পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| ཝེ༠་ প্রবাসী । MMMMMMMMM MMMMMMMMMSMMSMMSMSMS Xপাণ্ডুয়ার কীর্তিচিহ্ন। আদিনার গঠন সৌন্দর্য্যে পাণ্ডুয়ার অন্যান্ত কীৰ্ত্তিচিহ্ন নিম্প্রভ হইয়া রহিয়াছে। আদিনা না থাকিলে, সে সকল কীৰ্ত্তিচিহ্ন সমধিক গৌরব লাভ করিতে পারিত। যে সকল হিন্দু ও বৌদ্ধমন্দির বিলুপ্ত করিয়া শেকদরশাহ আদিনা রচনায় ব্যাপৃত হইয়াছিলেন, তাহ অক্ষতশরীরে বর্তমান থাকিলে, আদিনা নিম্প্রভ হইয় গড়িত কি না, তাহা কে বলিতে পারে? আদিনার জন্যই পাণ্ডুয়া দেবমন্দিরগুন্ত হইয়া পড়িয়াছিল। রাজা গণেশের শাসন-সময়ে পাণ্ডুয়া আবার দেবমন্দিরে অলংকৃত হইয়া উঠিতেছিল। গণেশের শাসন সময়ের দুই শ্রেণীর ইতিহাস প্রচলিত আছে। এক শ্রেণীর ইতিহাসে—গণেশ হিন্দু মুসলমানের প্রিয়পাত্র,—পরম দ্যায়পরায়ণ–প্ৰজাপালক পুণ্যশ্লোক নরপতি বলিয়া প্রশংসিত। আর এক শ্রেণীর ইতিহাসে– গণেশ মুসলমানরিদ্বেষী—অত্যাচারপরায়ণ-প্রজাপীড়ক রাজ্যাপহারক বলিয়া নিন্দিত। কিন্তু উভয় শ্রেণীর ইতিহাসেই —গণেশ হিন্দুধৰ্ম্মানুরক্ত-দেবমন্দির নিৰ্ম্মাণকারক বলিয়া পরিকীৰ্ত্তিত। সে সকল দেবমন্দির দীর্ঘকাল আত্মরক্ষা করিতে পারে নাই বলিয়, তাহার চিহ্ন মাত্রও বর্তমান নাই। গণেশের পর তাহার পুত্র মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়া, মুলতান জালালুদ্দীর নামে সিংহাসন আরোহণ করা, মন্দির ভাঙ্গিয়া মস্জেদরচনার পুরাতন প্রবৃত্তি পুনরায় প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল। তাহাতেই গণেশ-নিৰ্ম্মিত দেবমন্দির বিলুপ্ত ইয়া গিয়াছে ! গৌড়ীয় সাম্রাজ্যে যে সকল হিন্দু এবং বৌদ্ধ নরপতি সিংহাসনে উপবেশন করিয়া গিয়াছেন, তাহার সকলেই শাসনপত্রে লিখিয় দিতেন “নহি পুরুষেঃ পরকীৰ্ত্তয়ে বিলোপ্যাঃ ।” পরকীৰ্ত্তি বিনষ্ট করা মহাপাপ বলিয়া . লোক সমাজেও সুপরিচিত ছিল। মুসলমান-শাসন সময়ে এই নীতি মৰ্য্যাদা লাভ করিতে পারে নাই। তাহাতেই পরকীৰ্ত্তি বিলুপ্ত – করিয়া, বাদশাহগণ আত্মকীৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত করিয়া গিয়াছেন। রাজা গণেশ সিংহাসনে আরোহণ করিয়া মুসলমান নীতির অনুসরণ করিলে, আদিনা চূর্ণ বিচূর্ণ হইতে বিলম্ব ঘটত না। তিনি পরকীৰ্ত্তি বিন্ধুপ্ত না করিয়া, হিন্দুনীতিরই মৰ্য্যাদা রক্ষা ...... [ ৮ম ভাগ । করিয়া গিয়াছিলেন। কিন্তু তাহার পুত্র মুসলমানধৰ্ম্মের সঙ্গে মুসলমাননীতি গ্রহণ করায়, পুনরায় পরকীৰ্ত্তিলোপের আগ্রহ উপস্থিত হইয়াছিল। একটি মন্দিরে তাহার পরিচয় অস্থাপি দেদীপ্যমান রহিয়াছে। তাহা একটি সমাধি-মন্দির বলিয়া পরিচিত। গোলাম হোসেন লিথিয়া গিয়াছেন,—তাহাতে সুলতান জালালুদ্দীনের, তাহার স্ত্রীর এবং পুত্রের মৃতদেহ সমাধিনিহিত হইয়াছিল। অদ্যাপি সে তিনটি সমাধি বর্তমান আছে। মন্দির জরাজীর্ণ হইয়া পড়িয়াছিল,— গম্বুজের উপর অশ্বথবৃক্ষ সমুদ্ভূত হইয় তাহাকে নিরতিশয় বিপর্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিল ;–এখন তাহ সমূলে উৎপাটত হইয়াছে, যথা যোগ্য জীর্ণসংস্কারও সাধিত হইতেছে। এই সমাধিমন্দিরের ইষ্টক প্রস্তরের সহিত বাঙ্গালার পুরাকাহিনী জড়িত হইয়া রহিয়াছে। ইহার নাম একলক্ষি । এরূপ নাম প্রচলিত হইল কেন, কেহ তাহার রহস্তোদঘাটন করিতে পারেন নাই। এই নাম কি পুরাকালপ্রচলিত প্রকৃত পরিচয় বিজ্ঞাপক নাম ? গোলাম হোসেনের সময়ে এই নাম প্রচলিত থাকিলে, তিনি ইহার উল্লেখ করিতে বিস্তৃত হইয়াছিলেন কেন ? ইলাহিবক্সের হস্তলিখিত ইতিহাসে এই নাম উল্লিখিত আছে। তবে কি এই নাম গোলাম হোসেনের পরে এবং ইলাহিবকুসের পূৰ্ব্বে কোনও সময়ে সহসা প্রচলিত হইয়াছে ? মুসলমান-সমাধিমন্দিরের হিন্দু নাম স্বতই এই সকল কৌতুহলের উদ্রেক করিয়া থাকে। কুতবশাহী মস্জেদের উত্তর পূৰ্ব্বে—প্রচলিত রাজপথের অনতিদূরে—একলক্ষি অবস্থিত। রাভেনশা ইহাকে ৮০ ফিট আয়তনের সমচতুষ্কোণ মন্দির বলিয়া বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন। ইলাহিবকুসের হস্তলিখিত ইতিহাসে একলক্ষি ৫০ হাত দীর্ঘ, ৪৬ হাত প্রস্থ, ২৭ হাত উচ্চ বলিয়া | বর্ণিত । কাহার বর্ণনা প্রকৃত তাহ পর্য্যটক মাত্রেই পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারেন।+ leum at Panduah. The graves of his wife and son lie by the side of his mausoleum.—Riaz-us Salateen, ի.118, রাভেনশার গ্রন্থে একলক্ষির যে চিত্র আছে, তাঙ্গতে ইলাছিবকসের বর্ণনাই প্রমাণীকৃত হইয়া রহিয়াছে।

