পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> * 8

          • ്.".................................... ~...~,

সে ব্যথিত কই আর কিছু তো না চায়, চাহে-শুদ্ধ মোর রূপা, বিন্দুমাত্র প্রেম! তবে—তবে, এমনি কি চিরদিন সে দুঃখিনী র’বে উপেক্ষায় চির-নিগৃহীত! [ চিন্তিতভাবে, ধীরে ধীরে প্রস্থান। এবে এতদিন পরে, বুঝি–এ প্রবাসে আসি জাগিছে অস্তরে করুণা তাহার লাগি । নাই আর সেই উদ্বেলতা। এবে আসিয়াছে চিত্তে স্নিগ্ধ ব্যাকুলত ধৰ্ম্ম পিপাসায়। ক্রমে, ঘুচিয়াছে সংশয় আঁধার, উদ্বদ্ধ পরাণ এবে চাহিঢ়ে সবার সাধিতে কল্যাণ। যবে, যাই মোরা অনাথ-আশ্রমে আতুরেরে সেবিবারে, সাথে সাথে ভ্ৰমে তথনো সুহৃদবর। সাধ্য অনুসারে, সযতনে দীন অনাথের সেৱা করে কায়-মনে।। ৬ অষ্টমাস হ’লো গত আসিয়াছি মোরা এ প্রবাসে ; আজো নাহি জানি—কেন সংবাদ না আসে মাধবীর । ( জীবনরামের প্রবেশ ) এই যে জীবন! কহ—কন্তু সমাচার যদি বা নূতন কিছু থাকে। জীবন। ( প্রণামান্তর ) পুত্র তা’র জন্মিয়াছে অপূৰ্ব্ব, সুন্দর। অজ। ( সোল্লাসে ) বটে ! | একান্ত পীড়িত তিনি, অতীব কাতর প্তি তারপর অজয়। কি কহিলে মাধবীর পীড়া ? হা বিধাতঃ কি করি ে! সতীর আজন্ম-সাধ নাহি পুরাইলে কোন মতে। ওহে দেব,— ( জীবনের প্রতি ) যাও তুমি-ক্লান্ত পথ-শ্রমে,— করগে বিশ্রাম । অঞ্জ | [ জীবনের প্রস্থান }। যাহা কোন দিন ভ্ৰমে কল্পনা করিনি, হায়—হ’ল শেষে সেই পরিণাম । সে সতীর একমাত্র ছিল মনস্কাম— পতির চরণ-সেবা ; এ জীবনে বঞ্চিত হ’বে কি তাহতেঃ কৰ্ম্মফলে ? হা বিধাতঃ, একি মৰ্ম্মান্তিক দুঃসংবাদ । কিছুই যে বুঝা নাহি যায়— কি যে হ’বে ভগবান তোমার ইচ্ছায় ! [ অজয়ের প্রস্থান )। - শ্ৰীদেবকুমার রায় চৌধুরী। প্রবাসী । এ সংসার মাঝে তা’র। আহা—সে যে বড় অসহায় ! শিবাজী ও সুন্দরী । , মহারাষ্ট্র-ভাগ্যাকাশে সমুদিত যবে ভানুসম শিবাজী নৃপতি, সেনাপতি স্বর্ণদেব একদিন নিবেদিলা আসি করিয়া প্রণতি,— “জয় হোক মহারাজ, সম্পাদিত এবে—যে আদেশ ছিল ভৃত্য পরে, বিজয়-পতাকা তব সগৌরবে উড়িতেছে আজি কল্যাণ নগরে ; বন্দীকৃত আহাম্মদ—বিজাপুর-রাজ-প্রতিনিধি সহ পরিজন ।” শিবাজী কহিলা “ধন্ত স্বর্ণদেব, বীরত্ব তোমার রহিবে স্মরণ ।” কহিলেন সেনাপতি, “মহারাজ, আরো কিছু মোর আছে নিবেদন, শক্ৰপুরী মাঝে এক অপরূপ সৌন্দর্য্যপ্রতিমা করিমু দর্শন ;— রূপসী ষোড়শী বালা—তিলোত্তম