পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:- ۔.b۔ سن4چس ২৮শ ভাগ, ১ম খণ্ড পুজোট সেৱে জাসি।” কিন্তু পাষাণের ঠাকুর সেদিন আর তাহার মনকে স্পর্শ করিতে পারিলেন না। র্তাহার মেহের পুত্তলিরাই তাছার হৃদয় জুড়িয়া রহিল। দোতলায় গোট দুই তিন ঘর খালিই পড়িয়াছিল। যাহার যা কিছু আবর্জন, সব এখানে ঠাশ থাকিত। হঠাৎ তাঁহাদের কপাল ফিরিয়া গেল । দেওয়ালে চুনকাম পড়িল, জানলা দরজায় রঙ পড়িল, সাহেববাড়ী হইতে বহুমূল্য আসবাষ আসিয়া, ঘরগুলির মূৰ্ত্তি একেবারেই পরিবর্তিত করিয়া ফেলিল। একটি শয়নকক্ষ, একটি বসিবার ঘর, একটি কাপড় চোপড় পরিবার, এই তিনটি ঘর নবীন অধিকারিণীর আগমন আশায় উৎসবসজ্জা করিয়া রহিল। ভানুমতী নিজে এখন সব বিলাসিতা ত্যাগ করিলেও, তাহার রুচি নষ্ট হয় নাই। ঘর সাজানো তিনি দাড়াইয়াই করাষ্ট্রলেন, আর কাহারও কাজ তাহার পছন্দ হইল না। রবিবার সকালেই তাহারা আসিয়া পৌছিবে। বাড়ীর গেটে নহবৎ বসিয়া গেল, মঙ্গল-ঘট, দেবদারপত্রের সজ্জ, কিছুই বাকি থাকিল না । শোভাবতী সপরিবারে আসিলেন, ভানুমতীর পিসী শ্বাশুড়ী ঠাকুরাণী জীবিত ছিলেন না, বিজনবালাই এখন ঘরের কত্রী। ছোট জা, ছেলে-পিলে সকলকে লইয়া আসিয়া জুটিল। দেওয়ানজী আসিয়া পৌঁছিয়াছিলেন। তিনি ষ্টিমীর ঘাটে ক’খানা মোটর আর কতজন লোক যাইবে, তাহারই ব্যবস্থা করিতে লাগিলেন । কলিকাতা এমনিই স্থান, যে, এখানে গাড়ী ঘোড়া, হাতী, লোকলঙ্কর ইয়া একটা শোভাযাত্রা করিবেন, তাহারও উপায় নাই। জমিদারীতে গিয়া সে সব করা যাইবে, এই ভাবিয়া কোনো রকমে তিনি মনের খেদ মনেই রাখিলেন । যাহার জন্ত এত আয়োজন সে তখন জাহাজের ডেকে দাড়াইয়া গঙ্গা তীরের ধাবমান দৃপ্তাবলীর দিকে চাহিয়া ছিল। আসিয়া ত পড়িল, আর ঘণ্টা ফুই তিন মাত্র। তাহার পর কেমন ভাবে তাহার জীবন চলিবে ८क छांप्न ? সুবীর নিজের ক্যাবিনে স্নাটকেসে তাল লাগানো বিছানা বাধা প্রভৃতিতে ব্যস্ত ছিল। সে-সব সারিয়া ফেলিয়া উপরে উঠিয়া আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার সব হয়ে গেছে নাকি ? আর ক্যাবিনে যেতে হবে না ?” কৃষ্ণ বলিল, “হয়েই গেছে সব। কেবল বিয়াটাকে বখশিশ দেওয়া বাকি ” স্থবীর বলিল, “সে-সব আমি ঠিক ক’রে দেব এখন : আপনাকে একটা ডেক্‌ চেয়ার এনে দিচ্ছি, এইখানেই বসুন।” সে চেয়ার লইয়া ফিরিয়া আসিল, কৃষ্ণাকে বসাইয়া খানিকক্ষণ তাহার চেয়ারের পিছনে দাড়াইয়। রহিল। তাহার পর বলিল, “দেখুন একটা কথা বলি, কিছু ধদি মনে না করেন।” কৃষ্ণ বিঘ্নিত হইয়া ফিরিয়। চাহিল, বলিল, “বলুলনা, আমি আপনার কথায় কিছু মনে করুত্ব না, মনে করবার মত কথা আপনি বলবেনও না।” সুবীর বলিল, “এ রকম শাদা কাপড় পরে নাম্বেন ন। ওরা ওখানে খুব ঘটা ক’রেই আপনাকে রিসাভ করতে আসবে। এ রকম ক’রে গেলে, সেটা বিশেষ মানাবে না ।” কৃষ্ণা হাসিয়া উঠিয়া পড়িল । বলিল, “আচ্ছ, আমি পোষাক বদলে নিচ্ছি। যদিও রাণী. সাজ বার উপযুক্ত কিছু আমায় ওয়ার্ডরোবে নেই।” সুবীর অতি কষ্টেই নিজের জিহবাকে সংঘত করিয়া রাখিল । কৃষ্ণ কাপড় বদলাইতে নীচে চলিয়া গেল । খানিক পরে সে যখন ফিরিয়া আসিল, তখন সুবীরের চোখের দৃষ্টিই তাহাকে যথেষ্ট পুরস্কার দিল । কৃঞ্চাকে প্রথমে সে যেদিন প্যাগোডাতে দেখিয়াছিল, সেদিনকার সেই নীল রেশমের পোষাকটি সে পরিয়া আসিয়াছিল। বলিতে আরম্ভ করিলে হয়ত মাত্রা রাখিতে পরিবে না বলিয়া সুবীর কথা বলিবার চেষ্টাও করিল না। কেবল মুগ্ধ দৃষ্টিতে চাহিয়া দাড়াইয়া রছিল : দেখিতে দেখিতে কলিকাতার জাহাজঘাট আসিয়া পড়িল। সুবীর কৃষ্ণকে বলিল, “ঐ যে বুড়ো ভদ্রলোক, ঠিক উপরতলার বারাণ্ডার মাঝামাঝি জায়গায় দাড়িয়ে,