পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--- S) 8 তেছেন। - এবং অপর আর একজন উচ্চপদস্থ রাজপুরুষ—তিনি দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ। গঙ্গাগোবিন্দ কহিলেন— "মহাশয় দাগী হওয়াই ভাল। আবগুক মত সেই দাগ দেখিয়াই লোক বাছিয়া লওয়া যায়। সেই দাগ ছিল বলির মুর্শিদাবাদের রাজস্ব সমিতির দেওয়ান হইয়াছেন।" - - - -> "আপনার এই সকল কথার কিছু অর্থ আমি বুঝি না। গবর্ণর জেনেরল যদি আমাকে কাৰ্য্যদক্ষ বলিয়া মনে করিতেন, তবে ১৭৭২ সনের পরিদর্শনকালে আমাকে পদচ্যুত করিলেন কেন ? - + * + "তিনি কি আর ইচ্ছাপূর্বক আপনাকে বরখাস্ত করিয়াছিলেন, বিলাতি সভ্যতার অনুরোধে খ্ৰীষ্টীয়ধর্শ্বের অনুরোধে আপনাকে তথন ৰরখাস্ত না করিলে চলে না, তাই আপনাকে বরখাস্ত করিয়াছিলেন।" দেবী সিংহের কৰ্ম্মকুশলতা ধীরে ধীরে শুক্লপক্ষের শশীর স্তায় পূর্ণাঙ্গ হইতে লাগিল। তখন হেষ্টিংস তাহার স্বহস্ত প্রদত্ত “রাজটীকা” অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন এবং সেই ললাটতিলক দেখিয়াই বুঝিতে পারিলেন যে তাহার উদেশ্বসিদ্ধির জন্য দেবী সিংহই উপযুক্ত অস্ত্র । তাই ১৭৭৩ সালে যখন কলিকাতা, মুর্শিদাবাদ, পাটনা, বৰ্দ্ধমান, ঢাকা ও দিনাজপুরে রাজস্ব আদায়ের জন্য প্রাদেশিক সমিতি সংস্থাপিত হইয়াছিল, তখন দেবী সিংহই মুর্শিদাবাদের রাজস্ব আদায় করিবার উপযুক্ত পাত্র বলিয়া বিবেচিত হইয়াছিলেন । মুর্শিদাবাদে দেওয়ান হইয়াই দেবী সিংহ দেখিলেন যে প্রাদেশিকসমিতি দামোক্লিসের তরবারির দ্যায় তাহার মস্তকের উপর বিলম্বিত রহিয়াছে। সে তীক্ষু অস্ত্র ভাঙ্গিয়৷ চূৰ্ণ করিবার সামর্থ্য তাহার ছিল না—তাই তিনি অস্ত্রের পূজা আরম্ভ করিলেন । সে পূজা-পদ্ধতি অভিনব এবং দেবী সিংহেরই উপযুক্ত ছিল! সেকালে বারবনিতাদিগের উপর একটী কর ধাৰ্য্য ছিল। দেবী সিংহ তাহার ইজারা লইলেন এবং প্রকাশু ভাবে একটা বারবনিতাশালা খুলিলেন বলিলেও বলা যায়। সমিতির কর্তাগণ তখন তরুণ যুবক—ৰ্তাহাব চঞ্চলচিত্ত ও বিলাসী ছিলেন। র্তাহাদিগের তুষ্টিসাধনের জন্য দেবী সিংহ বাছিয়া বাছিয়া একদল সুন্দরী যুবতী রমণী সংগ্ৰহ করিলেন এবং নানাবিধ তরল শ্লথ ও উন্মাদনাপূর্ণ নামে তাহাদিগকে আখ্যাত করিয়া কামোন্মত্ত ইংরাজকর্তাদিগকে প্রবাসী। . একজন কৃষ্ণকায় দীর্ঘপুরুষ-তিনি দেবী সিংহ, - ----------------------- জানাইলেন যে তাছার নারীবিপণিতে “তপ্তকাঞ্চন,” প্রভৃত্তি অনায়াসে পাওয়া যায় ! - তরুণ ইংরাজযুবকগণ স্বপে স্বরা এবং দেবী সিংহের “তপ্তকাঞ্চন” প্রভৃতি লইয়াই পরম পরিতুষ্ট রছিলেন–র্তাহার কার্যকলাপ পরিদর্শন করিবার আর অবসর রহিল না। তাহারা যখন ফরাসী মস্কের মত্ততায় এবং “তপ্তকাঞ্চন প্রভৃতির রূপলাবণো একান্ত বিমোহিত—একান্ত অজ্ঞান, যখন স্ফটিকাধারে উজ্জল শেরি বা শু্যাম্পেন জলিতেছে, যখন রমণীগণের লীলা-চঞ্চল অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে