পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬ প্রহার করিয়া কিছুই অন্যায় করি নাই। আমি ছয় বৎসর বয়স হইতে বিদ্যালয়ে পড়িতেছি। আমি তৃতীয় শ্রেণীতে দুই বৎসর আছি। আমি লিখন, পঠন, অঙ্ক, ইতিহাস, ভূগোল এবং ধৰ্ম্ম শিক্ষা করিয়াছি। আমি দশাঙ্গা জানি, ষষ্ঠ আজ্ঞাও জানি—“কাহাকেও হত্যা করিও না’। আমার ক্রীড়া-সঙ্গী আছে। আমি যে গৃহে বাস করি সেই গৃহেই বিংশতি বর্ষীয় একুটী যুবতী আছে —তাহার চরিত্র সন্দেহজনক ] আমি তাহার নিকটে অনেক সময়ে যাই । আমি কিছু দিন হইল ক্রীড়াচ্ছলে একজন বালকের চক্ষু এমন জোরে টিপিয়া ধরিয়াছিলাম যে সে যাতনায় চীৎকার করিয়াছিল এবং তাহার চোখ ফুলিয়া উঠিয়াছিল। আমি বুঝিয়াছিলাম যে সে যাতন পাইতেছে,কিন্তু যতক্ষণ না জোর করিয়া আমার হাত টানিয়া লওয়া হইয়াছিল ততক্ষণ আমি ছাড়ি নাই। আমি যে ইহাতে বেশী আনন্দ পাইয়াছিলাম তাহা নহে– কিন্তু দুঃখিতও হই নাই। আমি বাল্যকালে খরগোসের চোখে কাটা ফুটাইতাম ও তাহাদের পেট চিরিয়া দ্বিতাম—ম এইরূপ বলেন, আমার তাহা মনে নাই। কনরাড নামক একজন তাহার স্ত্রী ও সস্তান দিগকে খুন করিয়া প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছে, আমি তাহা জানি। আমি মিষ্ট দ্রব্য থাইতে ভালবাসি, সেজন্য অনেক বার মিথ্যাকথা তুলিয়া পয়সা সংগ্ৰহ করিয়াছি। যে কাহাকেও হত্যা করে সে খুনী—আমি খুনী (murderess) < its তাহার শাস্তি। আমার প্রাণদণ্ড হইবে না, কারণ আমার বয়স অল্প। ৭ই জুলাই মা আমাকে কোনও কাজে পাঠান। •z« Ħtítváčfgqūzwq (Margarete Dietrich)*fès. দেখা হয়—তাহার বয়স সাড়ে তিন বৎসর। মার্চ মাস হইতে আমি তাহাকে চিনিতাম। আমি তাহার হাত ধরিয়া বলিলাম, আমার সঙ্গে চল । আমি তাহার ইয়ারিং লইবার মানস করিয়াছিলাম—বিক্রয় করিয়া পিষ্টক থাইবার জন্য আমি তাহাকে সিড়ির উপর বসাইয়া রাখিয়া মার নিকট হইতে পয়সা ও চাবী লইয়া কাজে গেলাম। ফিরিয়া আসিয়া দেখিলাম সে সেখানেই বসিয়া আছে। আমি আঙ্গিন হইতে" দেখিলাম তেতালার ঘরে জানালা একটু খোলা আছে। তাহার কাণ হইতে ইয়ারিং খুলিয়া লইয়া তাহাকে জানাল হইতে ফেলিয়া দিবার উদেখে তাহাকে লইয়া প্রবাসী । [ ৮মৃ ভাগ । উপরে গেলাম। আমি তাহাকে হত্যা করিবার সংকল্প করিয়াছিলাম, নতুবা সে সমস্ত প্রকাশ করিয়া দিত। সে ভাল করিয়া কথা বলিতে পারিত না, কিন্তু আমাকে দেখাইয়া দিতে পারিত। তাহা হইলেই মা আমাকে মারিতেন। আমি উপরে যাইয়া জানালাটা ভাল করিয়া খুলিয়া তাহাকে সেখানে বসাইলাম। এমন সময়ে পদশব্দে বুঝিলাম, কেহ আসিতেছে। আমি মেয়েটকে তৎক্ষণাৎ নীচে নামাইয়া জানালা বন্ধ করিয়া দিলাম। লোকটী আমাদিগকে না দেখিয়া চলিয়া গেল। আমি আবার জানালা খুলিয়া আমার দিকে পিঠ করিয়া মেয়েটকে জানালায় বসাইলাম, তাহার পা ঝুলিতে লাগিল। এরূপ করিয়া বসাইলাম এই ৷ জষ্ঠ যে আমি