পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

we)bዖ প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ টকুকেই সমগ্র সত্য বলে ভুল করেন। সত্যভ্রষ্ট হলে বিজ্ঞানও হয় না। আর্টও হয় না। কিন্তু বিজ্ঞানের সত্য এক, আর্টের সত্য অপর। কোনো সন্দেরীর দৈঘ্য প্রাপথ এবং ওজনও যেমন এক হিসাবে সত্য, তার সৌন্দযও তেমনি আর-এক হিসাবে সত্য। কিন্তু সৌন্দৰ্য নামক সত্যটি তেমন ধরাছোঁয়ার মতো পদাৰ্থ নয় বলে সে সম্প্রবন্ধে কোনোরাপ অকাট্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দেওয়া যায় না। এই সত্যটি আমরা মনে রাখলে নব্য শিল্পীর কৃশাঙ্গী মানসী কন্যাদের ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেবার জন্য অত ব্যগ্ৰ হতুম না এবং চিত্রের ঘোড়া ঠিক ঘোড়ার মতো নয়, এ আপত্তিও উত্থাপন করতুম না। এ কথা বলার অর্থ- তার অস্থিসংস্থান, পেশীর বন্ধন প্রভৃতি প্রকৃত ঘোড়ার অন্যরােপ নয়। অ্যানাটমি অর্থাৎ অস্থিবিদ্যার সাহায্যে দেখানো যেতে পারে যে, চিত্রের ঘোটক গঠনে ঠিক আমাদের শকটবাহী ঘোটকের সহোদর নয় এবং উভয়কে একত্রে জড়িতে জোতা যায় না। এ সম্পবন্ধে আমার প্রথম বক্তব্য এই যে, অস্থিবিদ্যা কভকালের জ্ঞানের উপর নিভাির করে, প্রত্যক্ষ জ্ঞানের উপর নয়। কৎকালের সঙ্গে সাধারণ লোকের চাক্ষষ পরিচয় নেই ; কারণ দেহতাত্ত্বিকের জ্ঞাননেত্ৰে যাই হোক, আমাদের চোখে প্রাণীজগৎ কওকালসার নয়। সতরাং দলটিজগৎকে অদন্টের কম্পিট পাথরে কষে নেওয়াতে পান্ডিত্যের পরিচয় দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু রপজ্ঞানের পরিচয় দেওয়া হয় না। দ্বিতীয় কথা এই যে, কি মানষে কি পাশ, জীবমাত্রেরই দেহযন্ত্রগঠনের একমাত্র কারণ হচ্ছে উক্ত যন্ত্রের সাহায্যে কতকগলি ব্রুিয়া সম্পাদন করা। গঠন যে ক্লিয়াসাপেক্ষ, এই হচ্ছে দেহবিজ্ঞানের মািল তত্ত্ব। ঘোড়ার দেহের বিশেষ গঠনের কারণ হচ্ছে, ঘোড়া তুরঙ্গম। যে ঘোড়া দৌড়বে না। তার অ্যানাটমি ঠিক জীবন্ত ঘোড়ার মতো হবার কোনো বৈধ কারণ নেই। পাটস্থ ঘোড়া যে তটস্থ, এ বিষয়ে বোধ হয় কোনো মতভেদ নেই। চিত্ৰাপিত অশেবর অ্যানাটমি ঠিক চড়বার কিংবা হাঁকাবার ঘোড়ার অন্যরাপ করাতেই বস্তুজ্ঞানের অভাবের পরিচয় দেওয়া হয়। চলৎশক্তিরহিত আশব, অর্থাৎ যাকে চাবকে মারলে ছিাড়বে। কিন্তু নড়বে না। এহেন ঘোটক, অর্থহীন অনাকরণের প্রসাদেই জীব ৩ ঘোটকের অবিকল আকার ধারণ করে চিত্ৰকমে জন্মলাভ করে। এই পঞ্চভূতাত্মক পরিদশ্যমান জগতের অন্তরে একটি মানসপ্ৰসত দশ্যজগৎ সন্টি করাই চিত্রকলার উদ্দেশ্য, সতরাং এ উভয়ের রচনার নিয়মের বৈচিত্র্য থাকা অবশ্যম্ভাবী। তথাকথিত নব্যচিত্র যে নির্দোষ কিংবা নিভুল, এমন কথা আমি বলি না। যে বিদ্যা কাল জন্মগ্রহণ করেছে, আজ যে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গসকল সম্পণে আত্মবশে আসবে, এরপ আশা করাও ব্যথা। শিল্প হিসাবে তার নানা এটি থাকা কিছই আশচয্যের বিষয় নয়। কোথায় কলার নিয়মের ব্যভিচার ঘটছে, সমালোচকদের তাই দেখিয়ে দেওয়া কর্তব্য। অস্থি নয় বপের সংস্থানে, পেশী নয় রেখার বন্ধনে, যেখানে অসংগতি এবং শিথিলতা দেখা যায়, সেই স্থলেই সমালোচনার সার্থকতা আছে। অব্যবসায়ীর অযথা নিন্দায় চিত্রশিল্পীদের মনে শােধ বিদ্রোহীভাবের উদ্রেক করে, এবং ফলে তাঁরা নিজেদের দোষগলিকেই গণেন্দ্রমে বকে অাঁকড়ে ধরে রাখতে চান। আমার আলোচ্য বিষয় হচ্ছে সাহিত্য, চিত্র নয়। যেহেতু এ যাগের সাহিত্য চিত্রসন্নাথ হয়ে উঠেছে, সেই কারণেই চিত্রকলার বিষয় উল্লেখ করতে বাধ্য হয়েছি।