পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফালগন 8 YS ওঠে। তখন দেখতে মনে হয়, অপশ্য শত্রর নিমািম আলিঙ্গন হতে আত্মরক্ষা সোল্লাসে অগিনপ্রবেশ করছেন। R এ দেশে ঋতুর গমনাগমনটি অলক্ষিত হলেও তার পণাবতারটি ইতিপবে আমাদের নয়নগোচর হত। কিন্তু আজ যে ফালগন মাসের পনেরো তারিখ, এ ”সখিবর পজি না দেখলে জানতে পেতুম না। চোখের সমখে যা দেখছি তা বসন্তের চেহারা নয়, একটা মিশ্রঋতুর-শীত ও বর্ষার-যগলমতি । আর এদের পরস্পরের মধ্যে পালায়-পালায় চলছে সন্ধি ও বিগ্রহ। আমাদের এই গ্রীষ্মমপ্রধান দেশেও শীত ও বিষার দাম্পত্যবন্ধন এ ভাবে চিরস্থায়ী হওয়াটা আমার মতে মোটেই ইচ্ছনীয নয়। কেননা, এ হেন অসবৰ্ণ-বিবাহের ফলে শািন্ধ সংকীর্ণবৰ্ণ দিবানিশার জন্ম হবে। এই ব্যাপার দেখে আমার মনে ভয় হয় যে, হয়তো বসন্ত ঋতুর খাতা থেকে নাম কাটিয়ে চিরদিনের মতো এ দেশ থেকে সরে পড়ল। এ পথিবীটি অতিশয় প্রাচীন হয়ে পড়েছে; হয়তো সেই কারণে বসন্ত এটিকে ত্যাগ করে এই বিশেবর এমন-কোনো নবীন পথিবীতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন যেখানে ফলের গন্ধে পত্রের বণে পাখির গানে বায়ার সােপশে আজও নরনারীর হৃদয় আনন্দে আকুল হয়ে ওঠে। আমরা আমাদের জীবনটা এমন দৈনিক করে তুলেছি যে, ঋতুর কথা দরে যাক, মাস-পক্ষের বিভাগটারও আমাদের কাছে কোনো প্ৰভেদ নেই। আমাদের কাছে শীতের দিনও কাজের দিন, বসন্তের দিনও তাই ; এবং অমাবস্যাও ঘািমবার রাত, পণিমাও তাই। যে জাত মনের আপিস কামাই করতে জানে না, তার কাছে বসন্তের অস্তিত্বের কোনো অৰ্থ নেই, কোনো সাৰ্থকতা নেই- বরং ও একটা অনর্থেরই মধ্যে; কেননা, ও-ঋতুর ধামই হচ্ছে মানষের মন-ভোলানো, তার কাজভোলানো। আর আমরা সব ভুলতে সব ছাড়তে রাজি আছি, এক কাজ ছাড়া; কেননা, অৰ্থ যদি কোথায়ও থাকে তো ঐ কাজেই আছে। বসন্তে প্রকৃতিসন্দরী নেপথ্যবিধান করেন; সে সাজগোজ দেখবার যদি কোনো চোখ না থাকে তা হলে কার জন্যই-বা নবীন পাতার রঙিন শাড়ি পরা, কার জন্যই-বা ফলের অলংকার ধারণ, আর কার জন্যই-বা তরণ আলোর অরণ্য হাসি হাসা ? তার চাইতে চোখের জল ফেলা ভালো। অর্থাৎ এ অবস্থায় শীতের পাশে বিষাই মানায় ভালো। শনিতে পাই, কোনো ইউরোপীয় দাশনিক আবিস্কার করেছেন যে, মানবসভ্যতার তিনটি স্তর আছে। প্রথম আসে শ্রীতির যােগ, তার পর দর্শনের, তার পর বিজ্ঞানের। এ কথা যদি সত্য হয় তো আমরা বাঙালিরা, আর-যেখানেই থাকি, মধ্যযাগে নেই; আমাদের বতর্তমান অবস্থা হয় সভ্যতার প্রথম-অবস্থা, নয়। শেষঅবস্থা। আমাদের এ যােগ যে দর্শনের যােগ নয়। তার প্রমাণ, আমরা চোখে কিছই দেখি নে; কিন্তু হয় সবই জানি, নয়। সবই শনি। এ অবস্থায় প্রকৃতি যে KON