পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রত্নতত্ত্বের পারশ্য-উপন্যাস 86 পাথর বেরিয়েছে। কিন্তু এ যে-সে তােমা যে-সে। পাথর নয়- সব হরফ-কাটা। এই-সব মাদ্রাণ্ডিকত তামফলকের বিশেষ-কিছ মাল্য নেই, তা পয়সারই মতো সস্তা। একালেও আমরা শিল কুটি, কিন্তু সেই কোটা-শিল পড়া যায় না; কেননা, তার অক্ষর সব রেখাক্ষর। কিন্তু অতীতের এই ক্ষোদিত পাষাণের কথা সর্বতন্ত্র। বিদ্যা বলেছিলেন শিলা জলে ভেসে যায়, বানরে সংগীত গায়, দেখিলেও না হয় প্রত্যয় কিন্তু আজকাল যদি কেউ বলেন যে কপি জলে vেএসে যায়, পাষণে সংগীত হয়, দেখিলেও না হয় প্রত্যয় তা হলে তিনি অবিদ্যারই পরিচয় দেবেন। কেননা, আজকাল পাষাণের সংগীতে দেশ মাতিয়ে তুলেছে। অতীত আজ তার পাষাণ-বদনে তারস্বরে আত্মপরিচয় দিচেছ । কাগজের কথায় আমরা আর কােনা দিই নে। রামায়ণ-মহাভারত এখন উপন্যাস হয়ে পড়েছে, এবং ইতিহাস এখন বন্ধের শরণা গ্রহণ করেছে। তার কারণ, আমরা মাটি খড়ে আবিস্কার করেছি যে, যাকে আমরা হিন্দসভ্যতা বলি সেটি একটি অবাচীন পদাৰ্থ - বৌদ্ধসভ্যতার পাকা বনিয়াদের উপরেই তা প্রতিষ্ঠিত। ভারতবর্ষের ইতিহাসের সব নিম্পািনস্তরে যা পাওয়া যায়, সে হচ্ছে বৌদ্ধধম । ফলে, আমরা হিন্দ হলেও বৌদ্ধধম নিয়েই গৌরব করছিলাম। তাই প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, পাটলিপত্রই হচ্ছে আমাদের ইতিহাসের কেন্দ্ৰস্থল— একাধারে জন্মভূমি এবং পীঠস্থান । W কথাসরিৎসাগরের প্রসাদে পাটলিপত্রের জন্মকথা আমরা সকলেই জানতুম। এবং কেননা, সে কথায় বস্তুতন্ত্রতা না থাকলেও রস আছে, তাও আবার একটি নয়, তিন তিনটি—মধর বীর এবং অদ্ভুত রস। পত্র কর্তৃক পাটলিহরণের বক্তান্ত, কৃষ্ণ কর্তৃক রক্সিণীহরণ এবং অর্জন কর্তৃক সভদ্রাহরণের চাইতেও অত্যাশচযা ব্যাপার। কৃষ্ণ প্রভাতি রথে চড়ে সস্থলপথে পলায়ন করেছিলেন, কিন্তু পত্র পাটলিকে ক্রোড়পথ ক'রে মায়া-পাদকীয় ভর দিয়ে নভোমাগ্যে উড্ডীন হয়েছিলেন। কৃষ্ণাজনে সব সব নগরীতে প্ৰস্থান করেছিলেন; পত্র কিন্তু তাঁর মায়া-যান্টির সাহায্যে যো-পরী আকাশে নির্মাণ করেছিলেন, সেই পােরী ভূমিষ্ঠ হয়ে পাটলিপত্র নাম ধারণ করে। বৈজ্ঞানিকেরা কিন্তু জাদিতে বিশ্ববাস করেন না। সতরাং বৈজ্ঞানিক মতে পাটলিপত্রিকে খনন করা অবশ্যকতব্য হয়ে পড়েছিল, এবং সে কতব্যও সম্প্রতি কাযে। পরিণত করা হয়েছে। খোঁড়া জিনিসটের ভিতর একটা বিপদ আছে, কেননা কোনো কোনো স্থলে কোঁচো খড়তে সাপ বেরোয়। এ ক্ষেত্রে হয়েছেও তাই। ডক্টর সপনার নামক জনৈক প্রত্নতত্ত্বের কতা-ব্যক্তি এই ভূমধ্য-রাজধানী খনন করে আবিস্কার করেছেন যে, এ দেশের মাটি খড়লে দেখা যায় যে তার নীচে Ꮼ Ꭴ