»8२ - বৈরচন ---,-------- ভ্রাতা অমিতাভ পদ্মপাণির পিতা বলিয়া অধিক পূজা লাভ করেন। এই পঞ্চবুদ্ধ হইতে আবার বোধিসত্ত্বগণ প্রস্তুত হইয়াছেন। এখানেও পঞ্চবুদ্ধের সহিত বোধিসত্ত্বগণের পিতাপুত্র সম্বন্ধ। এই বোধিসত্ত্বগণকে জন্ম দিয়া পঞ্চবুদ্ধ আদিবুদ্ধে লীন হইয়াছেন। এই বোধিসত্ত্বগণই দৃশুমান জগতের সাক্ষাৎ কৰ্ত্তা। পঞ্চবুদ্ধের সহিত পত্নীভাবে পঞ্চবুদ্ধশক্তি মিলিত হইয়া পঞ্চ বোধিসত্বের জন্ম দিয়াছেন। নিম্নে পঞ্চবুদ্ধ, বুদ্ধশক্তি এবং পঞ্চ বোধিসত্ত্বের তালিকা প্রদত্ত श्ल : ১। বৈরচন+বজদন্তেশ্বরী—সামন্তভদ্র ২ । অশ্বোভ+লোচনী--বজ্রপাণি ৩। রত্নসম্ভব+মামুখী—রত্নপাণি ৪ । অমিতাভ +পানদারা–পদ্মপাণি অমোঘসিদ্ধ+তারা—বিশ্বপাণি বজ্রসত্ত্ব+বজসত্ত্বামিকা—ঘণ্টাপাণি নেপালে যে সকল বৌদ্ধ তান্ত্রিক সাধনপ্রণালী গ্রহণ করিয়াছেন তাহারা পঞ্চবুদ্ধের সহিত বজ্রসত্ত্ব যুক্ত করিয়াছেন। নেপালের বৌদ্ধদিগের তান্ত্রিক সাধন গ্রহণ হিন্দুধৰ্ম্মের প্রভাবের অন্যতম প্রমাণ। তান্ত্রিক সাধনের সর্বপ্রকার কুৎসিৎ অশ্লীলভাবও তাহারা গ্রহণ করিয়াছে কিন্তু গোপন ভাবে এ সাধন সম্পন্ন হয় বলিয়া কদাচ কাহারো চক্ষে পড়ে না। এই পঞ্চবুদ্ধ ভিন্ন ৭ জন মানবীয় বুদ্ধ আছেন। তন্মধ্যে শাক্যসিংহ শেষ। নেপালের বৌদ্ধদিগের মতে প্রথম তিন দেববুদ্ধ কাৰ্য্য সমাধান করিয়া আদিবুদ্ধে বিলীন হইয়াছেন। চতুর্থ বুদ্ধ অমিতাভের পুত্র পদ্মপাণি মৎস্তেন্দ্রনাথের উপর বর্তমান জগতের ভার পড়িয়াছে। তিনি ব্ৰহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর প্রভৃতি দেব দেবীগণের সাহায্যে জগতের তাবৎ কাৰ্য্য পরিচালিত করিতেছেন। এইজন্য পদ্মপাণি মৎস্তেন্দ্রনাথের নেপালের নেওয়ারদিগের নিকট এতাদৃশ সম্মান। অন্য সকল বুদ্ধ। কেবল নাম মাত্রে আছেন ; পদ্মপাণিই সৰ্ব্বত্র পূজিত হয়েন। পদ্মপাণির কার্য সমাধা হইলে তিনিও আদিবুদ্ধে লীন হইবেন! • &
- |
প্রবাসী । যেন জ্যেষ্ঠভ্রাতা—সেই হেতু তিনি এবং ਾਂ নেপালের নেওয়ারগণ মানবীয় বুদ্ধ ব্যতীত অন্ধ মানবীয় বোধিসত্বের পূজা করিয়া থাকেন। এই মঞ্জ মানবীয় বোধিসত্বের মানবীয় বুদ্ধের সহিত পিতাপুত্র সম্বন্ধ না হইয়া গুরু শিষ্যের সম্বন্ধ। যে মহাত্মা চীন হয়। আগমন করিয়া নেপালে বৌদ্ধধৰ্ম্ম প্রচার করিয়াছিলেন সেই মাধুত্র এই শ্রেণীর বোধিসত্ত্ব। নেপালে মাংক্র অনেক মন্দির আছে ; এবং পদ্মপাণির পরেই নেওয়ায় দিগের হৃদয়ে ইহার আসন। এই সকল মানবীয় বোঞ্জি সত্ত্বের নিম্নে আবার এক শ্রেণীর মানব আছেন যাহা । বিশুদ্ধ জ্ঞান কঠোর সাধন এবং পবিত্র জীবন দ্বারা বুদ্ধ লাভ করিয়াছেন। তাহারা কেহ বা জীবিত আছেন কেহ বা গতাস্থ হইয়াছেন। তিব্বতের লামাগণ এই শ্রেণীভূক্ত। তাহারা বুদ্ধের অবতার বলিয়া পূজিত হয়েন, কিন্তু লাম দিগের অবতারবাদ প্রকৃত বৌদ্ধশাস্ত্রমতে অসম্ভব ব্যাপার। কারণ প্রকৃত বুদ্ধত্ব লাভ করিলে বা আদিবুদ্ধে লীন হইলে আর জন্মগ্রহণ সম্ভব নয়। কিন্তু বৌদ্ধগণ অন্যভাবে লামাদিগের বুদ্ধত্ব প্রমাণ করিয়া থাকেন। র্তাহারা বলেন মানব জাতির উপকারের জন্য যে সকল । বোধিসত্ত্ব বারম্বার জন্মপরিগ্রহণ করিয়া থাকেন লামাগ সেই শ্রেণীর অবতার। নেপালে তিব্বতের লামার বিশে সম্মান আছে বটে কিন্তু তাহার সহিত ঐ দেশের বিশেষ কোন সম্বন্ধ নাই। নেপালের বৌদ্ধশাস্ত্র । তিব্বতের ন্তায় নেপালে বিস্তর প্রাচীন বৌদ্ধ-ধৰ্ম্ম-গ্রন্থ পাওয়া যায়। হুডসন সাহেব বিস্তর ধৰ্ম্মগ্রন্থ সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন। এই সকল গ্রন্থ অধিকাংশই সংস্কৃন্ত ভাষায় রচিত। নেপালের নেওয়ারদিগের দ্বারা এ সকল গ্রন্থ রচিত হয় নাই । তিব্বত হইতে আগত কোন লামা বা ভারতবর্ষ হইতে ধৰ্ম্মপ্রচারার্থ সমাগত সাধু মহাত্মাদিগের দ্বারা রচিত হইয়াছিল। এই সকল গ্রন্থ হইতে অনেক জ্ঞাতব্য বিষয় সংগ্রহ করা যাইতে পারে। দুঃখের বিষয় শঙ্করাচার্য্য বিস্তর বৌদ্ধ ধৰ্ম্মগ্রন্থ নেপালে দ করিয়াছিলেন। অনুসন্ধান করিলে নেপালের চতুর্দিকে এই সকল গ্রন্থ আজও পাওয়া যায়। গৃহস্থ এই সকল গ্রন্থ অত্যন্ত বড়ে রক্ষা করে। গৃহে অগ্নি লাগিলে সৰ্ব্বস্ব ত্যা | ৩য় সংখ্যা | ] গ্রন্থ বুকে করিয়া পলাইয়া যায়। এবং এই ੋ এখনও নেপালে বৌদ্ধগ্রন্থ বিনষ্ট হয় নাই। ধৰ্ম্ম শাসন | তিব্বতের প্লামার দ্যায় নেপালের বৌদ্ধদিগের উপর কোন ব্যক্তিবিশেষের অপ্রতিহত শক্তি নাই , গুর্থ রাজগুরু তাহাদিগের বর্ণসম্বন্ধীয় সমুদায় বিবাদবিসম্বাদের মীমাংসা করিয়া থাকেন। ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয় সমুদায় মীমাংসা বাহরাগণ সন্মিলিত ভাবে করিয়া থাকেন। সামাজিক নিয়ম লঙ্ঘন করিলে সামাজিক ভাবে তাহার প্রতিবিধান ট্রা থাকে, ইহাকে নেওয়ারগণ "গতি" বলে। কয়েকটা বিশেষ বিশেষ নিয়মানুসারে ইহারা পরিচালিত হইয়া থাকে। ১। প্রত্যেক গৃহস্থকে একটা নির্দিষ্ট সময়ে স্বজাতীয়গণকে ভোজ দিতে হয় । ইহা অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য ব্যাপার ইলেও ইহার অন্যথা হইবার নহে। ২। স্বজাতি কাহারও মৃত্যু হইলে প্রত্যেক পরিবার ষ্টতে এক একজন ব্যক্তিকে মৃতের সৎকার এবং শ্রাদ্ধাদিতে যোগদান করিতে হয়। গতির নিয়ম অগ্রাহ করিলে অর্থদণ্ড হইয়া থাকে । গুরুতর সামাজিক অপরাধ করিলে তাহাকে জাতিচু্যত করা য়। জাতিচু্যতকে আত্মীয় স্বজন পর্য্যন্ত ত্যাগ করে। স্থার মৃত দেহের সৎকার কেহ করে না। ইহা অপেক্ষ গুরুতর