পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২৮ কৃতাৰ্থ জ্ঞান করে, নারীগণ আপনাদের গৃহপ্রাঙ্গণের তরীতরকারী দিয়া আপনাদের ভক্তিশ্রদ্ধা দেখাইতে প্রতিযোগিতা করে। একদিন দয়া দেবী সমাগতা রমণীগণকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “হ্যা রে, মোছলমান বউ অনেকদিন এদিকে আসে নি কেন ? তার কিছু খবর জানিস ?” একজন বলিল, “তার মা বড় ব্যামো, বঁাচে কি না বঁাচে । আহা মাগী মোলে তার ছেলেটার কি যে আবস্থা হবে কে জানে ? আহা মাগী বড় ভালো মানুষ ছিল। মোছলমান ত’ নয়, যেন হিঁদুর ঘরের বিধবা, এমনি তার নিষ্ঠে, এমনি তার মন।” সমবেত রমণীগণ সকলেই সেই মোছলমান বউয়ের জন্য সমবেদনা প্রকাশ করিতে লাগিল। দয়া দেবী অনেকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া কি চিন্তা করিয়া বলিলেন, “দুলে বে, তুই একটু আমার সঙ্গে যাবি, আমি একবার মোছলমান বউকে দেখতে যাব।” ছলে বউ বলিল, “তা কেন যাব না মা, কিন্তু সে যে অনেকটা পথ।” “তা হোক আমি একবার যাব” বলিয়া দয়া দেবী যাত্রার উদ্যোগ করিতে লাগিলেন । একখানা পরিষ্কার দ্যাকড়া ছিড়িয়া তাহার কোণে কোণে কিছু সাগু, বার্লি, মিছর, কিসমিস, একটু আমসত্ব বাধিয়া লইলেন, আর আপনার অঞ্চল প্রান্তে বাধিয়া লষ্টলেন পাঁচটি টাকা । মুসলমান বধূটর গৃহ গ্রামান্তরে প্রায় এক মাইল পথ হইবে। মুসলমানী তাহার পরিপূর্ণ যৌবনের মাঝখানে .পচিশ বৎসর বয়সে একমাত্র পুত্র জন্তর আলিকে কোলে লইয়া বিধবা হইয়াছে। সে নিঃস্ব চাষীর গৃহিণী ছিল, সে বিধবা হইয়া আপনার শিশুপুত্রটির লালন পালনের জষ্ঠ বড় বিত্রত হইয়া পড়িল । সামান্ত চাষীর ঘরে জন্মিয়াও আসমানীর এমুন একটি প্রস্ফুট অথচ স্নিগ্ধ স্ত্র ছিল যাহা চাষীর ঘরে দুর্লভ, আর সেই ললিত শ্ৰীকে মহিমান্বিত করিয়াছিল তাহার শ্রমপটু নিটােল স্বাস্থ্য ও কোমল মধুর প্রাণটি। এত স্বাভারিক ঐশ্বর্ঘ্য যাহার তাহাকে আশ্রয় দিবার পুরুষের অভাব কখনই ঘটে না। অনেকে তাহাকে প্রবাসী । --১৪:২১, ২৪ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)~----------------------------------------- -- নিকা করিতে প্রস্তুত ছিল, কিন্তু আসমানী সে সকল প্রস্তাবের উত্তরে বলিয়াছিল, “গোদার দোয়াতে নার ছেলেকে আমি কোলে পেয়েছি, তার ছেলেরই মাহরে আমি মরব, খোদাতালার দোয়াতে জহর আমার বেচে থাকুক।" অতঃপর আসমানী চিড় কুটিয়া ধান ভানি আপনার শিশু পুত্রকে পালন করিতে লাগিল । আসমানী দয়াঠাকুরাণীর বাড়ী চাল চিড়ার উঠানা দ্বিত। দয়াঠাকুরাণী যখন আসমানীর হৃদয়ের ইতিহাস শুনিলেন, তাহার নিজের পতিপ্রেমনিষ্ঠ মাতৃহৃদয় আর