পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- 88२ বঙ্গভূমি রত্নপ্ৰসবিনী বলিয়া জগদ্বিখ্যাত ছিল। তাহার জন্যই বক্তিয়ার থিলিজি এদেশে খিলিজিদিগের উপনিবেশ সংস্থাপনের আয়োজন করিয়াছিলেন। তাহার চেষ্টা স্বাধীন চেষ্টা। তাহ। দিল্লীর বাদশাহের দিগ্বিজয় বলিয়৷ কথিত হইতে পারে না। শিষ্টাচার রক্ষার্থ বক্তয়ার খিলিজি সময়ে সময়ে দিল্লীর বাদশাহের নিকট উপঢৌকন প্রেরণ করিলেও তাহাকে লক্ষণাবতীরাজ্যের রাজচক্রবর্তী বলিয়া স্বীকার করিতেন কি না, তাহাতে সংশয়ের অভাব নাই। কিন্তু বক্তিয়ার খিলিজির আকস্মিক অকাল মৃত্যুর অব্যবহিত পরে খিলিজিদিগের মধ্যে প্রাধান্ত লাভের জন্য যে গৃহকলহের স্বত্রপাত হয়, তাহাতেই দিল্লীর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠালাভ করে। স্বার্থাদ্ধ হইয় কেহ কেহ দিল্লীর বাদশাহের শরণাপন্ন হইয়া, তাহার প্রতিনিধিরূপে লক্ষণাবতীরাজ্যে প্রতিষ্ঠালাভের চেষ্টা করেন। প্রজ। সাধারণ,-কি হিন্দু, কি মুসলমান,—তাহাতে সন্মত ছিল বলিয়া বোধ হয় না। তখন এ দেশে সামস্তপ্রথা পূর্ণমাত্রায় বর্তমান ছিল। সামন্তগণ স্বাধীন নরপতির ন্যায় স্বাধিকার মধ্যে স্বাধীন ভাবেই শাসনক্ষমতা পরিচালিত করিতেন। বক্রিয়ার খিলিজি সেই সামস্তপ্রথা অক্ষুণ্ণ রাথিয়া কোন কোন স্থলে হিন্দুয়ামস্তের পরিবর্তে মুসলমান জায়গীরদার সংস্থাপিত করিয়াছিলেন। তিনি সকল স্থান জয় করিতে না পারিয়া, যতদূর জয় করিতে পারিয়াছিলেন, তাহ লইয়াই রাজ্য গঠনে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। উত্তর বঙ্গের সামস্তগণ স্বাতন্ত্রাপ্রিয় ছিলেন,—তাহারা শক্তিশালী বলিয়াও পরিচিত ছিলেন। বক্তিয়ার থিলিজির সময় হইতে র্তাহারা পুনঃপুনঃ আক্রমণবেগ সহ করিয়া প্রকারাস্তরে স্বাধীন ভাবেই রাজ্য শাসন করিতেন।• তাহাদের জন্তই বক্তিয়ার খিলিজিকে নিয়ত দেবকোটের সেন নিবাসে কাল যাপন করিতে হইত। এই স্বাতন্ত্র্যলিপা হিন্দু সামন্তগণের স্থায় মুসলমান জায়গীরদারগণকেও অনুপ্রাণিত করিয়া তুলিয়াছিল। র্তাহারা লক্ষণাবতীরাজ্যের

  • The Rajas of Northern Bengal were powerful enough to preserve a semi-independence, in spite of the humerous invasions from the time of Bakhtyar Khilji, —Professor Blochmann, J. A. S. B., 1873.

