পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

mm= 8:08 জ্যৈষ্ঠ মাসকে গ্রীষ্ম ঋতু বলিয়া ব্যবহার করি, কিন্তু বৈদিক ঋষিরা জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসকে গ্রীষ্মঋতু বলিয়া গণ্য করিতেন। অন্যান্ত ঋতু সম্বন্ধেও এইরূপ। কৃষ্ণযজুর্বেদে উক্ত হইয়াছে – "মধুশ্চ মাধবক্ষ বাসস্তিকাবৃতু, শুক্রশ শুচিশ গ্রীষ্মাবৃতু, নভশ্চ নভস্তশ্চ বার্ষিকাবুতু, ইযশোর্জশ্চ শারদাৰ্বতু, মহশ্চ সহস্তশ্চ হৈমস্তিকাবৃতু, তপশ্চ তপস্তশ্চ শৈশিরাবৃতু।" তৈ-স-৪-৪-১১ • মধু ও মাধব ( অর্থাৎ চৈত্র ও বৈশাখ ) বসন্ত ঋতু, জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় গ্রীষ্ম ঋতু, শ্রাবণ ও ভাদ্র বর্ষা ঋতু, আশ্বিন ও কাৰ্ত্তিক শরৎ ঋতু, অগ্রহায়ণ ও পৌষ হেমন্ত ঋতু, এবং शाच। ७ हॉड्लुन *िश्रिझ १ङ् । অতএব বৈদিককালের শারদ উৎসবের কথা বলিতে হইলে আমাদিগকে সেই সময়ের আশ্বিন ও কাৰ্বিকেরই উৎসব সমূহের উল্লেখ করিতে হইবে। প্রত্যেক ঋতুরই এমন একটি বিশেষ বৈচিত্র ও অলেকিক প্রভাব আছে, যাহাতে মানব হৃদয় আকৃষ্ট না হইয়া থাকিতে পারে না। মানবসমাজ তাহার সেই সৌন্দর্য্যলহরীতে নিমগ্ন হইয়া ও মাধুর্য্যধারায় প্রবাহিত হইয়া বিবিধ বিধানে আনন্দ অমুভবের জন্য প্রস্তুত হয়। আনন্দ না হইলে উৎসব হয় না ; প্রতি ঋতুতেই প্রকৃতির সুবিশাল চিত্রফলকে এমন সুন্দর এমন মধুর—এমন হৃদয়স্পর্শী চিত্রসমূদয় উদ্ভাসিত হইয় উঠে, এবং তাহার প্রভাবে ভুবনের প্রত্যেক পরমাণু হইতে এমনই এক অভূতপূৰ্ব্ব আনন্দধারা প্রশ্রত হইতে আরম্ভ করে যে, নয়ন-হৃদয়শালী মানবসমাজ সঙ্গে সঙ্গেই সেই আনন্দ অনুভব করিবার জন্ত উৎসবের অনুষ্ঠান না করিয়া নিবৃত্ত হইতে পারে না । আমরা দেখিতে পাই শারদলক্ষ্মী যখন নিজ পরিবারে পরিবৃত হইয়া প্রকৃতির বিমল সিংহাসনে আরোহণ করিয়া ছেন, তখন তাহার সেই রূপচ্ছটায় আকৃষ্ট হইয়া আনন্দোবেলম্বদয়ে বৈদিক ঋষিগণ গাহিয়া উঠিয়াছিলেন – “অক্ষিদুঃখোঞ্চিতস্তৈব বিপ্রসন্নে কনীনিকে। জাঙক্তে চাদগণং নাস্তি ঋতুনাং তন্নিবোধত । প্রবাসী । [ ৮ম ভাগ। কনকাভানি বাসাংসি অহতানি নিবোধত। अन्नषभौठ भ्रल्भौ७ श्रश्रः ८व। शौरनथा: ॥ এত বাচ প্রযুজ্যন্তে শরদ যত্রোপদৃপ্ততে।” তৈ, আ, ১-৪-১২। নয়নরোগ হইতে মুক্তিলাভকারী লোকের ষ্ঠায় আর শরৎ-ঋতুর নয়নতারকাদ্বয় বিশেষরূপে প্রসন্ন হইয়া উঠি য়াছে, তিনি যেন নয়ন যুগলে অঞ্জন প্রদান করিয়াছেন, তাহাতে আর কোনরূপ মলিনতা নাই । তোমরা অবগত হও, সমস্তষ্ট ঋতু-( অর্থাৎ স্বৰ্য্যরশ্মি) সমূহের শক্তিতে সম্পন্ন হইয়াছে। তোমরা দেখ, শরং ঋতুর বসনসমূহ নবীন ও কনকসদৃশ ! ( ঐ দেখ, শরং বলিতেছেন—) "তোমরা অন্ন ভোজন কর, (গৃহ ) মার্জন কর, আমি তোমাদের জীবনদাতা, আমি আসিয়াছি।” শরৎকে যেখানে