পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8>W。 ফিরিয়া আসিতে হইবে ? তাহার বাড়ী ছিল, ঘর ছিল— হোক ছোট বাড়ী, ছোট ঘর, তবু তাকারই। পুকুরের মাছ, বাগানের আম কাটাল লিচু—সব, সবই যে তাহার। সেই মালিক, কাহারো সাধ্য নাই যে, তাহার অধিকার অস্বীকার করে। আর আজ তাহার আপন বলিতে কিছু নাই। বাড়ী-ঘর, জমি-জমা, পিতৃপুরুষের যাহা কিছু নিদর্শন, সব গিয়াছে। আত্মীয়-স্বজন কে কোথায় বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িয়াছে । সে আজ এক মমতাহীন সহানুভূতি-শুষ্ঠ বিশাল সমুদ্রে একাকী ভাসিয়া বেড়াইতেছে। তাহার এই পূর্বমান অবস্থার সঙ্গে অতীতের সম্ভাবনাগুলি তুলনা করিয়া সে দেখিত, সেদিন সে কি সুমধুর স্বাধীন উদার জীবন বাছিয়া লইয়াছিল। যেন বিশ্বশুদ্ধ ঘোষণা করিয়াছিল,—বঁচি, বাচিবার জন্যই ত জীবন! তুমি বঁচি, আমি বঁচি, জগৎ বাচুক ! হইতে পারিত –কিন্তু হইল না ! জীবনের কত মৰ্ম্মাত্তিক বিয়োগ-গাথার বীজ নিহিত রছিয়াছে এই কয়টি কথার ভিতর ! অকস্মাৎ প্রকাশের অন্তর তিক্ত বিষে ভরিয়া উঠিত এবং সেই বিষে তাহার চরিত্রে যাহ-কিছু ভাল উদার মহৎ, সব যেন জ্বলিয়া পুড়িয়া ছাই হইয়া বাইত । কলেজের বন্ধুদের কথা প্রায় তাঙ্গর মনে উঠিত। কোথায় তাহার-কি করিতেছে ? সকলেই কি জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত ? কদাচিৎ কখনো সংবাদপত্রে সে যদি দেখিতে পাঠত তাতাদের মধ্যে কেহ সৌভাগ্য-শিখরে যশের মুকুট মাথায় পরিতে উঠিয়াছে, অমনি কে যেন তাহার অস্তরে অতৃপ্ত বুভুক্ষণ জালিয়া দিত। পৃথিবী কি যথেষ্ট বিস্তীর্ণ নহে? তবে কোন অপরাধে তাহাকে ঐ সংকীর্ণ স্থানটুকু অধিকার করিয়া আজীবন তুষ্ট থাকিতে হইবে ? এ বিধান কাঙ্গর ? একদিন হঠাৎ রাস্তার মুনীতের সহিত তাহার দেখা হইল। সে এখন একজন ডেপুটি। চেহার তেমনি রুশ, তেমনি টেঙা । সে অনর্গল বকিয়া গেল। এ যেন সেই আগেকার স্বনীত, এতটুকু বদলার নাই। তেমনি চঞ্চল হাস্তমুখর। প্রকাশ খানমনা হইয়া পড়িতেছিল। প্রবাসী— আষাঢ়, ১৩৩৫ AMeeMA AJAAA AMMAMMMMAMMMMAeeAMAMMAMMMMMMAMMAMAeeAMMAMAMMMAMJAMMMAMM [ ২৮শ ভাগ, ১ম খণ্ড ാബ് একটা গ্যাসের থামে ঠেস দিয়া সে কেবল ট্রাম মোটর দেখিয়া যাইতে লাগিল । পরিশেষে সুনীত বলিল, বা রে-এত দিন পরে দেখা, আর তুমি কি না এখান থেকে বিদায় করবে ভেবেচ । চল তোমার বাড়ী গিয়ে দুদণ্ড ব’সে গল্প করি । অপ্রতিভ হইয়া প্রকাশ বলিল-ই ভাই চল । অপরিচ্ছন্ন এ দে গলির ভিতর তাহারা আসিল । —এই আমার বাড়ী মুনীত, বলিয়া সে বঁাদিকের ছোট বাড়ীটি আঙ্গুল দিয়া দেখাইল । বাড়ীর ভিতর ঢুকিয়া সে মহা হুলুস্থলু কাণ্ড বাধাইয়া তুলিল সে চেসাইয়া কহিল—মুর—আরে মুনীত এসেচে। আমার পুরান বন্ধু, ক্লাস-ফ্রেণ্ড । যে সে লোক নয় বুঝেচ ? একজন হাকিম। চোপ জো চোপ ! কিছু খাবার তৈয়ার কর, মুর, শিগগির। চল মুনীত, উপরে যাই –আবার ! কুকুরট দুই পায়ে ভর দিরা ল্যাজ নাড়িতে নাড়িতে বিষম লাফালাফি মুরু করিয়াছিল। উভয়ে উপরে উঠিয়া আসিল । একখানি মাগুর বিছাইয়া অপৰ্য্যাপ্ত উৎসাহের সহিত প্রকাশ বলিয়া গেল, এই একটি ঘর—তা বৈঠকখানাই বল, আয় শোবার ঘরক্ট বল। চেয়ার টেবিল, কোঁচ সোফা সবই হচ্চে এই মাদুরটি ভাই। কিছু দুঃখ নাই বেশ আছি। তোমাদের ও সব খাওয়ান বসান সমাদ যত্ন আদব-কায়দার কোন ধার ধারি না । বলিয়া সে হাসিতে লাগিল । সুনীত বলিল, এই ত বেশ । তারপর পিরানের বোতামগুলি খুলিয়া একখানি হাত-পাখা লইয়া বা গুস করিতে করিতে বলিল,—দ্যাথ ভাই, মাঝে মাঝে আমার কি মনে হয় জান ? সভ্যতার নামে আমরা কতগুলি প্রয়োজন স্বষ্টি করেচি যার কোন দরকার ছিল না- ধ বাদ দিলে আমাদের মুখের মাত্রা বাড়ে বৈ হ্রাস হয় না। প্রকাশ কিছু বলিল না। অকস্মাৎ তাহার মুখমণ্ডল গাম্ভীর্য্যের ভারে গুমট বাধিয়া উঠিয়াছিল । মুনীত বলিতে লাগিল,—এই ধর না আমাদের পুৰ্ব্বপুরুষদের কথা। তাদের প্রয়োজন ছিল অতি অল্প, বছরে দু জোড়া কাপড় আয় দু খান চাদর, বস্। তাই ব’লে তারা মুখী ছিলেন না বলা চলে না। কেন না, তারা