প্রবাসী । [ ৮ম সুলতান হইবার জন্য চেষ্টা করিলেও, দিল্লীর বাদশাহের অধীন বলিয়া পরিচয় দিতে স্বীকৃত হইতেন না। কালে হিন্দুমুসলমানের মধ্যে স্বার্থসমন্বয় সংস্থাপিত হইলে, এই স্বাতন্ত্রালিপা প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল। ... তখন গৌড়ীয় সাম্রাজ্যের স্বাধীনতা ঘোষণার জন্ত বাঙ্গালী মাত্রেই বদ্ধপরিকর হইয়াছিলেন। অবশেষে ১৩৫৩ খৃষ্টাব্দে হাদি সামসুদ্দীন ইলিয়াসের চেষ্টায় গৌড়ীয় সাম্রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনতা লাভ করে। তাহা সহজে সাধিত হয় নাই। দিল্লীশ্বর ফিরোজ শাহ পাণ্ডুয়ার রাজধানী আক্রমণ করিয়া, হাজি ইলিয়াসের পুত্রকে কারারুদ্ধ করিয়াছিলেন ;-হাজি ইলিয়াসকে একডালার দুর্গে অবরুদ্ধ করিয়া রাধিয়াছিলেন ;–অবশেষে একডালার নিকটবৰ্ত্তী উন্মুক্ত প্রাস্তরে এক লক্ষ বাঙ্গালী হিন্দু মুসলমান জীবন বিসর্জন করিতে বাধ্য হইয়াছিল ! - একডালার যুদ্ধক্ষেত্র বাঙ্গালী হিন্দু মুসলমানের চিরস্মরণীয় বিজয় ক্ষেত্র। বাঙ্গালী মাত্রেই স্বাধীন পাঠান শাসনের কথা অবগত আছেন, কোন কোন গৌড়ীয় বাদশাহের নাম এখনও অনেকের নিকট সুপরিচিত। কিন্তু যে বিজয়ক্ষেত্রে এই স্বাধীন শাসন প্রতিষ্ঠালাভ করিয়াছিল, তাহার নাম পৰ্য্যস্ত বাঙ্গালীর নিকট অপরিচিত হইয়া উঠিয়াছে ! একডালা-দুর্গ কোথায় ছিল, বাঙ্গালী তাহার তথ্য নির্ণয়ের জন্য যথাযোগ্য আগ্রহ প্রকাশিত করে নাই। ইংরাজ লেখকগণ তাহাতে প্রবৃত্ত হইয়া, নানা তর্ক বিতর্কের অবতারণা করিয়া গিয়াছেন। তাহা যেরূপ বিশ্বয়াবহ, সেইরূপ হাস্তোদ্দীপক ! অথচ তাহাই ঐতিহাসিক তথ্য বলিয়া পরিচিত হইয়া রহিয়াছে। দিনাজপুরের কালেক্টর মিষ্টার ওয়েষ্টমেকট লিখিয়াছিলেন—একডাল দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত। Firuz Shah laid seige to the Fort of Ekdala for several. days, and nothing decisive occurring, made a feint retreating movement westward seven Rosh from Ekdala when Ilyas Shah, thinking Firuz Shah was retreating, came out of the fort Ekdala, advanced and attacked the Imperialists, who defeated and killed one lak of the Bengal army. f J. A. S. B., Vol. хып, P, 244

  • বারণ-বিরচিত "তারিখ-ই-ফিরোজশাহী" গ্রন্থে লিখিত আছে। |

& | ৮ম সংখ্যা । ] SMMSMMSMMSMMSMSMMSSMMMMSMMMMMM উত্তর বঙ্গের অনেক স্থানেই পুরাতন সামন্তগণের এবং জায়গীরদারগণের রাজহুর্গের ভগ্নাবশেষ পড়িয়া রহিয়াছে। তাহারই একটি স্থান লক্ষ্য করিয়া,-সে স্থান স্বয়ং পরিদর্শন না করিয়াই,—মিষ্টার ওয়েষ্টমেকট একডাল দুর্গের স্থান নির্ণয় করিয়া গিয়াছিলেন। তাহাই কিছু দিন পর্য্যন্ত একডাল দুর্গের প্রকৃত স্থান বলিয়া ইংরাজ লেখক-সমাজে সমাদর লাভ করিয়াছিল। প্রসিদ্ধ মুদ্রাতত্ত্ববিৎ মিষ্টার টমাস পুনর্ভবানদ্বীতীরবর্তী জগদল নামক স্থানকে একডালা বলিয়া ইঙ্গিত করিয়া যে তর্কবিতর্কের স্বত্রপাত করিয়া যান, অধ্যাপক ব্লকম্যান তাহার অলীকত্ব প্রতিপাদিত করিয়া লিখিয়াছিলেন,— একডাল দুর্গ পাণ্ডুয়ার নিকটবৰ্ত্তী বলিয়া মুসলমানলিখিত ইতিহাসে সুস্পষ্ট উল্লিখিত থাকিলেও, অস্থাপি তাহার দ্বান নির্ণয়ে সংশয় রহিয়া গিয়াছে। অতঃপর মিষ্টার ওয়েষ্টমেকট পাণ্ডুয়ার ২৩ মাইল দূরে একডালার স্থান নির্ণা করায়, ইংরাজলেখকগণ তাহাকেই প্রকৃত স্থান বলিয়া মনে করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। পরে মিষ্টার বিভারিজ এলিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকায় তাহার প্রতিবাদ করিয়ালিথিয়া গিয়াছেন,—একডাল ঢাক্যজেলার অন্তর্গত।+ এপর্য্যন্ত ইহার অধিক আর কোনও আলোচনা মুদ্রিত হয় নাই। কিরূপ প্রমাণের উপর নির্ভর করিয়া মিষ্টার বিভারিজ এই সিদ্ধান্ত প্রচারিত করিয়া গিয়াছেন, তাহার সার মৰ্ম্ম নিয়ে প্রদত্ত হইল। বলা বাহুল্য, একডালাহুর্গ পাণ্ডুয়ার নিকটবৰ্ত্তা বলিয়া মুসলমান লিখিত ইতিহাসে বে উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়, তাহার সহিত মিষ্টার বিভারিজের সিদ্ধান্তের সামঞ্জস্ত রক্ষা করা অসম্ভব। তিনি নিজেও তাহা লক্ষ্য করিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি বলেন,—এ বিষয়ের প্রথম লেখক দিল্লী নিবাসী জিয়াউদ্দীন বারণী ; তিনি বঙ্গদেশে আসিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয় না ; বৃদ্ধ বয়সে দিল্লীতে বসিয়া ইতিহাস লিখিতে গিয়া বারণী ভ্রমপ্রমাদে পতিত হইয়া থাকিবেন!! এরূপ অনুমানের - –r

