পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ ASMMMMAMMMMM MMMMMMMMMS এমন সময় বরদাসুন্দরী ঘরে প্রবেশ করিবামাত্রই বিনয় উঠিয়া গিয় তাহাকে কহিল—“অভিনয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হলে আমাকে কি করতে হবে বলে দেবেন।” বরদাসুন্দরী সগৰ্ব্বে কহিলেন- “সে জন্যে আপনাকে কিছুই ভাবৃতে হবে না, সে আমরা আপনাকে ঠিক তৈরি করে নিতে পারব। কেবল অভ্যাসের জন্য রোজ আপনাকে নিয়মিত আসতে হবে।” বিনয় কহিল--"আচ্ছা। আজ তবে আসি।” বরদাসুন্দরী কহিলেন—“সে কি কথা ? আপনাকে খেয়ে যেতে হচ্চে।” বিনয় কহিল—“আজ নাই খেলুম।” বরদাসুন্দরী কহিলেন—“ন, না, সে হবে না।” বিনয় খাইল, কিন্তু অন্ত দিনের মত তাহার স্বাভাবিক প্রফুল্লতা ছিল না। আজ স্বচরিতাও কেমন অন্তমনস্ক হইয়া চুপ করিয়া ছিল। যখন ললিতার সঙ্গে বিনয়ের লড়াই চলিতেছিল তখন সে বারান্দায় পায়চারি করিয়া বেড়াইতেছিল। আজ রাত্ৰে-কথাবার্তা আর জমিল না। বিষ্কায়ের সময় বিনয় ললিতার গম্ভীর মুখ লক্ষ্য করিয়া কহিল—“আমি হার মানলুম তবু আপনাকে খুসি করতে পারলুম না।" > ললিতা কোনো জবাব না দিয়া চলিয়া গেল। লুন্সিপ সহজে কাদিতে জানেন কিন্তু আজ তাহার চোখ দিয়া জল যেন ফাটিয়া বাহির হইতে চাহিল। কি হইয়াছে ? কেন সে বিনয় বাবুকে বার বার এমন করিয়া খোচা দিতেছে এবং নিজে ব্যথা পাইতেছে ? বিনয় যতক্ষণ অভিনয়ে যোগ দিতে নারাজ ছিল ললিতার জেদও ততক্ষণ কেবলি চড়িয়া উঠিতেছিল কিন্তু যখনি সে রাজি হইল তখনি তাহার সমস্ত উৎসাহ চলিয়া গেল। যোগ না দিবার পক্ষে যতগুলি তর্ক সমস্ত তাহার মনে প্রবল হইয়া-উঠিল--তখন তাহার মন পীড়িত হইয় বলিতে লাগিল কেবল আমার অনুরোধ রাখিবার জন্য বিনয় বাবুর এমন করিা রাজি হওয়া উচিত হয় নাই। অনুরোধ! কেন অনুরোধ রাথিবেন । তিনি মনে করেন, অনুরোধ রাখিয়া তিনি আমার সঙ্গে ভদ্রতা করিতেছেন! তাহার এই ভদ্রতাটুকু পাইনার জন্য আমার যেন অত্যন্ত মাথা ব্যথা! প্রবাসী। [ ৮ম ভাগ । -- কিন্তু नि बनि করিয়া পদ্ধ করিলে চলিবে কেন? - সত্যই যে সে বিনয়কে অভিনয়ের দলে টানিবার জন্তু ... এতদিন ক্রমাগত নিৰ্ব্বন্ধ প্রকাশ করিয়াছে। আজ বিন ভদ্রতার দায়ে তাহার এত জেদের অনুরোধ রাখিয়াছে বলিয়া রাগ করিলেই বা চলিবে কেন ? এই ঘটনায় ললিতার - নিজের উপরে এমনি তীব্র ঘৃণা ও লজ্জা উপস্থিত হইল রে স্বভাবত এতটা হইবার কোনও কারণ ছিল না। ੇ । o ২য় সংখ্যা । ] মঞ্জণ এই ছবিগুলা তাহাতে গদ দিয়া আঁটিতে আরম্ভ করিয়াছিল। এইরূপে পাতা পুরাইবার জন্য তাহার নেশা এতই চড়িয়া গিয়াছে যে ভাল বই দেখিলেও তাহা হইতে ছবি কাটিয়া লইবার জন্য তাহার মন ছটফট করিত। 