পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

awu-Nebo 88C বোধ হয়। অন্যায় কাৰ্য হবে না। আর-এক কথা। যদি ক্লিৰ্টিসিজম অর্থেই আমরা আলোচনা শব্দ ব্যবহার করি, তা হলে স্কটিনাইজৰ অৰ্থে আমরা কি শব্দ ব্যবহার করব ? সতরাং যে উপায়ে আমরা মাতৃভাষার দেহপলিট করতে চাই, তাতে ফলে শািন্ধ তার অঙ্গহানি হয়। শব্দ সম্পবন্ধে যদি আমরা একটি শচিবান্তিকগ্রস্ত হতে পারি তা হলে, আমার বিশবাস, বঙ্গ ভাষার নিমলিতা অনেক পরিমাণে রক্ষিত হতে পারে। অনাবশ্যকে যদি আমরা সংস্কৃত ভাষার উপর হসতক্ষেপ করতে সংকুচিত হই, তাতে সংস্কৃত ভাষার উপর অবজ্ঞা দেখানো হবে না। বরং তার প্রতি যথাৰ্থ ভক্তিই দেখানো হবে। শব্দগৌরবে সংস্কৃত ভাষা অতুলনীয়। কিন্তু তাই বলে তার ধবনিতে মগধ হয়ে আমরা যে শািন্ধ, তার সাহায্যে বাংলা সাহিত্যে ফাঁকা আওয়াজ করব, তাও ঠিক নয়। বাণী কেবলমাত্র ধবনি নয়। আমি বহদিন থেকে এই মত প্রচার করে আসছি, কিন্তু আমার কথায় কেউ কর্ণপাত করেন না। সাহিত্যজগতে একশ্রেণীর জীব বিচরণ করে, যাদের প্রাণের চাইতে কান বড়ো। সংগীতচর্চার লোভ তারা কিছতেই সংবরণ করতে পারে না, এবং সে ব্যাপার থেকে তাদের নিরস্ত করবার ক্ষমতাও কারো নেই। প্ৰতিবাদ করায় বিশেষ-কোনো ফল নেই জেনেও আমি প্রতিবাদ করি; কারণ, আজকালকার মতে, আপত্তি নিশ্চিত অগ্রাহ্য হবে জেনেও আপত্তি করে আপত্তিকর জিনিসটে সম্পণে গ্রাহ্য করে নেওয়াই বদ্ধিমানের কার্য বলে বিবেচিত হয়। এখানে বলে রাখা আবশ্যক যে, কোনো বিশেষ লেখকের বা লেখার প্রতি কটাক্ষ করে আমি এ-সব কথা বলছি নে। বাংলা সাহিত্যের একটা প্রচলিত ধরন ফ্যাশন এবং ঢঙের সম্পবন্ধেই আমার আপত্তি, এবং তার বিরদ্ধে প্ৰতিবাদ করাই আমার উদ্দেশ্য। সমাজের কোনো চলতি স্রোতে গা ঢেলে দিয়ে যে আমরা কোনো নিদিনটি গন্তব্য স্থানে পৌছতে পারি, এমন অন্যায়। ভরসা আমি রাখি নে। সকল উন্নতির মলে থামা জিনিসটে বিদ্যমান। এ পথিবীতে এমন-কোনো সিড়ি নেই। যার ধাপে ধাপে পা ফেলে আমরা অবলীলাৱক্ৰমে সবগে গিয়ে উপস্থিত হতে পারি। মনোজগতে প্রচলিত পথ ক্ৰমে সংকীর্ণ হতে সংকীর্ণতর হয়ে শেষে চোরা-গলিতে পরিণত হয়, এবং মানষের গতি আটকে দেয়। বিজ্ঞানে যাকে ইভলিউশন বলে, এক কথায় তার পদ্ধতি এই যে, জীব একটা প্রচলিত পথে চলতে চলতে হঠাৎ এক জায়গায়। থমকে দাঁড়িয়ে ডাইনে কি বাঁয়ে একটা নািতন পথ আবিস্কার করে এবং সাহস করে সেই পথে চলতে আরম্পভ করে। এই নাতন পথ বার করা এবং সেই পথ ধরে চলার উপরেই জীবের জীবন এবং মানষের মনষ্যেত্ব নিভাির করে। মন্তির জন্যে, হয়। দক্ষিণ নয় বাম ম্যাগ যে অবলম্বন করতেই হবে, এ কথা এ দেশে ঋষিমনিরা বহকাল পাবে বলে গেছেন; অতএব একেলে বিজ্ঞান এবং সেকেলে দশন উভয়ই এই শিক্ষা দেয় যে, সিধে। পথটাই মন্ত্যুর পথ। সতরাং বাংলা লেখার প্রচলিত পথটা ছাড়তে পরামর্শ দিয়ে আমি কাউকে বিপথে নেওয়ার চেণ্টা করি নে। আমার বিশ্ববাস যে, সংস্কৃত ছেড়ে যদি আমরা দেশী পথে চলতে শিখি তাতে বাংলা সাহিত্যের লাভ বৈ লোকসান নেই। ঐ পথটাই তো স্বাধীনতার পথ, এবং সেই কারণেই উন্নতির পথ- এই ধারণাটি মনে এসে যাওয়াতেও আমাদের