পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

m--- - ډبyانV ইতিহাস, শিল্প, প্রভৃতি যে যে শাখার উৎকৃষ্ট বাঙ্গলা পুস্তকের অভাব আছে তাছু পূরণ করিতে হইবে। যেদিন দেখিব বাঙ্গলার জেলায় জেলায়, সহরে সহরে, গ্রামে গ্রামে ইংরেজি বিদ্যালয়ের পাশ্বে বড় বড় বঙ্গ বিদ্যালয় দণ্ডায়মান হইয় দেশের অগণ্য সপ্তানকে জাতীয় ভাষা শিক্ষা দিতেছে, জাতীয় ভাষার সাহায্যে দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতি সমস্ত বিষয়ের জ্ঞান বিতরিত হইতেছে, সেইদিন জানিব বুঝিব আমাদের জাতীয় সাহিত্য পূর্ণ সফলতার দিকে অগ্রসর হইয়াছে। আজ দেশের মধ্য দিয়া এক নূতন বাতাস বহিতে আরম্ভ করিয়াছে। সে বাতাস উপেক্ষা করিয়া নিজের ইচ্ছামত বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করিলে উপহাসাম্পদ হইতে হইবে। আজ দেশের সমবেত শক্তি—সমস্ত নরনারী মাতৃপূজার অভিপ্রায়ে মাতৃ মন্দিরের অভিমুখে অগ্রসর হইতেছে। আমরা সাহিত্যসেবী বলিয়া কি পশ্চাৎপদ হইয়া রহিব ? না, আমাদিগকেও সাহিত্যের ভিতর দিয়া মাতৃসেবা করিতে হইবে। দেশধৰ্ম্মই এক রকম সকল ধৰ্ম্মের সার। দেশের সেবাকে ধৰ্ম্মের আসনে প্রতিষ্ঠিত করিয়া আমরা মাতৃ ভূমির অর্চনা করিতে পারি, তবেই আমাদের সকল সাধনা, সকল ব্ৰত উদ্যাপিত হইবে। স্বদেশ ও স্বদেশবাসীর উন্নতি বিধান করিতে গেলে যে, অসংখ্য জীবের উপকার সাধন করা হয়, তাহা সকলেই বুঝিতে পারিবেন। ভগবানের স্বল্পজীবের উপকার করিলে, ভগবানেরই সেবা অর্চনা করা হয়, ভগবানের প্রসাদলাভ করা যায়। আমাদের দেশের নারীজাতি ধর্মের জন্য কত স্বাৰ্থত্যাগ, কত ব্রত কত উপবাস, কত দান কত ধ্যান করিয়া থাকেন, কতই না উপচিকীৰ্ষাপরতন্ত্রতার পরিচয় দেন, এ বিষয়ে সমগ্র ভারতের নারী সমাজ একমত। দেশের যেখানে যাইবে • * সেইখ৯ৈ২-গঠ ঘাট, মন্দির পাশা প্রভৃতি নিত্য ভোগের এক উপাদান দেখিতে পাইবে। কিন্তু দেশের হিতের জন্ত কে কবে লক্ষ মুদ্রা ব্যয় করিয়াছে ? ধৰ্ম্মের জন্য যতটা একপ্রাণতা আমরা দেখায়া থাকি, দেশের মঙ্গলের জন্য যদি ঐৰূপ দেখাইতেম্পারি, তবে দেশের যথেষ্ট কল্যাণ সাধিত - আমাদের দেশের নারীজাতিই সমাজের শিরোভূষণ, তাহদের হস্তে মহান কৰ্ত্তব্যভার সন্ন্যস্ত। শিশু শিক্ষার প্রবাসী। [ ৮ম ভাগ । প্রথম ভার জননীর হস্তেই ন্যস্ত থাকে। সেই নারীগতিৰে - * দেশধৰ্ম্মের মহনীয়ত্ব বুঝাইয়া দিলে দেশের প্রভূত উপকার হইবার সম্ভাবনা। এইরূপ করিতে পারিলে স্বদেশ-প্রতি, এক প্ৰাণত, স্বার্থশূন্যতার অগণিত দৃষ্টান্ত আমরা বঙ্গের ঘরে ঘরে দেখিতে পাইব । অপরাপর ব্যক্তির পক্ষে এই কাৰ্য্য সম্পন্ন করিবার বিভিন্ন উপায় উদ্ভাবিত হইতে পারে কিন্তু সাহিত্য-সেবী আমরা,-আমাদিগকে সাহিত্যের ভিতর দিরাই এ কার্য সুসম্পন্ন করিতে হইবে। এই ভাবে পুর্ণমনস্কাম হইতে পারলে, আমাদের জাতীয় সাহিত্য দৃঢ়প্রতিষ্ঠাপন্ন এবং সৰ্ব্বজনীন সহানুভূতি লাভে সক্ষম হইবে । এইরূপ অনুষ্ঠান অল্প সময়ে বা অল্প আয়োজনে স্বসাধ্য নছে, স্বীকার করি এবং তজ্জন্যই এই উত্তর-বঙ্গসাহিত্য সম্মিলনে আমি আজ নিম্ন লিপিত তিনটা প্রস্তাৰ উত্থাপিত করিতেছি। আমি যে সকল বিষয়ের উল্লেখ করিব, তাহা সকল স্থানের সকল সাহিত্যিকের প্রতি প্রযোজ্য হইলেও উত্তর বঙ্গীয় সাহিত্যসেবীর প্রতিই বিশেষ ভাবে প্রয়োজ্য বলিয়া মনে করিবেন। উত্তর বঙ্গে যখন লোকবল, ধনবল প্রভৃতি তাদৃশ ক্ষমতাপন্ন নহে, তখন উত্তর বঙ্গবাসৗদিগকে অল্প আরম্ভেই কাৰ্য্যক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইতে হইবে। সুতরাং সৰ্ব্বপ্রথম আমাদিগকে সাহিত্যের এই তিনটী শাখার সেবায় নিযুক্ত হওয়া কৰ্ত্তব্য। ইহাতে সাফল্যলাভের সঙ্গে সঙ্গে আমরা উত্তরোত্তর অন্তান্ত শাখায় হস্তক্ষেপ शरैश्चा॥ পূৰ্ব্বোক্ত তিনটা শাখা,--(১) সাহিত্য শাখা, (২) ইতিহাস শাখা এবং (৩) বিজ্ঞান শাখা। এই তিন শাখায় কি কি বিষয় আলোচিত হওয়া উচিত, তাহা একে একে নিয়ে বিবৃত হইল। উত্তর-বঙ্গ সাহিত্য সম্মিলন যাহাতে লক্ষাত্রী : উল্কার দ্যায় বিপথে পরিচালিত না হয়, তৎপক্ষে আমাদের সকলেরই চেষ্টত হওয়া কৰ্ত্তব্য। রংপুরবাসী বন্ধুরা এই প্রথম সম্মিলন যে ভাবে চালাইবেন, ভবিষ্যতে সন্মিলন সেই ভাবেই চালিত হইবার আশা করা যায়। আরম্ভেই | ইহা যাহাতে লক্ষ্যভ্রষ্ট না হয়—বিপথগামী না হয় তৎপ্রতি দৃষ্টি রাখা প্রধান কৰ্ত্তব্যের মধ্যে পরিগণিত হওয়া উচিত। (১) সাহিত্য শাখা। প্রাচীন ও আধুনিক । বাঙ্গল গষা ও সাহিত্যের ಇ ഴ്സ് . ১২শ সংখ্যা । ] আলোচনা এবং বাঙ্গলা ব্যাকরণ ও অভিধান প্রণয়নের চেষ্টা এই বিভাগের মুখ্য উদ্দেশ্য হইবে। সাহিত্যের আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে দেশের প্রাচীন কবি ও লেখকদিগের জীবনী সংকলন এবং প্রাচীন গ্রন্থাদির আবিষ্কার, বিবরণ সংকলন, সমালোচনা ও প্রাচীন সাহিত্যের ইতিহাস প্রচার করিতে হইবে। আমাদের দেশের প্রতি গ্রামে প্রতি পল্লীতে কতশত কবি অজ্ঞাতে লোকলোচনের অন্তরালে লুকায়িত আছেন, তাহার ইয়ত্ত করা যায় না। এই সকল সাহিত্যসেবীষ্ট আমাদের বাঙ্গলা সাহিত্যের আদিম লেখক । প্রাচীন সাহিত্যের ইতিহাসে তাঁহাদের স্থান অতি উচ্চে । বাঙ্গলাভাষায় বাঙ্গলা ব্যাকরণ নামে প্রায় আড়াই শত ব্যাকরণ পুস্তক বৰ্ত্তমান ছিল সত্য, কিন্তু তাহার একখানিও প্রকৃত বাঙ্গলা ব্যাকরণ নহে। আমরা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে, হালহেড, সাহেবের ব্যাকরণই এই শ্রেণীর ব্যাকরণের মধ্যে. প্রথম রচিত ও প্রকাশিত হয়। তৎপর যথাক্রমে কের সাহেবের ব্যাকরণ, গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য্যেয় বাঙ্গল ব্যাকরণ, রাধাকান্ত দেব বাহাদুরের ‘বর্ণমালা ও ব্যাকরণ, ইটন সাহেবের ও কৗথ সাহেবের ব্যাকরণ, হামাচরণের ‘ইংরেজি বাঙ্গলা ব্যাকরণ’ প্রকাশিত হয় । বাঙ্গলা ভাষার শব্দরূপ, ক্রিয়ারূপ, তদ্ধিত প্রত্যয় প্রভৃতি সংস্কৃতের সম্পূর্ণ অনুরূপ না হইলেও এই সকল ব্যাকরণে এর্ডভয়ের মধ্যে কোনরূপ পার্থক্য প্রদর্শিত হয় নাই। পরবর্তী বৈয়াকরণগণও পূৰ্ব্বোক্তের পদানুসরণ করিয়াছেন মাত্র। -সুতরাং এসকল ব্যাকরণ বাঙ্গলা ব্যাকরণ নামের প্রকৃত উপযোগী নহে । বাঙ্গল ব্যাকরণে বাঙ্গল শব্দের ব্যুৎপত্তি বিচার, শব্দের ইতিহাস, ভাষার গঠন বৈচিত্র্য প্রদর্শন এবং বাঙ্গলার সহিত হিন্দী, উড়িয়া, আসামী প্রভৃতি ভাষার সম্বন্ধ নির্ণয় ও তুলনায় সমালোচনা গ্রয়োজনীয়। ব্যাকরণের দ্যায় বাঙ্গলা শব্দের অর্থ পরিজ্ঞাপক অনেকগুলি অভিধানও বর্তমান আছে। আশ্চর্যের বিষয় আমাদের বাঙ্গলা ভাষার ব্যাকরণ ও অভিধান উভয়েরই সৰ্ব্বপ্রথম প্রণেতা ইয়ুরোপীয় জাতি। ফষ্টার नषक (qक সিভিলিয়া ৰথখন এক বাঙ্গলা অভিধান l - we छैद्धद्रवत्र সাহিত্য সম্মিলন I