রম এর কাছে পায় বুঝি লাজ, হেন ফুল শোভে শুধু রাজ্যেষ্ঠানে ; তাই আনিয়াছি সাথে, মহারাজ ।” ইঙ্গিতে সৈনিক এক লয়ে এল রাজ সভামাঝে লজ্জিত যুবতী ; নিমেষে নিস্তব্ধ সভা, বিস্মিত বিমুগ্ধনেত্ৰ যত হেরি সে মূরতি। যেন এ সৌন্দর্য্যস্বপ্ন—বিধাতার মানবী-কল্পনা চিত্রপটে আঁকা ! শিবাজী কহিলা ধীরে—ক্ষণকাল দেখি সেইরূপ পবিত্রতা-মাথা,— “মাতঃ তোর গর্ভে যদি জন্মিতাম, আমরাও বুঝি হতেম সুন্দর ! [s ཝ ཝ༥| ২য় সংখ্যা । ] | সেনাপতি, পতিপাশে সযতনে এ কুলবধূরে পাঠাও সত্বর ”— ঐরমণীমোহন ঘোষ। বিবিধ প্রসঙ্গ । কল্যাণ দুর্গ অধিকারের পর, আবাজী, কল্যাণের শাসনকর্তা মৌলানা আহমদের পুত্রবধু একটি সুন্দরী বালিকাকে বন্দী করিয়া, তাহাকে উপহারস্বরূপ শিবাজীর নিকট প্রেরণ করেন। শিবাজী বালিকাকে দেখিয়া বলিলেন, “আমার ব। যদি তোমার মত সুন্দরী হইতেন, তাহা হইলে কি মুখের বিষয় হইত ! তাহা হইলে আমিও স্বন্দর হইতাম।" তিনি বালিকার সহিত পিতার মত আচরণ করিয়াছিলেন, এবং তাহাকে নূতন পরিচ্ছদ ও অন্যান্য উপহার দিয়া, বিজাপুরে তাহার বাটতে নিরাপদে পাঠাইয়৷ দিয়াছিলেন। এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি অবলম্বন করিয়া শ্ৰীযুক্ত মহাদেব বিশ্বনাথ ধুরন্ধর “শিবাজী ও মুসলমান বন্দিনী” নামক সুন্দর ছবিখানি আঁকিয়াছেন। শিবাজীর চরিত্রের নানা অসাধারণ গুণের মধ্যে নারীর সহিত পবিত্র ও সংযত ব্যবহার বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ঐযুক্ত নন্দলাল বস্থ কর্তৃক অঙ্কিত “সতী” চিত্র অতি সুন্দর ও সাত্বিকভাবপূর্ণ হইয়াছে। বিবাহসজ্জায় সজ্জিতা সতী মহত্তম আত্মোৎসর্গের সময়ও সম্পূর্ণ আত্মবিস্তৃতা ; তিনি যে অসাধারণ কিছু করিতেছেন, তাহা তিনি মোটেই অনুভব করিতেছেন না। অগ্নিশিখা সকল ভীষণ রাক্ষসের জিহ্বার মত লক্ লক্ করিয়া উদ্ধে বিস্তারিত হইতেছে। তিনি সেই অগ্নিশিখা-সিংহাসনে নিৰ্ভয়ে জায় পাতিয়া বসিয়া আছেন। তাহার ইষ্ট দেবতার আরাধনার সহিত অশ্রুপাত বা অফুট ক্ৰন্দনধ্বনির সংমিশ্রণ নাই। তাহার চক্ষু আর কিছু দেখিতেছে না—নিম্নস্থ অগ্নিশিখা, বা যে সকল প্রিয়জনকে তিনি ছাড়িয়া যাইতেছেন, কিছুই তাহার চোখে পড়িতেছে না—তিনি কেবল তাহারই পবিত্র মূৰ্ত্তি দেখিতেছেন, যাহার সহিত তিনি অচিরে মিলিত হইতে যাইতেছেন। র্তাহার চিত্ত স্থির, শান্তিতে প্লাবিত। ইহা মিলনের মুহূৰ্ত্ত। তিনি বিচ্ছেদের কথা জানেন না। এই সম্পূর্ণ নির্ভীকতায়, আত্মগৌরবানুভূতির সম্পূর্ণ অভাবে, আমরা নারীচরিত্রের মহিমা সম্বন্ধে ভারতীয়

