পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-bצ8 می - ه بر عمحمد عتی به করিয়া উঠে, প্রকাশ ঠিক তেমনি চমকিয়া উঠিল। সে তৎক্ষণাৎ চোখ মেলিয়া বিরক্তিপূর্ণ দৃষ্টি মুরবালার মুখের উপর নিবদ্ধ করিয়া কহিল,—না গো, না—কিছু হয়-নি। তুমি কাজে যাও । সুরবালার চোখ দুটি ছল-ছল করিয়া উঠিল। বাদলা হাওয়ার মতন মাঝে মাঝে কি-যে অস্বস্তি স্বামীর অন্তরে-বাহিরে এলোমেলে৷ বহিয়া যাইত, সে তাহা ভাবিয়া পাইত না ; কিন্তু ইহার প্রতি ঝাপটায় তাহার সদ্যঃ-মুঞ্জরিত মুকুলগুলি নিঃশব্দে ছিন্ন হইতেছিল। এ কথা যেন তাহার অন্তৰ্য্যামী জানাইয়। দিয়াছিলেন যে, তাহার কোনো দাবি নাই, অধিকার নাই, শুষ্ক পত্রের মত সে উড়িয় আসিয়া পড়িয়াছে। তাহাকে বিবাহ করিয়া প্রকাশ, যে কত মহত্ত্ব ও উদারতার পরিচয় দিয়াছিল, সুরবাল তাহ অনুভব করিত না এমন নহে। বরঞ্চ সেই কৃতজ্ঞতার সুরই মনের ভিতর নিয়ত বাজিয়া এখন তাহার জীবন অসহ করিয়া তুলিতে লাগিল। প্রকাশ তাহার পাণিগ্রহণ করিয়াছিল, তাহাকে কলঙ্কের হাত হইতে বাচাইবার জন্য—সে শুধু অমুকম্পা ভিন্ন আর কিছু নয়। প্রয়োজনের বশবৰ্ত্তী হইয়া স্কন্ধে তাহাকে কেহ আহ্বান করিয়া আনে নাই। সে কি স্বামীর তবে একটা বোঝার মত ঝুলিয়া আছে ? ছি ছি কি লজ্জার কথা ! দিন কাটিতে লাগিল। তাহার স্মৃত্তিহীন অনভ্যস্ত জীবনের অসুবিধাগুলি একে একে সহিয়া উঠিতেছিল। ক্ষুদ্রসংসারটিকে গুছাইয়া সাজাইয়া নিত্যকার কাজগুলি সে করিয়া যাইতে লাগিল। কিন্তু তাহার স্বাস্থ্য দিন দিন নষ্ট হইতেছিল, সে ক্রক্ষেপ করিল না। তাহার শরীর শীর্ণ, রক্তশূন্ত হইয়া উঠিল, গাল দুটি বসিয়া গিয়াছিল। প্রকাশ লক্ষ্য করিল। কঠিল,-বড় কাহিল হ'য়ে পড়েছ, মুর । মুরবালা বলিল, না-ও কিছু নয় । প্রকাশ সে কথা শুনিল না। বলিল,—তুমি বড় খাট্‌চ, এত খাটুলে হয়ত অমুক ক’রে বসবে। সেই দিন প্রকাশ একটি ঝি সঙ্গে করিয়া বাড়ী ফিরিল। সুরবালা স্থির করিয়াছিল, তাহার ভগ্ন স্বাস্থ্যের কথা প্রবাসী – আষাঢ়, ১৩৩৫ [ ২৮শ ভাগ, ১ম খণ্ড স্বামীকে কোনমতে সে জানাইযে না। কিন্তু একদিন তাহাকে শয্যাগ্রহণ করিতে হইল। সে-দিন সে বালিশের মধ্যে মুখ গুজিয়া দুই হাতে মাথা চাপিয়া, ফোপাইতে ফোপাইতে কাদিয়া উঠিয়াছিল, আমি-মরি, আমি মরি— হে ঠাকুর, তাই কর । প্রকাশ ডাক্তার ডাকিয়া দেখাইল, ব্যবস্থামত ঔবধ দিল, পথ্য সেবন করাইল । তার পর একদিন কহিল, অনেক দিন হ'য়ে গেছে—শ্বশুর মহাশয়কে খবরও দিলাম না। একখানা চিঠি লিখে দেব কি ? সুরবালা বলিল,—না গে না । আমার জন্ত কাউকে ব্যস্ত ক'র না। আমার কোন কঃ নেই । আমি বেশ আছি । একটি গলির ভিতর রামঠাকুরের হোটেল ; রামঠাকুর দেখিতে বেঁটে, ভুড়ি প্রকাগু। কাচাপাকা গোফ গুলি ঝণটার কাটির মত খোচা খোচা ! মাথার স্থল শিখা যত পাপের গলায় দড়ি দিবার জন্ত যেন কাধ অবধি বুলিয়া পড়িয়াছে। দাড়িগুলি শক্ত, শনের মত—দীর্ঘ, পনর দিন পৰ্য্যস্ত নিৰ্ব্বিঘ্নে বুদ্ধিলাভ করিয়া শেষে একদিন দেশোয়ালী নাপিতের ক্ষুরে সমূলে বিনষ্ট হইলে বাহিরের ঘরে একটা চৌকির উপর গণেশ ঠাকুরটির মত গেট হইয়া বসিয়৷ হকা-হাতে সে পানকত চিত্রগুপ্তের খাত নাড়াচাড়া করিত। - খাদ্যদ্রব্য লইয়া কেহ নালিশ করিলে রামঠাকুর তৎ ক্ষণাৎ হু ক| নামাইয়া ডাকিত,-বিরাজ ! বিরাজ হোটেলের ঝি । বয়স বাইশ-তেইশ। দেখিতে শু্যামবর্ণ, দিব্য গোলগাল হাসিখুসি মুখ । চোথ চুটি ভাসী-ভাসা । বিরাজ আসিলে হুঙ্কার দিয়া রামঠাকুর জিজ্ঞাসা করিত,-মাছ না-কি পচা ? ঝঙ্কার দিয়া বিরাজ উত্তর দিত-কোন মিন্‌সে বলে ? রামঠাকুর বলিত,—জিজ্ঞাসা কর না সরকার মশায়কে। গালে হাত দিয়া বিরাজ বলিত, ও মা, বল কি গো