পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 8 o' সদা-প্ররদিত নামক কোন বোধিসত্ত্বকে এক শ্রেষ্ঠদারিকা তাহার পূজার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে তিনি বলিয়াছিলেন —“তাহাতে আমরা শিক্ষা করিব, শিক্ষা করিয়া সমস্ত জীবের শরণ হইব ।” ‘ধৰ্ম্ম সঙ্গীতিসূত্রে’ উক্ত হইয়াছে :-—“বোধিসত্ত্ব সমস্ত জীবের কার্য্য সম্পাদন করিয়া দাসের দ্যায় হইয়া থাকিবে ।” আধা বিমল কীৰ্ত্তি নির্দেশে সংসার-ভয়-ভীত ব্যক্তির কি করা কৰ্ত্তবা-মঞ্জুশ্রীর এই প্রশ্নে একজন উত্তর করিতেছেন ;--“হে মধুত্র, সংসার-ভয়-ভীত বোধিসত্ত্বের বুদ্ধমাহাত্ম্য অনুসরণ করা উচিত।” “যে ব্যক্তি বুদ্ধমাহাত্ম্য অনুসরণ করিতে ইচ্ছা করে, তাহার কি করা উচিত ?” “তাহার সমস্ত জীবে সমত্ব দর্শন করা উচিত ; এবং সমত্ব দর্শন করিতে হইলে সমস্ত জীবের মোক্ষের জন্য অবস্থান করা উচিত।” ‘ধৰ্ম্ম-সঙ্গীতিকুত্রে সার্থবাহ বোধিসত্ত্ব ভগবানকে এই কথাই বলিয়াছেন : -“হে ভগবন, যে ব্যক্তি (বস্তুত: ) বোধিসত্ত্ব, সে প্রথমে সমস্ত জীবের জন্য বোধি ( জ্ঞান ) প্রার্থনা করে, নিজের জন্ত নহে ।” ঐ গ্রন্থেরই অন্যত্র বোধিসত্ত্বগণের মহামৈত্রী ও মহাকামনা কাহাকে বলে—এই প্রশ্নের উত্তরে লিখিত হইয়াছে – “বোধিসত্ত্বগণ যে, নিজের শরীর, জীবন ও সমস্ত পুণ্য জীবসমূহকে প্রদান করিয়া তাহার জন্য কোন প্রতীকার ইচ্ছা করেন না, ইহাই তাহাদের মহামৈত্রী ; এবং তাহারা যে সৰ্ব্বপ্রথমে নিজের বোধি ( জ্ঞান ) প্রার্থনা না করিয়া সমস্ত জীবের বোধি ইচ্ছা করেন, ইহাই তাহাদের মহাকরুণ।” বোধিসত্ত্বগণ কি জন্য শীল রক্ষা করেন, তদ্বিষয়ে ‘নারায়ণ পরিপৃচ্ছায় উক্ত হইয়াছে —“সে ষে শীল রক্ষা করে, তাহা নিজের জন্য নহে, স্বর্গের জন্য নহে, ইন্দ্রত্বের জন্য নহে, ভোগের জন্ত নহে, ঐশ্বর্য্যের জন্য নহে, রূপের জন্য নহে, বর্ণের জন্ত নহে, এবং যশের জন্তও নহে ; সে নরক-ভীত হইয়া.বা তির্যাগযোনি ভয়-ভীত হইয়৷ শীল রক্ষা করে না ;. সে সমস্ত জীবের হিত, স্বথ ও যোগক্ষেমের প্রার্থী হইয়া শীল রক্ষা করে।” প্রবাসী । [ ৮ম ভাগ। ‘বোধিচৰ্য্যাবতারে"- একজন জীব ভক্ত বলিতেছেন :“এই জীবগণ চিন্তামণির স্বরূপ, ভদ্রঘটের স্বরূপ, ও কামদুগ্ধ ধেনুর স্বরূপ ; অতএব গুরু ও দেবতার স্থা ইহাদের আরাধনা করা উচিত।...