পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8b~ স্মৃতির সহিত প্রাচ্য দেশের তেমনি সংস্রব। প্রাচ্য ভূমির সৈকত-সমুদ্রে কত কত জাতি শয়ান ; এই প্রাচ্য ভূমি চিরকালই বর্তমান। প্রাচ্যথও এখনও তাহার বক্ষের উপর মানব-জাতির প্রথম প্রহেলিকা ও আদিম স্মৃতিগুলি ধারণ করিয়া রহিয়াছে। কি ইতিহাস, কি কাব্য, কি ধৰ্ম্মতত্ত্ব, কি দার্শনিক তত্ত্ব—সকল বিষয়েই প্রাচ্যথও পাশ্চাত্যখণ্ডের পূর্ববৰ্ত্তী। অতএব আমাদের নিজেকে জানিতে হইলে, উহাকে জানিবার জন্ত আমাদের চেষ্টা করা আবশুক।” আমাদের সভ্যতার জন্য আমরা প্রাচ্যখণ্ডের নিকট ঋণী। শিল্পকলার মধ্যে যদি চিত্রবিদ্যা ও সঙ্গীতকে বাদ দেওয়া যায়, তাহা হইলে বাকী আর সমস্ত শিল্পকলা আমরা প্রাচ্যথও হইতে প্রাপ্ত হইয়া উহাদিগের অঙ্গপুষ্টি করিয়াছি মাত্র। দর্শন কিংবা ধৰ্ম্মঘটিত যে সকল তত্ত্ব এখন আমরা আমাদের নিজস্ব বলিয়া জানি, তাহাদের মধ্যে এমন একটি তত্ত্বও নাই যাহার মূলস্বত্র প্রাচীন জাতিরা লিপিবদ্ধ করিয়া যান নাই। বাস্তুবিদ্যার কথা যদি বল,—তাহাদের বৃহৎ বৃহৎ কীৰ্ত্তি মন্দিরের চাপে আমরা নিষ্পেষিত বলিলেও হয়। সে সময় তাহাদের সভ্যতা আমাদেরই মত উন্নতি লাভ করিয়াছিল; তাছাড়া, কোন কোন প্রাচীন জাতির আচার ব্যবহারের মধ্যে যে একটি মাধুর্য্য দেখা যায়, তাহাতে আমাদের আচার ব্যবহারের সম্বন্ধে আমরা আর অহঙ্কার করিতে পারি না। Bournout-এর কথা-অনুসারে, ব্রাহ্মণ্যিক ভারতের অসাধারণ সভ্যতার শুধু একটা প্রমাণের আমরা উল্লেখ কৰিব। সে কথাটি সভ্যতার ইতিহাসে অনন্ত-সাধারণ। ভারতীয় নাট্য সাহিত্যে এমন কতকগুলি নাটক ছিল যাহা একেবারেই দার্শনিক, তাহার পাত্ৰগণ কতকগুলি মানসিক ভাবমাত্র। তাহার একটি দৃষ্টান্ত “প্রবোধ চন্দ্রোদয়।” Bournout উপসংহারে এই কথা বলিয়াছেন –ইহা হইতে অনুমান করা যায়, ভারতীয় নাটকের এরূপ শ্রোতৃমওলী ছিল যুহা—কি প্রাচীন কি আধুনিক কোন নাট্যালয়েই দেখিতে পাওয়া যায় না। ভারতের শিষ্ট সমাজের ইহা একটি বিশেষ লক্ষণ। এ—ত গেল বিদ্যাবুদ্ধি ও শিক্ষার কথা। আর একটা ব্যাপার,—হিন্দুজাতির মধুর প্রকৃতি ও উচ্চ জ্ঞানের সাক্ষ্য দেয়। মেগাস্থিনিস বর্ণনা করেন, যুদ্ধে প্রবৃত্ত দুই পক্ষীয় সৈন্যদের মধ্যে, হিঙ্গু কুন শান্তভাবে ক্ষের কর্ষণ করিতেছে দেখিয়া গ্ৰীকের অত্যন্ধ বিস্থিত হইয়াছিল। তিনি বলেন,–“কৃষকের শরীর পত্তি, কৃষক অবধ্য,-কেননা, কৃষক শত্র মিত্র উভয়েরই হিতকারী।” কতকগুলা স্থল ধরণের ভ্রম যুয়োপীয়দের মনে বন্ধ মূল হইয়া গিয়াছে ; যুরোপীয় পণ্ডিতেরাই সেই ভ্রমগুলি প্রচার করিয়াছেন ; এবং সঠিক তথ্যের অভাবেই তাহার এইরূপ ভ্রমে পতিত হইয়াছিলেন। gÈ ATB 72t« crafề :–Deguignes širii “ছন্দিগের ইতিহাস" গ্রন্থে, চীনের মিসরের লোক হইতে উৎপন্ন এই কথা এইরূপ ভাবে বলিয়াছেন :–“চীনের ইজিপ্টীয়দিগের একটা ঔপনিবেশিক