পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫২৬ দৈনিক উপার্জন ভস্মরাশির স্তায় কোথায় যাইতেছে, পাপের পূজায় তাহদের শরীর, ও অত শারীরিক পরিশ্রম করিয়া উপার্জিত অর্থ কোথায় চলিয়া যাইতেছে ; দেশ যে নির্ধন সেই নির্ধন যে নিরন্ন সেই নিরন্ন, লাভের মধ্যে দেশের মধ্যে পাপের স্রোতের বিস্তার পাইতেছে, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি নিরন্নের রোগের সহিত অবৈধাচরণ জনিত রোগ সকল আসিয়া দেশকে উৎসন্ন দিতেছে। তাহার উপায় ? এখন হাল যেমন ধরিবে নৌকা সেই পথে যাইবে। কিন্তু একবার দিক নির্ণয় হইলে একবার নৌকা স্রোতে গা ঢালিলে তখন তাহার গতি ফিরান শক্ত হইবে, হয়তো আর ফিরিবে না, অধঃপাতের পাকে পড়িবে। বিষম সমস্ত। —অন্নাভাবে এই জাতি কি ধ্বংস হইবে ? না পাপস্রোতে অন্নের চেষ্টায় গিয়া অধঃপাতের পাকে পড়িয়া নষ্ট হইবে ? অনেকে বলিতে পারেন, যে স্ত্রীলোকদিগকে কলে কাজ দেওয়া উচিত নয় ; কিন্তু সে উপায়ে আত্মরক্ষা সম্ভবপর নয়। যাহারা কল করিবে, তাহার স্বার্থের অনুরোধে স্ত্রীলোকদিগকে কলে কাজ দিবে ; আইনের অবরোধ অনেক সময় দুর্বল প্রকৃতির লোকদিগকে আটকাইয়া রাখে, নীতির অবরোধ তাহ পারে না। লোকে তাহা মানে না। ইহার উত্তরে স্বনীতি হয়তো বলিবেন, "চরকার স্থতায় হাতে বুনা কাপড় ব্যবহার কর।” কলে বুন কাপড়ের ন্তায় যদি সৰ্ব্বতোভাবে হাতে বুন কাপড় সস্ত হইত, তাহা হইলে কোন আপত্তি থাকিত না। কিন্তু তাহা হইতে পারে না। যে স্রোত বহিয়া যায় তাহ আর ফিরিয়া বিপরীতে বহে না, সময় যাহা কাটিয়া যায় তাহ আর আসে না। সময় যায়, তাহার সঙ্গে সঙ্গে তাহার আনুসঙ্গিক সামগ্ৰী চলিয়া যায়, তাহা না হইলে সময়কে চিনি কিসে? সময়কে জানি কিসে? কাল যে আমাদের ছিল, আজ সে আমাদের নাই, আর সে সেই মূৰ্ত্তিতে আমাদের মধ্যে আসিবে না, আর সে আমাদের হইবে না ; সময়কে চিনি তাহার পরিবর্তনে, আবার সেই পরিবর্তনকে চিনি সময়ে। যেদিন আর পরিবর্তনকে চিনিব না, সেই দিন আমাদের স্থান হইবে অনন্তে। আবার যে কালের আর পরিবর্তন প্রবাসী । [ ৮ম ভাগ। - থাকিবে না তখন সেই কাল আর কাল থাকিবে না, সে হইবে অনন্ত । - - যাহা এককালে সম্ভবপর ছিল, অন্তকালে সম্ভবপর নয়। সময়ের উপযোগী ন হইলে কোন পদার্থই কালের মুখে তিষ্ঠে না, তাহ কালের নিয়ামক হইতে পারে না। ভীমের গদা কুরুক্ষেত্রের নিয়ামক হইয়াছিল ; কিন্তু ওএডো তরবারি সেণ্টমিলের যুদ্ধে নিয়ামক হয় নাই, সেখানে ইংরেজ পক্ষে নিয়ামক হইয়াছিল ওএলিংটনের বুদ্ধি। তাই বলিতেছিলাম চরকা আর ভবিষ্যৎ বাঙ্গালার স্বচ্ছদের নিয়ামিক হইবার আশা নাই, তাহার উপর ভরসা করিলেই কালে তাহ মরীচিক হইয়া দাড়াইবে । " - অতীতের নাশেই বর্তমানের প্রকাশেই, কালের আক্ৰT বিকাশ ; কালের এই অতীত বর্তমানের প্রভেদ বুঝিবার অভাবে তাহার এই গতকে জীবস্তুভ্রমে আলিঙ্গন করিত্বে । যাইয়াই তাহার এত দুৰ্গতি। জাপান বর্তমানকে বর্তমান বলিয়া চিনিয়াছিল, বর্তমানের ভালে ভবিষ্যতের আলোৰ দেখিতে পাইয়াছিল, সেই আলোকে আপনার পথ চিনি | লষ্টয়াছিল, তাই তাহার আজ এত স্বকৃতি। আমাদের গুহই পৃথিয় চলিতে হইবে । বর্তমানের মুখে ভবিষ্ণুতো - মঙ্গল আরতি শুনিতে হইবে। তবে আমরা তাহার মঙ্গল । রাজ্যে উঠিতে পারিব । - মানুষের প্রকৃতিই সংরক্ষণশীল, যাহা আছে তাই ছাড়িতে চায় না । ভারতবাসী আবার সংরক্ষণশীলের মধ্যে ংরক্ষণশীল। তাহার শিক্ষাতে বল দীক্ষাতে বল, তাহার সমাজে তাহার ধৰ্ম্মে বল, তাহার আচারে তাহার ব্যবহারে বল, সকল বিষয়েই ভারতবাসী অতি সংরক্ষণশীল। शृश्लेॉन ধৰ্ম্মপ্রচারক তাহার এই সংরক্ষণশীলতা দেখিয়া, গৈরিক বেশধারী সন্ন্যাসী সাজিয়া, পুরাতনের সাজে নূতন দীক্ষা ; দিবার চেষ্টা করিতেছে। এই সংরক্ষণশীল জাতির পক্ষে নূতন বিষয়ে সফল হওয়া অপেক্ষ “नश्ले दिशम्न प्लेक्काश" कव्व সহজ। তাছা তাহার প্রকৃতিগত। সেই জয় હરે “স্বদেশী আন্দোলনে" অন্ত ব্যবসায় অপেক্ষ বাঙ্গালার কাপ - বুনার ব্যাপারটা অধিক সাফল্য লাভ করিয়াছে। দেখিয়াছি অবস্থাপন্ন গৃহস্থের সন্তান, আপনার ঘরে তাত বসাই। আপনাদের সংসারের প্রায় সমস্ত কাপড় নিজে বুনিতেছে। ৯ম সংখ্যা । ] ৱিসৰ ও ব্যবসা স্বতন্ত্র। চরকায় স্থত কাটিয়া, হাততাতে কাপড় বুনিয়া, কলের কাপড়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা চালান অসম্ভব"। চিরদিন রণসাজ সাজে না, চিরদিন লোকে যুদ্ধ করিতে পারে না, যুদ্ধের পরিণাম আছে ;—যুদ্ধের পরিণাম জয় পরাজয়, এক পক্ষের জয় অপর পক্ষের পরাজয়। আমাদের দেশে বৈশ্বযুদ্ধ চলিয়াছে, তাহারই আর একটা নাম "স্বদেশী আন্দোলন ।” এই স্বদেশী আন্দোলন চিরদিন চলিবে না, চিরদিন চলিতে পারে না। তখন যে পক্ষ বাজারে ভাল দ্রব্য সুবিধা দরে বিক্রয় করিতে পারিবে उहाद्रले छम्न ठ्द्दे८द । এই স্বদেশী আন্দোলনে আমাদের দেশে নানারূপ দেশ দ্রব্যের কারখানা খুলা হইতেছে ; আন্দোলন থামিয় গেলে সকল প্রকারই যে আমাদের দেশে প্রস্তুত হইতে পারবে এরূপ আশা করা যায় না। সকল দেশ, সকল প্রকার দ্রব্যের উৎপাদনের উপযুক্ত নয়, উপযুক্ত নয় বলিয়াই জগতে বাণিজ্যের স্মৃষ্টি হইয়াছে। বস্ত্রবয়ন, যে আমাদের পক্ষে একটা উপযুক্ত উপজীবিকা, তাহা এই দেশের বহুকালের বাণিজ্য বিবরণেই জানা যায়। এই ব্যবসা বাঙ্গালী জাতির মধ্যশ্রেণীর স্বচ্ছন্দের মূল ছিল। যে কোন জাতির মধ্য শ্রেণীই তাহার মেরুদও স্বরূপ। যে জাতির মধ্যশ্রেণী পরিপুষ্ট, সেই জাতিই জগতে বলবান। এক্ষণে আমরা যতরূপ ব্যবসায়, আমাদের মধ্যে সৃষ্টি করিবার চেষ্টা করি না কেন, বস্ত্রবয়ন