পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা] জলিয়া উঠিল। প্রকাশ তখন পায়ে-হাট সরু পথ দিয়া ধীরে ধীরে বাড়ী ফিরিয়া আসিল। মুরবালা ঘরে গুইয়াছিল। শাশুড়ীর মৃত্যুর পর হইতে সে সৰ্ব্বক্ষণই বিমর্ষ। পাড়ার মেয়ের কাছে বসিয়৷ নানা কথা কহিয়া তাহাকে প্রফুল্ল রাখিবার চেষ্টা করিত। কয়েক মুহূৰ্ত্ত প্রকাশ তাহার পানে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া রছিল। তারপর ঈষৎ ঝুঁকিয়া বাহুটিতে মৃদ্ধ বাকি দিয়া ডাকিল, ও গো, ঘুমিয়েচ ? সুরবালা চক্ষু মেলিয়া চাহিল। সে জাগিয়াছিল। প্রকাশ তাহার পাশে বসিয়া পড়িল। আলগোছে তাহার হাতখানি মুষ্টি মধ্যে টানিয়া লইয়া সে কহিল,—আর ত এখানে থাকা চলে না, সুর। আমি কাল কলকাত যাব মনে করেছি। —কালই ? —ই, সুর । আর দেরি করা উচিত নয়। এগজামিন দিয়ে শিগগির যেমন হোক একটা চাকরির জোগাড় করতে হবে। ঘরে একটা পিতলের পিলমুজের উপর রেড়ির তেলের প্রদীপ জলিতেছিল। তাহার ক্ষীণ রশ্মি সুরবালার ভিজা চোখ দুটির উপর পড়িরা ঝলমল করিয়া উঠিল। দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিরা প্রকাশ বলিল,—মনে করেছিলাম চিরদিন এখানেই থাকৃব। কিন্তু তা আর হ’ল না। ঠিক সেই সময় পোষা-কুকুর জো একটা বিড়ালের পিছনে ছুটিয়া ঘরের ভিতর আসিল । বিড়াল বারানায় একটা দুধের বাটিতে মুখ দিয়াছিল । তাড়া খাইয়া তাড়াতাড়ি সে যেমন ঘরে ঢুকিল অমনি কুকুর চীৎকায় করিয়া লাফাইয়া পড়িল। মুরবালা বলিতেছিল, আবার কবে আসবে ? প্রকাশ কহিল, তা ঠিক বলতে পারি না। একটা চাকরি ঠিক ক’রে তোমায় নিয়ে বাব। আঃ—জো জো ! আর জো । এসময় প্রভুর আদেশ মানিতে সে কোন মতে রাজি নয়। বিড়ালকে কোণ-ঠাসা করিয়া সে তাহার উপর লাফ দিবায় সুযোগ খুজিতেছিল, অমনি বিড়াল ঘুরিয়া দাড়াইয়া, রোয় ফুলাইয়া, গোফ বিস্তায় করিয়া দাত মুখ খি চাইয়া কুকুরটাকে স্তম্ভিভ করিয়া দিল। ফের –প্রকাশ উঠিয়া দাড়াইল । আপন-পর SAMAeAAASAASAASAASAASAASAASAAMMAMMAMMMMAMMMMMMMAMMAMMM AAAASAA AAAS 8 > Gł - <-دیه-مح>------------------------------------------- সুরবালা তাহার হাত চাপিয়া ধরিল। কহিল, ন না, তুমি যেও না। কেন ? ভয়ে সুরবালার মুখ ফ্যাকাসে হইয়। গিয়াছিল । প্রকাশ হাসিল,—ছি, ভয় কিসের ? সুরবালা হাত ছাড়িয়া দিল । واہ পরীক্ষায় পাশ হইয়া অনেক চেষ্টার পর প্রকাশ সওদাগরি অপিসে একটি কেরাণীগিরি জোগাড় করিল। তারপর একদিন দেশ হইতে মুরবালাকে কলিকাতায় আনিয়া ভাবিল, যাকু বাচা গেছে—আর চিন্তা নাই । গলির ভিতর ছোট হাতসেতে বাড়ীর মধ্যে বন্ধ হইয়া থাকিতে প্রথম প্রথম মুরবালা কষ্ট বোধ করিত। সারাদিন একলা বসিয়া কাটাইতে কৃষ্টত –কথা বলিবে, এমন সঙ্গী কেহ ছিল না। ভোরে স্বান করিয়া সে রাধিতে বসিত, রন্ধন শেষ হইলে কাছে বসিয়া প্রকাশকে খাওয়াইত । প্রকাশ আপিস চলিয়া গেলে বাকি গৃহকৰ্ম্মগুলি সারিয়া সেই যে উপরে উঠিয়া আসিত, তারপর সারা দুপুর সে ছটফট করিত—দিন যেন কাটিতেই চাহিত না। কিন্তু সন্ধ্যাকালে ক্লান্ত হইয় প্রকাশ যখন বাড়ী ফিরিত, অমনি সকল কাজ ফেলিয়া সে স্বামীর কাছে ছুটয়া আসিত এবং পাথা দিয়া বাতাস করিয়া নানাকথা কহিয়া তাহার ক্লাস্তি দূর করিবার চেষ্টা করিত। নিজের নিঃসঙ্গ পিঞ্জরাবদ্ধ জীবনের কথা তখন তাহার মনেও উঠিত না। প্রতিদিন আহারান্তে তাড়াতাড়ি কাপড় পরিয়া প্রকাশ ছাতা হাতে বাহির হইয়া পড়িত। য়াস্তায় তখন লোকের ভিড়, গাড়ীর ভিড়—পথ চলা দুঃসাধ্য। সেই ভিড়ের ভিতর আঁকিয়া-বাকিয়া প্রকাশ অগ্রসর হইত । দুইধারে দোকানের সম্মুখে নানা রঙের সাইনবোর্ড—সেগুলি সে পড়িতে পড়িতে চলিত, চলিতে চলিতে পড়িত । দুইবেল। এই দীর্ঘপথ চলিবার সময় অতীতের কথা কখন তাহার মনের মধ্যে জাগিয়া উঠিত, সে তাহ জানিতে পারিত না। তাহার মনে পড়িত, একদিন সে এই কলিকাতা ছাড়িয়া পল্লীর নিবিড় শাস্তির আশ্রয় লইয়াছিল। তখন কে জানিত তাহাকে আবার এখানে