দেখিতে পাওয়া যায়, সেখানে এইরূপ বাক্যই প্রচুর হইয়া থাকে। - বৈদিক সাহিত্য আলোচনা করিলে স্পষ্টই বোধ হয় যে, বৈদিক ঋষিগণের নিকট অন্যান্য ঋতু অপেক্ষা শরং ঋতুই সমধিক প্রিয় বলিয়া প্রতিভাত হইয়াছিল। এই জন্যই দেবতাদির নিকটে কোন অভীষ্ট সম্ভোগ দীর্ঘকালের জন্য প্রার্থনা করিতে হইলে, তাহারা সাধারণত শরতের উল্লেখ করিয়াই প্রার্থনা করিতেন , যেমন “জীবেম শরদ শতম্”—আমরা যেন শত শরৎকাল পর্য্যস্ত বাচিয় থাকি! শত বৎসর না হইলে শত শরৎ হয় না, এই জন্য এতাদৃশ স্থলে কালক্রমে শরৎ শব্দ বৎসরবাচী হইয়া পড়িয়াছে; কিন্তু প্রথমাবস্থায় শরৎ শব্দ স্পষ্টত ঋতুকেই বুঝাইত। রমণীয়তম বলিয়া শরৎ শব্দ সংস্কৃত সাহিত্যে যেমন বৎসর অর্থে ব্যবহৃত হয়, ইংরাজী সাহিত্যে Summer প্রভৃতি শব্দও সেইরূপ স্থলবিশেষে গৌণভাবে বৎসরকে বুঝাইয়া থাকে। শরতের সৌন্দর্য্য সম্বন্ধে আর অধিক কিছু আলোচনা না করিয়া এখন দেখা যাউক যে, প্রাচীন সময়ে সেই ঋতুতে কিরূপ উৎসব প্রচলিত ছিল। - আশ্বযুঞ্জী কৰ্ম্ম । শারদ লক্ষ্মীর সমাগমে আর্য্যগণ প্রথমে যে উৎসবের অনুষ্ঠান করিতেন, তাহার নাম “আশ্বযুজী কৰ্ম্ম-অৰ্থাং২ যে কাৰ্য্যকে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমার দিন অনুষ্ঠান করিত্বে | | ( হে শ্রোতৃগণ,) | | ৭ম সংখ্যা । ] হয়। আশ্বযুজী কৰ্ম্মের জন্ত র্তাহারা পুরাতন গৃহকে পুনৰ্ব্বার আচ্ছাদন করিয়া, লেপন করিয়া, সমান করিয়া স্তন করিতেন ও অলঙ্কত করিতেন। সেই দিন গৃহস্থিত সকলেরই বিশেষভাবে স্নান করিবার নিয়ম ছিল। এবং সকলেই শুক্লবসন পরিধান করিতেন। পরিবারবর্গ স্বানান্তে শুক্লবসন পরিধান করিয়া সমবেত হইলে গৃহপতি একটি হোম করিতেন। হোমশেষে গৃহপতি 'পৃষাতক' অর্থাৎ একত্র মিশ্রিত ঘৃত ও ছন্ধের দ্বারা আর একটি হোম করিতেন। হোম সময়ে তিনি বলিতেন —“যাহা আমার উন রহিয়াছে, তাহা যেন পূর্ণ হয়, এবং যাহা পূর্ণ আছে, তাহা যেন বিশীর্ণ হইয়া না যায়।২ পৃষাতকা । পূৰ্ব্বে পৃষাতক (একত্র মিশ্রিত দ্বত-ছন্ধ ) দ্বারা যে হোমের কথা বলা গিয়াছে, তাহা আশ্বিনের পূর্ণিমায় অনুষ্ঠিত হইলেও কোন কোন স্বত্রকার ইহাকে আশ্বযুজী কৰ্ম্মের অন্তর্গত না করিয়া পৃষাতকা নামে পৃথক্ কৰ্ম্ম বলিয়াই নির্দিষ্ট করিয়াছেন, এবং তাহার প্রণালীও পূৰ্ব্বোক্ত হইতে বিভিন্ন ॥৩ পারস্কর গৃহস্থত্রে যাহা লিখিত হইয়াছে স্তদনুসারে জানা যায়, গৃহপতি আশ্বিন পৌর্ণমাসীতে দুগ্ধ দ্বারা চর প্রস্তুত করিয়া ও তাহাতে দধি মধু ঘৃত মিশ্রিত করিয়া তাহ দ্বার, ইন্দ্র, ইন্দ্রাণী, অশ্বিদ্বয়, আশ্বিন পৌর্ণমাসী ও শরৎ এই সকলের হোম করিতেন ; এবং তাহার পর পূৰ্ব্বের স্তায় পৃষাতক দ্বারা পূৰ্ব্বোক্ত মন্ত্র উচ্চারণ করিয়া আহুতি প্রদান করিতেন। অনস্তর গৃহপতির অমাত্যগণ অর্থাৎ ভ্রাতা, পুত্র প্রভৃতি পরিবারবর্গ দধি মধু ঘৃত মিশ্রিত হতশেষ সেই পায়স চরুকে কতকগুলি মন্ত্র পাঠ করিতে করিতে অবলোকন করিতেন ॥