পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

.৩২ প্রবাসী । অস্বীকার করিলাম ; কারণ আমার বাসস্থান তাহার জানা . আপনার কাছে ধরা দিতে আসিয়াছি আপনি নিরপরাধ সৈনিক ছুইটীকে বিনাশ করিবেন না।” এতক্ষণে প্রিন্স আমার কথার অর্থ বুঝিতে পারিয়া সচকিত নেত্রে আমার দিকে তাকাইয়া বলিতে লাগিলেন তুমি, ভেরা সেজোনোভা—অবশেষে বিপ্লবকারীদের দলভূক্ত श्हेब्रएछ ! - আমি উত্তর করিলাম-ই, আমিই সেই যুবতী। প্রিন্স—তুমি কি তবে তাহাদিগকে মুক্তিদানের জন্ত মৃত্যুকে বরণ করিবে ? আমি কহিলাম “ই।” প্রিন্স নীরব হইলেন ; বহুক্ষণ একদৃষ্টি আমার দিকে তাকাইয়া রছিলেন। অবশেষে হঠাৎ বলিয়া উঠিলেন— “ন, ভেরা, কেনইবা তুমি এমন করিবে ঐ দুইটী সৈনিক ত সামান্ত কৃষকের বাচ্চা ; ওদের থাকা না থাকায় কিছুই আসে যায় না। ওদের জীবনের কি কিছু মূল্য আছে ?” আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বুঝাইয়া দিলাম যে ঐ নির্দোষী সৈনিক বন্ধু দুইটীর পরিবর্তে আমি মৃত্যুদণ্ড বরণ করিয়া লইবার জন্য দৃঢ় সংকল্প করিয়াছি। প্রিন্স পুনরায় বহুক্ষণ নীরবে কি ভাবিতে লাগিলেন। কিছুক্ষণ পরে বলিলেন “ভেরা, আমি কিছু স্থির করিতে পারিতেছি না ; সৈনিকদিগকে ছাড়িয়া দেওয়া খুব সহজ নহে ; আমাকে একটা কারণ প্রদর্শন করিতে হইবে। তবে ঐ সৈনিক দুইটাই যে তোমাকে ছাড়িয়া দিয়াছিল, আমি তাহার কোনো বিশিষ্ট প্রমাণ পাই নাই ; কারণ গৃহে তেমন বেশী আলো ছিল না।” আমি তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিলাম—“আপনি তবে তাহাদিগকে ছাড়িয়া দিতে চেষ্টা করিবেন ?” প্রিন্স উত্তর করিলেন “আমি বলিতেছিলাম যে হয়ত কাল প্রাতে ধৃত সৈনিক দুইটকে যথার্থ অপরাধী বলিয়া নাও চিনিতে পারি।’ আমি—তবে তাঁহারা মুক্তি পাইবে! প্রিন্স—ই । আমি সৰ্ব্বাস্ত;করণে র্তাহাকে ধন্যবাদ দিলাম। প্রিন্স আমাকে বাড়ী পৌছাই দিতে চাছিলেন। কিন্তু আমি থাকা আমার পক্ষে সুবিধাজনক নহে। বিদায় হইবার কালে তিনি আমাকে বিপ্লবকারীদের উদ্দেশু, কাৰ্য্য প্রণালী ইত্যাদি সম্বন্ধে কোনো সময় তাহার সঙ্গে কথাবাৰ্ত্ত বলিতে অনুরোধ করিলেন। - আমি সম্মত হইয়া একদিন কোন স্থানে মিলিত হইব বলিয়া প্রতিশ্রত হইলাম তিনি আমার সঙ্গে সঙ্গে গৃহদ্বার পৰ্য্যন্ত আসিলেন ; আমি অভিবাদন কয়িয়া পুনরায় মহা নিস্তব্ধ, নিরানন্দ, তুষারাবৃত রাজপথ দিয়া চলিতে চলিতে প্রায় একঘণ্টা পর গৃহে উপনীত হইলাম। পাঠক ! ভেরার কাহিনী এখানেই শেষ হইল না। মিঃ লিরয়-স্কটু কিছু দিন হইল সেন্ট পিটাস বার্গ হইতে কোনো বন্ধুর চিঠিতে অবগত হইয়াছেন যে-ভেরা সেজোনোভা ক্ৰন্‌ষ্টাড় (Kronstadt) সহরের সৈনিকাবাসে ধৃত হইয়াছিলেন এবং পরদিনই তাহাকে গুলিকরা হইয়াছে। ঐনঃ । শ্রদ্ধাস্পদ ত্রযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় এই প্রবন্ধের বাহুল্য অংশ বাদ দিয়া ইহ সংক্ষিপ্ত করিয়া দিয়াছেন। তিনি ইহার সম্বন্ধে লিখিয়াছেন – এই প্রবন্ধের নায়িকার স্বদেশপ্রেমে আত্মোৎসর্গের আশ্চৰ্য্য বিবরণটি আমাদের নিষ্ঠ উদ্রেকের পক্ষে উপযোগী বলিয়াই এটিকে আপনার নিকট পাঠাইতেছি।