পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२88 যেমন ঔজ্জ্বলা-বোধ, শুভ্রতা-বোধ, রক্তিম-বোধ ইত্যাদি। আবার বহিরাকাশে দর্শকের ঐযে পা চলিতেছে, উহ একপ্রকার ফৰ্ম্মেন্দ্রিয়ের বহিস্ফৰ্ত্তি, আর, তাহার ফল— বহিরাকাশস্থিত দৃশ্ববস্তুতে বর্ণাদি-বোধের উপসংক্রাস্তি অর্থাৎ চালান। সেতার-বাজিএ যখন সারে গামা বাজাইতেছে, তখন আপন অঙ্গুলি-তাড়না’র বহিস্ক,ষ্টির কথায়ভুলিয়া এইরূপ সে মনে করে যে, তাহার হস্তের বহিরাকাশস্থিত সেতারের তার সারেগামা বলিতেছে ; কিন্তু সত্য এই যে, সেতার-বাজিএ'র কর্ণকুহরের অন্তরাকাশ ব্যাপী বায়ুর তরঙ্গ-তাড়না সারেগামা বলিতেছে। উদ্যানপতি, তেমি, একটি প্রস্ফুটিত রক্তবর্ণ গোলাপফুলের অভিমুখে পদব্রজে অগ্রসর হইবার সময়, পায়ে স্থাটার বহিস্কৃত্ত্বির কথায়-ভুলিয়া মনে করেন যে, বহিরাকাশস্থিত গোলাপ ফুলটি'র গাত্রে রক্তিমবর্ণের ছাপ লাগানো রহিয়াছে ; কিন্তু সত্য এই যে, ঐ বর্ণের ছাপ লাগানো রহিয়াছে— বহিরাকাশে কোথাও না পরস্তু- দর্শকের আপনারই চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশে। উদ্যানপতি প্রথমে গোলাপফুলের রক্তিম মুখালোকের স্পর্শ অনুভব করেন ঐস্থানটিতেই অর্থাৎ আপন চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশে ; তাহার পরে যথাক্রমে পায়ে-হাটিয়া এবং গত বাড়াইয়া গোলাপফুলের দল-সংঘাতের স্পর্শ অনুভব করেন আপনার হস্তত্বকে। উদ্ধানপতি তিনটি বিষয় তিনক্ষেত্রে ক্রমান্বয়ে অনুভব করেন :– (১) গোলাপ-ফুলের রক্তিম মুখালোকের স্পর্শ অনুভব করেন চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশে। (২) দলসংঘাতের স্পর্শ অনুভব করেন-চক্ষুগোলকের বহিরাকাশস্থিত হস্তত্বকে । (৩) পারে হাটা এবং হাত বাড়ানোর বহিষ্ণুপ্তি অনুভব করেন–চক্ষুগোলকের বহিরাকাশস্থিত হস্তপদের মাংসপেশীতে • স্পষ্টই তো এই দেখিতে পাওয়া যাইতেছে যে, দর্শকের দেহক্ষেত্রের এ মুড়ায়–অর্থাৎ চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশে —গোলাপফুলের রক্তিমবর্ণ অনুভূত হয় ; ও-মুড়ায় —অর্থাৎ চক্ষুগোলকের বহিরাকাশস্থিত হস্তত্বকে— প্রবাসী একপ্রকার অন্তস্ফূৰ্ত্তি, আর, তাহার ফল-বর্ণাদি-বোধ ; দল সংঘাতের কোমল স্পর্শ অনুভূত হয় ; এবং I. [ ৮ম ভাগ। মাঝের জায়গাটিতে --অর্থাৎ হস্তপদের মাংসপেশীতেকৰ্ম্মোদ্যমের বহিস্ফৰ্ত্তি অনুভূত হয়। ইহার একটা উপস্থা দেখাইতেছি—প্রণিধান করং-এটা যেমন তুমি দেখিয়াছ যে, বৃক্ষের শিকড়-জাল ব্যাপ্তি-লাভ করে ভূস্তয়ে অন্তরাকাশে, এবং শাখা প্রশাখা ব্যাপ্তি লাভ করে ভূস্তরের বহিরাকাশে ; এটাও তেন্নি দেখ। চাই যে, গোলাপ-ফুলের মুখরশ্মির রক্তিমা-বোধ বাপ্তি লাভ করে দর্শকের চক্ষু গোলকের অন্তরাকাশে, এবং দলসংঘাতের কোমল স্পর্শামুক্তৰ ব্যাপ্তি লাভ করে চক্ষুগোলকের বহিরাকাশে হস্ত ত্বকে। দুয়ের মধ্যে ( অর্থাৎ উপমান এবং উপমেয়ের মধ্যে) সোসাদৃশ্ব এইরূপ :–শিকড়ের বিস্তার যেমন ভূস্তরের অন্তর কাশের ব্যাপার, আলোকের স্পর্শানুভবমূলক বর্ণবো তেন্নি চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশের ব্যাপার ; শাখার বিস্তা যেমন ভূস্তরের বহিরাকাশের ব্যাপার, দল-সঙ্ঘাতের স্পর্শ । মুভব তেন্নি চক্ষুগোলকের বহিরাকাশের ব্যাপার ; আর অম্বুরোদগম যেমন বৃক্ষের ঐ দুইমুড়া'র দুই বাপারেঃ মধ্যবৰ্ত্তী সোপান, কৰ্ম্মোস্কমের ক্ষৰ্বি-অনুভব তেন্নি চক্ষু | রিন্দ্রিয়ের ঐ দুইমুড়া’র দুই ব্যাপারের মধ্যবৰ্ত্তী সোপান। তবেই হইতেছে যে, পায়ে-হাটা হাত-বাড়ানো প্রভৃতি কৰ্ম্মোস্কমের স্ফৰ্ত্তি-অনুভবের মধ্য-দিয়াই চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশ-ব্যাপী বর্ণবোধ বহিরাকাশে প্রসারিত হয় ; আর, তাহার ফল হয়—ব্ধপ-দর্শন। প্রকৃত কথা এই যে, জলের ব্যাঙাচী এবং ডাঙার ব্যাঙের মাঝে জায়গাটিতে দেখিতে পাওয়া যায় যেমন-তরে, চক্ষুগোল কের অন্তরাকাশ-ব্যাপী বর্ণবোধ এবং বহিরাকাশ-পরায়ণ রূপ-দর্শনের মাঝের জায়গাটিতে তেমি-তরো একটা ক্রমবিকাশের সোপান এমুড়া হইতে ও-মুড়া পর্যন্ত নিরবচ্ছেদে প্রসারিত রহিয়াছে, তাহাতে আর ভুল নাই। এখন দেখিতে হইবে এই যে, কৰ্ম্মোঙ্গমের অভ্যাস-বলে সেই ক্রমবিকাশের সিড়ি ভাঙিয়া চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশ ব্যাপী বর্ণবোধ বহিরাকাশে রূপ-দৰ্শন-বেশে সাজি বাহির হয়। ॥২ “ক্রমবিকাশ” যে বলিতেছ—কিসের ক্রমবিকাশ ! আলোকের না চক্ষুরিত্রিয়ের ? ॥১ তোমার কথা বাৰ্ত্তার ভাবে আমার এইরূপ মনে ৫ম সংখ্যা । ]


l

হইতেছে যে, পৃথিবীন্থ জীবজন্তুদিগের চক্ষুরুদ্দীপনের গোড়া’র বৃত্তান্তটা’র তুমি বড় একটা খোজ পবর রাঞ্চনা। বিজ্ঞানের মুখে তুমি যদি সেই গোড়া’র বৃত্তান্তটি শুনিতে, তাহা হইলে স্পষ্ট বুঝিতে পারিতে যে, জীবের স্থরিস্ক্রিয় আলোক হইতে স্বতন্ত্র কোনো পদার্থ নচে, পরন্থ তাহ আলোকের উপাদানে আপাদমস্তক পরিগঠিত— তাহা আলোক’ই। পৃথিবীমাতার এমনও এক সময় ছিল যখন তাহার ক্রোড়স্থ সদ্যোজাত জীবদিগের চক্ষু ফোটে নাই; কিন্তু তখনও স্বৰ্য্যালোক ছিল। ইষ্টতে পারে যে, তখন স্বৰ্য্যালোক ঘন কুঙ্কটিকায় আবৃত ছিল, কিন্তু ছিল। সূর্যালোক ছিল কিন্তু দ্রষ্টা ছিল না। দ্রষ্ট যখন ছিল না, তখন তাহা হইতেই আসিতেছে যে, দর্শন বলিয়া যে একটা চাক্ষুষ উপলব্ধির ব্যাপার, সে সময়ে পৃথিবীতে তাহার নাম গন্ধও ছিল না। দর্শনক্রিয়া যখন ছিল না, তখন, ইহা বলা বাহুল্য যে, স্বৰ্য্যালোক থাকা সত্ত্বেও স্বৰ্য্যালোকের প্রকাশ ছিল না, কেননা আলোকের আদর্শনের নামই আলোকের অপ্রকাশ। স্বৰ্য্যালোকের প্রকাশই না-হয় নাছিল, কিন্তু তাহা বলিয়া সেই আদিম সময়ে স্বৰ্য্যালোক কি আপনার কৰ্ত্তব্য কার্য্যে একমুহূৰ্ত্তও বিরত ছিল ? কখনই না! তখনকার সেই অপ্রকাশের অবস্থাতেও স্বৰ্য্যালোকের কল্যাণ-হস্ত পৃথিবী-মাতা'র নবপ্রস্থত অপ্রাপ্তচক্ষু জীবদিগের মস্তকের উপরে