δ. Ο প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ সাহিত্য তাহার স্বাভাবিক বিকাশের সংযোগ আবার হারাইয়া বসিল। এই ইংরেজিনবিশ লেখকদিগের হস্তে বঙ্গ ভাষা এক নতন মাতি ধারণ করিল। সংস্কৃতের অন্যবাদ। যেমন পন্ডিতদিগের মতে সাধভাষা বলিয়া গণ্য হইত, ইংরেজির কথায় কথায় অনাবাদ তেমনি শিক্ষিত সম্প্রদায়ের নিকট সাধভাষা বলিয়া গণ্য হইল। এই অনাবাদের ফলে এমন বহ শব্দের সন্টি করা হইল যাহা বাঙালির মখেও নাই এবং সংস্কৃত অভিধানেও নাই। এবং এই-সকল কািটকালিপিত পদই এখন বঙ্গ সাহিত্যের প্রধান সম্পবেল। নিতান্ত দঃখের বিষয় এই যে, এই-সকল নব্ব শব্দ গড়িবার কোনোই আবশ্যকতা ছিল না। সংস্কৃত দর্শনে বিজ্ঞানে কাব্যে অলংকারে যথেস্ট শব্দ আছে, যাহার সাহায্যে আমরা আমাদিগের নবিশিক্ষালব্ধ সকল মনোভাব বঙ্গ ভাষার জাতি ও প্রকৃতি রক্ষা করিয়া অনায়াসে ব্যক্তি করতে পারি। আমরা তথাকথিত সাধভাষার বিরোধী, কেননা আমাদের বিশবাসী বঙ্গ ভাষা ব্রাত্য-সংস্কৃতিও নাহ, শাপভ্রংটি ইংরেজি ও নহে। এই কারণে আমরা মৌখিক ভাষাকে সাহিত্যে প্রতিঠিত করিতে চাই, কারণ সে ভাষা সহজ সরল সঠিাম এবং সস্পেস্ট। সতরাং আমাদের এ চোেটা যে মাতৃভাষার বিরুদ্ধে বিদ্রোহমলক, এ অভিযোগের কোনোর প। বৈধ কারণ নাই। যদি কেহ বলেন যে ‘মহাজনো যেন গতঃ স পন্থাঃ', সতরাং সে পথ অনসরণ না করা ধন্টতামাত্র, তাহার উত্তরে আমরা বলিব, বঙ্গ সাহিত্যের মহাজনেরা যােগভেদ এবং শিক্ষাভেদ অননুসারে নানা বিভিন্ন পথের পথিক। দর্শনের ন্যায় সাহিত্য ক্ষেত্রেও মাগভেদ আছে ; আমাদের পর্ববতীর্ণ মহাজনেরা এই ভাষা লইয়া এক্সপেরিমেন্ট করিয়াছেন ; সতরাং নিতেন এক্সপেরিমেন্ট করিবার অধিকার আমাদের আছে। গদাসাহিত্যের বয়স এখন সবে একশো বৎসর, কাজেই তাহার পরীক্ষার বয়স আজও পার হয় নাই। টোলের ও কলেজের বাহিরে যে ভাষা মাখে মনখে চলিতেছে, সে ভাষার অন্তরে কতটা শক্তি আছে সে পরীক্ষা আজ পর্যন্ত করা হয় নাই। আমরা সেই পরীক্ষা করিতে চাই। লোকে বলে, যখন প্রাক-ব্রিটিশ যাগে গদ্য ছিল না। তখন গত শতাব্দীর গদ্যই আমাদের একমাত্র আদশ। আমরা নিত্য যে ভাষায় কথাবাতা কই তাহারই নাম যে গদ্য, এ সত্য মোলিয়ে মোম নাটকের নিরক্ষার ধনী বণিকের জানা ছিল না, কিন্তু আমাদের আছে। সাহিত্যে সেই সনাতন আদশই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। আমি ভাষা সম্পবন্ধে এত কথা বলিলাম। তাহার কারণ, এইরাপ সভাসমিতিতে সাহিত্যের যাহা সাধারণ সম্পপত্তি তাহার আলোচনা এবং তাহার বিচার হওয়াই 35
