পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8ッ -്.-- --- - -- –নিরন্তর নাহি জানি–কি গুপ্ত কারণে ভালের সংঘাতে নিতা আন্দোলিত হয় মোর প্রাণ ; কি গুপ্ত বিরহে সদা হয় কম্পমান নাহি জানি এ শশান্ত ছিয়া ! যেন করি উপভোগ মূক প্রকৃতির সনে অন্তরের যোগ অবিরাম। মনে হয়—যেন রহে কোন চিরন্তন, বিরাট ঐক্যের স্বত্র, নাড়ীর বন্ধন মোর সনে প্রকৃতির। তব, আজো কেনরে আমার বিন্দু শাস্তি নাহি প্রাণে ? হেরি’ এ অপার অনুপম শোভারাশি, কেন মোর এ অন্তর-মাঝ তবু জাগে হাহাকার ? ওগো বিশ্ব-রাজ, বলো, বলে--কোন পাপে অহরহ সহি এ দারুণ তুষানল-জালা। কভু দুঃখের আগুন নিৰ্ব্বাপিত হবে নাকি ? ডুবি এ সৌন্দর্ঘ্যে চাহি যত ভূলিতে অন্তর-জাল-আরো অবিরত ততই যেনরে মোর বেড়ে ওঠে বেদন ঃসহ জীবনের ; –যেন আরো নবীন বিরহ আচ্ছন্ন করিয়া ফেলে হাহাকারে এ হিয়া আমার ! কোথা যা’ব ? এ বিশাল বিশ্বে বিধাতার— কোথা, কোথা আছে মোর স্থান ! এই অতি দূর দেশে স্বজন-ভবন ছেড়ে’, এতদিনে, এসে কিবা ফল লড়িলাম! নীরবে, চিন্তিতভাবে পদ-চারণা করিতে লাগিলেন । ] শুধু আর বৃথা কতদিন অস্থির, উদামভাবে, হেন লক্ষ্যহীন কাটা’ব জীবন মোর ? পড়েছে শৃঙ্খল যা’র পায়ে, সে অবোধ, হতভাগ্য কেন আর চায়— মুক্ত-পক্ষ বিহঙ্গের সম, এই সংসারের মাঝে করিবারে বিচরণ ? বন্দীর না সাজে স্বাধীন জীবন হেরে ক্ষুণ্ণ মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলা —অকারণে, অবিরাম করি’ অবহেলা আপন কৰ্ত্তব্য ধৰ্ম্ম, জীবনের সৰ্ব্ব কৰ্ম্ম ছাড়ি, উদাসীন হয়ে, শুদ্ধ অদৃষ্টে ধিক্কারি’— এ হেন জীবনে আর কিবা প্রয়োজন ? কে কোথায় লভিয়াছে কাম কৰ্ভু বিনা সাধনায় ? কৰ্ম্ম বিন লভা বস্তু কা’র কবে মিলেছে নিখিলে ? চাহি শাস্তি ; কিন্তু, কৰ্ম্ম-স্রোতে না নামিলে, না করিলে স্বীয় প্রাণ বিশ্বের কল্যাণে বিসর্জন, কেমনে লভিব আমি তাহ ? এ জীবন নিস্তেজ ঔদান্তে, আর অক্ষুণ্ণ আলহে,-সুখ-আশে, প্রবাসী । যদি সদা স্বাৰ্থ লাগি, ক্ষুব্ধ দীর্ঘশ্বাসে জীর্ণ করি নিরস্তর গৃহ-কোণে বসি', তবে আর ' কেমনে লভিব আমি শান্তি-সুধা-ধার সিক্ত, স্নিগ্ধ করিবারে এ জীবন-মরু ? স্বার্থে কৰে পেয়েছে পরম তৃপ্তি এ বিশাল ভবে সঙ্কীর্ণ মানব ? যদি নাহি পারি একাস্তে সঁপিতে স্বীয় ক্ষুদ্র স্বার্থ-কণা এ ধরার হিতে ; যদি পরাথেরি মাঝে বিসৰ্জ্জিয় অস্তিত্ব আপন, পরার্থে না পারি নিতে করিয়া বরণ নিজেরি স্বার্থের মত কায়-মনে একান্ত সহজে— তবে বৃথা জন্ম মম, বৃথা তবে খোজে ফিরিতেছি শাস্তি তরে হাহাকার করি’ ! শাস্তি কোথা অন্বেষিছ ওরে