পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉○○ ইংরেজরা এখান হইতে চলিয়া যায়, তাহা হইলে রক্তনী বহিয়া যাইবে“দেখ, আমরা কংগ্রেস হইতে তফাতে আছি— কিন্তু তুমি সেখানে যাও, সেখানে সমস্ত দেশের প্রতিনিধিকে তুমি দেখিতে পাইবে, দেশের মতামত জানিতে পারিবে। সেখানে পদার্পণ করিতে পারি না বলিয়া আমি নিজে (ব্যক্তিগত ভাবে) দুঃখিত ; তা ছাড়া আরও বেশী, আমি কংগ্রেসের পক্ষপাতী ; হিন্দুর পক্ষ হইতে, হিন্দুরা যাহ। বলিতেছে তাহ সম্পূর্ণরূপে স্থায্য।. “কিন্তু আমরা বাস্তবিকই উহাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারি না। তুমি হয়ত মনে করিতেছ, ধৰ্ম্মের জন্য যোগ দিতে পারি না, কিন্তু তাহা নহে। অবশু, ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয় কতকগুলা কুসংস্কার যে না আছে এমন নহে, কিন্তু আসলে আমাদের অনৈক্যের মূল তাহা নহে। দেখ কংগ্রেসের মধ্যে পার্সি আছেশিখ আছে এবং কতকগুলি স্বপক্ষত্যাগী মুসলমানও আছে। আমি সমস্ত কথা তোমাকে খুলিয়া বলিতেছি। বর্তমান ক্ষেত্রে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত, এবং হিন্দুদেরই পোহবারে। হিন্দুৱা বুদ্ধিমান, আমাদিগের অপেক্ষ অধিক শিক্ষিত, কেন না তাহারা ভয় পাইয়া ইংরাজি শিক্ষার সুযোগ ছাড়ে নাই। তাহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি পাইয়াছে, তাহারা বি-এ, তাহারা এম এ। পক্ষাস্তরে আমাদের মধ্যে অধিকাংশই অজ্ঞতা বশতই হউক, কুসংস্কার বশতই হউক, ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করে নাই। আমি একটু ইংরেজি বলিতে পারি ; একলা আমিই এই কুসংস্কারজাল হইতে মুক্ত.হিন্দুরা সকল বিষয়েই কিছু কিছু জানে। আর বাঙ্গালীদের কিছুই অজ্ঞাত নাই, তাহারা যে কোন বিষয় উপস্থিত হোক না কেন, সেই সম্বন্ধে কথা কহিতে পারে। আমরা ইংরেজী ভাল বলিতে পায়ি না। মনে করিয়া দেখ, ভাল বক্তাদের মধ্যে আমাদের কিরূপ অবস্থা হইবে ; আমাদের বক্তৃতা “আহা! ওহে! বাহব৷” এইরূপ কতকগুলি উচ্ছ্বাস বাক্যেই পরিণত হইবে। “আর ఆ; পরিণাম ঃ-হিন্দুরা অধিক শিক্ষিত, সরকারী কাজকৰ্ম্ম উহারাই পাইবে, এবং বরাবর যদি এই ভাবে চলে, ক্রমে উহারাই আমাদের শাসনকৰ্ত্ত হইবে। হিন্দুরা উহাদের সংবাদপত্রে, উহাদের কংগ্রেসে কিসের দাবী করিতেছে ? তাহারা চাহিতেছে—সরকারী নিয়োগের প্রবাসী । - - জন্য প্রতিযোগিতার পরীক্ষা উন্মুক্ত হউক এবং যাহাতে কোন | প্রকার বিড়ম্বন না ঘটে এই জন্য এই পরীক্ষা ভারত ও লক্ষ } উভয় স্থানেই হউক আমি শতবার বলিব, উহারা যায় বলিতেছেতাহ খুবই গ্য.