পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা । কনুসালমহাশয় উঠলেন-খৰ্ব্বাকৃতি ব্যক্তিটা, অভিজাত বংশীয় লোকের মতো চমৎকার ধরণ-ধারণ। তিনি ইংরিজী জানেন না, চীনা ভাষায় ( পেকিঙের চীনায় ) তিনি কবিকে স্বাগত করলেন। তার খাস-মুন্সী তার পর উঠে ইংরিজীতে তরজমা ক’রে দিলেন। কবি তখন উঠলেন - চীনারা খুব জয়ধ্বনি আর করতালির সঙ্গে র্তার সমাদর করলে। প্রথম তিনি ইংরিজীতে লেখা শিক্ষকদের কাছে তার একটী ছোটো message বা উপদেশবাণী পড়লেন। তারপর তিনি তার বক্তৃতা দিলেন। তার এই বক্তৃভাটীতে একটী কথা চমৎকার করে তিনি ব’লেছিলেন । নদীর বা ঝরণার জলের মতো র্তার উক্তির ধারা সহজে অচিস্তিতভাবে ব’য়ে চলে যায়,— দুঃখের বিষয়, সব সময়ে সুযোগ্য রিপোর্টারের শ্রতিলিখলের দ্বারা তাকে চিরকালের জন্ত বেঁধে রাখা যায় না। তিনি যে কথাটী ব’লেছিলেন সেটার আশয় হচ্ছে এই যে, মানুষ যে দেশে জন্মায় সে তার জন্মস্থত্রেই সেই দেশের সমস্ত অতীতের, তার সমস্ত ইতিহাসের সহজ অধিকারী হয়ে থাকে। কলকাতার একটা কোণে জন্ম নিয়ে কবি তেমনি ভারতের সমস্ত কৃতিত্বের উত্তরাধিকারী হয়েছেন। তেম্নি তার চীনা বন্ধুগণ ও চীন সভ্যতার জগতের শ্রেষ্ঠ অধিকার পেয়েছেন । ভারতের এই যে প্রাচীন ইতিহাস আর সংস্কৃতি, তার মধ্যে তার এক কোণে চীনের সঙ্গে একটু যোগ আছে। চীনে মানবিকতার যে বিকাশ হ’য়েছিল, ভারতবর্ষ প্রাচীন কালে তার বৌদ্ধ সন্ন্যাসী আর ধৰ্ম্মপ্রচারকদের হাত দিয়ে নিজের আধ্যাত্মিক জগতের নিজের দর্শন আর চিত্তার নিজের বিজ্ঞানের আর কলার অবিনশ্বর সমৃদ্ধির ভাগ চীনের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে তার সেই মানবিকতারই সংবৰ্দ্ধন করেছিল। কবির ভারতীর পুৰ্ব্বজগণ চীনে বে এই আধ্যাত্মিক অভিযান ক’রেছিলেন, বহু দূরের অনাগত কালের কবি-ও তখন তাদের মধ্যে দিয়ে এই অভিষানে যোগ দিয়েছিলেন। গতবার যখন কবি চীনে যান, তখন এই বোধট তার কাছে যেন একটা উপলব্ধ সভ্য হ’য়ে উঠেছিল । চীন আর ভারতের প্রাচীন বন্ধুত্ব, ভারতের আধ্যাত্মিক আর মানস জগতে চীনের প্রবেশ, আর চীনের কাছে উপায়নস্বরূপে তারত যে ভার পণ্ডিত আর সত্যভ্রষ্টা সস্তানদের পাঠিয়েছিল— এই সবের দ্বারায় আধুনিক চীনের কাছে বন্ধুত্বের দাবী করা কবির পক্ষে এক অতি সহজ দাবী হ’য়েছিল। আর চীনের লোকের তাকে যে রকম আদর আর শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করেছিল, আর চীনাদের মধ্যে কেউ কেউ তার এমনিই অঙ্কত্রিম জাষ্ট্ৰীয় হয়ে উঠেছিলেন যে তাতে র্তার মনে হয়েছিল ষে তার এই দাবী চীনে পরিপূর্ণ ভাবে স্বীকৃত هة جسسس جويا SAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAMMMMAAAS হয়েছে। চীনে তার চৌষটি বছরের জন্মদিন উপলক্ষে র্তার চীনা বন্ধুরা তার এক চীনা নামকরণ করেন, আর চীনা শিশুকে তার জন্মতিথির দিনে যেমন নোতুন পোষাক পরানো হয় তেমনি ক’রে তাকেও নীল অীর হ’লদে রেশমের এক চীনা পোষাক তারা উপহার দেন। এতে ক’রে বাস্তবিকই কবি যেন এক নবীন জীবন–র্তার চীন জীবন পেয়েছেন বলে তিনি মনে করেন। চীনাদের সঙ্গে সথ্যের অাঁর ভ্রাতৃত্বের আসনে বসতে র্তার কোনও দ্বিধা বা সঙ্কোচ নেই। তিনি মনে মনে ভাবেন, যে সমস্ত মহাপুরুষ চীন আর ভারতের সংস্কৃতিকে এক স্থত্রে গেঁথে দিয়েছিলেন, তিনি তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলেছেন, এশিয়াখণ্ডের এই দুই বিশাল জাতির একতা-বিধান-রূপ বিরাট ব্যাপারের গুরুত্ব তাদের মতনই তিনি উপলব্ধি ক’রেছেন। —এই রকমে একটি অতি সুন্দর বক্তৃতায়, আন্তর্জাতিক সংযোগেও যে দুটা জাতির মধ্যে কতখানি দরদ কতখানি সহানুভূতি থাকতে পারে তার এক মরমী বিচার করে, চীন আর ভারতের মধ্যে পুনরায় যাতে ভাবের আদান প্রদান আরম্ভ হয় সে বিষয়ে তার আস্তরিক কামনা জানিয়ে তিনি উপসংহার করেন। শ্ৰীযুত ফ্যঙ কবির বক্তৃতার মূল কথাটী চীনা-ভাষায় ব’লে দেবার চেষ্টা করেন, আমার কিন্তু মনে হয় যে এই ব্যাপারটা তার কাছে ততো সহজ-সাধ্য হয় নি। বক্তৃতার পালা চুক্ৰলে, একটা ছোটাে ইস্কুলের-মেয়ে এসে ইংরিজীতে ছোট্রো একটি বক্তৃতা আউড়ে কবিকে সিঙ্গাপুরের চীনা মেয়েদের তরফ থেকে তাদের হাতের ছুটী স্থচের কাজ উপহার দিলে। তারপর ধন্তবাদের পালা, আবার ব্যাণ্ডে চীন রাষ্ট্রগীত বাজানো, আর সভাভঙ্গ। সভা শেষের পরে কবি, কনসাল মহাশর আর চীনা শিক্ষক শিক্ষরিত্রী জনকতককে নিয়ে ছবি তোলা হ’ল । চীনা সিনেমা থিয়েটার-ইউরোপীর থিয়েটারের ঢঙে তৈরী। যতক্ষণ ফোটোগ্রাফের তোড়জোড় চ’লছিল, থিয়েটারের হাতার মধ্যে খোলা জায়গায় চেয়ার টেবিল পাত জলযোগের স্থানে ব’লে থিয়েটারের ভিতরের রেষ্টোরীয় বরফ লেমনেড খাওয়া গেল। রেষ্টোরায় নানা মণিহারী জিনিসও আছে,--আর আছে চীনা ফিলমের দৃশ্বের পোষ্টকার্ড সাইজের ফোটাে। খাস চীন থেকে এই সব ফোটোর আমদানী। সিনেমার ব্যবসায় চীনে চলছে খুব, বিস্তর চীনা ছবিও তৈরী হয়েছে। সিঙ্গাপুর অঞ্চলে এই সব চীনা ছায়াচিত্র খুবই আসে। কতকগুলি ঐতিহাসিক আর সামাজিক ফিক্স শুনলুম অতি চমৎকার হয়েছে। কলকাতার একবার এই রকম একটী চীনা সামাজিক ফিল্ম জালে, সেট দেখে আসি গিয়েছিল। এই সাধারণ একটা চীনা ছবি, ভারতে তোলা যে কোনো