4हे লোলুপতার অপরাধে তাহার দিদিদের কাছে তাহাকে বিস্তর তাড়না সহ করিতে হইয়াছে। সংসারে প্রতিদান বলিয়া যে একটা দায় আছে সে BBB BBB BBB BBBB BBB B BBBB BBSYtttt BB BBBBB BBB BBBB BBBBB যাইত। আজ গেল না এবং কেন যে তাহার বুকটাকে ঠেলিয়৷ তুলিয়া তাহার চোখ দিয়া এমন করিয়া জল বাহির হইতে লাগিল তাহা সে নিজেই ভাল করিয়া বুঝিতে পারিল না। পরদিন সকালে সুধীর লাবণ্যকে একটি তোড়া আনিয় দিয়াছিল। সেই তোড়ায় একটি বোটায় দুইটি বিকচোলুপ্ত বসোরা গোলাপ ছিল। ললিতা সেটি তোড়া হইতে খুলির লইল। লাবণ্য কহিল—“ও কি করুচিস্ ?" ললিত কহিল, “তোড়ায় অনেক গুলো বাজে ফুল পাতার মধ্যে ভালো ফুলকে বাধা দেখলে আমার কষ্ট হয় ; ওরকম দড়ি দিয়ে সব জিনিষকে এক শ্রেণীতে জোর করে বাধা বৰ্ব্বরতা।" | এই বলিয়া সমস্ত ফুলকে বন্ধনমুক্ত করিয়া ললিতা সে গুলিকে ঘরের এদিকে ওদিকে পৃথক করিয়া সাজাইল । কেবল গোলাপ দুটিকে হাতে করিয়া লইয়া গেল। - সতীশ ছুটয়া আসিয়া কহিল, "দিদি ফুল কোথায় পেলে ?” ললিতা তাহার উত্তর না দিয়া কহিল, “আজ তোর বন্ধুর বাড়ীতে যাবি নে ?” বিনয়ের কথা এতক্ষণ সতীশের মনে ছিল না, কিন্তু । তাহার উল্লেখ মাত্রেই লাফাইয়া উঠিয়া কহিল—“হ যাব।" - বলিয়া তখনি যাইবার জন্য অস্থির হইয়া উঠিল। | ললিতা তাহাকে ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিল “সেখানে গিয়ে কি করিস্ ?” সতীশ সংক্ষেপে কহিল “গল্প করি।” ললিত কহিল “তিনি তোকে এত ছবি দেন তুই তাকে । কিছু দিসনে কেন ?” বিনয় ইংরেজি কাগজ প্রভৃতি হইতে সতীশের জন্ত নানাপ্রকার ছবি কাটিয়া রাথিত। একটা খাতা করিয়া . বিশেষ চিন্তিত হইয়া উঠিল। ভাঙ্গা টিনের বাল্পটির মধ্যে তাহার নিজের বিষয় সম্পত্তি যাহা কিছু সঞ্চিত হইয়াছে, তার কোনােটাই আজিনে ছেদন করা তাহার পক্ষে সহজ নহে। সতীশের উদ্বিগ্ন মুখ দেখিয়া ললিত হাসিয়া তাহার গাল টিপিয়া দিয়া কহিল—“থাক্ থাক তোকে আর অত ভাতে হবে না। আচ্ছ, এই গোলাপ ফুল দুটাে নিয়ৰাষ্ট্রস।” সতীশ হজে সমস্তার মীমাংসা হইল দেখিয়া সে উৎফুল্প আমাকে দিতে এবং ফুল দুটি লইয়া তখনি সে তাহার বন্ধুঋণ সতীশের সজন্য চলিল। বেশি এপ্রিয় বিনয়ের সঙ্গে তাহার দেখা হইল। “বিনয় বাবু” স্কুল দুটি লংি করিয়া দূর হইতে তাহাকে ডাক দিয়া সতীশ তাহার শুছে আসিয়া উপস্থিত হইল এবং জামার মধ্যে ফুল দুলইয়া কহিল, “আপনার জন্তে কি এনেছি বলুন দেখি।” বিনয়কে হার মানাষ্টয়া গোলাপ ফুল ছুইটী বাহির করিল। নি কহিল "বা, কি চমৎকার! কিন্তু সতীশ বাৰু এটত তোমার নিজের