পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У8 o AASAASAASAASAASAASAAMMMMMMMS MSMS রবীন্দ্রনাথের স্বমধুর গীতিকাব্যের মৰ্ম্মস্পর্শ ঝঙ্কারে বঙ্গসাহিত্যগগন পরিপূর্ণ। বঙ্কিমচন্দ্র অবকাশরঞ্জিনীর সমলোচনার স্থলে গীতিকাব্যের কথার ব্যাখ্যায় বলিয়াছিলেন যে গীতের যে উদ্দেশু কাব্যেরও যদি সেই এক উদ্দেশু হয় তাহাই গীতিকাব্য। বক্তার ভাবোচ্ছ,াসের পরিস্ফুটত মাত্র গীতিকাব্য। বিদ্যাপতি হইতে আরম্ভ করিয়া ভারতচন্দ্র, মাইকেল, হেমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ সকলেই ত গীতিকাব্য রচনা করিয়াছেন, কিন্তু এরূপ সমশ্রেণীর রচনায় নবীনচন্দ্রের বিশেষত্ব কোথায় ? সংক্ষেপে বলিতে গেলে বোধ হয় নবীনচন্দ্রের গীতিকাব্যে বিশেষত্ব র্তাহার ভাষার সবল পৌরুষতায়,তাহার শব্দচাতুর্যে এবং উক্ত শব্দের প্রয়োগ পটুতায়। রবীন্দ্রনাথের সহিত এ বিষয়ে তুলনা করিলে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হইতে পারে। বঙ্কিমচন্দ্র উক্ত স্থানে বলিয়াছিলেন যে অবকাশরঞ্জিনীর কবির শব্দচাতুর্য ও ছন্দোমাধুর্য বিস্ময়কর। আত্মচিত্তসম্বন্ধীয় উক্তিমাত্রবিশিষ্ট অব্যক্তব্য কথা, যাহা গীতিকাব্যের আত্মা, তাহাতেও নবীনচন্দ্রের কম পটুতা নাই। কোনো পক্ষের অপ্রিয় তুলনা করা এস্থলে আদৌ সমুচিত নহে। তবে বলিলে অন্যায় হয় না যে বর্তমান গীতিকাব্য সাহিত্যে ছন্দোমাধুর্য্য ও গীতিকাব্যোপযোগী শব্দ চয়নে রবীন্দ্রনাথ যে বিস্ময়কর পটুতা দেখাইয়াছেন তাহা ভারতচন্দ্র ব্যতীত বাঙ্গালায় আর কোনো কবিই সেরূপ দেখাইতে পারেন নাই, নবীনচন্দ্রও নহে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ভাষা কোমল, পৌরুষভাববর্জিত, ( তাহার বর্তমান স্বদেশী সঙ্গীত বলিতেছি না) যেন কোমলকায় লতার স্তায় লতাইয়া পড়িতেছে। নবীনচন্দ্রের আর গীতিকবিতা নাই—তাহার ইহা পূৰ্ব্বের রচনা হইলেও যে সকল মোহিনীস্থষ্টিগুণে বা যে সব অপূৰ্ব্ব রসের সফল অবতারণায় কবির কাব্যকে উচ্চ আসন প্রদান করা যায় -cগ সব গুণ অবকাশরঞ্জিনীতে নাই, অবকাশরঞ্জিনীর সমালোচনায় বঙ্কিমচন্দ্র একথা বলিয়াছিলেন। “পলাশীর যুদ্ধে"র ভাষা আরও স্বম্পষ্ট, স্বব্যক্ত, ও সবল-বঙ্কিমচন্ত্রের কথা জালামী অগ্নিতুল্য।” উহ বারণের অগ্ন গারের মতই তীব্র ও উগ্র । কবি যেন একাব্যে আপনাকে যথার্থ খুজিয়া পাইয়াছেন। এরূপ সবল ভাষা ও বর্ণনা ভঙ্গী হেমচন্দ্র ব্যতীত অন্ত কোনো প্রবাসী । . سمحمد محمد عمه محمهميه محمد محتمه محم.. [ ৮ম ভাগ বঙ্গ কবির কাব্যে পাওয়া ছদ্ধর। এই আগ্নেয় গিরির অঙ্কি স্রাবের সঙ্গে করুণামন্দাকিনীর পুত ধারা বহিয়া চলিয়াছে। বহুবৎসর পূৰ্ব্বে পলাশীর যুদ্ধ পড়িয়াছি-কিন্তু এখনও তাহার দপিত “ব্রিটিশের রণবাদ্য” কানে লাগিয়া আছে। বস্তুতঃ, সংগ্রামে সংগ্রামস্থল ও বিজয়ীর জয়োল্লাস নবীন চন্দ্রের মত এমন অদ্ভুত পটুতার সহিত বাঙ্গালীর কাব্যে আর কেহও শুনাইতে পারেন নাই—রণস্থলের ভীষণ সৰ্ব্বসংহারিণী মূৰ্ত্তি কে সম্যক কল্পনা করিতে পারিয়াছে ?