স্থাপিত ছিল— এখনকারই মতো এইরূপ কাৰ্য্যকর ভাবে । আদিমকালে যে-স্বৰ্য্যালোক অপ্রকাশ ছিল, অধুনাতন কালে সেই স্বৰ্য্যালোকই স্বপ্রকাশ। তবেই হইতেছে যে, যুগযুগান্তরব্যাপী ক্রমবিকাশের সোপান-পরম্পরার মধ্য দিয়াই স্বৰ্য্যালোক অপ্রকাশ হইতে স্থপ্রকাশে মস্তক উত্তোলন করিয়া দণ্ডায়মান হইয়াছে। মাকড়সা যেমন আপনারই দৈহিক উপাদান হইতে আপ্লিই জাল নিৰ্ম্মাণ করিয়া সেই জালের উপর দিয়া যাতায়াত করে, আদিম কালের আদৃত স্বৰ্য্যালোক তেমি আপনারই অপ্রকাশের ভাণ্ডার হইতে জীবশরীরে আপনার প্রকাশোপযোগী দর্পণ ক্রমে ক্রমে নিৰ্ম্মাণ-করিয়া-তুলিয়া এক্ষণে সেই সকল স্বনিৰ্ম্মিত দর্পণে পলকে পলকে এবং অহোরাত্রে প্রকাশাপ্রকাশ হইতেছে। চক্ষু পদার্থ টা কি ? -86. SAASAASAASAAASSS MMMMMSMMMMSMMS সদ্যোজাত শিশুর চক্ষুগোলকের স্পর্শক্ষেত্রে আলোক প্রথমে ডুব-সাতার খ্যালে ; তাহার পরে শিশুটির বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাহার স্বভাবানুযায়ী পায়ে-হাট এবং হাত-বাড়ানো প্রভৃতি কৰ্ম্মোদ্যমের মধ্যদিয়া সেই-আলোকই স্পর্শক্ষেত্র হইতে দৃষ্টি-ক্ষেত্রে ( অথবা, যাহা একই কথা— চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশ হইতে বহিরাকাশে ) দৃশু-বেশে সাজিয়া বাহির হইতে থাকে। আলোকের ক্রমবিকাশ ব্যষ্টি-জীবক্ষেত্রে এ-যেমন দেখিতে পাওয়া যাইতেছে, সমষ্টি-জীবক্ষেত্রে উহারই বিস্তারিত ডালপালা’র এক এক বারের পাল এক-এক যুগ-পরিমাণ দীর্ঘ কাল ধরিয়া অভিনীত হইতে থাকে। তার সাক্ষী :– স্বৰ্য্যালোক প্রথমে কেঁচো, জোক, কৃমি প্রভৃতি নিতান্ত অধম শ্রেণীর জীবদিগের ত্বগিন্দ্রিয়ের স্পর্শক্ষেত্রে ভুবৰ্দাতার খেলিত। তাহার পরে উত্তরোত্তর শ্রেণীর জীবের ত্বগিন্দ্রিয়ের বিশেষ একটি স্থানের ( যেমন ললাটের ) দুই পাশ্বে আপনার প্রকাশোপযোগী দুইটি দর্পণ ক্রমে ক্রমে ফুটাইয়া তুলিতে লাগিল ; তাহার পরে, পরপরবর্তী জীবদিগের চক্ষুগোলকে আপনার স্পর্শামুভবের মূল পত্তন করিয়া ক্রমে ক্রমে উচ্চোচ্চতর জীবের দৃষ্টি-ক্ষেত্রে দৃশু-বেশে সাজিয়া বাহির হইতে লাগিল। ব্যষ্টি জীবক্ষেত্রেও যেমন, সমষ্টি জীবক্ষেত্রেও তেমি। দুই ক্ষেত্রেই আলোকের ক্রমবিকাশের আনুপুৰ্ব্বিক তিনটি সোপান-পংক্তি বা পইটা পরে পরে দেখিতে পাওয়া যায় এইরূপ :– (১) অনাকাশের আদর্শন-সমুদ্রে নিমজ্জন -যেমন, আদিম যুগে, তথৈব, গৰ্ত্তস্থ শিশুর চক্ষে। (২) চক্ষুগোলকের অন্তরাকাশের সাজঘরে (স্পৰ্শক্ষেত্রে ) সংক্রমণ -যেমন, মধ্যম যুগে, তথৈব, সদ্যোজাত শিশুর চক্ষে। - (৩) বহিরাকাশের দর্শন-ক্ষেত্রে ( দৃষ্টিক্ষেত্রে ) দৃশ্ব বেশে সাজিয়া বাহির হওন –যেমন, বর্তমান যুগে, তথৈব, বয়ঃপ্রাপ্ত মনুষ্যের চক্ষে । - এতক্ষণ ধরিয়া চক্ষুষ আলোক-দর্শনের পৃথক পৃথক অবয়ব ভাগ ভাগ করিয়া যাহা দেখানো হইল, তাহাতে এটা বেস বুঝিতে পারা যাইতুেছে যে, চক্ষু পদার্থটা আর কিছু না—আলোক। আলোকের প্রকাশের