পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভোজরাজ ও পুত্তলিক। শ্ৰমুরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলী কর্তৃক অঙ্কিত চিত্র হইতে। “সত্যম শিবম্ সুন্দরম।” - “ নায়মাত্মা বলহীনেন লভ্যঃ । ” অগ্রহায়ণ, ১৩১৫। ৮ম সংখ্যা । গোরা । ףס শশিমুর্থীর সঙ্গে বিনয়ের বিবাহ যেন একপ্রকার স্থির হইয়৷ গেছে এইভাবে মহিম এবং তাহার ঘরের লোকেরা চলিতেছিলেন। শশিমুখী ত বিনয়ের কাছেও আসিত না। শশিমুর্থীর মার সঙ্গে বিনয়ের পরিচয় ছিল না বলিলেই হয়। তিনি যে ঠিক লাজুক ছিলেন তাহা নহে কিন্তু অস্বাভাবিক রকমের গোপনচারিণী ছিলেন। তাহার ঘরের দরজা প্রায়ই বন্ধ। স্বামী ছাড়া তাহার আর সমস্তই তালাচাবির মধ্যে। স্বামীও যে যথেষ্ট খোলা পাইতেন তাহা নহে—ীর শাসনে তাহার গতিবিধি অত্যন্ত স্বনির্দিষ্ট এবং তাছার সঞ্চরণক্ষেত্রের পরিধি নিতান্ত সঙ্কীর্ণ ছিল। এইরূপ ঘের দিয়া লওয়ার স্বভাব বশত শশিমুখীর মা লক্ষ্মীমণির জগৎট সম্পূর্ণ র্তাহার আয়ত্তের মধ্যে ছিল— মেথানে বাহিরের লোকের ভিতরে এবং ভিতরের লোকের বাহিরে যাওয়ার পথ অবারিত ছিল না। এমন কি, গোরাও লক্ষ্মীমণির মহলে তেমন করিয়া আমল পাইত না। এই রাজ্যের বিধিব্যবস্থার মধ্যে কোনো দ্বৈধ ছিল না। কারণ, এখানকার বিধানকৰ্ত্তাও লক্ষ্মীমণি এবং নিম্ন আদালত হইতে আপিল আদালত পৰ্য্যস্ত সমস্তই লক্ষ্মীমণি–একৃজিকুটিভ এবং জুডিশিয়ালে ত ভেদ ছিলই না, লেজিসলেটিভও তাহার সহিত জোড়া ছিল। বাহিরের লোকের সঙ্গে ব্যবহারে মহিমকে খুব শক্ত লোক বলিয়াই মনে হইত কিন্তু লক্ষ্মীমণির এলাকার মধ্যে তাহার নিজের ইচ্ছা খাটাইবার কোনো পথ ছিল না। সামান্ত বিষয়েও না। -: লক্ষ্মীমণি বিনয়কে আড়াল হইতে দেখিয়াছিলেন, পছন্দও করিয়াছিলেন। মহিম বিনয়ের বাল্যকাল হইতে গোরার বন্ধুরূপে তাহাকে এমন নিয়ত দেখিয়া আসিয়াছে যে অতিপরিচয়বশতই তিনি বিনয়কে নিজের; কঙ্কার পাত্র বলিয়া দেখিতেই পান নাই। লক্ষ্মীমণি যখন বিনয়ের . প্রতি র্তাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করিলেন তখন সহধৰ্ম্মিণীর বুদ্ধির প্রতি র্তাহার শ্রদ্ধা বাড়িয়া গেল। লক্ষ্মীমণি পাক৷ করিয়াই স্থির করিয়া দিলেন যে বিনয়ের সঙ্গেই তাহার কন্যার বিবাহ হইবে ; এই প্রস্তাবের একটা মস্ত সুবিধার কথা তিনি তাহার স্বামীর মনে মুদ্রিত 'করিয়া দিলেন যে, বিনয় তাহদের কাছ হইতে কোনো পণ দাবী করিতে পারিবেন না। - - - বিনয়কে বাড়িতে পাইরা ও দুই একদিন মহিম তাহাকে