পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলির মেয়ে শ্রীসীতা দেবী * --------- শিনাথ বেয়ানের চিঠিখান হাতে করিয়া ভিতর-বাড়ীতে বেশ করিলেন। বাড়ী ছোটই, সদর-অন্দরে খুব যে একটা তফাৎ আছে গ্রহ নয়, তবে গৃহিণী অতিশয় নাকি লজ্জাবতী এবং একেলে বাদ্ধাপনা দুই চক্ষে দেখিতে পারেন না, সুতরাং বারানার ক ধারে চটের একটা মোট পদ। টঙাইয়া অন্দর-মহলের ঘর রক্ষা করিতে হইয়াছে। ছেলে হেমেন্দ্র জিনিষটাকে রাত্মক অপছন্দ করে, কিন্তু মাকে ভয়ও সে করে মারাত্মক । তরাং তাহার স্ত্রী স্থনয়নী ছাড়া এ অপছনের খবর কাহারও এনে পৌছায় নাই। গৃহিণীকে চট করিয়া শশিনাথ দেখিতে পাইলেন না। শনেকক্ষে তিনি নাই, ভাড়ার ঘরেও তিনি নাই। আর দে কোথায় থাকিতে পারেন তাহা কৰ্ত্তা ভাবিয়া পাইলেন ল। মেয়ে পুটুরাণীকে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “স্থা পুটু, তোমার মা গেলেন কোথায় ?” পুটুরাণ জানলার ধারে বসিয়া পুতুলের সেমিজ সেলাই kরিতেছিল। বাপের ডাকে মুখ তুলিয়া বলিল, “কোথায় আর যাবেন ? কলঘরে কাপড় কাচতে গেছেন। এক a হ’ল ঢুকেছেন, এইবার বেরবেন।" শশিনাথ চিঠি হাতে করিয়া সেই ঘরেই দাড়াইয়া রছিলেন, . একটু যেন অষ্টমনস্ক । গৃহিণী বাহির হইলেন, কলঘরের দরজা ক্যাচ করিয়া সলিল আবার দড়ামু করিয়া বন্ধ হইল। শশিনাথ বলিলেন, a.একবার এদিকে শুনে যাও দেখি ।” গৃহিণী স্বরবালা বলিলেন, “রোস, ভিজে কাপড় মেলে - দিয়ে আলি আগে।” পরনে তাহার একখানি স্বল্পপরিসর বধিপোতার গামছা, এই বেশেই তিনি কাপড় মেলিয়া দিতে গজেন্দ্রগমনে ছাদে উঠিয়া গেলেন । শশিনাথ এই ব্যাপারটি পছন্দ করেন না, কিন্তু পছন্দ ծՎ) না করিলেই বা কি ? গৃহিণীকে তাহার কোনও আচরণ লইয়া কোনও কথা বল চলে না। খানিক বাদে কুরবালা নামিয়া আসিলেন, ছাদে থাকিতে কোনও ব্যাপারে তাহার মেজাজ কিছু উত্তপ্ত হইয়া উঠিয়াছে বোঝা গেল। “পোড়ারমুখো, ড্যাকুর, চোখগুলো কুলকাট দিয়ে গেলে দিতে হয়, বলিতে বলিতে তিনি নামিয়া আসিলেন। শশিনাথ বুঝিলেন, প্রতিবেশীদের সম্বন্ধেই এইসকল স্বমধুর সম্ভাষণ হইতেছে, বলিলেন, “ত চারিদিকে গায়ে গায়ে লাগানো বাড়ী, কাপড়চোপড় শুকোনোর কাজটা নীচে করলেই হয়।" গৃহিণী বলবিয়া উঠিলেন, “আহা মরি, কত বড় না দালান উঠোন বাড়ীর, তাই নীচে কাপড় শুকুব । আমার ই' আমি যা-ই করি, ও ড্যাক্রাদের কি ?” শশিনাথ আর আলোচনা না বাড়াইয়া বলিলেন, “এই চিঠি এসেছে বেয়ানের, দেখ ।” বাহিরের আকাশে মেঘের পুঞ্জ ফাপিয়া ফুলিয়া छेटेिंप्ल আসন্ন ঝটিকার আভাস দিতেছে। গৃহিণী अडि হিসাবী, সভট বাঞ্জিবার আগে ঘরের আলো জালিতে দেন নb ত মাহুষ চোখে দেখুক বা না-ই দেখুক । নিজেরও চোখের দৃষ্টি সন্ধ্যার পর ঝাপস ঠেকে, কিন্তু গৃহিণী তাহা স্বীকার করেন ন, চশমা পরাতেও তাহার আপত্তি, নিজের বয়স চল্লিশের বেণী হইয়াছে তাহ জানাইতেও আপত্তি । বলিলেন, “কি লিখেছেন তাই বল না, আর এখন পড়তে পারি না।” ৰঞ্জ বলিলেন, “বেয়াইয়ের বড় অস্থখ, তাই বোমাকে একবার নিয়ে যেতে চান।” । স্বরবালার মুৰ্থ ভ্ৰকুটকুটিল হইয়া উঠিল। বলিলেন, "ওগো, ঘাস খাই ন গো, চালের ভাতই খাই। সারাটা বছর ভাল রইলেন, আর ঠিক এই পূজোর দিন-কুড়ি আগেই