  • To this day a large tower exists over his mauso

- hainena suasari universm ১ম সংখ্যা । ] qತ বড় সমাধিমন্দিরের | গম্বুজ । তাহাই একলক্ষির গঠন কৌশলের প্রধান উল্লেখযোগ্য বিষয়। এই মন্দিরের আর একটি বিশেষত্ব আছে । ইহাতে কোন ফলকলিপি দেখিতে পাওয়া যায় না,–কথন কোন ফলকলিপি সংযুক্ত হইয়াছিল বলিয়াও বোধ হয় না। অনাবৃত হৰ্ম্মতলে যে তিনটি সমাধি দেখিতে পাওয়া যায়, তাহাতেও কোন ফলকলিপি সংযুক্ত হয় নাই। একটি সমাধি সৰ্ব্বাপেক্ষ উচ্চ,—তাহা সকলের পশ্চিমে অবস্থিত। ইলাছিবক্স লিখিয়া গিয়াছেন,-“পশ্চিমপার্থের সমাধি সুলতান জালালুদ্দীনের, পুৰ্ব্বপাশ্বের সমাধি র্তাহার পুত্র সুলতান আহম্মদশাহের এবং মধ্যস্থলের সমাধি র্তাহার স্ত্রীর বলিয়া অনুমিত হয়। " এরূপ অনুমানের কারণ কি, ইলাহিবক্স তদ্বিষয়ে আর কিছু লিপিবদ্ধ করেন নাই। একলক্ষি দেবমন্দির না সমাধিমন্দির, তদ্বিষয়ে সংশয় উপস্থিত হইবার কারণ পরম্পরার অভাব নাই। গম্বুজ না থাকিলে, ইহার অন্তান্ত গঠন কৌশল দেখিয়া, ইহাকে সমাধিমন্দির বলিতে সাহস হইত না। চারিদিকে চারিটি প্রবেশ দ্বার ;–অট্টালিকার অনুপাতে সকল দ্বারই নিতান্ত ক্ষুদ্রায়তন। যে দ্বারটি দক্ষিণদিকে অবস্থিত, তাহাই প্রধান দ্বার। তাহ প্রস্তরময়। উপরের চৌকাঠের মধ্যস্থলে এক দেবমূৰ্ত্তি! তাহার নাক মুখ ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। তাহার প্রতি লক্ষ্য করিয়া, ইলাহিবক্স লিখিয়া গিয়াছেন—“এই দ্বার কোনও দেবমন্দির হইতে সংগৃহীত হইয়া থাকিবে।"+ কেবল দ্বার কেন,— একলক্ষির সর্বাঙ্গেই দেবমন্দিরের নিদর্শন দেখিতে পাওয়া যায়। কি অবস্থান, কি গঠনপারিপাট্য, সৰ্ব্বাংশেই একলক্ষি দেবমন্দিরের কথা স্মরণ করাইয়া দেয়। রাভেনশা তাহার প্রতি লক্ষ্য করিয়াছিলেন।; কিন্তু তিনি ইহাকে ঘিয়ামুদ্দীনের সমাধিমন্দির বলিয়া বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন। কাহার নিকট এরূপ কথা

