পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S38 রাজশাহী কলেজের ব্যাপার রাজশাহী কলেজের ব্যাপারটা আগাগোড়াই শোচনীয় ও লজ্জাকর । ভারতবর্ষে সকল ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের লোকেরা একত্র জীবনযাপন করুন, ইহা আমরা কাহারও চেয়ে কম চাই না। কিন্তু যত দিন ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্মের লোকদের খাদ্যাথাদ্য ও ধৰ্ম্মানুষ্ঠান বিবাদের কারণ থাকিবে, তত দিন যাহা বাস্তব অবস্থা তাহা মানিয়া লইয়া তদনুরূপ বন্দোবস্তের দ্বারা শাস্তিরক্ষা করাই শ্ৰেয় । হিন্দুদের জন্য অভিপ্রেত ছাত্রাবাসে দুটি মুসলমান ছেলেকে না রাথিয়া সহজেই অন্যত্র রাখা যাইত । তাহাদিগকে হিন্দুদের জন্য অভিপ্রেত ছাত্রাবাসে রাখিবার জিদ না করিলে অপ্রীতিকর কিছু ঘটিত না। খবরের কাগজে প্রকাশিত শিক্ষামন্ত্রীর টেলিগ্রাম দুটি হইতে দেখা যায়, যে, তিনি র্তাহার পদোচিত নিরপেক্ষতা ভুলিয়া গিয়া আগে হইতেই মুসলমান ছাত্রদের পক্ষ অবলম্বন করিয়াছিলেন এবং কলেজ বন্ধ করিবার হুকুম প্রকাশিত হইবার দুই দিন 蠶 তাহাদিগকে জানাইয়াছিলেন যে কলেজ বন্ধ কর। व ! ত্রযুক্ত শরৎচন্দ্র বস্থ ও শ্রীযুক্ত প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজশাহী গিঞ্জ উভয় পক্ষের ও উভয় সম্প্রদায়ের নেতাদের কথা শুনিয়া যেরূপ মীমাংসা করিবেন, তদনুসারে কাজ হইবে, এইরূপ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ্যভাবে দিয়া পরে শিক্ষামন্ত্রী ভিগবাজী খাইয়। অন্তরূপ কথা বলায় শরৎবাবু ও প্রমথ বাবু রাজশাহী যান নাই, গবন্মেণ্ট অর্থাৎ শিক্ষামন্ত্রী একটা খামখেয়ালী হুকুম দিয়াছেন। হিন্দু ছাত্রদের জন্য অভিপ্রেত এটা ব্লকের মধ্যে ১টা মুসলমানদের জন্য লওয়া হইয়াছে, তাহাদের যে ব্লক আগে হইতে ছিল,তাহাও তাহাদের রহিল। হুকুম হইয়াছে যে যে-সব ছাত্র হষ্টেলে থাকিবে তাহাদিগকে এই বন্দোবস্তে ও গবন্মেন্টের ভবিষ্যৎ যে-কোন বন্দোবস্তে স্বীকৃতি লিখিয়া দিতে হইবে। ফলে, যদিও কলেজ খোলা হইয়াছে, তথাপি একটিও হিন্দু ছাত্র হষ্টেলে যায় নাই। তাহারা যে পূৰ্ব্বোক্ত স্বীকৃতিরূপ দাসখত লিথিয়া দেয় নাই, ভালই করিয়াছে। তাহারা শ্ৰীযুক্ত কিশোরী মোহন চৌধুরী মহাশয়ের তত্ত্বাবধানে একটি ভাড়াটিয়া বাড়ীতে বাস করিতেছে। হিন্দু ও মুসলমান হষ্টেলগুলি গবন্মেন্টের টাকায় নিৰ্ম্মিত হইয়া থাকিলেও উহাদের নাম সরকারী কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেণ্ডারে হিন্দু ও মুসলমান ব্লক বলিয়াই উল্লিখিত আছে। গবন্মেণ্ট টাকা দিয়াছেন বলিয়াই কি যা খুনী তাই করিতে পারেন ? কলিকাতার বেকার হটেলে হিন্দু ছাত্র এবং ঈডেন হিন্দু হষ্টেলে মুসলমান ছাত্র রাথিতে পারেন ? গবন্মেণ্ট যে টাকা দিয়াছেন, তাহ বঙ্গের রাজস্ব প্রবণসী ՏՀԶB3 হইতে, এবং বঙ্গের রাজস্বের টাকার বার আনা হিন্দুর দেওয়া। আজ না-হয় গবন্মেন্টের অনুগ্রহে শিক্ষামন্ত্রী দু-দিনের জন্য কিছু ক্ষমতা পাইয়াছেন। তাহাতে তাহার মত বুদ্ধিমান লোকের মাথা খারাপ হওয়া উচিত হয় নাই। হিন্দুরা টাকা দিয়াছিলেন বলিয়াই রাজশাহী কলেজ, হইয়াছিল ! কলেজ না-হইলে হষ্টেলের দরকার হইত . হষ্টেলও হইত না । হিন্দুরা দেখিয়া শিখুন। তাহাদিগকে সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণতার বশবৰ্ত্তী হইয়া কাজ করিতে। বলিতেছি না। তাহারা অর্থব্যয় করুন সকলের জন্য ; ি অতঃপর ক্ষমতা যেন নিজের হাতে রাখেন। ক্ষমতা ছা ি দিয়া, বাস্তবিক অনুগ্রহজীবী না হইয়াও, ভিখারীর লাইন কেন ভোগ করেন ?

  • আনন্দমঠ দাহন

যিনি ধে ধৰ্ম্মাবলম্বীই হউন না কেন, অন্যধৰ্ম্মাবলম্বীদের প্রতি বিদ্বেষপ্রণোদিত ব্যবহার তাহার অনুমোদিত হইবে ন। যদি তিনি বিবেচক ও প্রকৃত ধাৰ্ম্মিক হন। ‘আনন্দমঠ যে পোড়ান হইয়াছে, মুসলমানই তাহার অযৌক্তিকতা দেখাইয় প্রতিবাদ করায় মুসলমানের মনুষ্যত্বের সম্মান রক্ষিত হইয়াছে। কোন উপন্যাসে বা নাটকে এক সম্প্রদায়ের কোন কল্পিত লোক অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি অবজ্ঞা ও বিদ্বেধ। স্বচক কথা বলিলে, তাহার দ্বারা ঐ পুস্তক-বর্ণিত সমংে সাম্প্রদায়িক পারস্পরিক মনোভাব সূচিত হয়। এর মনোভাব নিন্দনীয়। কিন্তু যে পুস্তকে তাহ সূচিত হয়। সে জন্য তাহা পুড়াইয়া ফেলা অনুচিত । ইহুদীদের প্রতি কুবাক্য আছে বলিয়া শেক্সপিয়রের মার্চ্যাট অব ভনি দগ্ধ হয় নাই। বিস্তর ঐতিহাসিক বহিতে পর্যন্ত মুসলমান ধৰ্ম্মপ্ৰবৰ্ত্তক মোহম্মদের নিন্দ আছে। এই নিদার নি" হইয়াছে, কিন্তু সেই সকল পুস্তক দগ্ধ হয় নাই । - | মন্দির কলুষিত, মূৰ্ত্তি ভগ্ন হিন্দুদের মন্দির কলুষিত করিতেছে, দেবমূর্তি প্ৰ করিতেছে মুসলমাননামধারী গুণ্ডার, “আনন্দমঠ দানে প্রতিবাদকারী বিবেচক মুসলমানের মত কোন মুসলম" তাহা করেন নাই। গবর্ণর বা মুসলমান মন্ত্রীর যে এই গুণ্ডামির যথোচিত প্রতিকার করিতেছেন না, তা নিন্দনীয়। সিঙ্গুরে প্রসূতিভবন পরলোকগত স্বরেন্দ্রনাথ মল্লিক মহাশয়ের পত্নী 翠 a