— সেখানে অবশুম্ভাবী বিজয়ে উৎফুল্ল সেনার দপিত উল্লাল ধ্বনি শুনিব, না সেই অনন্ত মুহুর্তে সৈনিকের বিরহকাতর অন্তঃকরণের ব্যথা—‘প্রিয়ে কেরোলাইনার’ উদ্দিষ্ট মৰ্ম্মে৷ চ্ছাসের কথাগুলি শুনিব, না সেনাপতির প্রণয়িনী ‘মেস্কিলিনের উদ্দেশ্যে উৎস্তষ্ট অশ্রুর মুক্তাবিন্দুর প্রতি লক্ষ্য করিব, না নির্জন কারাগারে পতিব্ৰতা নবাবপত্নীর কেন দুঃখ দিতে বিধি প্রেমনিধি গড়িল”—এ হৃদয় দ্রাবী গীতিতে গলিয়া যাইব ? পলাশযুদ্ধের কবি বিস্ময়কর কৌশলসহকারে এই দুই রসের একত্রে অপূর্ণ সমাবেশ করিয়াছেন। বীরের হৃদয়ের বহিরাবরণ কেবল কঠিন, তাহার চৰ্ম্মবৰ্ম্মাচ্ছাদিত হৃদয় কিন্তু করুণ ভাবরলে কোমল, কবি একথা ভুলেন নাই। রক্ষমতী, পলাশীর ও রৈবতকের, এ দুই রচনার সন্ধি স্থল—এ কাব্যের প্রতিছত্রে কবি যেন আভাস দিতেছেন যে তিনি বিষয়াস্তরে ও স্থানান্তরে ব্যাপৃত থাকিবেনTo-morrow to fields new—কৃষ্ণের জীবন ও কাব্য ভবিষ্যতে যে তাহার সঙ্গীতের বিষয় হইবে—এ গ্রন্থে তাহার পূর্ণ আভাল আছে। তাহা ছাড়া, গ্রন্থের অনেক স্থলের বর্ণনা ও শব্দচিত্র মনে লাগিয়া থাকে। এ গ্রন্থও বহুপূৰ্ব্বে পড়িয়াছি— অনেকবার পড়িয়াছি—সকল কথা এস্থলে সমালোচনার দরকার নাই—তবে জুমিয়া বালার গীতি যে দেশে রয়েছ তুমি ইত্যাদি এখনও ভুলিতে পারি নাই। সে মুনার গীতটা বঙ্গ সাহিত্যে এপর্য্যন্ত অননুকরণীয় হইয়া আছে। কবির যে উদ্দেশু পলাশীর যুদ্ধে প্রতীয়মান—পর জীবনে কবি যেন সে ক্ষেত্রই পরিত্যাগ করিলেন। অনেকে এ পরিবর্তন \খর বলিয়া বিবেচনা করিয়াছেন—অনেকে fresh and pastures - تب سے_ -l."..-l-l. --്സ് i, আবার মনে | ১১শ সংখ্যা । ] -പസ-l.ണ്.-- করেন—যে পরবর্তী কাব্যে যেন কবির অবনতি হইয়াছে তাহার মানসিক তত্ত্বচ্ছেদ হইয়াছে কিন্তু ভাবিয়া দেখিলে বোধ হয় এরূপ আশঙ্কার কোন কারণ নাই। পলাশীক্ষেত্রে যে বিশ্বাসঘাতকতা ও আত্মবিদ্রোহ ভারতের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করিয়াছে —কৰি তাহার দূরদৃষ্টিতে অতীতের ভারতীয় সমস্ত ঐতিহাসিক রণক্ষেত্র খুজিয়া দেখিলেন—সেই একই লোককাহিনী সেই ভ্রাতৃদ্রোহ সেই গৃহবিবাদ, সেই বিশ্বাসঘাতকতা । ইহাতে একটা মীরজাফর ও একটা জয়চন্দ্র কেবল ধরা পড়ে নাই। তাহার পর স্বদূৰ অতীতের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া দেখিলেন যে আর কোন মহাপুরুষ এই “ক্ষত ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভারতকে” এক মহা ধৰ্ম্মরাজ্যে স্থাপন করিতে প্রয়াস পাইয়াছিলেন কিনা। তাহার মানস চিত্রপটে কেবল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উজ্জ্বল সৃষ্টিই উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল। সেই বরেণ্য মূৰ্ত্তিকে সম্মুখে রাথিয় কবি তাহার কাব্য রচনা করিয়াছেন। সুতরাং যে জাতীয়ভাব পলাশীর যুদ্ধে বিকশিত, সেই ভাবের ধারাবাহিকতা