দল মাত্র-উহার নিতান্তই আধুনিক। একাডামি সভায় পঠিত আমার সন্দর্ভে আমি ইহা সপ্রমাণ করিয়াছি। মিসরীয় ও ফিনিসীয় অক্ষর শুধু যুক্ত করিয়া চীনে-অক্ষরগুলা গঠিত হইয়াছে। এবং থিবসের পুরাতন রাজারাই চীনের আদিম সম্রাট। আবার ঐ গ্রন্থকারই তাহার “সামানীয় ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে মন্তবা" গ্রন্থে লিথিয়াছেন যে, “হিন্দু পুরাণের কতকগুলি লক্ষণ । দেখিয়া মনে হয়, উহা ইহুদী ও খৃষ্টানদের নিকট হইতে গৃহীত হইয়াছে।” তিনি বলেন,–“ঐ সকল পুরাণের কথা, হিন্দুরা গ্রীকৃদের নিকট হইতেও গ্রহণ করিয়াছে,কেননা, সংস্কৃত ভাষার মধ্যে কতকগুলি গ্রীক্ ও ল্যাটিন শব্দ পাওয়া যায়।” পরিশেষে, তিনি বলেন,-“যিশু খৃষ্টের ১১০০ বৎসর পূৰ্ব্বে, হিন্দুরা বর্বর ও দস্থ্যমাত্র ছিল। Statą orą, Philarete Chasles HfGIR G, ভারত গ্রীসের দুহিতা। কংফুচু-সম্বন্ধে Hegel এই কৰ বলিয়াছেন :–“তিনি একজন ব্যবহারিক দর্শনবেত্তা ; তাহার লেখার মধ্যে ঔপপত্তিক দর্শনের কোন নিদর্শন পাওয়া যায় না ; তাহার নীতিসূত্রগুলি সুন্দর, কিন্তু তাহাতে কোন বিশেষত্ব নাই । সিসিরোর “de officiis" নামক নৈতিক গ্রন্থে কংফুচুর লিখিত সমস্ত কথাই পাওয়া যায়। এই সকল মৌলিক গ্রন্থ পাঠ করিয়া মনে হয়, ঐ সকল গ্রন্থ কংফুচু যদি অনুবাদ না করিতেন তায় হইলে তাহার খ্যাতি অক্ষুণ্ণ থাকিত।" ...] | | ৫ম সংখ্যা । ] Ritter তাহার “প্রাচীন দর্শনের ইতিহাস" গ্রন্থে এই সম্বন্ধে আরও একটু বেশী দূর গিয়াছেন। “যে সকল লেখা কংফুচুর বলিয়া আরোপিত হয় এবং বায় তাহার জাত-ভাইরা জ্ঞানের মূল-প্রস্রবণ বলিয়া মনে করে, সেই সকল লেখা সম্বন্ধে এইমাত্র বলা যায়,— এই “জ্ঞানের কথার” মধ্যে আমরা যাহাকে philosophy বলি তাহার কিছুই নাই—চীনেদের “জ্ঞানের কথা” বোধ হয় ফিলজফি ছাড়া আর কিছু ; কেননা এই সকল চারিত্রনিয়ম, ও নৈতিক বাক্য-কংফুচুর গ্রন্থে যাহার বহুল পুনরাবৃত্তি দেখিতে পাওয়া যায়,- এই সমস্ত এমন ভাবে বলা হইয়াছে সেন উহার মধ্যে কি গুরুতর কথাই আছে—কিন্তু উহা কেবল আমাদের হাস্তোদ্রেক করে মাত্র।" দুই জন জৰ্ম্মন দার্শনিক কংফুচুর দর্শন সম্বন্ধে এইরূপ ভাবে বলিয়াছেন। কংফুচু স্বয়ং নিজের সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছেন তাহা এই –“বিজ্ঞান শাস্ত্রে আমার দখল মোটেই নাই ; আমি প্রাচীন কালের লোকদিগকে ভালবাসি এবং আমি তাহাদের জ্ঞান অর্জন করিবার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছি।” আরও তিনি এই কথা বলেন —“যে ব্যক্তি সত্য ও মঙ্গলের অনুশীলনে প্রবৃত্ত হয়, বে ব্যক্তি বিনা শৈথিল্যে ও অধ্যবসায় সহকারে উহাতে লাগিয়া-পড়িয়া থাকে সে কি মনের মধ্যে একটু সন্তোষ অনুভব করে না ? উচ্চ প্রকৃতির লোকদের ভাবনা, পাছে তাহারা সরল পথ হইতে ভ্ৰষ্ট হয়, দারিদ্র্যের জন্য তাহার চিন্তিত