একট হৃদয়ে আপনারই প্রতিবিম্ব দেখিয়া মুগ্ধ হইল, অনুরক্ত হইল, - সেই দিন হইতে মোছলমান বউ দয়াঠাকুরাণীর পরমাত্রী সর্থী হইল। গ্রামের লোক আরো ছি ছি করিয়া উঠিল। দয়াঠাকুরাণী যখন আসমানীর দীন কুটীরে আসি৷ উপনীত হইলেন তখন আসমানীর অস্তিমকাল। দয়াঠাকুরাণী তাহার শিয়রে বলিয়া মুখের উপর ঝুকিয়া বলিলেন, “মোছলমান বউ, আমি এসেছি। চিনতে পার ?” আসমানী চোথ মেলিয়া বলিল, “এ কে ? দিদি। ঠাকরুণ এসেছ ? খোদার বড় মেহেরবানি, দিদিঠাকরুণ আমার জহর রইল, তাকে দেখো, সে তোমার ষষ্ঠীর নফর ।” দয়া দেবী অশ্রুমার্জন করিয়া বলিলেন, "জহর স্বল্পর নফর নয়, ষষ্ঠীর ভাই। জহর, বোন, আমারই ছেলে।" “এখন আমি সুথে মরতে পারব। দিদি, জহরকে আমার বুকে দেও, আমি মরে গেলে জহর তোমারই গলগ্রহ ।” - পুত্রকে বুকে লইয়া আসমানীর মৃত্যু হইল, স্বৰ্য্যান্তের শেষ রশ্মির মত একটি ক্ষীণ হাস্তজ্যোতি তাহার মুখমৃত্যু ঘোষণা করিল। R ... ৬ষ্ঠ সংখ্যা । ] জহর আলি এখন হিন্দুমাতার নিকট জহর লাল।7 সে ষষ্ঠীচরণের ক্রীড়া সহচর, সে অশনে বসনে, আদর মমতায় ষষ্ঠীচরণের সমকক্ষ, উভয়ে একত্রে পাঠশালে যায়, কিন্তু সেই শিশু আপনার মাকে কি ভুলিতে পারিয়াছিল ? দয়াঠাকুরাণী যথেষ্ট স্বাধীন ও কুসংস্কারমুক্ত হইলেণ্ড ঠিক সহজভালে জহরকে আদর যত্ন করিতে পারিতেন বিছানা ছিল, শয়নগৃহ যথাসাধ্য আসবাব শূন্ত করা হইয়াছিল, পাছে জহর সে সকল স্পর্শ করে। অন্তান্ত ঘরেও সৰ্ব্বদা সতর্কভাবে শিকল দেওয়া থাকিত, বালক জহর প্রবেশ না করে । আহারের সময় ষষ্ঠীচরণ ও জহরকে একটু তফাতে তফাতে বসানো হইত, ষষ্ঠীকে মা খাওয়াইয় দিতেন এবং জহর অন্ন স্পর্শ করিবার আগেই তাহার ভাত মাখিয়া গ্রাস ভাগ করিয়া দেওয়া হইত এবং বালক জহর ভালো করিয়া থাইতে না পারিলে দয়া ঠাকুরাণী একটু উক্ষাতে বসিয়া বাক্যে ইঙ্গিতে তাহাকে উপদেশ দিতেন, কখন কথন বা বাড়ীর কৃষাণ আলিজানকে ডাকিয় তাহাকে পাওয়াইয়া দিবার ব্যবস্থা করিতেন। থাইতে থাইতে এক একদিন শিশু জহর অকারণ কাদিয়া ফেলিত, তাহার সে উচ্ছসিত অশ্ৰ সহজে থামিতে চাহিত না। সেই শিশুচিত্তে মেহতারতম্য কি আঘাত করিত ? শিশুচিত্ত কি এত স্থঙ্গ অনুভবনশীল ? একদিন বর্ষার বিরস সন্ধ্যায় চারিদিক মেঘে গম্ভীর আচ্ছন্ন হইয়া স্তম্ভিত হইয়া ছিল ; সিক্ত শীতল বায়ু একটু জোরেই বহিতেছিল। অঙ্গনে কর্দম, গগনে অন্ধকার, এমনি দিনে নরনারীর প্রাণে একটা নিবিড় মিলন, একটা মধুৰ সঙ্গ, একটা প্রগাঢ় স্নেহ লাভ করিবার ব্যাকুল বাসনা জাগ্রত হয়। নিষ্কৰ্ম্ম৷ শিশুচিত্ত আজ দোলাই জড়াইয়া ঘরের দাওয়ায় চুপটি করিয়া বসিয়া থাকাকে বড় ক্লাস্তিকর মনে