SBS তাহার সমর্থক । তিনি এক দিকে ব্যবস্থাপক সভাগুলিতে কংগ্রেসের সদস্যদের দ্বারা যে-যে কাজ হইতে পারে, তাহা হইতে স্বাধীনতা প্রচেষ্টার যে সুবিধা হইতে পারে এবং সাধারণ লোকদের অবস্থার যে উন্নতি হইতে পারে, তাহার সপক্ষে, অন্য দিকে তিনি জনগণকে—বিশেষতঃ কৃষক ও কারখানার শ্রমিকদিগকে, কংগ্রেসের নেতৃত্বে ও কংগ্রেসের পতাকাতলে সংঘবদ্ধ করিয়া স্বাধীনতাপ্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করিবার পক্ষে । যে-উদ্দেশ্বে এক জন মুসলমানকে এবার সভাপতি করিবার কথা উঠিয়াছে, তাহার সহিত সুভাষবাবুর সম্পূর্ণ সহানুভূতি আছে । তিনি বুঝেন, মুসলমানেরা কংগ্রেসে যোগ দিলে কংগ্রেসের শক্তি ও ফললাভসামর্থ্য বাড়িবে। আমরাও ইহা বুঝি। মুসলমানদের সম্বন্ধে তাহার মনের ভাব দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের মত। ভারতবর্ষের অন্ত যে-কোন প্রদেশের চেয়ে বঙ্গে মুসলমানের সংখ্যা বেশী এবং তাহারা এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ । সুতরাং সুভাষবাবু, অন্য যে-কোন কংগ্রেসী বাঙালীর মত, মুসলমানদিগকে কংগ্রেসের মধ্যে আনা সম্বন্ধে উদাসীন হইতে পারেন না, বরং বিশেষ আগ্ৰহান্বিত। স্বতরাং কোন মুসলমানকে সভাপতি করিলে মুসলমানদিগকে কংগ্রেসে আনিবার চেষ্টা যেরূপ হইবে, স্বভাষবাবুকে করিলে সেরূপ হইবে না, ইহা মনে করা ভুল। মুসলমানদিগকে কংগ্রেসে আনিতে হইলে বহু মুসলমান কৰ্ম্মার আবশ্বক, এক জন মুসলমানকে সভাপতি করিলেই কাৰ্য্য উদ্ধার হইয়া যাইবে, এরূপ ধারণা ভ্রান্ত । মুসলমানদিগকে কংগ্রেসে আনা সম্বন্ধে আগ্রহান্বিত কংগ্রেসনেতা মাত্রেই মুসলমান কৰ্ম্মী সংগ্রহের চেষ্টা করিতে পারিবেন–র্তাহার ধৰ্ম্মমত যাহাই হউক । ইহাও মনে রাখিতে হইবে, যে, কংগ্রেসের বিশেষ কোন একটি কৰ্ত্তব্যের উপরই দৃষ্টি রাখিয়া সভাপতি নিৰ্ব্বাচন করা সমীচীন নহে। কোন অধিবেশনে আলোচ্য বিবেচ্য ও নিৰ্দ্ধারণীয় সমুদয় বিষয় বিবেচনা করিয়া উপযুক্ত সভাপতি নিৰ্ব্বাচন করিতে হইবে। এইরূপ বিবেচনা করিলে বুঝা বাইবে, যে, কংগ্রেসের আগামী অধিবেশনের জন্য স্বভাষ বাবুকে সভাপতি নিৰ্ব্বাচন করাই সমীচীন। বলা হইয়াছে, গত কয়েক বৎসরের মধ্যে কোন মুসলমানকে সভাপতি করা হয় নাই। কিন্তু শুধু এরূপ কারণে কাহাকেও সভাপতি করা যাইতে পারে না। তাহ যদি করা হয়, তাহ হইলে ত বলা যাইতে পারে, কোন বাঙালীকে তাহ অপেক্ষাও অধিক বৎসর সভাপতি করা হয় নাই। এমন কোন কোন ভাষিক প্রদেশ আছে, যাহা হইতে এ পর্যন্ত কোন বৎসরই কেহ সভাপতি নিৰ্ব্বাচিত হন নাই। এক-একটি সম্প্রদায়ের দাবী যদি এইরূপে বিবেচনা করিতে হয়, তাহ হইলে শিখ ও ভারতীয় খ্ৰীষ্টিয়ানদের কথা উঠে না কেন ? যাহারা এক জন মুসলমানকে এবার সভাপতি করিতে চান, তাহার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ সাহেবের নাম করিয়াছেন । মৌলানা সাহেবের যোগ্যতার এবং কংগ্রেসের জন্ত তিনি যাহা করিয়াছেন তাহার বিরুদ্ধে আমাদের কিছুই বলিবার নাই । কিন্তু ইহা মনে রাখিতে হইবে, যে তিনি ১৯২৩ সালে দিল্লীর বিশেষ অধিবেশনে সভাপতি নিৰ্ব্বাচিত হইয়া কাজ করিয়াছিলেন, এবং ১৯৩০ সালে তিনি আবার কার্য্যকারী ( Acting ) সভাপতি নিৰ্ব্বাচিত হইয়াছিলেন, কিন্তু স্বভাষ বাবুর মত যোগ লোককে একবারও নিৰ্ব্বাচন করা হয় নাই । পদ্ম ও ‘ত্র)’ সরকারী লোকেরা ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকের কয়েক জনে মিলিয়া পদ্ম ও "শ্র" সম্বন্ধে বিচার করিবেন। তর্কের জের মিটিতেছে না। পদ্ম যে আলঙ্কারিক ভাবে মসজিদগাত্রেও ব্যবহৃত হয়, তাহ মুসলমানেরাও জানেন। কোন মসজিদের কোন অংশের ছবি দিয় তাহা বুঝান অনাবশ্যক । ‘শ্রী’ শব্দটি যে কোন কোন মুসলমান বাদশাহ নিজ নিজ নামের পূৰ্ব্বে ব্যবহার করিতেন, তাহাও স্ববিদিত । ঐতিহাসিক তথ্য। তাহদের মুদ্রাতে উহা দৃষ্ট হয়। পৌত্তলিকতা নাশ যাহাদের উদেশ্ব ছিল, এমন কোন কোন বাদশাহও ইহা করিয়াছিলেন । NETEG ( Numismatics) সম্বন্ধীয় বহিতে সেই সব মুদ্রার ছবি আছে। তাহ অবশু সাধারণতঃ শিক্ষিত লোকদের নিকটও থাকে না, ভাল ভাল লাইব্রেরীতে আছে। এই প্রকারের কিছু ছবি ২৫শে সেপ্টেম্বর প্রকাশিত অক্টোবর মাসের মডার্ণ রিভিয়ুতে শ্ৰীযুক্ত বাহাদুর সিং সিংঘী মহাশয়ের প্রবন্ধটিতে দেওয়া হইয়াছে। এখানে পুনমুদ্রণ অনাবশুক । হিন্দুরা পদ্মফুলের পূজা করেন না, তাহার ছবিরও পূজা করেন না। "শ্ৰী” শব্দটিরও পূজা করেন না। পদ্মফুলের ছবি ও “গ্র” শব্দটি একত্র করিয়াও উভয়ের পূজা করেন না। পদ্মফুল ও “শ্ৰী”র একত্র সমাবেশ কোন দেবতার পূজা বুঝাইবার জন্য করা হয় নাই। তাহা হইলে যে মুসলমান ভাইস-চ্যান্সেলরের আমলে এই চিহ্নটি অনুমোদিত হয়, তিনি ইহাতে আপত্তি করিতেন । কিন্তু তিনি তাহ করেন নাই । বিশ্ববিদ্যালয়ের যাহা উদ্দেশ্য, শুচিতা ও শ্ৰী লাভ, তাহাই পদ্মফুলের মধ্যে “শ্রী” চিহ্নের দ্যোতন । মুসলমানরা একেশ্বরবাদী, অতএব তাহারা পদ্ম ও "" ব্যবহার করিলে পৌত্তলিক ভাবে করেন না, ধৰ্ম্মসংশ্লিষ্টভাবে
