পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S)の . প্রবাসী । নৃশংসরুপে বেত্ৰাঘাত করিবার অভিপ্রায়ে অকস্মাৎ এই গ্রামে প্রবেশ করিয়াছে। আমি এই কাসাকদের কর্তৃক ধৃত হইলে ইহারা যে সহজেই আমার পরিচয় পাইবে এবং অীমাকে এখানেই যে হত্য করিবে, আমার সঙ্গী বৃদ্ধ কৃষকটও তাহা স্পষ্ট বুঝিতে পারিয়াছিল কিন্তু ফিরিয়া যাইবার ত আর সময় নাই। কৃষক স্বচতুর দৃষ্টিতে আমার দিকে চাহিয়া বলিতে লাগিল “সম্ভ্রান্ত মহিল; আপনি গুইয়া পড়িয়া আপনার শাল খানিতে মুখ ঢাকিয়া রাখুন কোনো শব্দ করিবেন না।” কৃষক আস্তে আস্তে গ্রামে উপনীত হইলে একজন কসাক্ তাহাকে অশ্রাব্য গালি দিয়া গাড়ী থমাইতে বলিল ও তাহাকে ভয় দেখাইতে লাগিল। আমি শুনিলাম কসা বলিতেছে "কিরে আয় গাড়ীর ভিতর থেকে বাহিরে আয় ; তুই এমন করে পালাতে চেষ্টা করেছিস্ বলে তোকে সবচেয়ে বেশী বেত্ৰাঘাত কৰ্ত্তে হবে। বের হ! মজা দেখবি নিঃসহায় বৃদ্ধ কৃষক ভয়ে সঙ্কুচিত হইয়া বলিতে লাগিল “প্ৰভু, আমি অন্ত গ্রাম হইতে আসিতেছি ; আমি আমার মেয়েকে ডাক্তারের কাছে লইয়া চলিতেছি। ধৰ্ম্মাবতার, সে বড় রুগ্ন তাহার দুরন্ত বসন্ত রোগ হইয়াছে।” কসাক তন্ত্রক্তরে গালি দিতে দিতে বলিতে লাগিল রে গর্দভ, মূখ, তবে গাড়ী থামিয়েছিস্ কেন ? যা, শিগগির এ গ্রাম থেকে বের হ” এই বলিয়া নিরীহ অশ্বটীর উপর এক কশাঘাত করিল। অশ্ব বেদন পাইয়া তাঁরবেগে ছুটতে ছুটিতে গ্রাম পার হইয়া আসিল । গ্রামের মধ্য দিয়া আসিবার সময় উৎপীড়িত নরনারীর আকুল ক্ৰন্দনধ্বনি আমার হৃদয়কে ম্পর্শ করিল আমি তাহাদের জন্য কিছু করিতে পারিলাম না—শুধু সেই সৰ্ব্বগ্রাসী বহিপ্রধূমিত, শ্মশানে পরিণত গ্রামটার দুরবস্থা দেখিয়া ঈশ্বরের চরণে প্রার্থনা করিলাম। এই ভাবে সমস্ত গ্রীষ্মকালট গ্রাম হইতে গ্রামান্তরে প্রচার কাৰ্য্যে ব্যাপৃত ছিলাম। সৰ্ব্বশুদ্ধ প্রায় দেড় শত গ্রাম পরিদর্শন কুরিতে পারিয়াছিলাম , আমার নিরক্ষর কৃষক ভ্রাতা ভগিনীদের কাছে যথাসাধ্য দেশের দুরবস্থা ও তাহা হইতে উদ্ধারের উপায় বুঝাইতে চেষ্টা করিয়াছি। বৰ্ব্বর অশিক্ষিত কৃষকদের কাছে আমি যেমন সরল, উদার ব্যবহার পাইয়াছি, আমার জীবনে তাহা কোনোদিন সম্ভোগ [ ৮ম ভাগ । করি নাই, ইং g কেবল আমিই অন্তৰ করিয়াছি, ੰਬਰ নহে, যে সকল যুবক যুবতী এই কার্য্যে ব্যাপৃত ছিলেন, তাহারা সকলেই একবাক্যে ইহা স্বীকার করিয়াছেন। শরৎ কালের প্রথম ভাগে আমাদের কালেজ খুলিলে আমি দ্বিগুণতর উৎসাহের সঙ্গে সৈনিকদিগের মধ্যে প্রচার কার্য্যে প্রবৃত্ত হইলাম। সৈনিকগণ প্রচারিকাদের কত ভক্তি করে, তাহাদের সমস্ত প্রকার বিপদ হইতে উদ্ধার করিতে কত চেষ্টা করে; আমি তাহ প্রত্যক্ষ দেখিয়াছি। কিছু দিন পূৰ্ব্বে আমার দুইটী বন্ধু ব্যারাকে এক সভার আয়োজন করিলে আমি সেখানে উপস্থিত