  • I imagine that the western tomb, which is the hightst, is that of Sultan Jalaluddin, that the one to the East is that of his son Sultan Ahmed Shah, and that the middle one is the tomb of his wife.-Khushid. jahan namah.
  1. It appears from this that the lintel must have belonged to some idol-temple, -Ibid.
  2. It is beleived to contain the remains of Sultan

asurw uaaaaiাণ্ডুয়ার কীৰ্ত্তিচিহ্ন। —- ২১ × . জ্ঞাত হইয়াছিলেন, রাভেনশা তাহার উল্লেখ করেন নাই। অন্তের কথা দূরে থাকুক, তাহার টীকাকারও ইহাতে আস্থা স্থাপন করেন নাই। - একলক্ষি বিশেষ ভাবে পর্য্যবেক্ষণ করিবার যোগ্য। কিন্তু আদিনা দর্শনের ঔৎসুক্যে পৰ্য্যটকগণ আত্মহারা হইয়া, দূর হইতে একলক্ষির প্রতি কটাক্ষপাত করিয়াই প্রত্যাবর্তন করিয়া থাকেন। জেনারল কনিংহাম ইহাকে “বাঙ্গালী পাঠান-স্থাপত্যের” উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত বলিয়া বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন।+ গম্বুজের সম্বন্ধে সে কথা সৰ্ব্বাংশে স্বসঙ্গত বলিয়া স্বীকার করিতে পারা যায়। অন্যান্ত অংশের সম্বন্ধে সে কথা স্বীকার করিতে সাহস হয় না। একলক্ষ ইষ্টকগঠিত, মধ্যে মধ্যে প্রস্তরের সমাবেশ। ইষ্টক গুলি কারুকার্যখচিত। তাহাতে দেবমন্দিরের উপযোগী রচনাকৌশল অভিব্যক্ত। যে সময়ে এই মন্দির রচিত হয়, তখন হিন্দু মুসলমান মিলিয়া বাঙ্গালী জাতিতে পরিণত হইতেছিল। তথনকার শিক্ষা ও শিল্প উভয় সম্প্রদায়ের সমবেত প্রতিভায় উজ্জল হইয়া উঠিতেছিল। সুতরাং একলক্ষিকে “বাঙ্গালী পাঠান-স্থাপত্যের” দৃষ্টান্ত না বলিয়, “বাঙ্গালীর স্থাপত্যপ্রতিভার” দৃষ্টান্ত বলিলেই স্বসঙ্গত হয়। কারণ, এই বিচিত্র মন্দিরে হিন্দুমুসলমানের স্থাপত্যপ্রতিভা সমভাবে দেীপ্যমান। এখানে যাহার চিরনিদ্রায় অভিভূত হইয়া রহিয়াছেন,—তাহদের অবস্থাও সেইরূপ,—জাতিতে পছন্দু, ধৰ্ম্মে মুসলমান। সাতাইশ ঘরা। . আদিনার পূৰ্ব্বাংশে বহুদূর পর্যন্ত রাজনগর প্রতিষ্ঠিত ছিল। তথায় এখনও অনেক স্ববৃহৎ সরোবর দেখিতে tomb is a remarkable instance of the use of Hindu materials in the erection of a Muhammedan Mausoleum, for both door posts and lintels are covered with Hindu carvings.—Ravenshaw's Gour, p. 58.

  • This can hardly be other than the "domed tomb" referred to in the Riaz-us-Salateen as that of Jalaluddin Abul Muzaffar Muhammad Shah. See Blochmann's contributions. J. A. S. B. Vol. XLII. Part I. p. 267.

+ General Cunningham cites this tomb as "one of the finest specimens of the Bengali Paghan tomb."— Archeological Survey Repoft, Vol. III. p. 11.