কুরুক্ষেত্রে সম্পূর্ণ পরিরক্ষিত বলিয়াই cवt४ श्प्र । - তবে এই সমশ্রেণী চারি খানি কাব্যের সমালোচনা যোগ্যতর ব্যক্তি করিয়াছেন—যিনি মাননীয় শ্ৰীযুক্ত হীরেন্দ্র নাথ দত্ত মহাশয়ের কুরুক্ষেত্রের সমালোচনা পাঠ করিরাছেন তাহার আর এ সম্বন্ধে কোনো কথা অধিক জ্ঞাতব্য নাই। এ ক্ষুদ্র প্রবন্ধে ও এসময়ে কবির সকল কাব্যের বিস্তারিত আলোচনা, বিশেষতঃ দোষের আলোচনা, আদৌ সমীচীন হইবেন বিবেচনায় আমরা প্রাসঙ্গিকভাবে র্তাহার কাব্যের এরূপ সংক্ষিপ্ত আলোচনা করিতেছি। প্রবন্ধান্তরে ও সময়ান্তরে তাহার জীবন ও কাব্যের বিস্তৃত আলোচনা করিবার ইচ্ছা রহিল। তবে সেই অসাধারণ মহাকবি কোন গুণে অসাধারণ ছিলেন, বঙ্গীয় সাহিত্যভাণ্ডারে অন্যান্ত মহাজনের ন্তায় তিনি বিশেষ কোন রত্নদান করিয়া গেলেন সে সম্বন্ধে আভাস না দিলে এ প্রবন্ধ অসম্পূর্ণ রহিয়া যাইবে । বঙ্গসাহিত্যে নবীনচন্দ্রের যে বিশেষ দান কি ?—আমাদের ক্ষুদ্র বোধে সেটা এই— তিনি অপূৰ্ব্ব প্রতিভাবলে কবিজনোচিত % ভবিষ্যদৃষ্টির কবিবর নবীনচন্দ্র সেন । ჯ8X গুণে ভারতের ভবিষ্য ইতিহাসের এক আভাস দিয়া গিয়াছেন। কোন পথে কি ভাবে চালিত হইলে ভারতের পূৰ্ব্ব জ্ঞানগরম, পূৰ্ব্ব ঐশ্বর্ঘ্য বীৰ্য্য, পূৰ্ব্ব ঋদ্ধিসিদ্ধি ফিরিয়া আসিবে—এক কথায় কোন পথে চালিত হইলে আবার ভারত মহাভারতে মহাধৰ্ম্মসাম্রাজ্যে পরিণত হইবে, কবি তাহার চিত্রিত কৃষ্ণচরিত্রে সে পথের পূর্ণ ইঙ্গিত করিয়া গিয়াছেন। আমরা বোধ করি ইহাই তাহার বিশেষ দান। বঙ্গীয় সাহিত্যের অনুরাগী অনেক বিজ্ঞ পাঠকদেরও নিকট কবির শেষোক্ত কাব্যত্রয় রৈবতক, কুরুক্ষেত্র, প্রভাস সমাদৃত হইতে দেখি নাই। পূৰ্ব্বে বলিয়াছি তাহারা এস্থলে কবির মানসিক তস্থচ্ছেদের আশঙ্কা করেন। আমরা পূৰ্ব্বে দেখাইয়াছি যে আশঙ্কা কতদূর অমুক। বস্তুতঃ তাহারা যেখানে কবির প্রতিভার গৌরবের হানি দেখিতে পান সেখানেই তাহার প্রতিভার সার্থকতা। কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে নব্যভারত সম্পাদক মহাশয় ও হীরেন্দ্র বাবুর মধ্যে কৃষ্ণচরিত্রের মৌলিককল্পনা লইয়া অনেক বাকবিতও হইয়াছিল। এ স্থলে সে তর্কের পুনরবতারণা নিম্প্রয়োজন। এস্থলে সে আলোচনা করিব না—তবে উভয়ের কল্পনায় যে এক ফল—সেই ফল, সেই উদ্দেশু, এই মহাভারত পুনঃসংস্থাপনকর্তা কৃষ্ণের অবতার বাদ সংস্থাপন। কুরুক্ষেত্রের ১ম সর্গে ব্যাসের মুখে এ উদ্দেশু মুস্পষ্টভাবে প্রকটত হইয়াছে। ব্যাস সংশয়ী শিস্যকে ভারত ও ধৰ্ম্মেতিহাসের অনেক নিগূঢ় তত্বের ব্যাখ্যায় বুঝাইতেছেন – কর দরশন। সৰ্ব্বত্র ধৰ্ম্মের গ্লানি অধৰ্ম্ম প্রবল,— সাধুদের হাহাকার, ছদ্ধত হর্জন বধিতেছে নিরস্তর পাপ হলাহল । অধৰ্ম্মের অভু্যুথান, এই পাপভার করিতে মোচন, বৎস! করিতে প্রচার মহারাজ্য ধৰ্ম্মরাজ্য, করিতে প্রচার ভারতে মহাভারত ; কৃষ্ণ অবতার। - অপূৰ্ব্ব জীবনলীলা । কংসের নিধন, উগ্রসেনে রাজ্যদান, আত্মনিৰ্ব্বাসন, নিবারিতে রক্ত স্রোত সমুদ্রের পার।