ব্যবসায়ের পুনরুদ্ধার সৰ্ব্বাপেক্ষা সহজ ও আমাদের অভ্যাসের অনুরূপ। এই বস্ত্রবয়ন শত বাধাবিঘ্ন সত্বেও এখনও আমাদের মধ্যে জীবিত রহিয়াছে। এখনও দেশী কাপড়ের আদর আমাদের মধ্যে সকলের কাছে সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক রহিয়াছে। এখনও চরকায় স্থত কাটার কথা পৌরাণিক উপন্যাসে দাড়ায় नांहे। এখনও বর্তমান বাঙ্গালীর অনেকেই পিতামহ বা প্রপিতামহী চরকায় সূতা কাটতেন, একথা তাহারা জানেন। এখনও চরকায় স্থত কাটা হীন কাজের মধ্যে পরিগণিত হয় নাই। কিরূপে এই এক কালের জাতীয় উপজীবিকাকে পুনরপি আমাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে, কিরূপে এই প্রাচীন উপজীবিকাকে মধ্যশ্রেণীর স্ত্রী পন্থীঃ | . ৫২৭ পুরুষ উভয়ের আয়ত্তের মধ্যে আনিত হইবে, কিরূপে গৃহমহিলা আপনার পরিবার মধ্যে থাকিয়া, স্বামিপুত্রকে বস্ত্রবয়ন কাৰ্য্যে সহায়তা করিতে পারিবে, তাহাই আমাদের বিবেচ্য, তাহাই আমাদের আলোচ্য। বড় বড় কল কারখানায় তাহাদের স্থান নাই। বড় বড় কলকারখানায় সম্ভবতঃ বিদেশী মূলধন থাটিবে। অথচ হাতে বোন কাপড় কলের কাপড়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পারিবে না। তবে কৰ্ত্তব্য কি ? পারিবারিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করিয়া আপনার পরিবারের মধ্যে থাকিয়া আপনার সংসারধৰ্ম্ম বজায় রাখিয়া, আপনার জীবিকা অর্জন করিবার পরিজনপ্রিয় বাঙ্গালীগৃহস্থের কোন উপায় আছে কি ? যেরূপ বড় কল কারখানা নানা স্থানে আছে আজকাল সেইরূপ ছোট ছোট কল কারখানা হইতেছে, জাপানে ঐরূপ কল কারখানা অধিক। প্রত্যেক দোকানের নিজের নিজের কারখানা ঘর আছে। তাহাতে আপনার বিক্রেয় দ্রব্য আপনার দোকানের একপ্রকার মধ্যেই, হইতেছে। যে রূপ কলিকাতার উপকণ্ঠে বড় বড় ময়দা প্রভৃতির কল আছে, আবার আজকাল কলিকাতার মধ্যেই অন্তরূপ ছোট ময়দার কল ও অন্ত অন্ত প্রকার ছোট ছোট কল হইয়াছে ; ঐ সকল কল অধিকাংশই বৈদ্যুতিক বলে চলে। আবার আজকাল এত ছোট “অস্থাবর বাস্পীয় কল” (Portable Steam Engine) oits; oth, Go Rtfoবৃহৎ একটা ঘরের মধ্যে ঐক্কপ কলের সাহায্যে একটা কারখানা খোলা যাইতে পারে। দেশে বিদেশে আমাদের যুবকেরা “বিষয় বিদ্যা” (technical education) fotosi efstrēts 1 stati rại " যায়, ঐরূপ শিক্ষিতের সংখ্যা অল্পদিনের মধ্যেই যথেষ্ট হইয়া ঐ সকল কল আবশুক মত মেরামত করিতে পারবে। ঐরূপ কারখানা খোলা অধিক টাকার কাজ নয়। যদি চাদা করিয়া ঋণ দিয়া, উপযুক্ত পরিবার বিশেষকে দেশের মধ্যে মধ্যে উপযুক্ত স্থানে ঐক্ষপ “পারিবারিক শিল্পশালা" করিয়া দেওয়া হয় এবং তাহারা ঐ টাকা পরিশোধ । করিলে উহাতে নুতন কারখানা খোলা হয়, তাহ হইলে কালে দেশ ঐক্ষপ পরিবারিক শিল্পশালা"