বিবিধ প্রসঙ্গ । > •o ধারণার কি আশ্চৰ্য্য সাক্ষ্য পাই! অন্যান্য দেশে, লোকে, ধৰ্ম্মবিশ্বাসের জন্য, স্বাধীনতার জন্ত, জ্ঞানার্জন ও জ্ঞানবিস্তারের অধিকার লাভ ও রক্ষার জন্য, বা এবম্বিধ অন্ত কোন মহৎ ব্যাপারের জন্ত, যাহা করিয়াছে, ভারতে তাহাই কুসুমকোমল নারী দাম্পত্য প্রেমের জন্ত সহস্র গুণ অধিক বার করিয়াছে। যাহারা এরূপ মাহাত্ম্য দেখাইয়াছেন, তাহারা সৰ্ব্বথা পূজনীয়া। যে জাতির মধ্যে র্তাহার জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, তাহাদের সাহস ও নিষ্ঠা কখনও বিলুপ্ত হইবার নহে। সহমরণ প্রথায় তাহ আর দেখা দিবে না, দেওয়া বাঞ্ছনীয় নহে। কিন্তু আমাদের জাতিগত এই সাহস ও নিষ্ঠা ভবিষ্যতে অনেক রাষ্ট্রীয় ও বিশ্বব্যাপী ঘটনার আবার দেখা দিবে। ം ുഭr rpl-ജ് বোমা-নিক্ষেপে মজঃফরপুরে দুটি নিরপরাধ ইংরাজ স্ত্রীলোকের প্রাণ বধ করা হইয়াছে, ইহা, ও তৎপরে বোমার কারখানা আবিষ্কার, বোমা নিৰ্ম্মাণ ও নিক্ষেপকারীর দল গ্রেপ্তার, এই সকল ব্যাপার এখন সৰ্ব্ব সাধারণের আলোচনার বিষয় হইয়াছে। সত্য বটে, স্ত্রীলোক দুটির প্রাণ বধ বোমানিক্ষেপকারীদের উদ্দেশ্য ছিল না, তাহারা কিংসফোর্ড সাহেবকে মারিবার জন্য মজঃফরপুর গিয়াছিল। কিন্তু গুপ্ত হত্যা কখনও ধৰ্ম্মসঙ্গত বা বীরধৰ্ম্মসঙ্গত বলিয়া বিবেচিত হইতে পারে না। প্রকাশু বিদ্রোহ ও তৎসংশ্লিষ্ট যুদ্ধে নরহত্য ধৰ্ম্মসঙ্গত কি না, কিম্বা কোন কোন স্থলে ধৰ্ম্মসঙ্গত, তাহ এখন বিবেচ্য নহে। ভারতে পূৰ্ব্বে প্রকাগু বিদ্রোহ ও যুদ্ধ ছিল, গুপ্ত হত্যাও ছিল, কিন্তু বোমা ছুড়িয়া মানুষ মারার বুদ্ধিটা ইউরোপ হইতে আমদানী সৰ্ব্বপ্রকারের গুপ্ত হত্যাই কাপুরুষতা ও পাপকাৰ্য্য। অধিকন্তু বোমা-নিক্ষেপে সৰ্ব্বত্রই নিরপরাধ বিস্তর লোক মারা যায়। সুতরাং ইহাতে পাপ অধিক। ইহার দ্বারা এ পর্য্যস্ত কোন দেশকে স্বাধীন হইতে দেখা যায় নাই। অধৰ্ম্ম দ্বারা উন্নতি সম্ভব নয় ; কারণ বিশ্বের বিধান ধৰ্ম্মবিধান। আমরা বলিয়াছি, গুপ্তহত্যা কাপুরুষের কাৰ্য্য। কিন্তু শুধু ইহা বলিলে বোমানিক্ষেপকদিগের প্রতি অবিচার করা হয়। তাহদের চরিত্র জটিল ; উহাতে সদসৎগুণের দুর্বোধ্য সংমিশ্রণ লক্ষিত হয় । তাহাদের চরিত্রে সাহসের ও আত্মোৎ