পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨8ર করিতে, তখন আমার বেস মনে পড়ে—একদিন তুমি আমাকে তোমার ফোস্কাপড়া হাতের তেলে দেখাইয়৷ কাতর স্বরে বলিলে “স্বধৰ্ম্মে নিধনংশ্রেয়ঃ পরধৰ্ম্মে ভয়াবহ:" —পরধৰ্ম্ম অনুষ্ঠানের ফল এই দেথ হাতে হাতে! যাহার প্রত্যহ দুইসন্ধ্যা ঘোড়া’র খোরাক চিবাইয়া পরিপাক করে বিনা বাক্যব্যয়ে, তাহাদের লোহার শরীরে সবই সয় । কিন্তু ভাই, বলিতে কি, তোমার আমার মতো লোকের স্বতদ্বন্ধ-মৎস্তের শরীর মুগুরের কঠিন স্পর্শে বড়ই নারাজ !” এখন কিন্তু তুমি তাহ বলানা। আজকাল তুমি যে সময় মুগুর ভাজো, সে সময় মুগুরের পরিভ্রামণ ব্যাপারটির প্রতি তোমার মন এমি ভরপুর নিবিষ্ট থাকে যে, তাহার কঠিন স্পর্শ তোমার হস্তত্বকের গ্রাহের মধ্যেই আসে না। এখন যেমন তোমার পাকা হাতের অধিকারক্ষেত্রে মুদ্রগর পরিভ্রমণের কৰ্ম্মোদ্যম মুগুরের স্পর্শানুভবকে গ্রাস করিয়া ফ্যালে, দর্শকের তেন্নি স্বপরিস্ফুট চক্ষুর দৃষ্টিক্ষেত্রে আলোকের রূপ-দর্শন উহার স্পর্শাম্ভবকে গ্রাস করিয়া ফালে। ফেলুক্‌ না গ্রাস করিয়া—তাহাতে কাহার কি ক্ষতি ? ম্পর্শানুভব যায় না তো কোথাও । রূপ-দর্শনের উদরের মধ্যে দিব্য সে লুকাইয়া থাকে নিরাপদে—রাহুগ্রস্ত মুধাকর যেমন রাহুর বদন-সদনে । - ॥২ লুকাইয়াই যদি থাকে, তবে তো তাহ দর্শকের চক্ষে ধরা না পড়িবারই কথা। মুখে তুমিও বলিতেছ, আর কাণে আমিও শুনিতেছি যে, আলোকের স্পর্শানুভব রূপদৰ্শনের উদরের মধ্যে লুকাইয়া আছে ; চক্ষে কিন্তু তুমিও তাহা দেখিতেছ ন-আমিও তাহ দেখিতেছি না ; এরূপ অবস্থায় তাহা যে সত্যসত্যই ঐ স্থানটিতে লুকাইয়া আছে তাহা তুমিই বা কিরূপে জানিলে, আমিই বা কিরূপে জানিব ? তাহার নিতান্তই প্রমাণাভাব। ॥১ স্থল বস্তুর স্পর্শানুভবও যেমন—আলোকের স্পর্শম্ভবও তেন্নি—দুইই ফলেন পরিচায়তে। . তার সাক্ষী :–এট.যেমন একটা দেখা কথা যে, একতরে অঙ্গুলি-স্পর্শে পায়ে স্বড়ম্বড়ি লাগে, আরেকতরো অঙ্গুলিম্পর্শে গায়ে কাতুকুতু লাগে, আবার, তৃতীয় আরএকতরে অঙ্গুলি-স্পর্শে পাজরে খোচা লাগে ; এটাও তেমি একটা দেখা কথা যে, জবাফুলের মুখালোকের স্পর্শ চক্ষুতে লাল প্রবাসী ৮ম ভাগ। WikitanvirBot (আলাপ) ১৪:১৯, ২৪ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)്WikitanvirBot (আলাপ) ১৪:১৯, ২৪ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)്WikitanvirBot (আলাপ)--ു ঠ্যাকে, বেলফুলের মুখালোকের স্পর্শ চক্ষুতে সাদা ঠাকে, । সরিষাকুলের মুখালোকের স্পর্শ চক্ষুতে হোলদে ঠাকে। এইরূপ তরো-বেতরে ফলের উৎপত্তিই তরো-বেতরে স্পশামুভবের প্রমাণ। আমাদের বাল্যকালের সেই রাষ্ট্র পণ্ডিতকে তোমার মনে পড়ে ? তোমার তো মনে পড়িবেই, যেহেতু তুমি তাহার নাম রাখিয়াছিলে অগ্নি শৰ্ম্ম। তাহার আশীৰ্ব্বাদে—চপেটাঘাতের ফল যে কিরূপ মৰ্ম্মান্তিক ব্যথামুভব, আর, সে যে ব্যথাযুভব আহত কপোলের স্পর্শক্ষেত্রেই ব্যাপ্তি লাভ করে, এ তৰটর নিগুঢ় রহস্ত তুমি যেমন জান’ এমন আর কেহই না; কেননা তুমিই ব্রাহ্মণটিকে রাগাইবার প্রধান অধিনায়ক ছিলে। এটাও তেমি তোমার জানা উচিত যে, জবাফুলের মুখালোকের করাঘাতে (কিনা রশ্মি আঘাতে ) দর্শকের চক্ষুতে রক্ত বর্ণের অনুভব যাহা উৎপন্ন হয়, তাহা আহত চকুগোলকের স্পর্শক্ষেত্রেই ব্যাপ্তি লাভ করে-অন্তত্র কোথাও না ; অথবা, যাহা একই কথা–চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশেই ব্যাপ্তি লাভ করে-বহিরাকাশে না। তবে যে কেন জবাফুলের লাল রঙ চক্ষুগোলকের বহিরাকাশে ভাসমান হয়, তাহার কারণ অন্যতম। ব্যাপারটা তবে তোমাকে আদ্যোপান্ত খোলাসা করিয়া ভাঙিয়া বলি, প্রণিধান কর : শুভাদৃষ্ট বশত সুচিকিৎসকের হস্তে পড়িয়া কচিং কদাচিৎ কোনো জন্মান্ধ ব্যক্তি যখন সহসা চক্ষু লাভ করে, তখন প্রথম প্রথম তাহার মনে হয়—যেন তাহার চক্ষু গোলকের অন্তরাকাশ একখানি স্বচ্ছ কাচ-ফলক, আর সন্মুপস্থিত দৃশুরাজি সেই কাচ-ফলকের গায়ে যেন ছবি আঁকা। মনে কর ঐক্ষপ একজন নূতন দর্শন-ব্ৰতী একটা গোচারণের মাঠ ভাঙ্গিয়া গঙ্গাস্নানে যাইতেছে। এরূপ অবস্থায় দর্শক তাহার চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশ-ব্যাপী কাল্পনিক কাচ ফলকটার শিরঃস্থানে দেখিবে—গঙ্গার ওপারের শু্যামল তটচ্ছবি ; তাহার একপংক্তি নীচে দেখিবে—গঙ্গার জলচ্ছবি ; আর এক পংক্তি নীচে দেখিবে—গঙ্গার এপারের বালুকা-ময় তটচ্ছবি ; তাহার নীচের পংক্তিতে দেখিবে-তৃণাস্তৃত মাঠের ছবি ; আর l | আপনার তৈলাক্ত বক্ষকপাটের ছবি। ৫ম সংখ্যা । চক্ষু পদার্থটা কি ? ネ8○ Tk kB BBB TtttBBuS BBBS BB BBBB BB BBBBB BBBB BBB তাহার পরে, গঙ্গার দিকে যতই সে পদব্রজে অগ্রসর হইতে থাকিবে— দেখিবে যে, ততই গঙ্গার জলচ্ছবি উত্তরোত্তর ক্রমশই চওড়া’য় বাড়িতে থাকিয় তাহার বক্ষচ্ছবির কাছবাগে নাবিয়া আসিতেছে। এইরূপ ক্রমশ উপর কইতে নীচে নাবিয়া-আসাগতিকে গঙ্গার এপারের কিনারা যখন দর্শকের বক্ষচ্ছবির নীচে চাপা পড়িয়া যাইবে, তখন দর্শকের পদতল গঙ্গাজলের সংস্পৰ্শ লাভ করিবে। নূতন দর্শনব্রতী মাস তিনেক ধরিয়া প্রতিদিন এইরূপ গঙ্গাস্নানে যাওয়াআশা করিলেই সৰ্ব্বদা-কাজে-লাগিবার-মতো কতকগুলি নূতন সংস্কার তাহার মনের মধ্যে জন্মের মত বদ্ধমুল হইয়া যাইবে। তাহার মধ্যে যে দুইটি সংস্কার সর্বপ্রধান সেই দুইটি এই :– (১) চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশ-স্থিত আতপচ্ছবি ক্রমশ আয়তনে ছোটো হইয়া-হইয়া নীচে হইতে উপরে প্রসারিত হওয়ার নামই—বহিরাকাশস্থিত দৃশুরাজি দৰ্শকের সন্নিধান হইতে উত্তরোত্তর দূরে দূরে স্থিতি করা। - (২) চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশস্থিত আতপচ্ছবি ক্রমশ লম্বায় চওড়ায় বড় হইয়া-হইয়া উপর হইতে নীচে নাবিয়া আসিতে থাকা'র নামই—বহিরাকাশস্থিত দৃশুরাজি দূর হইতে ক্রমশ দর্শকের নিকটবাগে সরিয়া আসিতে থাকা, আর, তাহারই নাম— প্রয়াণস্থান হইতে দর্শকের উত্তরোত্তরক্রমে দূরে দূরে অগ্রসর হইতে থাকা। দ্রষ্টা মাত্রেরই ঐরুপ কতকগুলা কচি-বয়সের পরীক্ষালন্ধ সংস্কার আলোকের স্পর্শানুভবমূলক বর্ণাদিবোধের সহিত একত্র জমাটবদ্ধ হইয়া চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশস্থিত আলোকের স্পর্শক্ষেত্রকে বহিরাকাশস্থিত দর্শনক্ষেত্র করিয়া গড়িয়া তোলে। ॥