পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

تم عك ইহাদের কথাই বলিব । জগতের যে পথে সভ্য মানুষের চলাচল কম, কত অদ্ভূত জীবনধারার স্রোত আপন মনে উপলবিকীর্ণ অজানা নদীখাত দিয়া বিরঝির করিয়া বহিয়া চলে সে পথে, তাহদের সহিত পরিচয়ের স্মৃতি আজও ভুলিতে পারি নাই । 못 & 事 事 কিন্তু আমার এ-স্মৃতি আনন্দের নয়, দুঃখের । এই স্বচ্ছন্দ প্রকৃতির লীলাভূমি আমার হাতেই বিনষ্ট হইয়াছিল, বনের দেবতারা সেজন্তু আমাসু কথনও ক্ষমা করিবেন না জানি। নিজের অপরাধের কথা নিজের মুখে বলিলে অপরাধের ভার শুনিয়াছি লঘু হইয়া যায়। তাই এই কাহিনীর অবতারণা। - S পনর-ষোল বছর আগেকার কথা। বি-এ পাস করিয়া কলিকাতায় বসিয়া আছি। বহু জায়গায় ঘুরিয়াও চাকুরী মিলিল না। সরধতী-পূজার দিন। মেসে অনেক দিন ধরিয়া আছি, তাই নিতান্ত তাড়াইয়া দেয় না, কিন্তু ভাগীদার উপর তাগাদ দিয়া মেসের ম্যানেজার অস্থির করিয়া छूलिग्रांप्छ् । মেসে প্রতিম গড়াইয়। পূজা হইতেছে–ধুমধামও মন্দ নয়, সকালে উঠিয়া ভাবিতেছি আজ সব বন্ধ, দু-একটা জায়গায় একটু আশা দিয়াছিল, তা আজ আর কোথাও যাওয়া কোন কাজের হইবে না, বরং তার চেয়ে ঘূরিয়া ঘুরিয়া ঠাকুর দেখিয় বেড়াই । মেসের চাকর জগন্নাথ এমন সময় এক টুকরা কাগজ হাতে দিয়া গেল। পড়িয়া দেখিলাম ম্যানেজারের লেখা তাগাদার চিঠি। আজ মেসে পূজা-উপলক্ষে ভাল খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হইয়াছে, আমার কাছে দু-মাসের টাকা বাকী, আমি যেন চাকরের হাতে অন্ততঃ দশটি টাকা দিই। অন্যথা কাল হইতে খাওয়ার জন্য আমাকে অন্যত্র ব্যবস্থা করিতে হইবে। কথা খুব ভাষ্য বটে, কিন্তু আমার সম্বল মোটে দুটি টাকা আর কয়েক আনা পয়সা। কোন জবাব না দিয়াই মেস হইতে বাহির হইলাম, পাড়ার নানা স্থানে পূজার বাজন বাজিতেছে, ছেলেমেয়েরা গলির মোড়ে দাড়াইয়া গোলমাল প্রবাসী করিতেছে, অভয় মসুরার খাবারের দোকানে অনেক রকম নতুন খাবার থালায় সাজানো—বড়রাস্তার ওপারে কলেজ হোষ্টেলের ফটকে নহবং বসিয়াছে। বাজার হইতে দলে দলে লোকে ফুলের মালা ও পূজার উপকরণ কিনিয়া ফিরিতেছে । ভাবিলাম কোথায় যাওয়া যায়। আজ এক বছরের উপর হইল জোড়াসাকে স্কুলের চাকুরী ছাড়িয়া দিয়া বসিয়া ১৩৪৪ - আছি—অথবা বসিয়া ঠিক নাই, চাকুরীর খোজে হেন মাৰ্চেণ্ট আপিস নাই, হেন স্কুল নাই, হেন খবরের কাগজের অপিস নাই, হেন বড়লোকের বাড়ী নাই—যেখানে অন্তত: দশ বার না হঁাটাইটি করিয়াছি, কিন্তু সকলেরই এক কথা চাকুরী খালি নাই । হঠাৎ পথে সতীশের সঙ্গে দেখা। সতীশের সঙ্গে হিন্দু হোষ্টেলে একসঙ্গে থাকিতাম। বৰ্ত্তমানে সে আলিপুরের উকীল, বিশেষ কিছু হয় বলিয়া মনে হয় না, বালিগঞ্জের ওদিকে কোথায় একটা টিউশনি আছে, সেটাই সংসার-সন্ত্রে বর্ধমানে তাহার পক্ষে ভেলার কাজ করিতেছে। অামার ভেলা ত দূরের কথা, একখানা মাস্তুল-ভাঙা কাঠও নাই, যত দূর হাবুডুবু খাইবার তাহ খাইতেছি—সতীশকে দেখিয় সে কথ। আপাততঃ ভুলিয়া গেলাম । ভুলিয়া গেলাম তাহার আর একটা কারণ, সতীশ বলিল—এই যে কোথায় চলেছ সত্যচরণ। চল হিন্দু হোষ্টেলের ঠাকুর দেখে আমিআমাদের পুরনো জায়গাটা । হবে—এস। ওয়ার্ড সিক্সের সেই অবিনাশকে মনে আছে সেই যে ময়মনসিংহের কোন জমিদারের ছেলে, সে যে আজকাল বড় গায়ক। সে গান গাইবে, আমায় আবার একখানা কার্ড দিয়েছে—তাদের এষ্টেটের দু-একটা কাজকৰ্ম্ম মাঝে মাঝে করি কিনা ? এস, তোমায় দেখলে সে খুশী হবে । কলেজে পড়িবার সময় আজ পাচ-ছ বছর আগে আমোদ পাইলে আর কিছু চাহিতাম না—এখনও সে মনের ভাব কাটে নাই দেখিলাম। হিন্দু হোষ্টেলে ঠাকুর দেখিতে গিয়া সেখানে অধ্যাহ্ন-ভোজনের নিমন্ত্রণ পাইলাম। কারণ আমাদের দেশের অনেক পরিচিত ছেলে এখানে থাকে। তাহারা কিছুতেই আসিতে দিতে চাহিল না। বলিলাম— আর ওবেলা বড় জলক্ষ - N