জিনিষ নয়। চোরাই মাল নিয়ে শেষকালে পুলিসের হাতে পড়বনা ত ?” এই ফুল ছটিকে ঠিক নিজের জিনিষ বলা যায় কিনা সে সম্বন্ধে সতীশের হঠাৎ ধোক লাগিল। সে একটু ভাবিয়া —“ন, বা, ললিত দিদি আমাকে দিলেন যে আপনাকে দিতে!” এ কথাটার এই থানেই নিষ্পত্তি হইল, এবং বিকালে তাহদের বাড়ি যাইবে বলিয়া আশ্বাস দিয়া বিনয় সতীশকে বিদায় দিল। কাল রাত্রে ললিতার কথার খোচ খাইয়া বিনয় তাহার বেদনা ভুলিতে পারিতেছিল না। বিনয়ের সঙ্গে কাহারো গোরা। ○○


WikitanvirBot (আলাপ) ১৪:১৫, ২৪ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)

প্রায় বিরোধ হয় না। সেই জন্য এই প্রকার তীব্র আঘাত সে কাহারো কাছে প্রত্যাশাই করে না। ইতিপূৰ্ব্বে ললিতাকে বিনয় স্বচরিতার পশ্চাদ্বৰ্ত্তিনী করিয়াই দেখিয়াছিল। কিন্তু অঞ্জুশাহত হাতি যেমন তাহার মাহুতকে ভুলিবার সময় পায় না, কিছু দিন হইতে ললিতা সম্বন্ধে বিনয়ের সেই দশা হইয়াছিল। কি করিয়া ললিতাকে একটু খানি প্রসন্ন করিবে এবং শাস্তি পাইবে বিনয়ের এই চিন্তাই প্রধান হইয়া উঠিয়াছিল। সন্ধ্যার সময় বাসায় আলিয়া ললিতার তীব্রহাস্তদিগ্ধ জালাময় কথাগুলি একটার পর একটা কেবলি তাহার মনে বাজিয়া উঠিত এবং তাহার নিদ্রা দূর করিয়া রাথিত । “আমি গোরার ছায়ার মত, আমার নিজের কোনো পদার্থ নাই, ললিত এই বলিয়া অবজ্ঞা করেন, কিন্তু কথাটা সম্পূর্ণ অসত্য।” ইহার বিরুদ্ধে নানাপ্রকার যুক্তি সে মনের মধ্যে জড় করিয়া তুলিত। কিন্তু এ সমস্ত যুক্তি তাহার কোনো কাজে লাগিত না। কারণ ললিতা ত স্পষ্ট করিয়া এ অভিযোগ তাহার বিরুদ্ধে আনে নাই—এ কথা লইয়া তর্ক করিবার অবকাশই তাহানের নাই। বিনয়ের জবাব দিবার এত কথা ছিল তবু সেগুলা ব্যবহার করিতে" তাহার মনের ক্ষোভ আরো বাড়িয়াউঠতে লাগি কাল রাত্রে হারিয়াও যখন ললিতার মুৎ সে • তখন বাড়িতে আসিয়া সে নিতান্ত অস্থির মনে মনে ভাবিতে লাগিল, “সত্যই কি আমি এ পাত্র ?” এই জন্যই সতীশের কাছে যখন সে শুনিল ফে তাহাকে গোলাপফুল দুটি সতীশের হাত দিয়া পাঠাই, দিয়াছে তখন সে অত্যন্ত একটা উল্লাস বোধ করিল। সে ভাবিল, অভিনয়ে যোগ দিতে রাজি হওয়াতেই সন্ধির নিদর্শন স্বরূপ ললিত তাহাকে খুসি হইয়া এই গোলাপ দুটি দিয়াছে। প্রথমে মনে করিল ফুল ছুটি বাড়িতে রাখিয়া আসি, তাহার পরে ভাবিল—না, এই শাস্তির ফুল মায়ের পায়ে দিয়া ইহাকে পবিত্র করিয়া আনি। সে দিন বিকালে বিনয় যখন পরেশ বাবুর বাড়িতে গেল তখন সতীশ ললিতার কাছে তাহার ইস্কুলের পড়া বলিয়া লইতেছে। বিনয় ললিতাকে কহিল—“যুদ্ধেরই রং লাল, অতএব সন্ধির ফুল শাদা হওয়া উচিত ছিল।”