কিন্তু আমাদের কথা স্বতন্ত্র = আমরা পিছাই। পড়িয়ছি, ভোজের স্থানে আমরা হিলুদে পরে আসিব, সরকারের প্রসাদটুকরা যাও ছই একটা আমাদের ভাগ্যে পড়িবে, তাও আমাদের হাত হইতে জোর } করিয়া কাড়িয়া লইবে... ” “আমার শেষ কথা কি তুমি শুনিতে চাও? হিন্দুর ধনী, আমরা দরিদ্র। উহারা যে আমাদের অপেক্ষা কৰ্ম্মদক্ষ তা আমি অস্বীকার করি না ; কিন্তু কোরাণ আমাদিগকে স্বদে টাকা ধার দিতে নিষেধ করিয়াছেন, এবং তাছাড়া, টাকা কড়ি সম্বন্ধে আমাদের দক্ষত মোটেই নাই . এ বিষয়ে হিন্দুদের কোন সঙ্কোচ নাই। উহারা ভারতবর্ষের ইছৰী।" যদি আমি ঠিক বুঝিয়া থাকি—জাতি, ধৰ্ম্ম, অহংকার, ঈর্ষা, বিশেষত: ক্ষণিক স্বার্থবিরোধ,–এই সমস্ত কারণেই উহারা কংগ্রেসে যোগ দিতে বিরত হইয়াছে। अढ़ठ | ভাগ্যবিপৰ্য্যয় ! এখন মুসলমানেরাই ভয় করিতেছে পাছে হিন্দুরা তাহাদের প্রতি “পারিয়ার” মত ব্যবহার করে। কিন্তু এ কথা শুধু লাহোর ও পার্শ্ববর্তী স্থানের পক্ষেই থাটে, যেখানে মুসলমানমণ্ডলী বেশ জমাট ভাবে অবস্থিত হইলেও সংখ্যায় অনেক কম। আলীগড়ের কালেঞ্জে এই অনৈক্য পোষণ করিতেছে। যখন আমি সেখানে গিয়াছিলাম বেক্‌-সাহেবের উত্তরাধিকারী কলেজের প্রধানাধ্যক্ষের আর কোন কাজ ছিল না—তিনি শুধু ঐ কাজেই ব্যাপৃত ছিলেন। বোম্বায়ে, মাদ্রাজে কতকগুলি মুসলমান কংগ্রেসে যোগ দিয়াছে। ংগ্রেসের গঠন সম্বন্ধে দুই একটা কথা বলি। কংগ্রেসের প্রতিনিধিগণ কি দস্তুর মত নিৰ্ব্বাচিত হইয় কংগ্রেসে আইসেন ? উহাদিগকে কে নিৰ্ব্বাচন করে ! উহারা কি কোন আদেশবাকা, কোন ক্ষমতাপত্ৰ লই । আইসে ? উহাদের শক্ররা বলে উহার স্বেচ্ছাপ্রবৃত্ত আন্দোলনকারী উহারা আপনারাই আপনাদের প্রতিনিধি, দেশের প্রতিনিধি মোটেই নহে। উহাদের শুধু কলম আছে, সেই কলম.। [...] ৩য় সংখ্যা । ] আন্দালন করিয়াই সরকারকে ভয় দেথায়। দেশের আসল নেতা তারাই যাদের তলোয়ার আছে কিন্তু ধাপের মধ্যে থাকিয় সে তলোয়ারে যে মৰ্চা ধরিয়া গিয়াছে কিংবা কৌতুহলের জিনিস বলিয়া জাদুঘরের দেৱালে লটুকানো রহিয়াছে .। আসল কথা, প্রতিনিধিরা হিন্দু রায়ং কর্তৃক নিৰ্ব্বাচিত হয় না। ভোট্ দেওয়া জিনিসটা যে কি—হিন্দু রায় তাহ কিছুই বোঝে না। উহারা মিতবাদী ও শিক্ষিত ভারতেরই প্রতিনিধি। যাহারা মিলের প্রবন্ধ ও ফক্সের বক্তৃতা মন্থন করিয়া স্বকীয় বিশ্বাসের বীজমন্ত্র পাইয়াছে, ইহারা সেই নব্যভারতেরই প্রতিনিধি। নিৰ্ব্বাচনপ্রণালী সম্বন্ধে ব্যানর্জি ১৮৯০ খৃষ্টাব্দে লণ্ডন নগরে এইরূপ বলিয়াছিলেন :– “আমাদের প্রতিনিধিরা দস্তুর মত নিৰ্ব্বাচিত হইয়া থাকে। আমি সাহস করিয়া বলিতে পারি, তোমাদের পালেমেণ্টের মেম্বরেরা যে প্রণালীতে নিৰ্ব্বাচিত হয়, আমাদের প্রতিনিধিরাও সেই প্রণালীতেই নিৰ্ব্বাচিত হইয়া থাকে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশের বিভিন্ন দল কর্তৃক এই সকল প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচিত হয়। গত বৎসরে বোম্বাই নগরে যে কংগ্রেস বসিয়াছিল, সেই কংগ্রেসের প্রতিনিধিনিৰ্ব্বাচন কার্য্যে প্রায় তিন কোটি লোক যোগ দিয়াছিল।” বস্তুত, এই বোম্বাই