সঙ্গে শত বিদ্যুৎ চমকিতেছে, যখন তাহাদিগের কলকণ্ঠে প্রাণ-মন বিমোহিত হইতেছে, যখন গ্রীষ্মাতিশয্যপূর্ণ আসিয়ায় বসিয়া শীতকামী ইংরাজ “পুঙ্গব” এইরূপে যুরোপের স্বর্গমুখ অনুভব করি তেন—সয়তান দেবী সিংহ তখন নিজে অবিচলিত থাকিতেন। স্বরার তরঙ্গ—রমণীর লীলা-বিভঙ্গ তাহাকে বিচলিত করিতে পারিত না। কোন শুভ মুহূর্তে, কোন মাহেন্দ্রক্ষণে, কোন উন্মত্ততার সাহায্যে তিনি তাহার ঘৃণিত কৰ্ম্মগুলি প্রাদেশিক সমিতির সভ্যদিগের নিকট হইতে 'মনজুর’ করিয়া লইবেন, তখন দেবী সিংহ সৰ্ব্বদা সেই চিন্তাতেই ব্যাকুল থাকিতেন। দেবী সিংহ ধীরে ধীরে নানা ছদ্মবেশে নানা নামে পরিচিত হইয়া নানাপ্রকার রাজস্বের সহিত সংশ্লিষ্ট হইয়া পড়িলেন। কখনো বা আত্মপ্রকাশ করিয়া, কথনো বা আত্মগোপন পূর্বক নামান্তর গ্রহণ করিয়া তিনি কার্য করিতে আরম্ভ করিলেন। প্রাদেশিক সমিতি তখনও স্বরা এবং রমণী লইয়াই মত্ত ছিলেন। একবার এমনও হইয়াছিল যে ছদ্মবেশধারী নামান্তরে পরিচিত দেবী সিংহ সরকারের কোন একটী রাজকর যোগাইতে না পারায় তাহার উপর বেত্ৰদণ্ডের আদেশ হইয়াছিল। দেবী সিংহকে সে দণ্ড ভোগ করিতে হয় নাই—তাহার প্রতিনিধি উহা * For, if they (the names) were to be translated, they would sound—Riches of my life; Wealth of my soul; Treasure of Perfection; Diamond of Splendour Pearl of Price; Ruby of Pure Blood and other meta phorical descriptions that calling up dissonant passions to enhance the value of the general harmony, heightened the attractions of love with the allurements of avarice.–E. Burcke, [ ৮ম ভাগ। | সংখ্যা।] | | I by proxy.—E. Burke,


ভোগ করিয়া কোম্পানী বাহাদুরের আদেশের সন্মান রক্ষা করিয়াছিল - হেষ্টংস সাহেব এতদিন নিদ্রিত ছিলেন না। তিনি আগ্রহের সহিত দেবী সিংহের ক্রমোন্নতি () দর্শন করিতেছিলেন -পিতা যেরূপ গৰ্ব্বস্ফীতদ্বদয়ে পুত্রের ক্রমোন্নতি দর্শন করে সেইরূপ। স্বচতুর হেষ্টিংস যখন বুঝিয়াছিলেন ীে দেবী সিংহ এতদিনে কসিত কাঞ্চন সদৃশ হইয়াছেন, - এতদিনে কৰ্ম্মক্ষম হইয়াছেন তখন একদিন অকস্মাৎ প্রাদেশিক সমিতির মত্তত ছটিয়া গেল। তাহারা স্থণার হিত দেখিলেন, নরপিশাচ দেবীসিংহ কোম্পানী বাহাদুরের রাজত্বে ঘনমসী ঢালিয়া দিয়াছে! তাহারা তখন দেবী হিকে বিদূরিত করিবার জন্য কৃতসংকল্প হইলেন। রাজা দেবী সিংহের অর্থের অভাব ছিল না—কিরূপে উৎকোচ গ্রহণ করিতে হয়, সে কালের অনেক ইংরাজও তাহা বিশেষরূপেই জানিতেন। তাই আশায় বুক বাধিয়া দেবী সিংহ তখন প্রাদেশিক সমিতির প্রত্যেক সভ্যকে থোপযুক্ত উৎকোচ দিতে চাছিলেন—তাহার পর বিশেষ উৎকোচের প্রলোভন দেখাইলেন—শেষে কহিলেন, যে বাহা চাহিবে আমি তাহাই দিব—আমার ভাণ্ডারদ্বার মুক্ত করিয়া দিয়াছি ! কিছুতেই কিছু হইল না। প্রাদেশিক সমিতি সেই ংণিত উৎকোচের প্রস্তাবে পদাঘাত পূৰ্ব্বক দেবী সিংহকে পদচ্যুত করিতে