হইয়াছিলাম। সেখানে বহু সৈন্ত মিলিত হইয়াছিলেন তাহারা আমাকে ভোজনাগারের প্রশস্ত शृष्श् এক টেবিলের উপর দাড় করাইয়া আমার চতুর্দিক ঘিরিয়া দাড়াইলেন। উৎসাহী স্বদেশানুরাগী শতধিক সৈনিকের সম্মুখে আমি প্রায় এক ঘণ্টা কাল বকৃত করিলাম ; আমার বক্তৃতায় চতুৰ্দ্দিকে যখন গভীর উত্তেজনার সঞ্চার হইয়াছে, এমন সময় অকস্মাং গৃহ প্রবেশ দ্বার হইতে হুকুম আসিল “উহাকে গ্রেপ্তার কর।” আমরা চমকিয়া উঠিলাম। আমি লক্ষ্য করিয়া দেখিলাম দরজার পাশে আমার পরিচিত একজন যুবা রাজকৰ্ম্মচারী প্রিন্স ম—দণ্ডায়মান।—তিনি ভ্রমবশতঃ কতগুলি সংকারী কাগজ-পত্র ব্যারাকে ফেলিয়া গিয়াছিলেন বলিয়াই তাহাকে রাত্রিকালে পুনরায় আফিসে আসিতে হইয়াছে ; এবং সেখান হইতে ভোজনাগারে এক অপরিচিত নারী-কণ্ঠ শুনিতে পাইয়া একবার পরিদর্শন .করিতে আসিয়াছেন। আমি দৌড়াইয়া পলাইবার উদ্দেশ্যে টেবিল হইতে তাড়া তাড়ি লাফাইয়া পড়িলাম ; কিন্তু সে চেষ্টা নিতান্তই বৃথা। আমি নীচে নামিতেই দুইজন সৈনিক আমার দুই হাত ধরিয়া ফেলিল এবং আমি বুঝিতে পারিলাম আমার শেষ মুহূৰ্ত্ত আসিয়াছে ; এম্নি সময় কে যেন আমার কানের কাছে আস্তে আস্তে বলিয়া গেলেন “আপনি পলাইবার কোনো চেষ্টা করিবেন না-কোনো কথাবাৰ্ত্তাও বলিবেন না” আমি ফিরিয়া তাকাইয়া দেখিলাম যে আমার বন্ধু দুইটাই আমাকে ধরিয়াছিলেন। আমরা প্রবেশ দ্বারে উপস্থিত হইলে কৰ্ম্মচারী আমাকে কারাগারে (Barrack প্রিন্স ম—চিনিতে না পারে সেই জন্ত আমি আমার মুখ ঢাকিয়া রাথিতে চেষ্টা করিয়াছিলাম আমি ও আমার বন্ধু দুইট বরফাচ্ছাদিত অন্ধকার রজনীর ভিতর দিয়া আস্তে আস্তে কারাগারাভিমুখে চলিতেছি –কিছু দূর আসিতেই তাহার। আমার হাত মুক্ত করিয়া বলিলেন “পালাও”। আমি তাঁরবেগে ছুটয় রাজ পথে আসিয়া পৌছিলাম। কিছুক্ষণ দিশা-হারা হইয়া রাজ পথে ঘুরিতে ঘুরিতে রাত্রি প্রায় দ্বিপ্রহরে বাড়ী পৌছিলাম। অতি অল্প কাল মধ্যেই আমার গৃহদ্বারে লোকের সাড়া পাইলাম। দ্বার খুলিয়া দেখি আমার সৈনিক বন্ধুদ্বয়ের আত্মীয় একজন সৈনিক আমাকে অভিবাদন করিয়া জানাইলেন যে আমাকে ছাড়িয়া দেওয়ার অপরাধে তাহার दफू श्छौ भूउ श्ब्रां८छ्न 4द९ ॐांशञ्चाहे हेशरक श्रांभांत কাছে পাঠাইয়া এই সংবাদ জানাইতে ও কিছুতেই আমার নাম পরিচয় প্রকাশ পাইবে না এই কথা জানাইয়া আমাকে নিশ্চিন্ত থাকিতে বলিয়াছেন। আমি ব্যস্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম “তবে উহাদের সম্পর্কে গুরুতর কিছু ঘটিবার সম্ভাবনা আছে নাকি ?” সৈনিক উত্তর করিল “ই, তাহা, দের গুলি করা হইবে।” আমি একেবারে হতবুদ্ধি হইয় বসিয়া পড়িলাম। সৈনিকট চলিয়া গেলেন। বহুক্ষণ ধরিয়া নানা প্রকার চিস্তা আমার হৃদয় মনকে চঞ্চল করিয়া তুলিল। আমি ভাবিলাম আমার সামান্ত একটা জীবনকে বাচাইবার