জীবগণের আরাধন ত্যাগ করিলে অপর নিস্কৃতি আর কি আছে ? ( বোধিসত্ত্বগণ) যাহাদের জন্য নিজের শরীরকেও ভেদ করেন ও অবাঁচি নরকেও প্রবেশ করেন, তাহাদের মঙ্গল করিলেই ( বস্তুত: ) মঙ্গল করা হয় ; তাহারা মহাপকারী হইলেও তাহাদের মঙ্গল করা উচিত। যাহাদের জন্য আমার স্বামীরাই (পূৰ্ব্ব বুদ্ধ বোধিসত্ত্বগণ ) নিজের প্রতি নিরপেক্ষ হন, সেই স্বামগণের নিকটে আমরা দাস্ত না করিয়া ব্যথা পাইলে তাহারা ক্রুদ্ধ হন, তাহাদেৱ তুষ্ট श्नई মুনীন্দ্রগণ তুষ্ট হইবেন, এবং তাহাদের অপকার হইলে মুনীন্দ্রগণের অপকার করা হইবে। শরীর চারিদিকে অগ্নিতে জলিয়া উঠিলে, যেমন নিখিল কাম্য বস্তুতেই সোঁমনন্ত উপস্থিত হয় না, সেইরূপ জীবগণের যদি ব্যথা হয়, তবে দয়াময় ( মুনীন্দ্র ) গণের প্রতি উৎপাদনের অপর কোন । উপায় নাই। ইহাই ( অর্থাৎ জীবগণের আরাধনাই) তথাগতের আরাধন, ইহাই স্বার্থের আরাধনা, এবং । ইহাই লোকের দুঃথাপহ ; অতএব ইহাই আমার ব্ৰত । হউক।– “তথাগতারাধনমেতদেব স্বার্থস্ত সংরাধনমেতদেব লোকস্ত দুঃথাপহমেতদেব তস্মান্মমাস্তু ব্রতমেতদেব।” যেমন একজন রাজপুরুষ বহুজনকে প্রমথিত করে, আর দূরদর্শী জনগণ তাহার কোন বিকারই করিতে সমর্থ হয় না, কারণ সে একাকী নহে, তাহার বল রাজ-বল,— সেইরূপ কোন দুৰ্ব্বল ও অপরাধীকে অবমাননা করিবে না, কেন না দয়ালু নরপালগণ তাহার বল। অতএব তৃতা যেমন চও প্রভুকে আরাধনা করে, জীবগণকে সেইরূপ সেবা করিবে ।

  • ৬১১৯—১৩. ইহা শিক্ষা সমুচ্চয়েও আছে, ১৫° পূ: । + যে ঘটে হস্ত প্রদান করিলেই অভিমত বস্তু পাওয়া যায়।

মান করি কেন ? : যাহাদের মুখে মুনীন্দ্র ( বুদ্ধ )গণ প্রীত হন, এবং যাহার | জগং যেন (তাহদের অভাবে ) ১০ম সংখ্যা । ] ঐ ‘বোধিচর্যাবতারেই অন্যত্র আর এক ভক্ত প্রেম পরিপূর্ণ হৃদয়ে লিতেছেন – "জীবগণ নরকছুঃখের বিশ্রামোপায় স্বরূপ যে পুণ্য কৰ্ম্ম করিয়াছে, আমি তাহা অনুমোদন করিতেছি ; দুঃথিতেরা আনন্দের সহিত স্বপে অবস্থান করুক।--দিক সমূহে অবস্থিত সংবুদ্ধ জনগণের নিকট আমি কৃতাঞ্জলি হইয়া প্রার্থনা করিতেছি যে, তাহারা মোহবশতঃ দুঃথপতিত লোক সমূহের জন্য ধৰ্ম্মপ্রদীপ (উৎপাদন ) করুন। যে সমস্ত জীব ( কুত-কৃত্য হইয়া ) নিৰ্ব্বাণ কামনা করিতেছেন, আমি কৃতাঞ্জলি হইয়া তাহাদিগকে প্রার্থনা করিতেছি যে, প্তাহারা অনন্তকল্প পর্য্যস্ত ( এখানে ) অবস্থান করুন, এই श्रक श्ब्र न यांच्च । আমি এইরূপে এই ( পূজাদি ) করিয়া যাহা কিছু শুভ প্রাপ্ত ক্টোছি, তাহা দ্বারা আমি যেন জীব সমূহের সর্বভূঃখ প্রশমনকারী হইতে পারি। আমি পীড়িত ব্যক্তিগণের ঔষধ ও বৈদ্য, এবং যতদিন রোগ নিবৃত্ত না হয়, ততকাল পর্যন্ত তাহীদের পরিচারক। আমি অন্ন ও পান বিতরণ করিয়া জীবগণের ক্ষুধা ও পিপাসা নাশ করিব, এবং ইর্ভিক্ষের মধ্যে ও প্রলয় সময়ে (যখন আহারাদির অভাবে, লোক সমূহ মরিয়া যায়, বা পরস্পর পরস্পরের মাংস শোণিতাদি ভোজন করে, সেই সময়ে ) তাহীদের পান ও ভোজন ইয়া দরিদ্র জীবগণের অগ্রে আমি