পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] ব্ৰহ্মদেশে দাসত্ব প্রথা खेरछ्न ব্ৰহ্মদেশে দাসত্ব-প্রথা উচ্ছেদের জন্য মিঃ বাৰ্ণাড়ের নেতৃত্বে যে অভিযান প্রেরিত হইয়াছিল তাহ সম্প্রতি মিটকিনায় ফিরিয়া আসিয়াছে। অভিযান সৰ্ব্বত্রই বন্ধুভাবে গৃহীত হইয়াছে এবং কোথায়ও বাধা পায় নাই । অভিযানের সফলতাও কম হয় নাই— এই বৎসরে মোট ১৮২৮ জন দাস মুক্তিলাভ করিয়াছে। সম্প্রতি এক দরবার হইয়া গিয়াছে। তাহাতে সাগাং বিভাগের কমিশনার বক্তৃতা প্রসঙ্গে বলিয়াছেন যে, কাচিন পাহাড়ের দাসগণকে মুক্তি দেওয়া হইবে । মালিকদের অধীনে যে সমস্ত দাস তণ:ছ তাহীদের নাম রেজিষ্টারী করিতে বলা হইয়াছিল এবং মালিকরা দাসদের জন্য ক্ষতিপূরণও পাইয়াছে। কিন্তু যাহার যথা সময়ে নাম লিখায় নাই তাহার ক্ষতিপুরণও পাইবে না । আর দাসদের অtটকাইয়াও রাপিতে পারিখে না । কৃতদাসদের মালিকরা কোন কুতদাসকে আটকাইয়। রাগিলে বা দাসত্ব প্রথায় সমর্থনের চেষ্টা করিলে তাহীকে শাস্তি দেওয়া হইবে । বাঙলা उल्ल বাঙলার চতুৰ্দ্ধিক হইতে যেরূপ সংবাদ আদিতেছে তাহ বড় ভয়ানক। অনাবৃষ্টির দরুণ ফসল নষ্ট হইয়াছে--নিত্য ব্যবহার্ঘ্য সমস্ত দব্যের মুল্য দিন দিন বাড়িয়া যাইতেছে। প্রত্যেক মাসে অক্ষমদের আৰ্ত্তনাদ ছাপিতে আমাদের ক্লেশ হয়, লম্বা করে ও অঁাক্সসম্মানে আঘাত লাগে । আগে দেশের অবস্থা যেরূপ হইলে দুর্ভিক্ষ বলিয়া হাছাকার পড়িয়া ঘাইত এখন সেই অবস্থা স্থায়ী হইয়াছে । বীরভূম, বাকুড়া, হুগলী, বৰ্দ্ধমান, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জেলায় দুর্ভিক্ষ অlরস্ত হইয়াছে, একথা পূৰ্ব্বেই লিথিয়াছি। সম্প্রতি খুলনা হইতে অল্পকষ্ট ও দুর্ভিক্ষের যে ভীষণ সংবাদ আসিয়াছে, তাহা সত্যই হৃদয়বিদারক । আশাগুনী সেবাশ্রম হইতে জনৈক প্রত্যক্ষদর্শী আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়কে জানাইয়াছেন যে, ঐ অঞ্চলে লোকে দিনের পর দিন অনাহারে কর্ণটাইতেছে, প্রাণপণ চেষ্টা করিয়াও ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মুখে একমুষ্টি ক্ষুধার অন্ন তাহারা দিতে পারিতেছে না। লোকে যে মজুরের কাজ করিয়া খাইবে, তাহার উপায়ও নাই। দুই জন লোক অনাহারে থাকিয়া পরিবারবর্গের জন্ত অন্ন সংগ্ৰহ করিতে না পারিয়া মনের ক্ষোভে আত্মহত্যা করিয়াছে। একজন তালা থানার অন্তর্গত মেসের ডাঙ্গি গ্রামের রাইচরণ মণ্ডল। তাহার পরিবারে সাতটি লোক । সে যখন হাট হইতে রিক্তহস্তে ফিরিল, তখন তাহার ছেলে-মেয়ের কাদিতে লাগিল। এই দৃষ্ঠ সহ করিতে না পারিয়া রাইচরণ রাত্রে গলায় দড়ি দিয়া মরিয়াছে। গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের আর একটি লোক বৃদ্ধ মাতার জষ্ঠ অন্ন সংগ্ৰহ করিতে না পারায় বৃদ্ধ তাহাকে তিরস্কার করে। ইহা সহ করিতে না পারিয়া হতভাগ্য পুত্র আত্মহত্যা করিয়াছে । বালুরঘাট অঞ্চলে (দিনাজপুর) কয়েক মাস হইল দুর্ভিক্ষ আরম্ভ হইয়াছে। কিন্তু এ পর্য্যন্ত গবৰ্ণমেণ্ট প্রতিকারের জন্ত যথাযোগ্য ব্যবস্থা অবলম্বন করেন নাই । সম্প্রতি সংবাদ আসিয়াছে যে, সেখানে. লোকে ক্ষুধার স্বালায় অস্থির হইয়া পুত্র, কস্তা, স্ত্রী প্রভৃতি বিক্রয় করিতেছে। , দেশবিদেশের কথা-বাংলা So ev) উত্তর-পশ্চিম বঙ্গে-বিশেষভu", ম।মুড়, বীরভূম, বৰ্দ্ধমান জেলায় অন্নকৃষ্ট ও ছুর্ভিক্ষও দেখা গিয়াছে। বাকুড়া হইতে প্রত্যহুই আমরা ছুর্ভিক্ষের শোচনীয় সংবাদ পাইতেছি,-বীরভূমের বোলপুর অঞ্চলে अरुङ्गांe द्धष्ठि छौष* श्झेम्नां ऐंटॅिग्नां८छ् । দেশের শাসন-কওঁীরা দার্জিলিঙ্গ পাহাড়ে বসিয়া আছেন। মনে হয় যেন উtহারা অবস্থার গুরুত্ব কিছুই উপলব্ধি করিতে পারিতেছেন না। যেখানে লোকে ক্ষুধার তাড়নায়, স্ত্রীপুত্রের জন্য অন্ন সংগ্ৰহ করিতে ন পারিয়া এইরূপে আত্মহত্যা করে, সে দেশের কি ভীষণ দুর্দশা! উহাও যদি দুর্ভিক্ষ না হয়, তবে আর কি হইলে গবৰ্ণ মেন্টের নিকট দুর্ভিক্ষ গ্রাহ্য হইবে ? তাই সহযোগী আনন্দধাজার পত্রিক লিখিতেছেন— আমাদের বোলপুরের সংবাদদাতার পত্রে প্রকাশ যে, বিশ্বভারতীর কর্শ্বিগণ পল্লীবাসীদের প্রাণরক্ষার জন্ত বথাসাধ্য চেষ্টা করিতেছেন। কিন্তু ঠাহারা আর কতদূর করিবেন ? যদি গবর্ণমেন্ট এবং দেশের সহৃদয় ধনীব্যক্তিরা দুর্ভিক্ষনিবারণে অগ্রসর না হন, তবে বাকুড়া-বীরভূমের লোকেরা অনাহারে পিপীলিকার মত মরিবে, এই আশঙ্কাই মনে উদিত হইতেছে । অৰ্দ্ধেক বাঙ্গাল আজ দুর্ভিক্ষ-পীড়িত। অথচ গবর্ণমেণ্ট উদাসীন নিশ্চেষ্ট। বাঙ্গালার সহৃদয় ধনী ও সেবাব্রতী সস্ত্য সমিতি প্রভৃত্তি মোহ-নিদ্রা হইতে জtথত হউন । তাহারা লোকরক্ষায় অগ্রসর না হইলে, অন্ত কোন উপায় নাই। জল— একে ত দারুণ অন্নাভাব তাহার উপর বাঙ্গলার চারিদিক হইতে আমরা যেসব সংবাদ পাইতেছি, তাহাতে পল্লীগ্রামে যে ভীষণ জলকষ্ট আরম্ভ হইয়াছে, তাহা বুঝিতে বিলম্ব হয় না। এখনই যদি এরূপ জলকষ্ট হইয়া থাকে, তবে জ্যৈষ্ঠ মাসে অবস্থা কিরূপ দাড়াইবে, তাহা অনুমান করা কঠিন নহে। বাঙ্গলার পল্লীগ্রামের সঙ্গে যাহাদের কিছুমাত্র পরিচয় আছে, তাহারাই জানেন যে, জলাভাবের ফলে অনেক গ্রামের লোকই গ্রীষ্মের সময় “কাদণগোল" খাইয়া জীবন ধারণ করে, দরিদ্র গৃহস্থ কুলবধূগণকে ৩৪ মাইল ইটয়াও দূর গ্রাম হইতে জল আনিতে হয় । ইহার প্রতিকার কি ? সহযোগী হিন্দুরঞ্জিকা লিখিতেছেনযদি গবর্ণমেণ্ট, জেলাবোর্ড প্রভৃতি মিলিয়া টিউবওয়েল বসাইয়া, এবং পুরাতন কূপ পুষ্করিণী প্রভৃতির সংস্কার করিয়া জলাভাব দূর করিতে চেষ্টা না করেন, তবে অবস্থা অতি ভীষণ হইবে। প্রতি বৎসরই এ সময়ে বাঙ্গলার পল্পী হইতে জলাভাবের চীৎকার উঠিয়া থাকে, গবর্ণমেণ্ট বধির হইয়া থাকেন, জেলাবোর্ডগুলি অক্ষমতা জ্ঞাপন করেন। চিরকালই কি এইরূপ চলিবে, বাঙ্গলার পল্লীবাসী জনসাধারণ কি মানুষ নছে ? তাহাদের প্রদত্ত অর্থে নানারূপ বাজে কাজ হয়, ভার তাহারা জলাভাবে মরিবে ইহা একেবারে অসহ । স্বাস্থ্য— দেশের অন্ন ও জলাভাবের অপরিহার্ঘ্য পরিণাম কলেরা, আমাশয় প্রভৃতি তো আছেই। ইতিমধ্যেই বাঙ্গলার গ্রামে ঐ সব রোগে বহু লোকের মৃত্যু হইতেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সাপ্তাহিক তালিকাই - তাহার প্রমাণ । বাঙ্গালী জাতি যে ধ্বংসোন্মুখ, তাহার জীবনশক্তি যে দিন দিন ক্ষীণ হইতেছে, শিশুমৃত্যু, প্রস্থতিমৃত্যু, অকালমৃত্যু প্রভৃতি যে