অন্ধ, নিয়ত অযথা সঙ্কীর্ণ, তিমিরাবৃত, রন্ধহীন বাসনা-কারায় ? [ করতল-ন্যস্ত-গণ্ড হইয়া শিলাসনে উপবেশন করিলেন। ] অজয়ের সুমহান আদর্শ আমায় আজো নাহি করিল চেতন ! কিবা অনুপম তা’র স্বাৰ্থ-ত্যাগ, কৰ্ম্ম-নিষ্ঠ। নিয়ত সবার শুভার্থে, সেবায় দিল কাটাইয়া নশ্বর জীবন আপনারে একান্তেই হ’য়ে বিস্মরণ কৰ্ম্ম-মোহে ! আজন্ম কুমার-ব্রত করিয়া গ্রহণ মন-প্রাণে স্বদেশেরি কল্যাণ সাধন করিতেছে মৌনভাবে ! যশোলিপা, মান-অভিমান তুচ্ছ করি’, অকাতরে দে’ছে বলিদান আপনারে আর্ব-শুভ-আশে। তাজি' সৰ্ব্ব স্বার্থ-পূহ স্বেচ্ছায় এ সেবা-ব্রত,—অতুল ইহা এ মরতে ! কেবা আমি অজয়ের ? তবু, মোর তরে কি অতুল স্বাগ-ত্যাগ! মৌন প্রতি-ভরে ফিরিতেছে সাথে সাথে ছায়ার মতন। আর, আমি ? —সদা স্বীয় চিন্তা-মগ্ন, স্বার্থ-অনুগামী ! হেন ঘৃণ্য স্বার্থপর জীবের কি কভু তৃপ্তি আছে ? বেদনায়–অশ্র-জলে, শূন্ত গৃহ-মাঝে ভগিনী-কলাল মোর করিতেছে নিত্য হাহাকার নব-জাত শিশুটিরে বক্ষে ধরি', আর, হেথায় কলঙ্ক আমি শবসম রয়েছি পড়িয়া —গাঢ় আলস্তের ভরে নিরুদ্বেগ-হিয়া ! [ উঠিয়া দাড়াইলেন । ] . বিধির নির্দিষ্ট মোর জীবনের কৰ্ত্তব্য সকল . তুচ্ছ করি, নাহি জানি–কি আশে, কেবল হেনভাবে যাপিতেছি জীবন আমার । গৃহে মোর পতি-প্রাণা, সাধবী সতী একান্ত কাতর, শুদ্ধ মৌন বেদনায় চাহিতেছে আমার দর্শন ; (ཅ་ལྡ༥T . - ৩য় সংখ্যা । ] আর, হেথ প্রাণহীন পশুর মতন আমি শুধু পড়ে আছি উদাসীন, অনাসক্ত মন ; হেরি থে–তিলে তিলে সতীর মরণ নয়ন-সন্মুখে! সেই অকলঙ্ক, নবীন শিশুরে কোন প্রাণে ত্যজি, আজো রহিয়াছি দূরে— এ প্রবাসে ! কোন দোষে অপরাধী হ’ল মরি—সে-ও মোর কাছে । আমা’ হেন স্বার্থপর, হেয়, কাপুরুষ জীব আর আছে কিরে এভুবনে! মোর উপেক্ষায়, আর সেই একান্ত কঠোর ব্যবহারে—সে লতিকা গিয়াছে শুকায়ে ধীরে, ধীরে । এ জীবনে সে সতীরে কভু আর কিরে দেখিতে পাব না ? হায়, আমারি লাগিয়া— অজয়ের প্রবেশ ] অজয় ৷ সমাচার এইমাত্র আসিয়াছে—শঙ্কা নাহি আর মাধবীর জীবনের। কিন্তু, দেবতার ইচ্ছা কত্ব পারিন বুঝিতে । পুনঃ—(নীরব হইলেন। ) অকারণে, তবু এমন কুষ্ঠিত ভাব কেন তব ? তব তনয়ের সাংঘাতিক পীড়া ; নাহি আর জীবনের আশা তার ! অর। ( শুষ্ঠ দৃষ্টিতে, শুষ্ক কষ্ঠে, অৰ্দ্ধ-স্বগত ) —দেখিতেও পা’ব নাকি ? অঞ্জ। (হস্ত-ধারণ করিয়া ) চল চল গৃহে । স্বীয় কৰ্ম্ম-ফলে সখা, কহ–আজো কিহে জাগিছে না অনুতাপ কৰ্ত্তবোরে করি’ অনাদর ? সে কল্যাণী রমণীর তরে বন্ধুবর, बलेिन । জ। --- আজো কি অস্তরে তব বিন্দুমাত্র জাগেনি করুণ ? —একি মনুষ্যত্ব ? ভ্রাতঃ, এ রিশ্বে কতু না লভে শান্তি সেই জন তমোময় জীবন যাহার। আজীবন উপার্জিয়া পাণ্ডিত্য অপার কোথা তব হিতাহিত-জ্ঞান ? কিবা ফল প্রিয়তম, সেই জ্ঞানে যাহে মনে না আনে সংযম, নিদ্রিত বিবেক-শক্তি যাহে নাহি হয়হে জাগ্রত ? অর। ( করে কর সংঘর্ষণ করিয়া ) - আমি মুখ, অতি হীন ! অজ। - —হও কর্ম-রত । দূর কর হে স্বহৃৎ, স্বেচ্ছা-স্ফূর্ত,নিফল আক্ষেপ। হৃদয়ের ক্ষত-মুখে কৰ্ম্মের প্রলেপ l দেহ লেপি ;–নিৰ্ব্বাপিত হবে জালারাশি। এভুবনে এসেছ করিতে কৰ্ম্ম । কৰ্ত্তব্য-পালনে হও অবহিতচিত্ত। জ্ঞানী তুমি, জীবনের প্রব জয়ন্তিয়া ও খাসিয়া । >8° কর্তৃবোরে লহ বুঝি ; আপনার শুভ স্ববিচারে করি স্থির-সাধে বীরসম অবিরাম। এ জগতে চলিয়াছে যে মহাসংগ্রাম জয়ী হও তাহে । গৃহে দেবীসম ভগিনী ও জায়া পড়ে আছে ; আর তুমি তেয়াগিরা মারা তাহাদের, সদা হেথা কাটাইছ তামস জীবন। চিত্রাঙ্কিত, মনোহর মুরতি যেমন নিশুক্লাব জাথির তারা বিনা ; তুমি হে বন্ধু আমার, তেমনি অপূর্ণ সদা সংসার-মাস্কার সে কল্যাণী মাধবীরে ছাড়া ! বারেক করহ মনে— কোন দোষে নব-জাত সে পুত্র-রতনে এমন নিৰ্দ্দয়ভাবে অবহেলা করিছ নিয়ত! চলহ তাদের কাছে। তব হৃদি-ক্ষত ধৌত করি দিবে সেথা সতী ধীরে, মৌন অশ্রনীরে নিরন্তর সখা । অর। ( দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া )–চল—চল গৃহে ফিরে’। জয়ন্তিয়া ও খাসিয়। কপিলি নদী পার হইলেই জয়ন্তিয়া ও খাসিয়া জাতির সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। জয়স্তিয়া জেলার পাৰ্ব্বত্য ভূভাগের অধিবাসীদিগকেও সমতলের অধিবাসীরা খাসিয়া বলে ; ইহারা যে খাসিয়া তদ্বিষয়ে কোনো সন্দেহ নাই, কিন্তু ইহারা আপনাদিগকে খা' বলে। ইহার স্বত্র, পেশীপুষ্টশরীর, কৰ্ম্মঠ, এবং বীরোচিতক্রীড়াপ্রিয়। ইহারা সৰ্ব্বদাই সশস্ত্র থাকে, ইহাদের অস্ত্র ধনুবাণ, দীর্ঘ নগ্ন তরবার, ও খুব বড় ঢাল বাহ বৃষ্টি বাদলের দিনে ছাতার কাজও করে। জয়স্তিয়ার রাজা ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্ট কর্তৃক রাজ্যভ্রষ্ট ও নিৰ্বাসিত হইয়াছিল। সে নিতান্ত অসভ্য ছিল না। তাহার নিজস্ব সম্পত্তির মুল্য লক্ষমুদ্রা ছিল, সে সকল নিৰ্ব্বাসন কালে তাহাকে লইয়া যাইতে দেওয়া হইয়াছিল। ataার বংশীয়গণ এক্ষণে হিন্দু আচারপদ্ধতি, পালন করিয়া সৎ-পূদ্র মধ্যে পরিগণিত হইতেছে। রাজার উত্তরাধিকার araার বংশে সংক্রমিত হয় না ; রাজার পরে রাজার ভগ্নী মাহীকে কুয়ারী বা কুমারী বলে সেই রাজ্যাধিকারিণী হয় এবং সম্রাস্ত পাৰ্ব্বত্য খাসিয়া হইতে তাহার'বর মনোনীত