WikitanvirBot (আলাপ) ১৪:২৯, ২৪ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)-~~) ১৭১৯ অব্দে প্রকাশিত করেন ; ইহাতে -১৮• • অব্দের

অর্থ প্রদত্ত হইয়াছে। তৎপর যথাক্রমে মিলার সাহেবের অভিধান, ঠাকুরের বাঙ্গলা ইংরেজি অভিধান, পীতাম্বর মুখোপাধ্যায়ের শব্দসিন্ধু অভিধান, কেরী সাহেবের অভিধান, পিয়ার্সন সাহেবের, মোগুস সাহেবের, লাবাণ্ডিয়ার সাহেবের, ইটন সাহেবের, মটন সাহেবের, মার্সম্যান সাহেবের ও রবিনসন সাহেবের অভিধান এবং বাঙ্গালী রচিত ‘বাঙ্গলা কোষ গ্রন্থ’, ‘ধাতুশদজ’, ‘শব্দ কল্প ললিতা' প্রভৃতি সংকলিত ও প্রকাশিত হয়। এই সকল অভিধান দ্বারা বঙ্গসাহিত্যের বদ্ধিত শক্তির পরিচয় পাওয়া গেলেও, প্রকৃত উদ্দেশু সিদ্ধ হয় নাই। উত্তরবঙ্গীয় সম্মিলন দ্বারা উত্তরবঙ্গের শব্দ সংগ্রহের চেষ্টা করা সৰ্ব্বতোভাবে কৰ্ত্তব্য। তৎপর এ অঞ্চলের গ্রাম্য গল্প, প্রবচন, প্রবাদ, উপকথা, গ্রাম্য গান, গাথা সংগ্রহ . ও তাহার ইতিহাস বিশ্লেষণ এবং সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রী সমাদে প্রচলিত বারব্রত কথা, রূপকথা, nursery tales 8 rhymes offs; আলোচনা অবশু করণীয়। छ्हें একজন লেখকের দৃষ্ট ইতিমধ্যেই এদিকে আকৃষ্ট হইয়াছে সত্য কিন্তু প্রত্যেক প্রদেশে তত্ত্বং দেশবাসী সাহিত্যিকের যত্ন এ বিষয়ে প্রবৰ্ত্তিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। (২) ইতিহাস শাখা। বাঙ্গলা দেশের ইতিহাস সংকলন এই শাখার মুখ্য উদ্দেশু। এ ইতিহাস দুই শ্রেণীর হইবে,—সামাজিক ও রাজনৈতিক। সামাজিক ইতিহাসের প্রয়োজনীয়তা রাজনৈতিক ইতিহাসাপেক্ষা কম নহে। কোম্পানীর আমলে ভারতবর্ষও বাঙ্গলা সম্বন্ধীয় প্রায় কুড়িথান পুস্তক রচিত হয়। ইহার অধিকাংশেই স্বাধীনমত প্রকাশের ও জব্রান্ত - সত্য প্রচারের ঐকান্তিকতা দেখিতে পাওয়া যায় না। ১৮৩২ খৃঃ অব্দে ঐতিহাসিক ব্যাকরণ" নামে একখানি

  • বাঙ্গলার ইতিহাস রবিনসন সাহেব কর্তৃক প্রকাশিত হয়।

ইহার প্রণেতা মিঃ কেরী। ঐতিহাসিকু আলোচনার নিমিত্ত তৎকালে এক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, তাহাতে - দ্বাদশটা দেশীয় সভ্য ছিলেন। সেই সমিতির উস্কোগেই , ঐতিহাসিক ব্যাকরণ প্রকাশিত হয় কিন্তু ইহাৰ । এরূপ অদ্ভুত হইল কেন, তাহা ঠিক বলা কঠিন।