তাহার মুখ দেখিতে পাইব না, এবং সহজে । তাহাকে ঠেলিয়া ফেলিতে পারিব। আমি ইয়ারিং টানিয়া লইলাম । আমি ইয়ারিং পকেটে রাখিলাম। পড়িল। আমি তৎক্ষণাৎ নীচে নামিয়া মার কাজে চলিয়া গেলাম। আমি জানিতাম যে আমি মেয়েটকে হত্যা করিতে । যাইতেছি। তাহার পিতা মাতা যে শোকাৰ্ত্ত হইবেন, সে । চিন্তা আমার মনে উদয় হয় নাই। আমি এজন্য দুঃখিত ব । ক্লিষ্ট হই নাই। আমি জেলে আছি বলিয়া মুহূর্বের তরেও দুঃখিত হই নাই। আমি প্রথমে পুলিসের নিকট সমস্ত । অস্বীকার করিয়াছিলাম ও ইয়ারিং ফেলিয়া দিয়াছিলাম। পরে পুলিসের লোক আমাকে প্রহারের ভয় দেখাইলে সমস্ত স্বীকার করি। আমি বালিকাটীর মৃতদেহ দেখিয়া একটুকুও দুঃখ বোধ করি নাই। আমি জেলে চারিজন স্ত্রীলোকের সহিত ছিলাম—ভাহাদিগকে সব বলিয়াছি। তাহাদের অদ্ভূত প্রশ্ন শুনিয়া আমি আমার কাহিনী বলিবার সময় না হাসিয়া থাকিতে পারি নাই। আমি মাকে কিছু পয়সা পাঠাইতে লিথিয়াছি, কারণ জেলে শুষ্ক রুট থাইতে দেয়—তাহ ভিজাইবার জন্য একটা কিছু চাই।” এই বালিকার পূর্ব pp. 7-1 1. সে ব্যথা পাইয়া কঁাদিতে লাগিল। আমি ধমক ৷ দিয়া বলিলাম, কাদিলে নীচে ফেলিয়া দিব। সে চুপ করিল। তথন আমি তাহাকে । ঠেলিয়া ফেলিয়া দিলাম, শব্দ শুনিয়া বুঝিলাম, সে প্রথমে । আলোকস্তম্ভের উপর ও তৎপর পাকা আঙ্গিনার উপর । – * The Criminal (The Contemporary Science Series) م.م.م.م. -- | - পুরুষ সম্বন্ধে কিছু জানা নাই। ইহার অন্তরে ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম l ১ম সংখ্যা । ] বোধ মোটেই ছিল না। কেন ছিল না, তাহার কারণ সম্বন্ধে মতভেদ থাকিতে পারে। আমাদের মনে হয়, ইহার রক্তমাংসের মধ্যে এমন কিছু ছিল—অর্থাৎ ইহার দৈহিক সংগঠন এমন বিচিত্র ছিল, যাহাতে ইহার প্রাণে ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মবোধরূপ বীজ উপ্ত হইয়াও অঙ্কুরিত হইতে পারে নাই। (*) of (Heredity) চরিত্রের দ্বিতীয় ভিত্তি বংশ । সস্তান পিতামাতার দোষগুণের অধিকারী হয়, ইহা নিত্য প্রত্যক্ষ সত্য। কিন্তু চরিত্রের উপর বংশের বা পূৰ্ব্বপুরুষগণের প্রভাব কত প্রবল, বিস্তৃত ও গভীর, সে সমস্ত সহজ নহে। অনেকে মনে করেন, কাহারও চরিত্রের বিশেষ বিশেষ লক্ষণ পিতামাতা বা পিতামহ মাতামহের মধ্যে দৃষ্ট না হইলেই বংশপ্রভাবের নিয়ম মিথ্যা বলিয়া প্রতিপন্ন হইল। কিন্তু যাহার এই তত্ত্ব সম্বন্ধে বিশেষ অনুসন্ধান ও অধ্যয়ন করিয়াছেন, তাহারা জানেন, এক একটা গুণ বা দোষের মূল অন্বেষণে নিযুক্ত হইয়া শাখা প্রশাখা ক্রমে অনেক দূরে যাইতে হয়। এমন কি, হয় তো উৰ্দ্ধতন চতুর্দশ পুরুষে উপস্থিত হইলে তবে একটা সমস্তার মীমাংসা প্রাপ্ত হওয়া যায়। কোন কোনও পরিবারে বা গোত্রে বংশপ্রভাবের আশ্চৰ্য্য প্রমাণ দৃষ্ট হয়। যেমন আমেরিকার জুক বংশ (The Jukes)। এই বংশের ৭০৯ জন লোকের পরিচয় পাওয়া