শাস্তি আর কি হইতে পারে ? সুতরাং নেওয়ার দাভিতর সামাজিক শাসনের নিয়ম নিতান্ত শিথিল নহে। শ্ৰীহেমলতা দেবী। বিদেশী চিনির সহিত প্রতিযোগিতা । গিন্ত মাঘ মাসের প্রবাসীতে “বিদেশী চিনির সহিত প্রতিযোগিতা” শীর্ষক একটা প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছে। স্বাজ কাল এ বিষয়ে যতই অধিক আলোচনা হয় ততই আমাদের পক্ষে হিতকর, কিন্তু অধিক আলোচনা যেরূপ তিকর, ভ্রমপূর্ণ সংবাদ আবার তদপেক্ষা অধিক অহিতর। কেদার নাথ বাবু যেরূপ লিথিয়াছেন তাহাতে " মনে এরূপ ধারণা হইতে পারে যে দেশী চিনি বিদেশী চিনির সহিত প্রতিযোগিতা। >89 সস্তা প্রস্তুত হওয়া সত্ত্বেও কারখানার স্বত্বাধিকারিগণ উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করিয়া থাকেন ; এই ভ্রান্ত ধারণা সাধারণের মন হইতে দূর করিবার জন্যই আমরা তাহার প্রবন্ধের ভ্রমগুলি প্রদর্শন করিতে অগ্রসর হইলাম। গত ২০শে ও ২৩শে কাৰ্ত্তিকের "দৈনিক হিতবাদী"তে প্রথমে কেদার নাথ বাবু এই প্রবন্ধটা প্রকাশ করেন। আমরা ৩রা অগ্রহায়ণের হিতবাদীতে তাছার ভ্রমগুলি প্রদর্শন করিয়াছিলাম, কিন্তু দুঃপের বিষয় যে তিনি প্রবন্ধটা সংশোধন না করিয়াই হিতবাদী হইতে যথাযথ উদ্ভূত করিয়া দিয়াছেন। আমরা এ কথা বলি না বে-আধুনিক বৈজ্ঞানিক উপায়ে ইক্ষু আবাদ করিয়া নূতন ও উন্নত যন্ত্রাদির সাহায্যে ইক্ষুরস হইতে একেবারে চিনি প্রস্তুত করিলে তাহাতে ক্ষতি হইবে ; বরং আমাদের স্থির বিশ্বাস যে তাহাতে লাভ থাকিবারই সম্ভাবনা ; কিন্তু কেদার নাপ বাৰু ৩-৩৫ হাজার টাকার কলে ৩৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ৭২ টাকা দৱে চিনি বিক্রয় করিয়াও যে ৫ হাজার টাকা লাভ দেখাইয়াছেন তাহা সম্পূর্ণ অসম্ভব। আমরা নিম্নে একে একে তাহার ভ্রমগুলি প্রদর্শন করিতেছি । কেদার নাথ বাবু লিথিয়াছেন যে “প্রধানত: steam *fastfoss-crushing plant (NTotè or ) on এবং vacuum pan একটী, বিশেষ আবশ্বক, এই দুইটী অধিক মূল্যবান। তদ্ব্যতীত turbine (তুরপিন ) ২১ট ও অন্যান্ত খুচরা কয়েকটা জিনিষ অল্প বায়েই হইতে পারে।” তিনি যদি অনুগ্রহ করিয়া এই খুচরা জিনিষ গুলির তালিকা ও মূল্য লিথিয়া দিতেন তবে বড়ই উপকার হইত। আমরা যতদূর অবগত আছি তাহাতে বলিতে পারি boiler, centrifugal machine, filters, double or triple effect evaporating pan, প্রভৃতিও বিশেষ প্রয়োজনীয়, এবং এই সমস্ত খুচরা জিনিষের মূল্যও কম নয়। আশা করি তিনি কলগুলির একটা তালিকা ও মূল্য প্রকাশ করিবেন। - রিফাইন-ইক্ষু মাড়াই করিয়া রস হইতে একেবারে চিনি তৈয়ার করিতে হইবে অথচ শেওলার দ্বারা রিফাইন করিতে হইৰে লিথিয়াছেন, এ কথার কোন অর্থই বুঝিতে
