পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ミ প্রবণসী SNつ85 আর কাশি সুরু হইতে-না-হইতে হাপানি । চিকিৎসা বিশেষ কিছু করানো হয় নাই, পাড়াগায়ে তেমন ডাক্তারই বা কোথায় ? অার ডাক্তারী চিকিৎসায় এ সনাতনরোগ সারিখে কেন ? মৃগাঙ্কের দিদিমা কোনও এক মহাপুরুষের নিকট একটি মাদুলি পাইয়া জীবনের শেষ কয়েকটা বংসর একটু স্বস্তিতে ছিলেন। মৃগাঙ্কেরও ইচ্ছা সেই মাদুলি একটি যোগাড় করা, কিন্তু সমস্লাভাবে এখনও তিনি গ্রাম ছাড়িয়া বাহির হইতে পারেন নাই । যাতায়াতের খরচ যোগাড় করাও কঠিন। তরিতরকারি, ধান, দুধ, কিছুই পয়সা দিয়া কিনিতে হয় না বলিয়, এখনও হাড়ি চড়ায় ব্যাঘাত হয় না, ন হইলে ত মাসের সাতটা দিন যাইতেন-যাইতেই নগদ পত্নস ঘরে একটিও থাকে না। যাহাই প্রয়োজন তাহ হয় ধান দিয়া কিনিতে হয়, নয় ধারে কিনিতে হয়। কিন্তু এ সকল ব্যবস্থা গ্রামের ভিতরেই চলে, গ্রামের বাহিরে চলে না। ধান কেহ লয় না, আর অচেনা মানুষকে ধারও কেহ দেয় না। উঠানের এক কোণে দরমার বেড়া আর টিনের সাহায্যে ছোট একখানি স্নানের ঘর তৈয়ারি হইয়াছে। কৰ্ত্তা এখন এখানেই স্নান করেন। খুব গরমের দিনে, খটখটে রৌদ্র থাকিলে পুকুরে স্বান করিতে যান। আজন্ম যাহাদের পুকুরে মান অভ্যাস তাহাদের এই তোলা জলে স্নান করিয়া একেবারে আরাম হয় না। কিন্তু রোগের ভয়ে ક્તને মৃগাঙ্ককে এই ব্যাপারটি মানিয়া লইতে হইয়াছে। ইহার পর থাইয়া কৰ্ম্মস্থানে যাওয়া। এতটা ইটিতেও এখন ভাল লাগে না। দু-একজন সাইকেলে যায়, কিন্তু বুড়াবয়সে ওসব অভ্যাস নূতন করিয়া অর্জন করাও শক্ত। কাজেই একটু সকাল সকাল বাহির হইয়া, আস্তে আস্তে হাটিয়াই তাহাকে যাইতে হয় । স্বান করিয়া মাথা মুছিতে মুছিতে মৃগাঙ্ক রান্নাঘরের দাওয়ায় উঠিয়া আসিলেন। বলিলেন, "ভাভ দte গে৷ ” প্রিয়বালা তাড়াতাড়ি বড় পিড়িখানা পাতিয়া ঠাই করিলেন, চুম্কি ঘটিতে এক ঘটি জল গড়াইয়া রাখিলেন। তাহার পর মন্তবড় কানা-উচু কাসার থালে ভাত বাড়িয়া দিলেন । ভাত, কড়াইয়ের ভাল, আলু বেগুন ভাতে, আর পোস্ত-চচ্চড়ি । মাছ সব দিন জুটে না, অন্ততঃ এত সকাল আসে না । - মৃগাঙ্ক থাইতে থাইতে বলিলেন, “বেশ ভূপড়ে গেল।” --صعیہ۔‘‘ প্রিয়বাল সিধুকে কোলে করিয়া সামনে আসিয়৷ বসিয়া তাহার দুঃখের কাহিনী সুরু করিলেন। তাহার একখানা র্যাপার না হইলে চলে না, সকালে উঠিয়া শীতে যেন হাত-পা পেটের ভিতর ঢুকিয় যাইতে চায়। ছেলেমেয়েগুলার ও গরম জামা ছিড়িয়া গিয়াছে, এ বছর আর উহাতে চলিবে না । মুগাঙ্ক বলিলেন,-“বুঝি ত সবই। কিন্তু পয়সা কোথা " প্রিয়বালা ঝঙ্কার দিয়া বলিলেন, “মাইন পেলেই মূল ক'রে কলকাতায় চালান দিবে ত পয়সা থাকবে কি ক'রে " মুগাঙ্ক বলিলেন,"সেটা বানের জলে ভেসে ত আসে নি? সেও সন্তান । তাকে খরচ দিতে হবে না ?” প্রিয়বালার তরকারি পুড়িয়া যাইতেছিল, তাই উত্তর না দিয়া তিনি তাড়াতাড়ি ফিরিয়া উনানের কাছে চলিয়৷ গেলেন। বলিতে গেলে অনেক কথাই বলিতে হয়। সস্তান কি সেই সতীনের বেটাই, আর প্রিয় ছেলেমেয়েরাই কি বানের জলে ভাসিয়া আসিয়াছে ? তৰে এমন ভিন্ন ব্যবস্থা কেন ? তিনি বিবির মত চেয়ারে বসিয়া পাসের পড়া পড়িবেন, জুতা মোজা পরিয়৷ २ऐश्वप्ने दग्लिश বেড়াইবেন, আর এগুলি দারুণ শীতের দিন বুকে হাটু দয়া কাটাইবে ? কেন শুনি ? অবস্থা মত ব্যবস্থা করিলেই ত হয়। ধাড়ী মেয়ে, বিবাহ দিলে এত দিনে ছেলের মা হইত। তাহার অত পড়ার সখ কেন ? সে কি খ্ৰীষ্টানের মেয়ে না ব্রাহ্মের মেয়ে ? তাহার মা ক’টা পাস দিয়াছিল ? যেমন অবস্থা তেমন দেখিয়া বিবাহ দিয়া দিলেই ত এ আপদ ঘাড় হইতে নামিয়া যায় ? মায়ের গহনাগাটি আছে, মামার অবস্থা ভাল, সেও কিছু সাহায্য করে। তা প্রিয়বালা বলিবেন কাকে ? ঘটে কি মানুষের বুদ্ধি কিছু আছে। মৃণালের কথা উঠিলে তাহার যেন দুই কান কাল হইয়৷ যা, কোনও কথাই আর সে শুনিতে পায় না। . মৃগাঙ্কমোহনের কালা সাজা ছাড়া উপায় কি ? এ-বিষয়ে প্রিয়বালার স্থত বাকুযুদ্ধ আরম্ভ হইলে একদিনে শেষ リー -