পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ੋਚਿਤ੍ਰੇਰਨ কাব্যের মূলতত্ত্ব Գ Տ কোন ধারণাই পাকা করিয়া উঠিতে পারে নাই। ধীরে ধীরে উঠিয়া, অনেকক্ষণ পৰ্য্যস্ত বোর্ডের পানে চাহিয়া পদ্যের উপর লেখা অঙ্কগুলা পড়িতে পড়িতে স্খলিত কণ্ঠে বলিল, “একুশ কোটি তিপ্রান্ন লক্ষ উনপঞ্চাশ হাজার ছ-শ আটাত্তর ।” চারি দিকে একটা চাপা হাসি উঠিল। সেকেণ্ড মাষ্টার গভীরভাবে বলিলেন, “চমৎকার! একুশ কোটি কি তা শুনি ?” ললিত আরও ঘাবড়াইয়া গিয়া বলিল, “সৈন্য, স্যার ।" “ভারতবর্ষের লোকসংখ্যা কত ?” “তিরিশ কোটি, স্যার ।” “তা হ’লে প্রায় সবাই পলাশীর যুদ্ধে নেমে পড়েছিল दळ ?” - ললিত চুপ করিয়া রহিল। সেকেণ্ড মাষ্টার নিরাশ ভূইয়া বলিলেন, “ব’স ।” আমারও যেমন দুর্ভোগ, তোমাদের দত গর্দভদের ক্রিটিক্যালি পদ্য পড়াতে যাওয়া ? “তুমি, শৈলেন ? আমি সংখ্যার নির্দেশ-মত ভয়ে ভয়ে কথাগুলি পড়িয়া এবদুটা দাড় করাইলাম। মাষ্টার মহাশয়ের রাগটা পড়িয়া গেল। প্রশ্ন করিলেন, “এবার তোমরা বুঝতে পেরেছ বে পদ্যের গোড়ার রহস্য হচ্ছে ম্যাথেমেটিক্স ?” কাহারও কাছে কোন উত্তর না পাইয়া বলিলেন, “দেখ, তোমাদের সামনে গদ্য আর পদ্য দুই-ই একসঙ্গে রয়েছে ; দুটোর মধ্যে মূলগত প্রভেদটা কি ?” আমি বলিলাম, “ছন্দ, স্যার ।” “ছন্দটা কি ?” চুপ করিয়া রহিলাম । “তুমি, কবি ?” “শব্দের এমন সংযোজনা স্যার**** “ব’সো বাপু, তুমি ত আরম্ভই করলে অনুপ্রাস দিয়ে। {

  • ছন্দটা আর কিছু নয়, ম্যাথেমেটিক্স,—সময়ের অতি সুহ্ম বিভাগ—কথাটা মনে রেখ,—বিভাগ—ডিভিশুন—মাইণ্ড ইউ। --পদ্য থেকে এই ম্যাথেমেটিক্স বের করে নাও, যা অবশেষ থাকবে তা গদ্যেরও অধম । তা হ’লে দাড়াল— নবীন সেন বাইরেই নবীন সেন, তার ভেতরে রয়েছে—

ভেতরে রয়েছে। --” * বিলাস বলিল, “যাদব চক্রবর্তী, স্তার।” মাষ্টার মহাশয় প্রীতিপ্রসন্ন দৃষ্টিতে চাহিয়া বলিলেন, “বুঝেছ তো?” - "একেবারে জল হয়ে গেছে স্যার ।” “সমস্ত ডায়াগ্রামটা একে নাও --এইবার মানেট একবার পড়ে নাও দিকিন—অর্থাৎ কাব্যের ভাবের দিকটা আর কি। দেখবে তার মধ্যে ম্যাথেমেটিক্স আরও স্বক্ষভাবে প্রবেশ করেছে।•••কি বলছে ?— আবার, আবার সেই কামান গজ্জন । উগরিল ধূমরাশি আশধারিল দশদিশি--- “হিয়ার ইউ আর...দশদিশি • অনাথ !:--” o এমন সময় ঢং টং করিয়া শেষ ঘণ্টা পড়িল। মাষ্টার মহাশয় ক্লাসের চারি দিকে চাহিয়া প্রশ্ন করিলেন, “আর একটু তাহলে পড়বে না কি সব ?" বিলাস গোড়ায় মজাইয়াছিল, শেষের দিকে কিন্তু সে-ই উদ্ধার করিল। আমরা শঙ্কিতভাবে পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করিতেছি, বিলাস বলিল, “আজ না-হয় আর থাক্ স্তার, জিনিষটাকে সত্যিই যতটা সহজ ভেবেছিলাম ততটা নয়, অনেক ভাববার কথা আছে।” মাষ্টার মহাশয় গভীর প্রীতির সহিত চাদরের প্রান্তভাগ ; দুই মুষ্টিতে একত্র করিয়া উঠিয়া পড়িলেন।