প্রদেশের প্রত্যেক প্রধান কেন্দ্রে কংগ্রেসের এক একটি স্থায়ী সমিতি আছে। প্রাদেশিক সমিতিগুলা, একটা কেন্দ্রগত সমিতির সহিত সংযুক্ত –সেগুলাও স্থায়ী সমিতি। বিভিন্ন সন্তার সহিত একযোগে ঐ সকল সমিতি নিৰ্ব্বাচনকাৰ্য্য পরিচালনা করে । কংগ্রেসে আর একটি সমিতি আছে, লওনে তাহার কার্য্যালয় ; এই সমিতির অধীনে “ইণ্ডিয়া” নামে একটি সংবাদপত্র আছে ; পালেমেণ্টের অনেকগুলি মেম্বর এই সমিতির সদস্ত। এই সমিতির দ্বারাই কংগ্রেসের গঠন সৰ্ব্বাঙ্গসম্পূর্ণ হইয়াছে। শ্ৰীজ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভূত নামানে । আমরা কিছুদিন ভূত নামাইয়াছিলাম। আমাদের ভূতনামানে ব্যাপারটা প্রধানতঃ হিপূনটিজমের সাহায্যেই হইত, 8 ভূত নামানো । >○9 এই হিপূনটিজমে যে সমস্ত অদ্ভুত অদ্ভূত ভূতুড়ে ঘটনা ঘটিয়াছিল, তাহার অনেকাংশ ভারতী’ পত্রিকায় সম্মোহনবিদ্যা’ নামে প্রকাশিত হইয়াছিল। মধ্যে মধ্যে ত্রিপাদ টেবিল লইয়াও ভূত নামানে হইত ; সত্যই ভূত কি না তাহা জানি না। কিন্তু ইহা বড়ই আশ্চর্যোর বিষয় যে নিশ্চল টেবিলটা বাহ কোন শক্তির সাহায্য না শহযু প্রাণবিশিষ্ট জীবের ন্যায় নড়িতে থাকে। তাহার ঘাড়ে ভূত না চাপিলেও, তাহার মধ্যে একটা আত্মার—একটা শক্তির যে আবির্ভাব হয় তাহা নিঃসন্দেহ । আমাদের মধ্যে প্রথম প্রথম কেহ সন্দেহ করিতেন যে আমাদেরই কেহ দুষ্টামী করিয়া টেবিল নড়াইতেছে, কিন্তু সে ভ্রম শীঘ্রই ঘুচিল। একদিন টেবিলের একদিকটা একটু উচু হইবামাত্রই আমরা সকলেই প্রাণপণ শক্তিতে চাপিয়া তাহাকে দাবিয়া রাখিবার চেষ্টা করিলাম, কিন্তু সেই অজ্ঞাত শক্তি সকলকার বল খৰ্ব্ব করিয়া টেবিলের এক পায় স্বচ্ছন্দে তুলিয়া ধরিল। আমরা অবাক ! চৈত্রের প্রবাসীতে প্রভাত বাবুর ভূত নামানোর বিবরণ আমাদের ভূত নামানোর সঙ্গে অনেকটা মেলে। আমাদেরও চক্রপ্রণালী তাহাদের প্রায় অনুরূপ, তবে আমরা চারিজন ব্যক্তি লইয়া বসিতাম, তাহার কম বা বেশী লইতাম না। ঐ চারিজনের মধ্যে দুইজন স্থলকায়, দুইজন স্বল্প, দুইজন সুন্দর দুইজন কালো কিম্বা দুইজন উদ্ধত প্রকৃতির ও দুইজন নম্র প্রকৃতির লোক নিৰ্ব্বাচন করিয়া লইতাম এবং স্থলের বিপরীতে সুহ্ম সুন্দরের বিপরীতে কালো এবং উগ্রের বিপরীতে নম্র এই ভাবে সাজাইয়া বসাইতাম । চক্রে বসিয়া আমরা সকলেই কোন একটা নির্দিষ্ট বস্তু বা বিষয় একমনে চিন্তা করিতাম। সাধারণত কোন দেব দেবীর মূৰ্ত্তি আমরা চিন্তার জন্ত স্থির করিয়া লইতাম। প্রথম প্রথম অনেকক্ষণ অপেক্ষা করিতে হইত, পরে দশ পনের মিনিটের মধ্যেই টেবিল নড়িয়া উঠিত, তখন বুঝিতাম ভূত আসিয়াছে। তার পরে প্রশ্ন করা আরম্ভ হইত। প্রশ্নের জবাব ই কি, না বুঝিবার জন্য প্রথমেই বলিয়া দেওয়া হইত, উত্তর ‘ই’ হইলে টেবিল একবার মাত্র শব্দ করিবে, 'না' হইলে দুইবার। ভূতের নাম ও তাৰ বাগান প্রতিনি করি জন্ত আমরা