-- “রুসিয়ার যে পদ্ধতিতে যে বিপ্লব উপস্থিত হইয়াছে, আমাদের দেশে তাহারই অধিকাংশ নকল করিবার চেষ্টা যদি কাহারে মাথায় আসে সেটা আমি কল্যাণকর মনে করি না। আমাদের দেশে সম্প্রতি যে সামাজিক পুনর্গঠন আবশুক হইয়াছে তাঙ্গ উচ্ছ জ্বল বিপ্লবের মধ্যে হইবে বলিয়া আমি মনে করি না । * * * নিজেদের মধ্যে বন্ধনকে পরস্পরের সেবা দ্বারা, সাধারণ হিতবুদ্ধির নিয়ত চর্চা দ্বারা, দৃঢ় করিয়া তুলিবার জন্যই আমাদের সমস্ত শক্তিকে নিযুক্ত করিতে হইবে-পরের প্রতি বিরোধ উদ্রেক করিয়া সে শক্তির অপব্যয় করা ক্ষতিকর। “আমাদের দুর্ভাগ্যক্রমে বর্তমান কালে বাংলাদেশে রাজশাসন এমন আকার ধারণ করিয়াছে যে তন্দ্বারা দেশের লোকের হিংস্র প্রবৃত্তি গোপনে ও প্রকাশে উত্তেজিত হইয়া ১ম সংখ্যা । ]


• উঠতেছে। डभाक्शन লগের প্রতি প্রবল পক্ষ যখন বিভীষিকা বিস্তার করিতে প্রবৃত্ত হন তপন দুৰ্ব্বলেরা চিত্তজালায় কুটিল পথ অবলম্বন করিতে চেষ্টা করে। এইরূপে প্রবলের অধৰ্ম্ম দুৰ্ব্বলকে দুর্নীতির দিকে টানিয়া লয়। এইরূপ অবস্থায় দুৰ্ব্বলপক্ষ ত্ৰাসজড়ত্ব অথবা গুপ্তক্ররত এই দুই প্রকার বিপদের সঙ্কটে পড়ে। এই উভয় অবস্থাই পৌরুষের বিকার জনক। ভারতশাসনকার্য্যে আমরা নৈতিক অধোগতি স্পষ্টই দেখিতে পাইতেছি—এই দুৰ্গতির কালে আমরা যদি চারিত্রনীতির বল দেখাইতে পারি তবেই আমরা যথার্থ জয় লাভ করিব। কষ্ট পাওয়াটাই পরাভব নহে কষ্টের তাড়নায় ধৰ্ম্মভ্ৰষ্ট হওয়াই পরাভব। রাজনীতির মধ্যে আমরা ছলনা দেখিতে পাইতেছি—তাহার একটা দৃষ্টান্ত পুনিটিভ পুলিসের উৎপাত। যে সকল গ্রামে কোনো প্রকার অসামান্ত উৎপাত এমন কিছুই ঘটে নাই যাহাতে সাধারণ শাসনবিধি পরাস্ত হয় সেই স্থানে দৌরাত্ম্যশাসনের উপলক্ষ্য করিয়া কোনো প্রকার বিচারের বিড়ম্বন মাত্রও না রাখিয়া বিশেষ বিশেষ লোকদের প্রতি বিশেষ ব্যয় ভার চাপাইয়া নির্দয়তা করার মধ্যে সত্যও নাই পৌরুষও নাই—অথচ ইহার লজ্জাকরত। আমাদের শাসনকৰ্ত্তারা অনুভব মাত্র করিতেছেন না। এইরূপ ঘটনায় ছলনার বিরুদ্ধে আমাদের চরিত্রেও যদি ছলন ও ক্রয়তা জন্মে তবে তদপেক্ষ দুর্ভাগ্য আমাদের পক্ষে আর কিছুই হইতে পারে না। আগুপ্রয়োজনসাধনের প্রলোভনে ধৰ্ম্মভ্রষ্ট হওয়াই দুৰ্ব্বলের পক্ষে সকলের চেয়ে বড় বিপদ । ‘বয়কটা উদ্যোগের ব্যাপারে আমরা তাহার পরিচয় দিয়াছি। বিদেশী সামগ্ৰী বিক্রয় যাহাদের উপজীবিকা এবং বিদেশী • সামগ্ৰী ক্রয়ে যাহাদের প্রয়োজন বা অভিরুচি তাহদের প্রতি অন্তায় জবরদস্তি করা হইয়াছে ইহাতে