পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বস্তুতন্ত্রতা বস্তু কি VC: ভাবের বীজ হাওয়ায় ওড়ে এবং সকল দেশেই অনাকােল মনের ভিতর সমান অঙ্কুরিত হয়। সতরাং বাংলা সাহিত্যে লিলি ফটলে অতিকে ওঠবার কোনো কারণ নেই। রাধাকমলবাব বলেছেন জাতীয় মনের ক্ষেত্ৰ হইতেই কবির মন রস সম্প্রচয় করে। যদি এ কথা সত্য হয় তা হলে যদি কোনো কাব্য শক্ষিক কাঠ মাত্র হয় তা হলে তার জন্য কবি দায়ী নন, দায়ী হচ্ছে সামাজিক মন। জাতীয় মন যদি নীরস হয় তা হলে কাব্য কোথা হতে রস সর্ণয় করবে ? উপমান্তরে দেশমাতার সন্তানে যদি দগধ না থাকে তা হলে তাঁর কবিপত্রকে যে পেচোয় পাবে তাতে আর আশচযা কি। কিন্তু রাধাকমলবাবর এ মত সম্পপণ্য সত্য নয়। কবির মনের সঙ্গে জাতীয় মনের যোগাযোগ থাকলেও কবিপ্রতিভা সামাজিক মনের সম্পৰ্ণে অধীন নয়। রাধাকমলবাব উদ্ভিদজগৎ হতে যে উপমা দিয়েছেন, ইউরোপে ঘোর মেটিরিয়ালিজমের যাগে ঐ উপমাটি জড়জগৎ ও মনোজগতের মধ্যে যোগসাধনের সেতুস্বরাপ ব্যবহত হত। মাটি জল আলো ও বাতাস প্রভাতির যোগাযোগে জীব সন্ট হয়েছে এবং জীবের পারিপাশিবকে অবস্থার ফলে তার মনের সন্টি হয়েছে, এই বিশ্ববাসবশতই ইউরোপের একদল বস্তুতান্ত্রিক-দার্শনিক ধম কাব্য আর্ট নীতি প্রভাতি আধ্যাত্মিক ব্যাপারসিকলের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করেছিলেন। বলা বাহাল্য, ওরােপ ব্যাখ্যায় পারিপাশিবক অবস্থারই বর্ণনা করা হয়েছিল, কাব্য প্রভাতির বিশেষধমের কোনো পরিচয় দেওয়া হয় নি। দার্শনিক ভাষায় বলতে গেলে, তাঁরা কাব্যের উপাদান-কারণকে তার নিমিত্ত-কারণ বলে ভাল করেন। তাঁরা বাহ্যশক্তিতে বিশ্ববাস করতেন, আত্মশক্তিতে বিশ্ববাস করতেন না ; সতরাং তাঁদের মতে কবির আত্মশক্তি নয়, পারিপাশিবকে সমাজের বাহ্যশক্তিই কাব্যের উৎপত্তির কারণ বলে স্থিরীকৃত হয়েছিল। কবিতার জন্ম ও কবির জন্মবত্তান্ত যে সর্বতন্ত্র, এই সত্য উপেক্ষা করবার দরবন সাহিত্যতত্ত্ব সমাজতত্ত্বের অন্তভূত হয়ে পড়েছিল। রাধাকমলবাবার বস্তুতন্ত্রতা ইউরোপের গত শতাব্দীর মেটিরিয়ালিজমের অস্পষ্ট अउक्षदान दछे आद्ध किछद नक्ष। আসল কথা এই যে, প্রতি কবির মন এক-একটি স্বতন্ত্র রসের উৎস। কবির কাব্য হচেছ সামাজিক মনকে সরস করা। কবির মনের সঙ্গে অবশ্য সামাজিক মনের আদান-প্রদানের সম্পপক আছে। কবি কিন্তু সমাজের নিকট হতে যা গ্ৰহণ করেন সমাজকে তার চাইতে ঢের বেশি দান করেন। যদি কেউ প্রশন করেন যে, কবি এই অতিরিন্ত রস কোথা হতে সংগ্রহ করেন ? তার উত্তরে আমরা বলব, আধ্যাত্মিক জগৎ হতে; সে জগৎ অবাস্তবও নয় এবং তা কোনো পরম ব্যোমোতেও অবস্থিতি করে না। সে জগৎ আমাদের সত্তার মলে ও ফলে সমান বিদ্যমান। কারণ আত্মা হচ্ছে সেই বস্তু শ্রোত্ৰস্য শ্রোত্ৰং মনসো মনো যদি বাচো হা বাচমত। স উ প্রাণস্য প্রাণঃ... ৷ রামানজ বলেন, আমরা বদ্ধমন্ত জীব। আমাদের মন যে অংশে এবং যে পরিমাণে