পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয় সংখ্যা ] দাবী রাজনৈতিক বহি বটে কি না, জানি না, তাহার আলোচনারও প্রয়োজন নাই ; কিন্তু গবন্মেণ্ট কর্তৃক উহ! রাজনৈতিক কারণেই বাজেয়াপ্ত হইয়াছে। এবং বিনা প্রকাশ্ব বিচারে উহা বাজেয়াপ্ত করা হইয়াছে। সাহিত্যের উপর গবন্মেণ্টের এই অবিচারিত আক্রমণের প্রতিবাদ সাহিত্যসভার পক্ষ হইতে হওয়া সঙ্গত। আমি যখন সুরম সাহিত্য-সন্মিলনীতে প্রতিবাদটি আলোচিত হইতে দি নাই, তখন এই যুক্তি আমার মনে উদিত হয় নাই ; সাহিত্যসভায় রাজনৈতিক প্রস্তাবের আলোচনা হওয়া অনাবস্তক ও অযৌক্তিক, এই সাধারণ নীতি অনুসারেই আমি প্রশ্নটির মীমাংসা করিয়াছিলাম। এখন যে যুক্তির উল্লেখ করিলাম, তখন তাহা মনে আসিলে এই মীমাংসা করিতাম, যে, প্রতিবাদটির আলোচনা সম্মিলনীর সভায় হইতে পরিবে, আলোচনা বা ভোটপ্রদানের সময় সরকারী কৰ্ম্মচারীরা ইচ্ছা করিলে সভা হইতে অনুপস্থিত থাকিতে বা ভোট না দিতে পারেন। এখন আমি যেরূপ বুঝিতেছি, তাহাতে আমার ভ্রম হইয়াছিল মনে হইতেছে। তাহার প্রতিকার করিবার সাধ্য এখন আমার নাই কিন্তু কৰ্ত্তব্যবোধে আমার বর্তমান মত প্রকাশ করিলাম । ঠিক সংবাদ যথাসময়ে না পাওয়ায় আমার অন্ত একটি বিষয়ে ক্রটি হইয়াছে, তাহা শিলচরে বুঝিতে পারি। গত বৎসর প্রবাসীর এক সংখ্যায় শ্রীহট্টের শশামোহন দে নামক এক যুবককে নারীর সন্মানরক্ষক বীর বলিয়া প্রশংসা করিয়াছিলাম। শিলচরে প্রকৃত বৃত্তান্ত জানিতে পারি । উহা অপ্রকাশিত। ঐ প্রশংসা প্রত্যাহার করিতেছি । শ্রীহট্ট দর্শন সম্বন্ধে গত মাসের চিঠিতে একটা কথা বলা হয় নাই। তাহাতে অনেকে কৌতুক বোধ করিতে পারেন, এইজন্ত বলিতেছি । যখন মুরারিচাদ কলেজ দেখিতে যাই, তখন সিড়ি বাহিয়৷ টিলার উপর উঠিয়া ওয়েলশ, প্রিন্সিপ্যাল মহাশয়ের খাস্ কামরার দিকে অগ্রসর হইবার আগে সঙ্গের ছাত্রটি তাহাকে খবর দেওয়ায় তিনি সৌজন্তের সহিত বাহির হইয়া আসিলেন এবং আমাকে দেখিয়াই হাসিয়া ইংরেজীতে বলিলেন, “আমার ধারণ ছিল আপনি সম্পাদকের চিঠি 8Հ ծ ইয়ং ম্যান (যুবা পুরুষ )।” আমিও ইংরেজীতে বলিলাম, “ত যে নই, তা ত দেখিতেই পাইতেছেন।” তিনি হাসিয়া বলিলেন, “কেবল মডার্ণ রিভিউ পড়িয়া আপনার সম্বন্ধে যা-কিছু ধারণা হইয়াছে, অন্ত কোন রকমে ত আপনাকে জানিতাম না।” মডার্ণ রিভিউ পড়িয়া কেন তাহার আমাকে ছোকৃরা মানুষ মনে হইয়াছিল, তাহা তাহাকে জিজ্ঞাসা করি নাই । কুমিল্ল দর্শনের বৃত্তান্ত হইতেও একটি কথা বাদ পড়িয়া গিয়াছিল। সেখানকার টাউন হলে ভদ্রমহোদয়েরা স্থানীয় সাহিত্য পরিষদের পক্ষ হইতে আমার প্রতি প্রীতি জ্ঞাপন করেন। আমিও উত্তরে কিছু বলি। পরিষদ অনেক পুরাতন পুথি ও গান প্রভৃতি সংগ্রহ এবং কিছু মুদ্রিত করিয়াছেন। টাউনহলটি স্বাধীন ত্রিপুরার স্বৰ্গীয় মহারাজা বীরচন্দ্র মাণিক্যের ব্যয়ে নিৰ্ম্মিত হয়। তথায় র্তাহার নিজের আঁকা নিজের একটি উৎকৃষ্ট তৈলচিত্র আছে। চিত্রবিদ্যায় তাহার নৈপুণ্য ছিল এবং বিদ্যোৎসাহীও তিনি ছিলেন। স্বাধীন ত্রিপুরার ইহা একটি বিশেষত্ব, যে, তথাকার রাজকীয় সমুদয় কাজকৰ্ম্মের ভাষা বাংলা । বাংলার এই আদর অন্য কোথাও নাই । থাকিবেই বা কেমন করিয়া ? বঙ্গে মোটে দুটি দেশী রাজ্য আছে ; তাহার মধ্যে কুচবেহারের রাজপরিবার অতিরিক্ত রকম বিদেশীভাবাপন্ন। পূৰ্ব্ববঙ্গের কয়েকটি জায়গা দেখিয়া আসিবার পর আমাকে লাহোর যাইতে হইয়াছিল । তথাকার ব্রাহ্মসমাজের দুই জন পরলোকগত ভক্ত ও কৰ্ম্মী ভাই লাল৷ কাশীরাম ও বাবু অবিনাশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতির প্রতি সন্মান প্রদর্শনার্থ স্থানীয় ব্রান্ধের বাহিরের কোন লোকের দ্বারা বৎসরে অনুনি ইট বক্তৃতা দেওয়াইবার ব্যবস্থা করিয়াছেন। বস্তৃতাগুলি উক্ত দুই মহাশয়ের নামে অভিহিত হয়। এ বৎসর বক্তৃতা করিবার ভার আমার উপর পড়ে। মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আমি লাহোর গিয়া ইংরেজীতে বক্তৃতা দিয়াছিলাম। লিখিত দুটি বস্তৃতা পাঠ করি। একটির বিষয় ছিল, আধুনিক ভায়তবর্যে ধৰ্ম্মসংস্কারের অগ্রণী (রামমোহন রায়) ; অন্তটির, আধুনিক ভারতবর্ষের