৪ তাহার পর ব্রাহ্মণ ভোজন করাইয়া সেই কাৰ্য্য সম্পন্ন করা হইত। সেদিন রাত্রিতে বছরগুলিকে পৃথক না বাধিয়া গাভৗগণের সহিতই রাখিবার निम्म ध्यि । - আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা কৌমুদী পূর্ণিমা বা কোজাগরী পূর্ণিমা নামে আমাদের দেশে স্ব প্রসিদ্ধ। আজ কাল u BBBB BBBBBS S - ২-২-২—৩ : ২-৩-৩ গাৰ্গ বৃত্তি দ্রষ্টব্য। s ও পারস্কর গৃহস্বত্র ২-১৬ । ४ - १८वघ 8-२४-> । y বৈদিক শারদোৎসব। ’ 8 ο Φ. কোজাগরী পূঢ়शत्र ब्राजिल आबश লক্ষ্মীপূজা করিয়া অক্ষত্ৰীড়া করিতে করিতে জাগরণ করি, কিন্তু পুরাকালে ইহার স্থানে অন্ত উৎসব প্রচলিত ছিল। সীতাযজ্ঞ । শরৎকালে অনুষ্ঠেয় অপর কার্য্যের নাম ‘সীতাযজ্ঞ' । সীতা শব্দের অর্থ লাঙ্গল-পদ্ধতি। লাঙ্গল-পদ্ধতিতে অনুষ্ঠেয় যজ্ঞের নাম ‘সীতাযজ্ঞ’ । পুরাকালে ব্রীহি ও যব এই দুই শস্তই অতি প্রধানভাবে পরিগণিত হইত। ব্রীহি শরৎকালে ১ ও যব বসন্তকালে নিম্পন্ন হয় বলিয়া সীতাযজ্ঞ বৎসরে দুইবার অনুষ্ঠান করিবার নিয়ম ছিল। ইহার অনুকরণে ক্রমশ: আরও কতকগুলি কৃষিঘটিত উৎসবানুষ্ঠান সমাজমধ্যে প্রচলিত হইয়া পড়ে, যথা ‘হলাভিযোগ’ অর্থাৎ প্রথম কৃষি আরম্ভ করিবার সময় যে যজ্ঞ করা হয় ; ‘প্রবপন যজ্ঞ’—অর্থাৎ ক্ষেত্রে সমস্ত বীজ বপন করা হইয়া গেলে যে যজ্ঞ করা হয় ; ‘প্রণবন যজ্ঞ’—অর্থাৎ শস্ত ছেদনের সময় অমৃষ্ঠেয় যজ্ঞ ; ‘খন যজ্ঞ'—অর্থাৎ শস্ত কৰ্ত্তন করার পর যে স্থানে শস্ত রাখা হয় ( থামার ), সে স্থানে অমৃষ্ঠেয় যজ্ঞ, ও পৰ্য্যয়ণ যজ্ঞ’—অর্থাৎ খামার হইতে সৰ্ব্বতোভাবে শস্ত লইয়া যাইবার পর অনুষ্ঠেয় যজ্ঞ ।২ সীতাষজ্ঞ ক্ষেত্রের পূৰ্ব্ব বা উত্তর দিকে চাষ করা পবিত্র স্থানে অনুষ্ঠিত হইত। ক্ষেত্রের মধ্যেই এই যজ্ঞ করিতে হইত বলিয়া যজ্ঞকারিগণ লক্ষ্য রাথিতেন যে, যাহাতে শস্তের কোন অনিষ্ট না হয়। কখন কথন বা গ্রামের বহির্ভাগে লাঙ্গলচষা জমির উপরেই সেই যজ্ঞ সম্পাদন করা যাইত। যে স্থানেই সেই যজ্ঞ করা হউক না কেন, তাহাকেই লেপন ও জল দ্বারা অভূক্ষণ করিয়া লইতে হইত। এইরূপে যজ্ঞস্থান প্রস্তুত হইলে তদুপরি ব্রীহিমিশ্রিত (বসন্তকালে যবমিশ্রিত), কুশখণ্ডসমূহ বিছাইয়া দিয়া অগ্নি স্থাপন পূৰ্ব্বক সীতা প্রভৃতির উদ্দেশে হোম করা হইত। সাঁতার উদ্দেশে যে । যে মস্ত্ৰে আহুতি প্রদান করা যাইত, তাহার অনুবাদ এইরূপ :– ১ আজকাল হেমন্ত ঋতুতেই প্রচুর পরিমাণে ধান হইয়া থাকে দেখা যায়, কিন্তু পূৰ্ব্বে তাহ শরৎকালেই যে প্রচুর হইত তাঙ্গ বক্ষমান জাগ্ররণ বিধির দ্বারাই হস্পষ্ট প্রমাণিত হইতেছে। . - ২ গোভিল গৃহস্বত্র ৪-৪-২৭-৩• ।