পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বস্তুতন্ত্রতা বস্তু কি Vyn যে বস্তু জগতে নেই, সে বস্তু যদি কোনো কাব্যে না থাকে তা হলে সে কাব্যের বিশেষ কোনো দোষ দেওয়া যায় না, কেননা এই জগৎই হচ্ছে সাহিত্যের অবলম্ববন। ܓ বস্তুতন্ত্ৰতা আত্মপরিচয় না দিলেও তার পরিচয় নেওয়াটা আবশ্যক; কেননা এ বাক্যটির দাবি মস্ত। বস্তুতন্ত্রতা একাধারে সকল সাহিত্যের মাপকাঠি ও শাসনদন্ড, সতরাং সাহিত্যসমাজে এর প্রচলন বিনা বিচারে গ্রাহ্য করা যায় না। এ বাকাটি বাংলা সাহিত্যে পাবে ছিল না। সতরাং এই অপরিচিত আগন্তুক শব্দটির কুলশীলের সন্ধান নেওয়া আবশ্যক। এ বাক্যটি সংস্কৃত অলংকারশাস্ত্রে নেই, দর্শনশাস্ত্ৰে আছে। কাব্যে ও দর্শনে যোগাযোগ থাকলেও এ দটি যে পথিক জাতীয় সাহিত্য, এ সত্য তো সব লোকবিদিত। দার্শনিকমাত্রেই নাম-রাপের বাঁহভূত দটি-একটি ধ্রুব সত্যের সন্ধানে ফেরেন; অপর পক্ষে নাম-রােপ নিয়েই কবিদের কারবার। সতরাং দার্শনিক পরিভাষার সাহায্যে কাব্যের রােপগণের পরিচয় দেবার চোেটা সকল সময়ে নিরাপদ নয়। তবে শংকরের বস্তুতন্ত্রতা কাব্য) ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে আমার বিশেষ কোনো অ্যাপটিও নেই। শংকরের মতে জ্ঞান কেবল বস্তুতন্ত্র, অর্থাৎ জ্ঞান প্রমাণ-জন্য; প্রমাণ আবার বস্তুর সাবরােপ অবলম্বন করিযই জন্মে, অতএব জ্ঞান ইচছানসারে করা না-করা এবং অন্যথা করা যায় না। শংকর একটি উদাহরণ দিয়ে ‘’ ৷ মত পার্ট করে বঝিয়ে দিয়েছেন। সেটি પરે-- t হে গৈতম! পরিষেও অগিন, সত্ৰীও অগিন ইত্যাদি শ্রুতিতে যে সত্ৰী-পাবষে বহ্নিবন্ধি উৎপাদনা করিবাব বিধান আছে, তাহা মনঃসাধ্য অর্থাৎ তাহা মনের অধীন, পরিষের অধীন এবং শাস্ত্রীয় আজ্ঞাবাক্যেরও অধীন। কিন্তু প্ৰসিদ্ধ অগিনিতে যে “অগিনিবন্ধি, তাহা না পর্যায্যের অধীন, না শাস্ত্রীয় আজ্ঞাবাক্যের অধীন। অতএব জ্ঞান প্রত্যক্ষ-বিষয় বস্তুতন্ত্র । সাহিত্যে বস্তুতন্ত্রতার অর্থ যদি প্রত্যক্ষ বস্তুর স্বরপজ্ঞান হয়, তা হলে এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, বস্তুতন্ত্রতার অভাবে দশন হতে পারে। কিন্তু কাব্য হয় না। যদি বর্ণনার গণে কোনো কবির হতে বেল কুল হয়ে দাঁড়ায়, তা হলে যে তাঁর বেলকুল ভুল হয় সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। রাধাকমলবাব। অবশ্য যন্দভটং তাল্লিখিতং অর্থে ও-বাক্য ব্যবহার করেন না; কেননা যে কবির হাতে বাংলার মাটি এবং বাংলার জল পরিচ্ছিন্ন মতি লাভ করেছে তাঁর কাব্যে যে পাবোত্ত হিসেবে বস্তুতন্ত্রতা নেই, এ কথা কোনো সমালোচক সজ্ঞানে বলতে পারবেন না। দেশের রাপের সম্পবন্ধে যিনি দেশসদ্ধ লোকের চোখ ফাটিয়ে দিয়েছেন তাঁর যে প্রত্যক্ষ বস্তুর স্বরপজ্ঞান নেই, এ কথা চোখের মাথা না খেয়ে বলা চলে না। শংকরের বস্তৃতািত্রতাকে যদি কোনো বিশেষণে বিশিষ্ট করতে হয়, তা হলে সেটির আনি ৩্যবস্তুত ব্ৰতা সংজ্ঞা দিতে হয়। কেননা ‘প্ৰসিদ্ধ আপিন' ইত্যািদ যে অনিত্য