  • J.A. S. B., Vol. lxiv, p. 227. + The actual site of this fort is still a matter of doubt-J. A. S.B., Vol. xlii, p 212.

of The only objection to the Dacca Ekdala is that %iyāh-uddin 'Bārāni speāksTôi Ekdala as being near Pandua. But he wrote in his old age at Delhi, and *Pparently he had never visited Bengal and had no একডাল-দুর্গ। ’ 88○ --- আশ্রয় গ্রহণ না করিলে, মিষ্টার বিভারিজের ਸੋ বারণীর এক কথায় খণ্ডিত হইয়া যায় ! মিষ্টার বিভারিজ যেরূপ তর্কপ্রণালীর অবতারণা করিয়া গিয়াছেন তাহা হাস্তোদ্দীপক। তিনি বলেন,—“ঢাকার উত্তর-উত্তর-পূৰ্ব্বকোণে ২৫ মাইল দূরে নদীতীরে একডাল নামে একটি স্থান রেনেলের মানচিত্রে অঙ্কিত দেখিতে পাওয়া যায়। -তাহার একদিকে নদী, অপর দিকে ভাওয়ালের জঙ্গল । এই প্রাকৃতিক সংস্থান ইতিহাসবর্ণিত একডালার প্রাকৃতিক সংস্থানের অনুরূপ। ইহার ৮ মাইল দূরে দুরদুড়িয়া নামক স্থানে দুর্গটি সংস্থাপিত ছিল বলিয়া বোধ হয়।" এখানেও মিষ্টার বিভারিজের অনুমান অসঙ্গত হইয়া পড়িতেছে। কারণ মুসলমান লিখিত ইতিহাসে একডাল গ্রামেই দুর্গ থাকা দেখিতে পাওয়া যায়। মিষ্টার বিভারিজের একডাল এবং ছত্রছড়িয়ার মধ্যস্থলে নদীস্রোত ;–একপারে একডালা, অপর পারে ছরজুড়িয়া। হাজি ইলিয়াস পাণ্ডুয়া পরিত্যাগ করিয়া, নদী পার হইয়া একডালার্গে আশ্রয় গ্রহণ করিবার কথা মুসলমান লিখিত ইতিহাসে দেখিতে পাওয়া যায়। মিষ্টার বিভারিজ এস্থলে যে প্রমাণের অবতারণা করিয়াছেন, তাহা । এইরূপ —“ডাক্তার টেলর ঢাকাবিবরণী নামক ষে গ্রন্থরচনা করিয়া গিয়াছেন, তাহা দুষ্প্রাপ্য হইয়া উঠিয়াছে। সেই গ্রন্থে একডালার বিশেষ বিবরণ সন্নিবিষ্ট আছে।” ডাক্তার টেলর লিখিয়া গিয়াছেন,—“একডালার অপর পারে দুরদুড়িয়া নামক স্থানে একটি পুরাতন ছর্গের ভগ্নাবশেষ দেখিতে পাওয়া যায়। একডালার নিকটেও একটি পুরাতন রাজবাটীর ধ্বংসাবশেষ বর্তমান। লোকে বলে,—তাহা বুনিয়া রাজাদিগের রাজবাট ছিল ; তাহারাই . দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। দুর্গটি এখন রাণীবাড়ী নামে পরিচিত, এক সময়ে রাণী ভবানীর অধিকারভুক্ত ছিল। local knowledge. Its ***if*f* #fsefn ærte i sista ভ্রম হইয়া থাকিৰে বলিয়া অনুমান করিবার কারণ নাই। তিনি fosol footo:-Ekdala is the name of a mouza close to Pandua, on one side of it is a river, and on another a jungle সামস্-ই-সিরাজের তারিখ ফিরোজ শাখাগ্রন্থে দেখিতে পাওয়া যায় উত্তর কালে একডাল "জাজাপুর" নামেও कषिङ श्रेब्रश्लि। -