করিতেছিল। ষষ্ঠীচরণ বসিয়া বসিয়া লিয়া ঢুলিয়া ঘুমাইয় পড়িল। জহর বসিয়া বসিয়া স্তন্ধ গম্ভীর মেঘাচ্ছন্ন আকাশের দিকে চাহিয়া চাহিয়া কি যেন ভাবিতেছিল। দয়াঠাকুরাণী মালাজপ করিতে করিতে বলিলেন, "জহর, ঘুম পেয়েছে ? যাও বাবা, ঘরে আপনার বিছানায় গিয়ে শোওগে, আমিও জপ সেরে যাচ্ছি।” জহর শুধু বলিল, “এখনো ঘুম পায় নি।” শিশু-নেত্রের সুম আজ কিসে টুটিয়াছে ? দয়াঠাকুরাণী মালাজপ শেষ করিয়া আপনার নিদ্রিত পুত্রকে বুকে উঠাইয়া লইয়া বলিলেন, "চল জহুর, ঘরে চল।” জহর বিনা বাক্যব্যয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘরে গিয়া দ্বারের कॉरह गैंड्साहेण । g মা । eASMMMMMMMMMMM MMMMMMMMS SMSMMSMSJJJMMMSSMMSMMMMMMMS না। একই ঘরে হইলেও তাহার জন্য একটা স্বতন্ত্র ৩২৯ দাঠাকুরাণী বলিলেন, “শোও বাবা, শোও।” জহর নড়িল না। দয়াঠাকুরাণী আবার বলিলেন, “শোও বাবা, রাত হয়েছে, ঘুমোও।” - জহর তথাপি নির্বাক, নিশ্চল। দয়াঠাকুরাণী যষ্ঠকে বিছানায় শোয়াইয়া উঠিয়া আসিয়া জহরের মুখের কাছে ঝুকিয় তাহার দাড়িতে হাত দিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হয়েছে বাবা, বল কি काहे ?” তখন সেই সাত বৎসরের বালক মাথা নীচু করিয়া ক্ষুদ্র হৃদয়ের সকল বলে সকল দ্বিধা সঙ্কোচ অতিক্রম করিয়া অতি করুণ মিনতির স্বরে বলিল “মা, তুই আমাকে একবার আপনার মার মত কোলে নে না ।" শিশুর মুখে এ কি নিদারুণ করুণ বাণী। দয়াদেবীর প্রাণ ফাটিয়া যাইবার মত হইল, তিনি বাষ্পাকুল লোচনে ছু বাহু মেলিয়া জহরকে বুকে চাপিয়া ধরিলেন, তাহাকে কোলে উঠাইয় তাহার মুখ চুম্বনে চুম্বনে আচ্ছন্ন করিয়া দিলেন, হিন্দুবিধবার সকল আচার আজ হৃদয়ের কাছে, প্রেমের কাছে, খৰ্ব্ব হইয়া গেল ! জহরকে কোলে করিয়া দয়াদেবী বড় কান্নাটাই কঁাদিলেন, আর মাতৃস্নেহরসস্তৃপ্ত জহর তাহার কাধে মাথা রাথিয়া পরম মুখে হাসিমুখে ঘুমাইয় পড়িল। তখন দয়াদেবী আপনারই শষ্যার এক পাশ্বে তাহাকে শোওয়াইয়া নিজে উভয় পুত্রের মধ্যে শয়ন করিলেন। সেদিন হইতে সকল ব্যবধান ঘুচিয়া গেল। দয়াদেবী গ্রামে পতিত হইলেন। ס\ धर्छी ७ छश्द्र दम्ल श्ब्रां८छ् । ठांशङ्गा उंडट्ब्रहे ७फ़्, ७, পাশ করিয়াছে। ষষ্ঠ ঠিক করিল সে বি, এ, পড়িবে ; জহর বলিল, সে পুলিসের দ্বারোগাগিরির পরীক্ষা দিবে। ইহা শুনিয়া ষষ্ঠী বলিল, “ছি ছি, যে চাকরী দেশের লোকের হেয়,তাই তোমার চরম অবলম্বন ঠিক করলে ৪ জহর গম্ভীর ভাবে বলিল, “না করে করি কি ? যত শীঘ্র হয় আমাকে উপার্জন করতে হবে, আর কত কাল পরের গলগ্রহ হয়ে থাকব!” ষষ্ঠ আর তাহাকে কিছু বলিল না, কথাটা মাকে বলিল ।