হয় না।” কংফুচুর শিষ্যেরা কংফুচুর মত এইরূপ সংক্ষেপে ব্যক্ত করিয়াছেন -“আমাদের গুরুর মতটি শুধু এই—সরল-অস্তঃকরণ হইবে, এবং প্রতিবাসীকে আত্মবৎ ভালবাসিবে।” দুই সহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে কংফুচু জীবিত ছিলেন, ৪০ কোটি লোক তাহার মতাবলম্বী ছিল ; তিনি প্রাচীনদিগের নিকট হইতেই শিক্ষা পাইয়াছেন –এই কথা তিনি বিনীত ভাবে স্বীকার করিয়াছেন ; আর; হেগেল ও রিটার যাহারা কংফুচুর ২৫০০ বৎসর পরে আবিৰ্ভত হইয়াছিলেন তাহারা “ফিলসফি” আবিষ্কার করিয়াছেন বলিয়া অভিমান করেন। গ্রীকের প্রাচীন | কালকে অবজ্ঞা করিয়া যে ভ্রমে পতিত হইয়াছিল, \ס - প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সভ্যতা । উহঁরাও সেই ভ্ৰমে পতিত হইয়াছেন । Timee নামক গ্রন্থে, একজন মিশর দেশীয় পুরোহিতের মুখ দিয়া সলমনের প্রতি এই কথা গুলি বলাইয়াছেন – “এথেনীয়গণ! তোমরা নিতান্তই শিশু ! তোমাদের কালের পূৰ্ব্বেকার যে সকল পুরাতন জিনিস আছে তোমরা তাহার কিছুই জান না ; আত্মগৌরবে ও জাতীয় গৌরবে স্ফীত হইয়া, তোমাদের পূৰ্ব্বে যাহা কিছু হইয়া গিয়াছে, সে সমস্ত তোমরা অবজ্ঞা করিয়া থাক ; তোমাদের বিশ্বাস, শুধু ভোমাদের সহিত ও তোমাদের নগরটিরই সহিত একসঙ্গে পৃথিবীর অস্তিত্ব আরম্ভ হইয়াছে।” এখন এইরূপ শিক্ষা দেওয়া হয় যে মিশরের লোকের জীবজন্তুকে, হিন্দুরা পঞ্চভূতকে, পারসিকের স্বৰ্য্যকে পূজা করেকিন্তু একথা বলিলে জানিয়া-শুনিয়া সত্যের অপলাপ কর। হয় ; এরূপ বলিলে, ত্রিচিনাপলি-বিদ্যালয়ের একজন সমসাময়িক ব্রাহ্মণ যেরূপ তিরস্কার-বাক্য প্রয়োগ করিয়াছেন, সেই তিরস্কারের পাত্র হইতে হয়। সেই ব্রাহ্মণ এই কথা বলেন —“আমাদের গৃঢ়রহস্তগুলি যুরোপীয়েরা বুঝিতে পারেন না—উহার অধিকাংশই জ্যোতিষের স্মৃতিসাহায্যকারী কতকগুলা সংকেত মাত্র। অতএব আমাদের যুক্তির বিরুদ্ধে তাহাদের অজ্ঞতাকে থাড়া করা উচিত হয় না ।" ১৪• • বৎসরের পুরাতন—বাইবেলের “পুরাতন বিধান গ্রন্থ" সম্বন্ধে কি বক্তব্য ? এই সমস্ত গৌরবোজ্জল সভ্যতার মধ্যে হিব্রু জাতির স্থান কোথায় ? খৃষ্টধৰ্ম্মের প্রধান আচার্যেরা নব-বিধান-গ্রন্থের সহিত পুরাতন-গ্রন্থটি छूख्रिा निग्न ७कल्ले डांबी ड्रन করিয়াছেন—খুষ্টধৰ্ম্মের উপর একটা দুঃসহ বোঝা চাপাইস্কা দিয়াছেন। উহার ফলে, পরম্পরাক্রমে অনেকগুলি ভ্রমের উৎপত্তি হইয়াছে ; সমস্ত খৃষ্টীয়মণ্ডলী ইহা স্বীকার করেন। এই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের যুগে, বিজ্ঞানের সহিত বাইবেলের মূল-বচনগুলার মিল রাখিবার জন্য চেষ্টা করা আবশ্বক হইয়াছে। ব্যাপারটা বড় সোজা নহে! বাইবেলের সৃষ্টিপ্রকরণ সমৰ্থন করিবার জন্ত এইরূপ যুক্তির আশ্রয় লইতে হইয়াছে যে, । স্বষ্টিপ্রকরণে যে হিব্রু শব্দ "দিন" বলিয়া অনুদিত হইয়াছে । তাহা আসলে দিন নতে—তাহা একটা অনির্দিষ্ট দীর্ঘ