সন্দেহমাত্র নাই । প্রয়োজন ঘটিলে অন্যায় করা যাইতে পারে আমরা তাহার নজীর স্বরূপে বলিয়া থাকি ইংলণ্ডেও এক সময়ে ভারতীয় পণ্য বন্ধ করিবার জন্ত জবরদস্তি করা হইয়াছিল। আমরা সেরূপ আইন করিয়া অত্যাচার করিতে পারি না কাজেই আইন লঙ্ঘন করিয়া অত্যাচার করিতে হয়। জগতে অধৰ্ম্মের নজির খুজিয়া বাহির করিতে হয় না। কিন্তু নজিরের জোরে অন্যায় কখনই ধৰ্ম্ম হইয়া উঠিতে পারে না। আমরা স্বদেশহিতের দোহাই দিয়া লোকের স্বাধীন অধিকারে - -تا-سنا - ভেরা সেজোনোভা । - SSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSASMSMSMSMSMSMS SS যখনই হস্তক্ষেপ করিয়াছি তখনি সেই স্বদেশহিতের মূলেই কুঠারাঘাত করিয়াছি। ধৰ্ম্মের নাম দিয়া বা কৰ্ম্মের নাম দিয়া যে কোনো উপলক্ষ্যেই স্বাধীনতাকে অপমান করিবার অভ্যাস আমাদিগকে স্বাধীনতালাভে অনধিকারী করিয়া তুলে। আমরা লবণ ব্যবসায়ীর লবণ যদি জোর করিয়া অন্যায় করিয়া জলে ফেলিয়া দিই তবে কেবল যে লবণ ফেলিয়া দিই তাহা নহে সেই সঙ্গে স্বাধীন মনুষ্যত্বলাভের অধিকারকেও জলাঞ্জলি দিই। স্বভাবকে এই উপায়ে এমন বিকৃত করিয়া তুলি যে মতের অনৈক্য বা ব্যবহারের অনৈক্যকে আমরা সহ করিতেই পারি না—সমস্তই গায়ের জোরে উচ্ছ স্থল উৎপাতের জোরে একাকার করিয়া দিতে চাই। যাহার এইরূপ অসংযত উপদ্রবকে মঙ্গলসাধনের উপায় বলিয়া জানে, যাহারা নিজের মতরক্ষা ও প্রয়োজন সাধনের বেলাতেই আইন স্বীকার করে তাহার অন্যথা হইলেই আইন ঠেলিয়া ফেলিতে বিলম্ব করে না, তাহারা ইংরেজই হউক আর বাঙ্গালীই হউক, রাজাই হউক আর প্রজাই হউক, যে ডালে বসিয়া আছে সেই ডালে তাহার কুঠার মারে—তাহাদিগকে মাটিতে পড়িতেই হইবে। আমরা অধীন জাতি, এবং আমাদের রাজা আমাদের শক্তিলাভের প্রতিকুল বলিয়াই আমাদের স্বদেশাহতের চরম সাধনায় অধৰ্ম্মই আমাদের সহায় এই কথা যদি বলি তুবে এই বলা হয় যে ধৰ্ম্ম স্বদেশহিত নহে, স্বদেশহিত পাপ্লেই পুরস্কার। দুৰ্ব্বলের বল ধৰ্ম্ম নহে এই ভয়ঙ্কর ছৰ্ব্বদ্ধি হইতে ঈশ্বর আমাদিগকে রক্ষা করুন। আমরা কোনো মতেই সত্য श्रङ छांग्र श्रङ cरुन उठे न श्हे-श्रांभङ्गां दफ़ इ:c५ब्र সময়েও যেন কাপুরুষের ছায় কোনো প্রকার গোপন উৎপাতের পন্থা অবলম্বন না করি। রাজনীতি যখন কলুষিত হয় তখন প্রজা যেন ধৰ্ম্মের দ্বারা সেই কলুষের উপরে জয়ী হইতে পারে ;–এইরূপ ধৰ্ম্মবলের শ্রেষ্ঠতা লাভকে অনেক অদূরদর্শ আপাত পরাজয় বলিয়া মনে করিতে পারে কিন্তু এই শ্রেষ্ঠতা দ্বারাই আমরা আমাদের সকল্প দুঃখ অপমানের উদ্ধে মস্তক তুলিতে পারিব। দুঃখের বিষয়, বিপ্লবের নিদরুণত সম্বন্ধে যুরোপের দৃষ্টান্তকেই আমরা একমাত্র দৃষ্টান্ত বলিয়া গণ্য করিতে শিথিয়াছি। কিন্তু যে খৃষ্টান সাধুগণ রোম সম্রাটের উৎপীড়ন ধৰ্ম্মবলেসহ করিয়াছেন তাহারা মৃত্যুদ্বারাই ○○* ...