গিয়াছে। ইহাদিগের মধ্যে কুড়িজনও নিপুণ শ্রমজীবী নাই--যে কয়জন আছে তাহাদের মধ্যে দশজন কারাগারে কৰ্ম্ম শিক্ষা করিয়াছে। সরকারী দাতব্যদ্বারা জীবিকা নিৰ্ব্বাহ করিতেছে। সকলের দাতব্য প্রাপ্তিকালের সমষ্টি ২৩০০ বৎসর, ৭৬ জন দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী। এই বংশে ব্যভিচারিণী রমণীর সংখ্যা শতকরা ৫২র উপর। সাধারণতঃ এরূপ রমণীর সংখ্যা শতকরা মোটে ১৬৬। • অপরাধী (the criminal) শ্রেণীর সম্বন্ধে আলোচনা করা এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য নহে। অবসর হইলে এবিষয়ে ভবিষ্যতে কিছু বলা যাইবে । আমরা এতক্ষণ যাহা আলোচনা করিলাম, তাহার মৰ্ম্ম এই যে সাধারণ অবস্থাতেও

  • The Criminal, pp. 101-2

Wð ধৰ্ম্ম-সাধন বা চরিত্রের উন্নতি-সম্পাদন । ১৮০ জন o - ১৭ - চরিত্রের গুণাগুণ দৈহিক ੋਸ਼ ও রূপ अञ्जनिशव নিয়মিত হয়। এক্ষণে দেখিতে হইবে ধৰ্ম্মসুধিনের সহিত এই দুইটার কোনও সম্বন্ধ আছে কিনা। ধৰ্ম্মসাধণের সহিত দৈহিকসংগঠন ও বংশ প্রভাবের সম্বন্ধ । ধৰ্ম্মসাধনের উদ্দেশু যোগক্ষেম—অর্থাৎ যে গুণ নাই তাহা লাভ ও যে গুণ আছে তাহার'উৎকর্ষ সাধন। মন্থ ধৰ্ম্মের যে দশটা লক্ষণ নির্দেশ করিয়াছেন, তাহার অধিকাংশই ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে পরিস্কট ভাবে বা অঙ্কুরাকারে রহিয়াছে। এই গুণ বা লক্ষণগুলি কাহার মধ্যে কি আকারে আছে তাহ যেমন দৈহিকসংগঠন ও বংশপ্রভাব দ্বারা নিয়মিত হইয়াছে, তেমনি ইহাদিগের উৎকর্ষ সাধনে কৃতকাৰ্য্যতাও এই দুইটার উপর নির্ভর করিতেছে। যেমন ধৃতি বা সন্তোষ। কেহ কেহ জন্মাবধিই সন্তুষ্টচিত্ত। তাহার এমন দেহ লাভ করিয়াছেন বা পিতামাতার নিকট হইতে এমন প্রকৃতি পাইয়াছেন যে অসন্তোষ, নিরাশা তাহদের ত্রিসীমায় আসিতে পারে না। পক্ষাস্তরে যে বাল্যাবধি রোগক্লিষ্ট, যাহার রক্তমাংসের ক্রিয়া (animal spirits) দুৰ্ব্বল, যে স্বনিদ্রা কাহাকে বলে জীবনে জানে না, তাহার চিত্তে সহজেই অসন্তোষ প্রবল হয়। তৎপর, অক্রোধ। ইংরেজীতে একটা প্রবাদ আছে ক্ষুধিতব্যক্তি Costă (A hungry man is an angry man) oth অতি ঠিক। যে ক্ষুধাতুর তাহার যেমন সহজেই ক্রোধের উদ্রেক হয়, তেমনি অজীর্ণরোগক্লিষ্ট ব্যক্তিও সহজে ক্রোধ জয় করিতে পারে না। দুৰ্ব্বল ব্যক্তির পক্ষে ক্ষমা করা সহজ। শক্তিশালী পুরুষের পক্ষে অপরাধ মার্জনা করিতে একটু সময় লাগে। আমরা ভারতবর্ষীয়েরা ক্ষমাশীল বলিয়া গৌরব অনুভব করিয়া থাকি। ইহা আমাদিগের দৈহিক দুৰ্ব্বলতার না ধৰ্ম্মসাধনের ফল, বলা কঠিন। তারপর, অন্তরও বহিরিক্রিয় দমনের কথা ধরা যাকু। কেন জানে, সকলের সকল ইন্দ্রিয় সমান প্রবল থাকে না ; দৈহিকসংগঠন ও বংশানুসারে এবিষয়ে গুরুতর তারতম্য দৃষ্ট হইয়া থাকে। এ ক্ষেত্রে দেহ ও বংশের প্রভাব এত প্রবল যে অনেক ব্যাকুলচিত্ত, ভগবদ্ধভক্ত সাধককেও এজন্য