২ এ যাহা তুমি বলিলে, তাহার মধ্যে’কার মোট কথাটা আমি যতদূর বুঝিতে পারিয়াছি তাহা এই যে, চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশব্যাপী আলোকের স্পর্শামুভবমূলক বর্ণাদিবোধই রূপদৰ্শনবেশে বহিরাকাশে সাজিয়া বাহির হয়। তা যেন হইল—এখন জিজ্ঞাস্ত আমার এই যে, যদি দর্শক গ্ৰীবা নত করিয়া আপনার শরীর-পানে ঠাহরিয়া l ঐৰূপে বহিরাকাশে সাজিয়া বাহির হইবার পূৰ্ব্বে আলো অন্তরাকাশে—ম্পর্শক্ষেত্রে ) বেশ বিদ্যাস করিতে থাকে, তখন শুধুই কি তাহা বর্ণাদিবোধ-রূপদৰ্শন মূলেই না? ॥১॥ তাহা আমি বলি না। এ কথাও আমি বলি না যে, ব্যাঙাচী মূলেই ব্যাঙ, নহে, আর, এ কথাও আমি বলি না যে, চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশব্যাপী বর্ণাদি-বোধ মূলেই রূপদৰ্শন নহে। উল্টা বরং আমি বলি এই যে, ব্যঙাচি= হৰু ব্যাঙ ( অর্থাৎ potential ব্যাঙ,) ; বর্ণাদি-বোধ= হবু রূপদৰ্শন। বাঙাচী জলে কিল বিল করিতেছে দেখিলে একটি "সপ্তমবর্ষীয় বালকের এরূপ মনেই হইতে পারে না যে, ঐ লাঙ্গুল-সৰ্ব্বস্ব জলকীট-গুলার জন্ম চারিপেয়ে জীবের বংশে ; আবার আর-কিছুদিন পরে বালকটি যদি উহাদের কাহাকেও পাকে ল্যাজ গাড়িয়া পড়িয়া থাকিতে দেখে, তবে নিশ্চয়ই সে মনে ভাবিবে যে উহা একপ্রকার ভিজে টিকটিকি। আর একদিকে তেমি আবার, একটা সপ্তাহছএকের বিড়াল-ছানা’র অফুট চক্ষুগোলকে যখন আলোক ডুব-সাতার খ্যালে, তখন আলোকের সেই যে স্পর্শামুভব, সে-যে স্পর্শামুভব রূপ-দর্শনেরই পূৰ্ব্বাভাস, এ তত্ত্বটি সহসা বুঝিতে পারা সুকঠিন। যাহাই হো’ক্‌ না কেন—এটা তো তোমার জানিতে বাকি নাই যে, এই বেরাল বনে গেলেই বন-বেরাল হয় ? এটাও তেমি তোমার জানা উচিত যে, চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশ-ব্যাপী বর্ণান্ধিবোধ বহিরাকাশে প্রসারিত হইলেই রূপ-দর্শন হইয়া ওঠে। ॥২॥ বহিরাকাশে প্রসারিত হয়—তাহা তো বুঝিলাম ; কিন্তু, কেমন করিয়া তাহ বহিরাকাশে প্রসারিত হয়— বহিরাকাশে প্রসারিত হওনের প্রকরণ-পদ্ধতি কিরূপ— সেইটিই হ’চ্চে জিজ্ঞাস্ত ; তাহার তুমি কি-উত্তর দ্যাও ? ॥১। পূৰ্ব্বোল্লিখিত দৃষ্টাস্তের - নূতন দর্শনব্রতী যখন পদব্রজে গঙ্গাস্নানে যাইতেছে, তখন, এ তে দেখিতেই পাওয়া যাইতেছে যে, একদিকে যেমন দৃশু আলোকের ক্রিয়া চলিতেছে চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশে, আর-এক দিকে তেমি, দর্শকের পা চলিতেছে চক্ষুগোলকের বহিরা কাশে। এটাও তেমি দেখা চাই যে, অন্তরাকাশে আলোকের ঐযে ক্রিয়া চলিতেছে, উহা চক্ষুরিক্তিরের