পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ෂෂ অভু্যত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এ-সব সংস্কারগত বৈষম্যের একটি জীবন-মরণ সমস্যা উপস্থিত হয়েছিল। যে-দেশের অতীত আছে, ইতিহাস আছে, সংস্কার আছে তারই আছে লোকসংস্কৃতিতে বৈষম্য-সম্পদ । আমেরিকায় এজন্তে লোকের আচারগত বেশভূষাগত পার্থক্য খুব কম। আমেরিকার শুধু দীর্ঘ অতীত নেই ব’লে নয়, ও-দেশটায় গণতন্ত্রের অপ্রতিহত প্রতিপত্তি আছে বলে। শৈশবের দোলন থেকে মৃত্যুর শবাধার পর্য্যস্ত এক-ছাঁচে-ঢালা মানবজাতি যাতে তৈরি করা যায় এই আদর্শবাদেই চলেছিল আমেরিকার সভ্যতা, স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই। ফলে হয়েছে এই যে ইউরোপে যেমন যন্ত্র-যুগ এবং সাম্যবাদের মধ্য দিয়েও সব জাতগুলো নিজেদের বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেছে আমেরিকা তা পারে নি। এজন্যে আমেরিকাতে না-অাছে লোক-নৃত্য তার না-অাছে লোক-সাহিত্য কিংবা লোক-ভূষণ ; তাই যখন একটি রাশিয়ান ব্যালে কিংবা উদয়শঙ্কর গিয়ে উপস্থিত হয় নিউ ইয়র্কের রঙ্গমঞ্চে, তথন একঘেয়েমি-লাঞ্ছিত ইয়াঙ্কি-প্রাণ ছুটি নিতে পাগল হয় বিদেশীর প্রাণম্পর্শে। আজকাল প্রতি বৎসর ইউরোপ থেকে যত আর্টিষ্ট যাচ্ছেন আমেরিকায় তাদের লোক-নৃত্য দেখাতে, এভ আর কোন দেশে যাচ্ছে না কেউ। ইউরোপের প্রত্যেক জাতির মধ্যে যে একটি সংস্কারবদ্ধ প্রাণ আছে তার আর একটি প্রমাণও এই যে সাম্যবাদী সকল প্রকার আর্থিক এবং রাজনৈতিক বিপ্লবের মধ্য দিয়েও তাদের আপন আপন সভ্যতার আদর্শকে হারায় নি। বিশেষত, গত মহাযুদ্ধের পর যে কয়টি নূতন জাতীয়তাবাদী মহাশক্তি ইউরোপে প্রতিষ্ঠ’লাভ করেছে তাদের প্রধান প্রেরণাই হচ্ছে নিজেদের সংস্কার ***अडक गाभावांटमब्र श्रुतश्नम्शी धाचन ८थरक ब्रक করা। এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতবাদ অামার আলোচ্য বিষয় নয়, তবুও কি ক’রে আধুনিক সময়ে ইউরোপে লোকসাহিত্য, লোক-নৃত্য এবং লোক-ভূষণের উদ্ধার ও পরিপুষ্টি সাধন হচ্ছে তার একটা রাজনৈতিক কারণ উল্লেখ করাই প্রবাসী ১৩৪৪ অামার উদ্দেশু। প্রথমতঃ, এ জিনিষটা আরম্ভ হয়েছিল দু-একটি মাত্র দেশে, এখন সৰ্ব্বত্রই ছেয়ে গেছে। জার্মানী, ইতালী, হাঙ্গেরী, সুইটজারল্যাণ্ড, নরওয়ে, সুইডেন, হল্যাও ইত্যাদি সৰ্ব্বত্রই লোক-সংস্কৃতির চর্চা দেখে এসেছি। হাঙ্গেরীর এবং নরওয়ের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য । হাঙ্গেরীতে অবস্থা লোক-সংস্কৃতির চর্চার জন্ম বিপুল আয়োজন দেখে বিল্পিত হয়ে যেতে হয়, এমনকি দেব্রেংসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক-সংস্কৃতির জন্য আলাদা একটি ফ্যাকালটির পর্য্যন্ত স্বষ্টি হয়েছে, কিন্তু ওলোর লোকংস্কৃতির মিউজিয়মের মত দ্বিতীয় কোন অনুষ্ঠান বিশেষজ্ঞতার দিক থেকেই হোক আর পরিপূর্ণতার দিক থেকেই হোক, ইউরোপের অন্য কোথাও দেখি নি। ইতালীতেও লোক-নৃত্য, লোক-ভূষণ ইত্যাদি জিনিষগুলোকে আধুনিকতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরিপুষ্ট করবার খুব চেষ্টা চলেছে । কয়েক বছর আগে ইতালীর বর্তমান যুবরাজের যখন বিয়ে হয় তখন ইতালীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাদের বেশভূষার শোভাযাত্রা করবার জন্যে সেই সব অঞ্চল থেকে অনেক লোক রোমে আনা হয়েছিল । এ প্রবন্ধের সঙ্গে যে ছবি কয়টি ছাপা হ’ল সেগুলো সে-সময়েরই ভোলা। দেখলেই বুঝতে পারা যাবে যে এক অঞ্চল থেকে আর এক অঞ্চলের পোষাকপরিচ্ছদ অতীতের কোন এক সময়ে কতখানি পৃথক ছিল; অথচ প্রত্যেকটিরই একটি বিশিষ্ট মূল্য আছে। এই বেশ-ভূষাগুলোর বিশেষ কোন গম্ভীর ব্যাখ্যা দিতে চাই না; তবে এটুকু ব’লে রাখা ভাল যে ইতালীয়ান জাতটা খুব মিশ্রিত জাত। বিভিন্ন দেশের হাওয়া এবং আচারব্যবহার ইতালীর গায়ে এসে লেগেছে—যেমন এসে লেগেছে ভূমধ্যসাগর অতিক্রম ক’রে, তেমন লেগেছে আল্পসের তুষার-বন্ধন ভেদ করে। অন্য দিকে আবার তুর্কী, মুসলমান আর হাঙ্গেরিয়ান রীতিনীতিও কিছু কিছু মিশে গেছে ইতালীর বহিরঙ্গে । তার প্রমাণ বেশ স্পষ্টই দেখতে পাওয়া যাবে এই অল্প কয়েকটি বেশভূষার উদাহরণের মধ্যে। M