বসিলেন। দেবী সিংহ আর কালবিলম্ব না করিয়া কোম্পানীর শিরোমণির অন্বেষণে চলিলেন। তিনি জানিতেন যে গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ •হেষ্টিংসের দক্ষিণ হস্ত, হেষ্টিংস বাহাদুর কোম্পানীর কর্তা এবং উৎকোচ হেষ্টিংসের বিধাতা পুরুষ ! দেৰ সিংহ গঙ্গাগোবিন্দের শরণ লইলেন। তাহার কলঙ্কটক রাজটীকা হইল । R যোগং যোগ্যেন যোজয়েৎ | It was not enough that the English were thus sacri • And for one of those frauds committed by him in another name, by which he became deeply in balano, the revenues, he was publichy whipped রাজা দেবী সিংহ । SMMMMMMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSBSSSS ficed to the revenge of Debi Singh. It was necessary –"T ৩৭৫ to deliver over the natives to his avarice. By the intervention of bribe brokerage he (Hastings) united the two great rivals in iniquity, who before, from an emulation of crimes, were enemies to each other, Ganga Govinda Singh and Debi Singh.-Burke. বঙ্গের জনীদারগণ সেকালে প্রজাদিগকে অপত্যনিৰ্ব্বিশেষে স্নেহ করিতেন —তাহারা তাহাদিগকে রক্ষা করিতেন, ধ্বংস করিতেন না। হেষ্টিংস সাহেব মনে করিতেন যে জমীর উপর জমাদারের কোন স্বত্ব নাই। হেষ্টিংস বাহাদুর অনেকের সহিত ইজারা বন্দোবস্ত করিলেন। কালে তাহাতে আদৌ কোন ঝঞ্ঝাট ছিল না। ইজারাদারগণ বাঙ্গালার র শোষণ করিতেই আসিয়াছিল-বাঙ্গালাকে সজীব রাথিতে আসে নাই! অর্থলোলুপ ইজারাদারগণ অল্পকালের জন্ত ইজারা গ্রহণ করিয়াই ছলে বলে বা কৌশলে বঙ্গের যথাসৰ্ব্বৰ লুণ্ঠন করিয়া লইত এবং সেই অর্থ কোম্পানীর রাজস্ব ও প্রতিশ্রুত উৎকোচাদি প্রদান করিয়া আপনাদের শূন্ত সিন্ধুক পূর্ণ করিত ! যে সকল ইংরাজ কালেক্টরগণ সেকালে কোম্পানীর রাজস্ব আদায় করিবার জন্যই স্বল্প হইয়াছিলেন–র্তাহার রক্ষক না হইয়া ভক্ষক হইলেন। ইতিহাস-বিশ্রুত পাঁচসনা বন্দোবস্তের পর (১৭৭২) নবসৃষ্ট ইংরাজ তহশিলদারগণ বেনামী করিয়া ইজারা গ্রহণ করিতে লাগিলেন। তাহার যে রাজস্ব আদায় করিতেন তাহার অধিক পরিমাণই আত্মসাৎ করিতেন—কোম্পানী'বাহাদুরের অর্থাগার শূন্তই থাকিত। স্বতরাং কোম্পানীর রাজস্ব ক্রমেই বাকি পড়িতে লাগিল । - উৎকোচগ্রাহী হেষ্টিংস - ইংরাজ তহশিলদারদিগকে শাসন করিতে পারিতেন না ; পাছে তাহারা অসন্তুষ্ট হইয় বিলাতে তাহার চরিত্র কীৰ্ত্তন করে এই ভয়ে তাহাকে - সৰ্ব্বদাই নিৰ্ব্বাক থাকিতে হইত। প্রৰিন্সিয়াল কেন্সিলের উচ্ছেদ সাধন করা ক্রমে ক্রমে হেষ্টিংস সাহেবের অবশু কৰ্ত্তব্য হইয়া উঠিল। --- • “in the late proceedings of the Revenue Board” observes the majority of the council, “there is no species of peculation from which the Hon’ble Governor : General has thought it right to abstain." —History of India, Beveridge, p. 383.