অক্ষয়নিধি সদৃশ হইয়া নানা উপকরণের আকারে তাহদের পরিচর্য্যা করিব। আমি সমস্ত জীবের প্রয়োজন সিদ্ধির জন্য নিরপেক্ষ হইয়া (অর্থাৎ কোনরূপ প্রত্যুপকারের আশা মা করিয়া) নিজের শরীরকে, উপভোগ্য দ্রব্য সমূহকে, এবং (ভূত-ভবিষ্যৎবর্তমান ) এই কালত্রয়স্থিত নিথিল কল্যাণকে পরিত্যাগ করিতেছি। সমস্ত বস্তুর ত্যাগই নিৰ্ব্বাণ, এবং আমার মন সেই নিৰ্ব্বাণকে প্রার্থনা করিতেছে ; অতএব আমাকে খন সমস্ত দ্রব্য পরিত্যাগ করিতেই হইবে, তখন তাহ জীবগণকে দেওয়াই ভাল। আমি আমার এই শরীরকে সমস্ত প্রাণীর নিকটে, তাহদের যথামুথে ব্যবহারের উপযুক্ত করিয়া দিয়াছি, তাহার এখন আমাকে আঘাত করুন, নিন্দ করুন, বা ধূলি দ্বারা আকীর্ণ করুন ; অথবা তাহারা আমার শরীর লইয়া ক্রীড়া করুন, হাস্ত করুন, বা বৌদ্ধধর্মের বিশ্বপ্রেম। 6:8: বিনাশ করুন, আমি তাহাদিগকে আমার শরীর দান করিয়া দিয়াছি, আমার সে চিন্তায় প্রয়োজন কি ? যাহাতে র্তাহাজের মুখ হয়, তাহার সেই সমস্ত কাৰ্য্যই তাহার দ্বারা করাইয় লউন। আমাকে গ্রহণ করিয়া কাহারো যেন কখন কোন অনর্থ না হয়। যে সমস্ত লোক আমার নিন্দ করিবেন, র্যাহারা আমার অপকার করিবেন, ও যাহার আমাকে উপহাস করিবেন, তাহারা সকলেই বোধি (জ্ঞান ) লাভ হইবেন। আমি অনাথগণের নাথ, যাত্রিকগণের সার্থবাহ, এবং পারেন্থগণের নৌকা, সেতু ও পথ। আমি দীপপ্রার্থগণের দীপ, আমি শয্যাপ্রার্থিগণের শয্য, এবং দাসপ্রার্থী লোক সমূহের দাস — “দীপার্থিনামহং দ্বীপঃ শয্যা শয্যার্থিনামহম্। দাসার্থিনামহং দাসো ভবেয়ং সৰ্ব্বদেহিনাম্।” • এতক্ষণ বৌদ্ধধৰ্ম্মের যে একটি মধুরভাব আপনাদের নিকটে উপস্থাপিত করিবার চেষ্টা করিয়াছি, তৎসম্বন্ধে আর কিছু অধিক না বলিয়া দুই এক কথায় উপসংহার করিব। 'আর্যরত্নমেঘ (স্বত্র ) নামক গ্রন্থে উক্ত হইয়াছে – “হে কুলপুত্র, বোধিসত্ত্বগণ কি প্রকারে বোধিসত্ত্বোচিত শিক্ষা উপদেশে সংবৃত্ত হইয়া থাকেন ? বোধিসৰ মনে বিচার করে, প্রতিমোক্ষোচ উপদেশ মাত্রে অযুভয় সম্যক সংবোধিকে লাভ করিতে পারা যায় না। তবে কি করিতে হইবে । তথাগত সেই সেই স্বত্রান্ত সমূহে বোধিসত্ত্বগণের যে যে সমুদ্রাচার ও শিক্ষাপদ সমূহ জানাইয়াছেন, সেই সমস্ত আমাকে শিক্ষা করিতে হইবে, কিন্তু তাহ বিস্তর, অতএব আমাদের হার মন্দবুদ্ধি লোক সমূহের দ্বারা তাহা দুবিজ্ঞেয়। তবে কি করা উচিত ? মৰ্ম্মস্থান সমূহ জানিতে হইবে, তাহা হইলে দোষ হইবে না। সে মৰ্ম্মস্থান কতগুলি—যে গুলিকে (ভগবান তথাগত ) মহাযানভিরত জনগণের জন্য স্বত্ৰাত্ত সমূহে বলিয়া গিয়াছেন। ভগবান বলিয়াছেন ঐ মৰ্ম্মস্থান একটি মাত্র, এবং তাহা । اهلا-لاوه ,۹lfitsiltsia)*