জন্ত আমি কখনও এই দুইটী সাহসী স্বদেশ-প্রেমিক, সৈনিককে প্রাণ বিসর্জন করিতে. দিব না। ইহাদিগকে রক্ষা করিতে আমি সেই মুহূর্বেই ছুটিলাম। সমস্ত প্রকার সন্দেহের হাত হইতে এড়াইবার নিমিত্ত মাসিমাতার উপহার সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট বহুমূল্য tোষাক পরিচ্ছদে ভূষিত হইয়া আমি প্রিন্স ম-এর কাছে যাইবার জন্য প্রস্তুত হইলাম। তুষারাবৃত রাজপথ বাহিয়া রাত্রি প্রায় দুই ঘটিকার সময় প্রাসাদে উপনীত হইলাম। আমি ভাবিয়াছিলাম প্রথমে ভৃত্যদের জাগাইয়া পরে তাহদের সাহায্যে প্রিন্সের কাছে পৌছিতে হইবে ; কিন্তু ভৃত্যগণ নিদ্রিত ছিল না ; আমি পৌছিতেই তাহারা আমাকে একটা ভেরা সেজোনোভা । .nion) ইয়া নাইবার হুকুম দিলেন। আমাকে যাহাতে উজ্জ্বলালোক মণ্ডিত স্বৰ্সজ্জিত ভোজনাগারে লইয়া গেল। আমি দেখিলাম বিস্তীর্ণ টেবিলের এক পাশ্বে প্রিন্স ও অন্ত তিনটী যুবা রাজকৰ্ম্মচারী উপবিষ্ট। এতদ্ব্যতীত চারিজন স্ত্রীলোক সেখানে উপস্থিত ছিলেন ; ইহার কোন শ্রেণীর মহিলা তাহ সহজেই অনুমান করিতে পারিলাম। সে যাহা হউক, আমি গৃহে প্রবেশ করিতেই একজন স্বরাপান বিভোর রাজকৰ্ম্মচারী টলিতে টলিতে আমার কাছে আসিয়া কুৎসিৎ আলাপ আরম্ভ করিয়া দিল। প্রিন্স ম —আমাকে চিনিতে পারিয়া তাড়াতাড়ি ছুটিয়া আসিলেন এবং অফিসারকে তিরস্কার করিয়া সরিয়া যাইতে বলিলেন যথারীতি অভিবাদন করিয়া প্রিন্স ম—আমাকে পাশ্বস্থ একটা প্রকোষ্ঠে লইয়া চলিলেন ; সেখানে আমি উপবিষ্ট হইলাম প্রিন্স দ্বার রুদ্ধ করিয়া এক দৃষ্টে আমার দিকে তাকাইয় আমার বক্তব্য শুনিতে চাহিলেন। প্রিন্স ম—অতি স্বত্র যুব পুরুষ। তাহার উন্নত দেহ, গাঢ় কৃষ্ণ গুফ উজ্জল মুখত্র, রাজোচিত গাম্ভীৰ্য্য সৌন্দৰ্য্যকে পরিপূর্ণরূপে ফুটাইৱা তুলিয়াছে। কিন্তু হায়! মুরাপানে তাহার মুখশ্ৰী লাবণ্যহীন হইয়াছে ; কিন্তু অন্তান্ত কৰ্ম্মচারীদের দ্যায় উন্মত্ত হইয়া ওঠেন নাই। র্তাহাকেই একটু শান্ত, সংযত, ও প্রকৃতিস্থ দেখিলাম । - আমরা উভয়ে উপবিষ্ট হইলে আমি আর বিলম্ব না করিয়া আমার আসিবার উদ্দেগুটী বলিতে আরম্ভ করলাম। বলিলাম “আজ রাত্রে একজন যুবতীকে ব্যারাক হইতে পলাইয়া যাইতে সাহায্য করার অপরাধে আপনি, দুই জন সৈনিককে ধৃত করিয়াছেন।" ইহা বলিতেই তাহার নেশা যেন ছুটয় গেল। তিনি বিশ্নয়ান্বিত হইয়া বলিয়া উঠিলেন “ছ, কিন্তু তুমি-তুমি কি করিয়া জানিলে ?” আমি ইহার কোনো উত্তর না করিয়া বলিলাম “তাহাদের নাকি গুলি করা হইবে।” প্রিন্স—“ই নিশ্চয়ই তাহদের সমুচিত শাস্তি হইবে।” আমি-"প্রিন্স, ঐ দৈনিকের আমার বন্ধ উহাদের গুলি করা হয়, ইহা কিছুতেই আমার সহ হইবে না।" প্রিন্স—“আচ্ছ, তবে না হয় তাহদের শাস্তিটা একটু লঘু করিয়া দেওয়া হইবে।” আমি—“প্রিন্স ম-আমি সেই অপরাধিনী রমণী, . '. دوى