যবহার করি তার আসল অৰ্থ ঠিক তা নয়। আমরা কথায় বলি লেখাপড়া শিখি”; কিন্তু আসলে আমরা অধিকাংশ শিক্ষিত লোক শােধ পড়তেই শিখি, লিখতে শিখি নে। পাঠকমাত্রেরই পাঠ্য কিংবা অপাঠ্য পাস্তক সম্পবন্ধে মতামত গড়ে তোলবার ক্ষমতা থাক আর না থাকা, মতামত ব্যক্ত করবার অধিকার আছে; বিশেষত সে কায্যের উদ্দেশ্য যখন আর-পাঁচজনকে বই পড়ানো, লেখানো নয়। সতরাং সমালোচিতব্য বিষয়ের বাংলা সাহিত্যে অভাব থাকলেও সমালোচনার কোনো অভাব নেই। এই সমালোচনাবন্যার ভিতর থেকে একখানিমাত্র বই উপরে ভেসে উঠেছে। সে হচ্ছে শ্ৰীযন্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আলোচনা”। তিনি যদি উক্ত নামের পরিবতে' তার ‘সমালোচনা' নাম দিতেন তা হলে, আমার বিশবাস, ব্যথা বাগাড়ম্বরে ‘আলোচনা'র ক্ষদ্র দেহ আয়তনে বদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে এত গরভার হয়ে উঠত যে, উক্ত শ্রেণীর আর-পাঁচখানা বইয়ের মতো এখানিও বিসমিতির অতল জলে ডুবে যেত। এই দটি শব্দের মধ্যে যদি একটি রাখতেই হয় তা হলে ‘সম’ বাদ দিয়ে ‘আলোচনা” রক্ষা করাই শ্রেয়। যদিচ ও-কথাটিকে আমি ইংরেজি criticism শব্দের ঠিক প্রতিবাক্য বলে মনে করি নে। আলোচনা মানে ‘আ’ অর্থাৎ বিশেষরাপে ‘লোচন’ অর্থাৎ ঈক্ষণ। যে বিষয়ে সন্দেহ হয় তার সন্দেহভঞ্জন করবার জন্য বিশেষর পে সেটিকে লক্ষ্য করে দেখবার নামই আলোচনা। তকবিতক বাগবিতািড়া আন্দোলন-আলোড়ন প্রভাতি অর্থেও ঐ কথাটি আজকালকার বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু ও-কথায় তার কোনো অর্থই বোঝায় না। “আলোচনা” ইংরেজি scrutinize শব্দের যথার্থ প্রতিবাক্য। ব্রুিটিসিজম শব্দের ঠিক প্রতিবাক্য বাংলা কিংবা সংস্কৃত ভাষায় না থাকলেও ‘বিচার’ শব্দটি অনেক পরিমাণে সেই অর্থ প্রকাশ করে। কিন্তু "সমালোচনার পরিবতে ‘বিচার' যে বাঙালি সমালোচকদের কাছে গ্রাহ্য হবে, এ আশা আমি রাখি নে। কারণ, এদের উদ্দেশ্য- বিচার করা নয়, প্রচার করা। তা ছাড়া যে কথাটা একবার সাহিত্যে চলে গেছে তাকে আচল করবার প্রস্তাব অনেকে হয়তো দঃসাহসিকতার পরিচয় বলে মনে করবেন। তার উত্তরে আমার বক্তব্য এই যে, পড়বে যখন আমরা নিবিচারে বহসংখ্যক সংস্কৃত শব্দকে বঙ্গ সাহিত্যের কারাগারে প্রবেশ করিয়েছি, এখন আবার সবিচার করে তার গাটিকতককে মন্তি দেওয়াটা